আর মাত্র কদিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আযহা। ত্যাগের মহিমায় পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আর তাই কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বরিশালে বসছে স্থায়ী এবং অস্থায়ী পশুর হাট। বরিশাল জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার মহানগরীসহ বরিশাল জেলায় কোরবানি উপলক্ষে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৭৯টি পশুর হাট। যার মধ্যে বরিশাল সিটিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৩টি অস্থায়ী পশুর হাট। তবে স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে এবার পশুর হাট বসবে ৯৩টি। পুরো বিভাগের ছয় জেলায় পশুর হাট বসছে ৩২৮টি।
হাটগুলোতে কোরবানি যোগ্য এবং মানসম্মত পশু বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিভাগের ছয় জেলায় মোট ১৩৬টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল জেলায় ৩১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। দুটি হাটের জন্য একটি করে টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়া সিটি এলাকার স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে চারটি হাটে কাজ করছে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।
তাছাড়া পশু বিক্রেতা, ক্রেতাদের নিরাপত্তা, মহাসড়কে চাঁদাবাজি রোধসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশ। পাশাপাশি বরিশাল বিভাগজুড়েই নিরাপত্তা জোরদারের টহল ও চেকপোস্ট বসিয়েছে র্যাব-৮।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাট-বাজার শাখার তথ্য অনুযায়ী এবার কোরবানি উপলক্ষে তিনটি অস্থায়ী এবং একটি স্থায়ী হাট বসবে বরিশাল সিটি এলাকায়। এর মধ্যে রূপাতলী এবং কালিজিরা বাজার এলাকায় দুটি, কাগাশুরায় ১টি অস্থায়ী এবং বাঘিয়া এলাকায় একটি স্থায়ী হাট বসছে। ঈদের তিনদিন আগে থেকে ঈদের পূর্বের দিন রাত পর্যন্ত অস্থায়ী হাটগুলোতে পশু বেচা কেনার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের তিনদিন আগে থেকে অস্থায়ী হাট বসার অনুমতি থাকলেও এরই মধ্যে হাটগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। হাটগুলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে পশু। তবে এখন পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের বাইরে থেকে গরু বা খাসি নিয়ে আসা শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন ইজারাদাররা। মঙ্গলবার অথবা বুধবারের মধ্যেই হাটগুলো পশুতে পরিপূর্ণ হবে বলে আশাবাদী তারা।
তবে অন্য জেলা থেকে পশু না আসলেও বরিশালের পশুতেই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এ বছরে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ৩২ হাজার ৬১১টি।
বিভাগের ২৬ হাজার ৫৭৮ জন খামারি ও কৃষকদের কাছে মজুত রয়েছে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫৪ টি। এর মধ্যে বিভাগের ২ লাখ ১০ হাজার ৬৪টি, ৬৭ হাজার ৬৬৪টি বলদ, ৩৮ হাজার ৩১৭টি গাভি, ১ লাখ ১০ হাজার ৪৯টি ছাগল, ১২ হাজার ৩৫টি ভেড়া এবং অন্যান্য ৫৫টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এতে করে চাহিদা মেটানোর পরেও উদ্বৃত্ত থাকবে ১৬ হাজার ৮৪৩টি পশু।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বরিশাল জেলায় কোরবানির পশুর প্রয়োজন ১ লাখ ১২ হাজার ৯৪৭টি, মজুত রয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৭টি, ঝালকাঠি জেলায় ৩১ হাজার ১৯টির বিপরীতে রয়েছে ৩১ হাজার ১১৪টি, পিরোজপুরে ৪১ হাজার ২৫০টির বিপরীতে রয়েছে ৪৬ হাজার ৪৯৭টি, পটুয়াখালীতে ১ লাখ ২৩ হাজার ২১০টির বিপরীতে রয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৪১টি, বরগুনায় ৩২ হাজার ২৩১টির বিপরীতে মজুত রয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫টি, ভোলায় ৯১ হাজার ৯৫৪টি বিপরীতে মজুত রয়েছে ৯২ হাজার ৪৫০টি।
বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ খামারি বেশি লাভ করার আশায় গরু এবং খাসি নিয়ে ছুটছেন ঢাকা, খুলনা এবং চট্টগ্রামে। খামারিরা বলছেন, দুই-তিন বছর ধরে একটি পশু লালন পালন করে কোরবানি যোগ্য করা হয়। কিন্তু বরিশালের হাটগুলোতে কোনবারই ভালো দাম পাননা। তাই একটু ভালো লাভের আশায় ঢাকা, চট্টগ্রাম বা খুলনার হাটগুলোতে পশু বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানির কয়েকদিন বাকি থাকলেও হাটগুলো বেচা কেনা শুরু হয়েছে। তবে এখানো তেমন জমে উঠেনি। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় হাটে তেমন পশু এবং ক্রেতা আসতে শুরু করেনি। তার পরও মোটামুটিভাবে বেচা কেনা চলছে।
তিনি বলেন, আমাদের দপ্তরে জনবলের প্রচুর সংকট রয়েছে। তার মধ্যে থেকেই আমরা কোরবানির হাটগুলোতে সুস্থ, রুষ্টপুষ্ট এবং কোরবানি যোগ্য পশু নিশ্চিত করার জন্য জেলায় ৩১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বিভাগজুড়ে এর সংখ্যা ১৩৬টি। তবে সিটি এলাকার হাটগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে তারা হাটগুলোতে কাজ শুরু করেছে। সংকট থাকায় টিমগুলো ঘুরে ঘুরে হাটগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও জেলার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক লুচিকান্ত হাজং জানিয়েছেন, এবার গোটা বিভাগজুড়েই পশুর হাট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র মহানগরীসহ জেলার ১০টি উপজেলায় তিনদিনের জন্য মোট ৭৯টি অস্থায়ী পশুরহাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৪টি স্থায়ী হাট রয়েছে। সব মিলিয়ে অনুমোদিত ৯৩টি হাট বসবে এ জেলায়।
তিনি বলেন, হাটগুলো পশু, ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে জেলা এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রতিটি হাটেই পুলিশের কন্ট্রল রুম খোলা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ দুপুরে বাসস’কে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় সংঘটিত দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া, এ ঘটনায় ৪ জন রেল কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
বরখাস্ত হওয়া চার রেলকর্মী হলেন— পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকো মাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকো মাস্টার আমিন উল্লাহ, এবং অস্থায়ী গেট কিপার (টিএলআর) মাহবুব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে ওই দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও পাহাড়তলী, চট্টগ্রামের ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে ঢাকা অভিমুখী একটি ট্রেন সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে একটি শিশুসহ তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুতে প্রবেশ করামাত্র অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এ ছাড়াও মোটরসাইকেলস আরও কয়েকটি ছিল যানবাহনে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।
আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকায় নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীজুড়ে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের নামাজ স্বাভাবিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে এবং সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহে যারা নামাজ আদায় করবেন, তাদের নিজস্ব জায়নামাজ আনতে হবে না, কারণ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছুটির মধ্যেও সারাদেশে দায়িত্বে রয়েছে।’
ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের অলিগলিতে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে—আমরা এমন ঘটনাও রোধে কাজ করছি।’
থানায় মামলা করতে না পারার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,‘যদি কোনো কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রী হয়রানির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, আমরা এটির তদন্ত করছি।’
অপরাধী গ্রেপ্তার করার কয়েকদিন পরে বের হয়ে আরও বেশি অপরাধে জড়িয়ে যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেনন, ‘এটা তো আর পুলিশের হাতে না। এটা আদালতের বিষয়। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, দুজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়া পাওয়ার পর আবারও অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমন যদি কেউ অবৈধকাজে জড়িয়ে যায় তাহলে তাকেও ছাড়া হবে না, পুঁটিমাছ কিংবা রুই কাতলা হোক কাউকে ছাড় নেই। আইন সবার জন্য সমান।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার নিরাপত্তা নিয়ে আমি ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট আছি।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধার উপহারের কোরবানির গরু ‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোহাগকে এলাকায় ফিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি ঈদ উদযাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ‘কালো মানিক’ নামের আদরের ষাঁড়টি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন সোহাগ মৃধা। রাজধানীতে পৌঁছানোর পর বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে গরুটি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও বেগম খালেদা জিয়া তা গ্রহণ না করে সোহাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তার পরিবারের জন্য ঈদের বিশেষ উপহারও পাঠান।
ডা. জাহিদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোরবানির পশু উপহার দেওয়ার জন্য সোহাগ মৃধা ও তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দলীয় চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে তাকে ঈদের উপহারও পাঠানো হয়েছে।
সোহাগ মৃধার পরিবারের সদস্যরা জানান, কালো মানিক নামের ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কুচকুচে কালো রঙের হওয়ায় স্থানীয়রা আদর করে নাম রেখেছেন ‘কালো মানিক’। ষাঁড়টির জন্য ১০ লাখ টাকা দাম উঠলেও সোহাগ তা বিক্রি করেননি।
সোহাগ মৃধা জানান, তিনি গণতন্ত্রের মাকে (বেগম খালেদা জিয়া) এই গরুটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে এক কৃষকের গরু উপহার দেন। ওই ঘটনা দেখে তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তখনই তাঁর মনে ইচ্ছা জাগে, সুযোগ পেলে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিনিও একটি গরু উপহার দেবেন।
২০১৮ সালের শেষ দিকে স্থানীয় চৈতা বাজার থেকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কেনেন সোহাগ। সপ্তাহ না যেতেই গাভিটি একটি বাছুর প্রসব করে। পরে গাভিটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাছুরটি পরিবারের সবাই মিলে ছয় বছর ধরে দেশীয় খাবার আর যত্ন দিয়ে লালন-পালন করেন। এই বাছুরই আজকের বিশালদেহী ‘কালো মানিক’।
বিএনপির আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোহাগ মৃধা একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি কর্মী। পরিবারের সহায়তায় ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিনি দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করেছেন।
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, ‘ওর মন চাইছে, তাই ও উপহার দিতে চায়। আমরা খুশি। ওর বাবা নেই। সামান্য জমি চাষ করেই সংসার চালায়। ছোটবেলা থেকেই ও বিএনপিকে ভালোবাসে।’
সোহাগের স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলি বলেন, ‘কালো মানিক আমার ছোট ছেলের বয়সী। দুজনকেই সমানভাবে স্নেহ-ভালোবাসায় লালন-পালন করেছি। ছেলের বাবার ইচ্ছা ছিল প্রিয় নেত্রীকে এটি উপহার দেবে, তাতে আমরাও খুশি।’
পদ্মা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ টোল আদায়ের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গত বছরের একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ টাকার টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়।
ঈদুল আজহার ১০ দিনের লম্বা ছুটির প্রথম দিনেই এই রেকর্ড হয়েছে। তবে ছুটি ছাড়াই আগের দিন বুধবার (৪ জুন) পদ্মা সেতুতে একদিনে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকারও বেশি টোল আদায় করা হয়েছে। এদিন ৩৭ হাজার ৪৬৫ গাড়ি পারাপার হয়েছে সেতুটি দিয়ে।
বৃহস্পতিবার মাওয়া প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে ৩৫ হাজার ৯৮৫টি যান। এতে মাওয়ায় টোল প্লাজায় টোল আদায় হয় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা।
আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ১৬ হাজার ৫০২টি যান। এসব যানবাহন থেকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানান আলতাফ।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৬ জুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু তিন বছর পূর্তি। এ পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি । এই সময়ে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ২১৮ যান পারাপার হয়েছে।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর সীমান্তে ঈদ-উল আযহাকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তায় পুশ-ইন, গবাদি পশু চোরাচালান ও পশুর চামড়া পাচার রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার প্রাগপুর বিজিবি ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, ৪৭ বিজিবি ব্যাটায়িলনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় খামারিদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিজিবি ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালান রোধে অতিরিক্ত টহল, অস্থায়ী চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও বিশেষ অপারেশন ব্যবস্থা চালু করেছে।
একইভাবে, ঈদের পর কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় স্থানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম মোতায়েন করে চামড়ার পাচার রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে যৌথ অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধেও বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিপক্ষ বিএসএফ’র সাথে পতাকা বৈঠক, লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে ।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের জনগণকে একটি নিরাপদ ও স্বস্থিদায়ক ঈদ উদযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশেরও বেশি।
উপদেষ্টা তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে জানান, ‘মে মাসে বাংলাদেশ থেকে ৪৭৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।’
আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন বা সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ছিলো চার হাজার ৮৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বাড়ার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও তুলে ধরেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
মন্তব্য