কিছুদিন আগেই কর্ণাটকে শো করতে গিয়ে কন্নড় ভাষা নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন সংগীতশিল্পী সোনু নিগম। জল গড়ায় কোর্ট পর্যন্ত। সেই ইস্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই কর্ণাটকের এসবিআই কর্মীর কন্নড় বলায় আপত্তির ঘটনা নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আবারও ভাষা নিয়ে উত্তাল কর্ণাটক। এবার এর রোষানলে পড়েছেন দক্ষিণী সিনেমার নায়িকা তামান্না ভাটিয়া। সরকারি সাবানের বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে দক্ষিণী এ সুন্দরীকে বেছে নেওয়ায় বিক্ষুদ্ধ হয়েছেন কর্ণাটক রাজ্যের বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিক্ষোভের পাহাড়। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হচ্ছে সিদ্দারামাইয়ার সরকারকে। প্রতিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিতর্কের কারণে শেষমেশ মুখ খুলতে বাধ্য হলেন কর্ণাটকের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী এমবি পাতিল।
সম্প্রতি তামান্না ভাটিয়ার নাম কর্ণাটকের সরকারি সাবান ‘মাইসোর স্যান্ডেলর বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকেই প্রতিবাদের ঝড়। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বাসিন্দাদের দাবি, কন্নড় চলচ্চিত্রের কোনো নায়িকাকে না বেছে কেন তামান্নাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হলো? প্রশ্ন তুলে একই কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছে কর্ণাটকবাসীর একাংশ। অনেকে আবার কন্নড় অভিনেত্রী রুক্মিণী বসন্তের নামও প্রস্তাব করেছেন। জানা গেছে, ‘মাইসোর স্যান্ডেল’ সংস্থার সঙ্গে দুবছরের চুক্তি হয়েছে তামান্নার। যার জন্য মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পাচ্ছেন তিনি।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ৬.২০ কোটি রুপিতে চুক্তিবদ্ধ হন তামান্না। তবে এ প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্তরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণী সুন্দরীকে নির্বাচন করলেও সেটি ভালো মনে নেয়নি কর্ণাটকবাসীদের একাংশ। এরপর প্রতিবাদের আগুন তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে। বিপাকে পড়ে সবশেষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নামতে হয় মন্ত্রী এমবি পাতিলকে। তার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে তিনি তামান্না ভাটিয়াকে বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পাতিলের ভাষ্য, কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি আমাদের সম্পুর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। এমনকি কিছু কন্নড় সিনেমা তো বলিউড সিনেমার ব্যবসাকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে। মাইসোর স্যান্ডেল কর্ণাটকে খুব জনপ্রিয় এক প্রসাধনী সংস্থা। এবার সেই জায়গাটা আরও পোক্ত করতে হবে। ‘তবে এবার মাইসোর স্যান্ডেলের ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল শনিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস এক কথার মানুষ। তিনি একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। তিনি সেই সময়সীমার বাইরে যাবেন না। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে’।
তিনি বলেন, সব দলই জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে তাদের আস্থা আছে। তার অধীনেই সবাই নির্বাচন চেয়েছে এবং ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন ড. ইউনূস।
প্রেস সচিব বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে জোর দিয়েছে এনসিপি। আওয়ামী লীগের আমলের সব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা চেয়েছে তারা। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নয়, তাকে সমর্থন জানিয়েছে।
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।
শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আলোচনায় তিনটি বিষয়—সংস্কার প্রক্রিয়া, বিচারিক কার্যক্রম ও নির্বাচন—বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আর কোনো পথ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ চাই।’
বিএনপি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে আমীর খসরু বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কীভাবে ও কত দ্রুত আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারি। সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই।’
তিনি জানান, দেশের মানুষ গত ১৬ বছর ধরে যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তারা এখন ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচনের সুযোগ চায়।
অন্যদিকে, ড. মঈন খান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তরই এখন একমাত্র সমাধান। ১৫ বছরের স্বৈরতন্ত্র থেকে ৫ আগস্ট মুক্তির পর জনগণ নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এই রূপান্তর থেমে গেলে গণতন্ত্রও থেমে যাবে।’
সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধানের বক্তব্য এবং রাজনৈতিক দলগুলোর লাগাতার কর্মসূচি ও চাপের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন উঠেছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় দিনদিন বেড়েই চলেছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। মাদকের নীল দংশন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের শত চেষ্টা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক বিরোধী র্যালী সেমিনার কোনো কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। ৫ই আগষ্টের আগে প্রশাসনের তৎপরতা থাকায় উপজেলায় মাদকের ভয়াবহতা কিছুটা কম থাকলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে মাদকের বিস্তার।
মাদকের এই ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছেন উপজেলার অভিভাবকরা।
কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাদক কারবারীরা মাদকের কেনাবেচা করে থাকে। এর মধ্যে পৌর শহরেই রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদকের স্পট। পৌর ৬নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা রোড, আঃ জঃ কলেজ গেইট ও তৎসংলগ্ন এলাকা, উত্তর বাসষ্টান্ড, দক্ষিণ বাসষ্টান্ড, পঞ্চায়েত বাড়ির চৌরাস্তা, পৌর ৯নং ওয়ার্ডের বিএনপি বাজার, পৌর ১নং ওয়ার্ডের জয়া সড়ক, পৌর ৪নং ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন কমিশনারের বাড়ির পাশে রয়েছে ২টি স্পট। এছাড়া বড়মানিকা ইউনিয়নের মানিকার হাট বাজারের পাশে একটি স্পট, কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা গ্রাম, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজার, টবগী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা, নতুন ও পুরান হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকা, হাসাননগর ইউনিয়নের খাসমহল, কাজীরহাট সহ এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি স্পট রয়েছে।
জানা যায়, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের প্রানকেন্দ্র কুঞ্জেরহাট ও এর পাশে ফুলকাচিয়ায় রয়েছে ইয়াবা ও গাজার সবচেয়ে বড়স্পট আর এসব স্পটের নিয়ন্ত্রক ওই এলাকার প্রভাবশালী জ্বীন প্রতারকরা। এদের রয়েছে বেশ শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাত ধরে মাদকের চালান পৌছে যায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাতে। সুত্রটি জানায় এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে অটোরিকশা ড্রাইভার, মটরসাইকেল ড্রাইভার, এরা এই পেশায় কাজ করলেও এরা মাদক বহন করে নিরাপদে কাষ্টমারের কাছে মাদকের চালান পৌছে দেয়।
আরও জানা যায়, ২০২৪ সালের (২২ডিসেম্বর) টবগী ইউনিয়নের হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকার মাদক বিক্রেতা ইউসুফ কে স্থানীয় জনতা মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে। একইদিনে টবগী ইউনিয়নের বেড়িবাধ সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে ঐ এলাকার এক মাদক বিক্রেতা ইয়াবা ডেলিভারি দিতে আসলে স্থানীয় লোকজন দাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির লোকজনের সহায়তায় পালিয়ে যায়।
এসব জীবন বিধ্বংসী ক্ষতিকারক দ্রব্য সেবনের ফলে যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। এরই পরিণাম স্বরূপ ছেলেমেয়ের হাতে মা-বাবা খুন, মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পেড়ে বাবা- মায়ের কাছে টাকা চেয়ে টাকা না পেয়ে অভিমান করে আত্নহত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি এখনকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা।
পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশের টহল জোরদার করে মাদক বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে যুবসমাজকে মাদক থেকে দুরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার সচেতন মহল।
আজ শনিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের এক অনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব (নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার) বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগর এলাকায় পরিকল্পনা কমিশনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এসব দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবি দাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার কাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এদেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে।
শত বাধার মাঝেও গোষ্ঠীস্বার্থকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার তার ওপর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয়, তবে সরকার সকল কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে। কিন্তু সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচার প্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
শুক্রবার (২৩ মে) সকাল ৮টা থেকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। শনিবার (২৪ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৬৭০ জনে। আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৯ জনের।
এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ০ দশমিক ০০ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৯ জনে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ঈদের আগেই বাজারে ১ হাজার, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট আসছে। তবে টাকায় কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্মী-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অডিটোরিয়ামে ক্রেডিট এনহেন্সমেন্ট স্কিমের (সিইএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, ‘আমাদের টাকা ছাপানো শুরু হয়ে গেছে। তিনটা নোট আসছে শিগগিরই। সেটা হচ্ছে ১ হাজার টাকার নোট, ৫০ টাকা ও ২০ টাকা। এই নতুন নোট ঈদের আগেই আমরা পাবো। এখানে কোন ব্যক্তির ছবি থাকবে না। নতুন নোটে থাকবে দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা।’
এসময় বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ায় তা ফেরত পাঠাতে চাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলেই দেখলাম ব্রিটিশ ক্রাইম এজেন্সি কিছু সম্পদ ফ্রিজ করেছে। পাচার করা অর্থ ফ্রিজ করায় অর্থ ফেরত আনার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। পাচারের টাকা ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ফাইন্যান্সিং অ্যান্ড ক্রেডিট এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এই স্কিমের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সহজ হবে, যা এতদিন ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের (এমএফআই) পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন ছিল।
গভর্নর বলেন, ‘স্কিমের আওতায় পিকেএসএফ অংশীদার এমএফআইগুলোকে ২৪০ কোটি টাকার রিজার্ভ তহবিল ভিত্তিতে ব্যাংক ঋণ গ্যারান্টি দেবে। ঋণের গ্যারান্টি অনুযায়ী এককালীন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমিশন আদায় করা হবে। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া সহজ হবে।
সরকার ও এডিবির সহায়তায় এই পাইলট প্রোগ্রামে আজ পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক ও একটি নন ব্যাংকিং ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি। আর্থিক সাক্ষরতা বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে প্রতিটি স্কুলের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।
তিনি বলেন, মাইক্রো ফাইন্যান্স সেক্টর যদি অটোমেটেড হয়ে যায়, ইফিশিয়েন্টলি কাজ করে তাহলে পরিচালন ব্যয় অনেক কমে যায়। যারা দক্ষ হবে তারাই টিকে থাকবে এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে। আমরা রেগুলেটরি ইন্টারভেনশন করবো না।
দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসছেন। বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য়।
এর আগে একনেক বৈঠক শেষে উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনির্ধারিত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠকে বসবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সন্ধ্যা ৭টার দিকে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছেন দলের এক স্থায়ী কমিটির সদস্য। শুক্রবার রাতে তিনি জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও পৃথক বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিএনপির ওই নেতা জানান, রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের লক্ষ্যে তারা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দেশকে নতুন সংকটে ফেলবে বলে তাদের মত।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রবিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারা তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবেন এবং দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচনের একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে অনুরোধ জানাবেন।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এক বেসরকারি টেলিভিশনে বলেন, ‘আমরা সোমবার থেকেই সময় চেয়ে আসছি, কিন্তু এখনো তা দেওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, কেবল কিছু বিতর্কিত উপদেষ্টার অপসারণ চেয়েছি। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছি। তিনি যদি রোডম্যাপ না দিয়ে পদত্যাগ করতে চান, সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত—কিন্তু আমরা পদত্যাগ চাইনি।’
বৃহস্পতিবার বিএনপি হুশিয়ারি দিয়ে জানায়, নির্বাচনের রোডম্যাপ অবিলম্বে না এলে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা পুনর্বিবেচনা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নিরপেক্ষতা ও সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে সদ্য গঠিত একটি রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ কয়েকজন বিতর্কিত উপদেষ্টাকে সরাতে হবে।
এদিকে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যে হতাশ হয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন।
মন্তব্য