বরগুনা জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলছে।
বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ জন নতুন আক্রান্ত রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছে ৫৮ জন রোগী। অন্যরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে। বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গুরোগী ভর্তি রয়েছে ২৬১ জন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৮৮ রোগীর মধ্যে ২০২ জনই বরগুনা জেলায়। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০৮ জন।
এদিকে গত বুধবার এক দিনে বরগুনা হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে দুজন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা চান মিয়া (৭৫) এবং বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোসাই দাস (৭০)। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, গত বুধবার দুপুরের দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চান মিয়া ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোসাই দাসের মৃত্যু হয়। এদিকে পাঁচ দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মৃত চান মিয়ার মেয়ে কুলসুম বলেন, ‘তিন দিন আগে বাবাকে বরগুনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে স্যালাইন দেন। গত বুধবার সকালে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এতে তার প্লাটিলেট ছিল ৬৪ হাজার। দুপুরে তিনি হাসপাতালে মারা যান।’
অপরদিকে অসুস্থ অবস্থায় গোসাই দাসকে গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সকালে প্লাটিলেট পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল থেকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান স্বজনরা। এরপর দুপুরের দিকে আবারও হাসপাতালে নিয়ে এলে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে সন্ধ্যার পরে তার মৃত্যু হয়।
গোসাই দাসের ছেলে সঞ্জয় চন্দ্র দাস বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। ক্লিনিকে পরীক্ষার পর বাসায় গিয়ে খাবারও খেয়েছেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হঠাৎ করেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে অক্সিজেন দেওয়া হলেও তিনি মারা যান।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন চান মিয়া। গত বুধবার সকালে তার অবস্থা খারাপ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু স্বজনরা তাকে বরিশাল নিয়ে না যাওয়ায় দুপুরের দিকে তিনি মারা যান। তিনি বলেন, গোসাই দাস সন্ধ্যা পর্যন্ত ভালো ছিল। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হয়ে সন্ধ্যার পরে মারা যান।
বিপর্যয় রোধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি।
সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, সারাদেশে ২৮৮ জন ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে ২০২ জনই বরগুনার, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাব্যাঞ্জক।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা সরকারের কাছে বরগুনাসহ বরিশাল বিভাগের সব হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে ডেঙ্গু চিকিৎসা যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান।
পাশাপাশি তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধের যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া ও জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করার তাগিদ দেন। নূরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
একইসঙ্গে তিনি ডেঙ্গুর দ্রুত বিস্তার রোধে সবাইকে প্রয়োজনীয় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার অনুরোধ জানান।
পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন ও দীর্ঘদিন ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করছে ঘরমুখো মানুষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথেও বেড়েছে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ।
এনিয়ে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে ৩৮ হাজার ৫৩৯ টি যানবাহন পারাপার হয় এবং টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার (১১ জুন) রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ হাজার ৫৩৯টি যানবাহন পারাপার হয়।
এর মধ্যে সেতু পূর্ব অংশের উত্তরবঙ্গগামী লেনে ১৬ হাজার ৩৮০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকা।
অপরদিকে সিরাজগঞ্জের সেতু পশ্চিম অংশের ঢাকাগামী লেনে ২২ হাজার ১৫৯ টি যানবাহন পারাপার হয় এবং টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫০ টাকা। সেতু দিয়ে প্রতি মিনিটে ২৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
অনেক প্রত্যাশাকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘ওয়ান টু ওয়ান’ রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আজ শুক্রবার।
দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা (স্থানীয় সময়) পর্যন্ত লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ঐতিহাসিক এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
২ ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকটি দেশের কোটি কোটি মানুষের মনে ও প্রাণে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আলোচনার বিষয়বস্তু ও ফলাফল জানার জন্য দেশে ও বিদেশে থাকা বাংলাদেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আগ্রহ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশা ‘দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেবে এই বৈঠক’।
বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ও আলোচিত দুই নেতার এই বৈঠকে আলোচনার এজেন্ডা কি হতে। পারে তা প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষই। তবে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারসহ রাজনীতিতে সাম্প্রতিক যুক্ত হওয়া অনেক বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।
বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা হলে তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন- দলের পক্ষ থেকে তারেক রহমান জাতীয় নির্বাচনের তারিখ অন্তত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নিয়ে আসা অন্যতম এজেন্ডা হিসাবে তুলে ধরবেন। এটি এক রকম নিশ্চিত। বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে ড. ইউনূস চাইবেন এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময়সীমা ধরে রেখে সংস্কার ও বিচারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে।
এছাড়াও তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রাসঙ্গিকতা, জুলাই সনদ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেক্টরে স্বৈরাচারের দোসরদের অপসারণ, নির্বাচন কমিশন, আদালতের রায়ের পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভবিষ্যৎ কাঠামো, রাখাইনে মানবিক করিডোর, বন্দর ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসবে।
বিএনপি’র যুক্তরাজ্য শাখার নেতারা জানান, বৈঠকের আলোচ্যসূচী নির্ধারণের জন্য লন্ডন সফররত প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধির সঙ্গে তারেক রহমানের প্রতিনিধি দলের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। গত বুধবার এই আলোচনা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবারও তারেক রহমানের একজন প্রতিনিধি সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেছেন বলে এক ভিডিও বার্তায় জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠক প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বার্তা সংস্থা বাসস’কে বলেছেন, ‘এই বৈঠক নিয়ে আমরা ভীষণ আশাবাদী। শুধু আমরা কেনো পুরো দেশের মানুষের দৃষ্টি এখন লন্ডনের দিকে। নিশ্চয়ই দুই নেতার মধ্যকার বৈঠকে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সমাধান আসবে।
সমঝোতার পথ খুলবে। যার মধ্য দিয়ে জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পথ খুঁজে পাবে।’
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘গোটা জাতি প্রত্যাশা করে আছে এই বৈঠকের মধ্যে দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সকল সঙ্কট কেটে যাবে। আমাদেরও বিশ্বাস, এটি হবে একটি ঐতিহাসিক বৈঠক। এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে। শীর্ষ পর্যায়ের এই আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে একটা গ্রহণযোগ্য ফয়সালা বা সিদ্ধান্ত হবে।’
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এমএ মালেক জানিয়েছেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গলবার রাতে প্রস্তুতি সভা করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। আজ শুক্রবার সকাল থেকে স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ডরচেস্টার হোটেলের সামনে সংহতি জানিয়ে অবস্থান নেবেন।
তারা পুরো বৈঠকের সময়ই সেখানে থাকবেন।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে পাহাড়ের মাটি বিক্রি এবং মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় জুলাই যোদ্ধা মোহাম্মদ হাসান (২৩)-এর ওপর হামলা চালিয়েছে দূবৃত্তরা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর কাকারা ইউনিয়নের মাঝের ফাঁড়ি ব্রিজসংলগ্ন এলাকার অবৈধ বালুর পয়েন্টে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদ হাসান গত বছরের ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
তার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের গেজেট নম্বর-৫৮। হামলায় আহত হাসান সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মধ্যম সুরাজপুর গ্রামের নুরুল আলমের পুত্র।
এদিকে এই হামলার ঘটনায় জড়িত পাহাড় ও বালু খেকোচক্রের সবাইকে গ্রেপ্তার এবং পাহাড় কাটারোধ, মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়াসহ পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আহত জুলাই যোদ্ধা মোহাম্মদ হাসান বলেন, সুরাজপুর-মানিকপুর এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বনের গাছপালা উজাড়, পাহাড় সাবাড় করে মাটি বিক্রি এবং মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিলেন সানাউল্লাহ, মোহাম্মদ সাদু, মো. হুবাইব, মোহাম্মদ মোস্তফা, মোহাম্মদ জমিরসহ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। পরিবেশবিধ্বংসী এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে গেলে তাদের নেতৃত্বে আমার ওপর দলবদ্ধ হামলা করা হয়। এ সময় তাকে বিভিন্ন বস্তু দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চকরিয়া উপজেলার ছাত্র প্রতিনিধি মোবারক হোসেন জিহান, শামসুল আলম সাঈদী, সায়েদ হাসান।
তারা বলেন, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে যারা পাহাড় সাবাড় করছে এবং মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে পরিবেশ নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন; এ ঘটনায় একটা অভিযোগ হাতে পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যাত্রী ও ক্রুদের সবাই মারা গেছেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি মেডিকেলের হোস্টেলের ভবনে থাকা পাঁচজন মেডিকেল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দ্য টেলিগ্রাফ ও ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে হতাহতের বিষয়ে এমনটিই বলা হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটিতে ২৪২ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রু রয়েছেন।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি অনেকটা নিচ দিয়ে উড়ছিল, এসময়ে উপরের দিকে উঠতে বারবার চেষ্টা করছিল। এরপর হঠাৎ করে আকাশযানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে এবং বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের কুণ্ডলী বেরিয়ে আসে।
এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আহমেদাবাদ-লন্ডন গ্যাটউইকে পরিচালিত এআই১৭১ বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বোইং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি উড্ডয়ন করার পর অল্প সময়ের মধ্যেই একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে।
একটি অক্ষত বিমানের একটি অংশ ভবনের উপর ঝুলে থাকতে দেখা যায়। আর ধ্বংসাবশেষ থেকে আহত লোকদের অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেওয়ার সময় শহরের উপর ব্যাপক কালো ধোয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।
পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, বিমানটি চিকিৎসকদের একটি হোস্টেলে আঘাত করেছে।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ২১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১১ জন শিশু যাত্রীর মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান ছিলেন।
ব্রিটিশ বিদেশবিষয়ক কার্যালয় জানিয়েছে, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে দুর্ঘটনার সত্যতা যাচাই এবং সংশ্লিষ্টদের সহায়তা দিচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘ভারতের শহর আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে অনেক ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার দৃশ্যগুলো ভীষণ মর্মান্তিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পাচ্ছি এবং এই গভীর উদ্বেগজনক মুহূর্তে আমার চিন্তা যাত্রী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে রয়েছে।’
ভারতের আহমেদাবাদে ২৪২ আরোহী নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এই কঠিন সময়ে ভারতের জনগণ এবং সরকারের প্রতি সহানুভূতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটের দুর্ঘটনায় ২৪২ আরোহীসহ আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য আমি ব্যথিত ও শোকাহত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি। এই কঠিন সময়ে ভারতের জনগণ ও সরকারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ।’
‘আমরা ওই ঘটনার শিকার পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই, যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন। এই কঠিন সময়ে ভুক্তভোগী ও তাদের প্রিয়জনদের জন্য আমাদের সহানুভূতি ও প্রার্থনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণ এবং সরকারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করি এবং যেকোনোভাবে পূর্ণ সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত,’ বলেন অধ্যাপক ইউনুস।
অধ্যাপক ইউনুস বর্তমানে যুক্তরাজ্যে একটি সরকারি সফরে রয়েছেন।
আহমেদাবাদে ২৪২ আরোহী নিয়ে এয়ার ইনডিয়ার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় সবার নিহতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় পুলিশপ্রধান।
বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেওয়ার পরই দুর্ঘটনায় পড়ে।
ওই উড়োজাহাজে ২৩২ জন যাত্রী ও ১০ জন ক্রু ছিলেন বলে ভারতের সিভিল এভিয়েশন দপ্তর জানিয়েছে।
উড্ডয়নের পর একপর্যায়ে আরও উপড়ে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় উড়োজাহাজটি নিচে নেমে আসে এবং বিমানবন্দরের কাছে একটি মেডিকেল হোস্টেলের উপর বিধ্বস্ত হয়। সেখানে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনকারী একটি অবৈধ কারখানা সিলগালা করে বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে কারখানার মালিক আব্দুল আউয়াল (৪৪) কে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ দণ্ডাদেশ দেন।
জানা যায়, কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাউৎকোনা মোড় এলাকায় আব্দুল আউয়াল দীর্ঘদিন ধরে একটি অবৈধ কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করে আসছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে দেখা যায়, কারখানায় প্লাস্টিকের দানা তৈরি করে তা থেকে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করা হচ্ছিল। স্থানটি থেকে পলিথিন, প্লাস্টিকের দানা ও উৎপাদনযন্ত্র জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “এই কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করা হচ্ছিল। তাই আইন অনুযায়ী কারাদণ্ড এবং কারখানা সিলগালা করা হয়েছে।”
অভিযানে কাপাসিয়া থানা পুলিশ সহায়তা করে। পরে দণ্ডিত আব্দুল আউয়ালকে পুলিশের প্রহরায় গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তার জানান, পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের এমন অভিযান চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য