বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, দেশে একটি স্থিতিশীল ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকার স্বচ্ছতা ও সংস্কারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিনিয়োগকারীদের সমস্যাগুলো বুঝি এবং তা সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। স্বচ্ছতা ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবসায়ীদের সক্রিয় ভূমিকা ও পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য একটি স্থিতিশীল ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা। যেটি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করবে।’
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে জাপান-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক করিডরের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক ব্রিফিংয়ে আশিক চৌধুরী এসব কথা বলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিডা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা), জেট্রো এবং জাপান দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা, উভয় দেশের ব্যবসায়ী নেতা এবং বিনিয়োগকারীরা একত্রিত হন।
বিশ্ব বাণিজ্যের গতিশীলতার পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার প্রতি ক্রমবর্ধমান আস্থার উপর জোর দেয় এবং নতুন সুযোগ উন্মোচনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশীদারদের প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা থেকে শুরু করে সংস্কার, বিনিয়োগ পরিবেশ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে উভয় পক্ষের নেতারা একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শেয়ার করেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৩০০ টিরও বেশি জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, যা এই অংশীদারিত্বকে আরও বিস্তৃত ও টেকসই করার সুযোগ তৈরি করছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, একজন বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার হিসেবে জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহায়তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলমান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্টের (ইপিএ) আলোচনায় আমাদের যৌথ লক্ষ্যগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। এতে কৃষি, মাছ চাষ, অটোমোবাইল ও টেক্সটাইল খাতে বড় ধরনের সম্ভাবনার দিকগুলোও উঠে আসছে।
জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে কার্যরত জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো এখানকার বাজারে তাদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এটি বাংলাদেশের প্রতি জাপানের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।
বাংলাদেশে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদ বলেন, গত কয়েক বছরে কিছু অগ্রগতি হলেও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। জাইকা, জেট্রো এবং অন্য সহযোগীরা যৌথভাবে বাংলাদেশে একাধিক কৌশলগত উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও এমআরটির মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজীকরণের উদ্যোগ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অবিচল বন্ধু হয়ে পাশে থেকেছে জাপান। আমাদের অংশীদারিত্ব কেবল নীতিনির্ভর নয়, এটি গভীর মানবিক বন্ধনের উপর প্রতিষ্ঠিত। দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোতে এখন ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। আর সামগ্রিক পরিস্থিতিও আগের চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল। প্রয়োজনীয় সংস্কার আর সম্মিলিত উদ্যোগ থাকলে, বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে রূপ নিতে পারে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড জাপানের সিইও ইউসুকে আসাই বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পরিবর্তন হলেও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক করিডরের প্রতি অঙ্গীকার এবং দুই দেশের নিঃশর্ত বন্ধুত্ব এখনো অটুট আছে। জাপান বিশ্বের অন্যতম গ্লোবালাইজড ইকোনমি। আমাদের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রস্তুত আছে। ইতোমধ্যে ৩০০টিরও বেশি জাপানি কোম্পানি এখানে কাজ করছে। এখন বিনিয়োগ বাড়িয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে আমাদের অবদান বাড়ানোর সময়।
এক সময় গ্রাম বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল মৃৎশিল্প। প্রতিটি ঘরের দৈনন্দিন প্রয়োজনে ব্যবহৃত হত মাটির তৈরি থালা-বাসন, হাঁড়ি-পাতিল, কলসি। বিভিন্ন উৎসবে, পার্বণে শোভা পেত নানা ধরনের মৃৎশিল্পের কারুকার্য। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিক উপাদানের সহজলভ্যতা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি উত্তরের জেলা পঞ্চগড় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিলুপ্তির পথে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
মিজানুর রহমান, পঞ্চগড় থেকে জানান: পঞ্চগড়ের মালিপাড়া, কুমারপাড়া একসময় কর্মব্যস্ত থাকত। মাটি খুঁড়ে আনা, তা দিয়ে নানা আকার দেওয়া, রোদে শুকানো এবং আগুনে পোড়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকত পুরো গ্রাম। তৈরি হতো নানা ধরনের তৈজসপত্র, যা শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, যেত দূর-দূরান্তের মেলায়ও। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টেইনলেস স্টিলের পণ্যের দাপটে মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদা কমে গেছে।
মৃৎশিল্পী শ্রী পানেস্বর পাল জানান, মাটি সংগ্রহ করা এখন আগের মতো সহজ নয়। প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়েছে, কিন্তু আমাদের তৈরি পণ্যের ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না। ফলে, অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য জীবিকা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। নতুন প্রজন্মও এই কঠিন পেশায় আসতে আগ্রহী নয়।
মালিপাড়ার আরেক বিক্রয়কর্মী বলেন, আগে প্রতিদিন ৭,০০০/৮,০০০ টাকার মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করতাম। যা দিয়ে নিজেরা চলতাম পরিবার চালাতাম সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ চলতো, কিন্তু এখন ২,০০০/৩,০০০ টাকার ও কম বিক্রি হয়। যা দিয়ে চলা একেবারেই মুশকিল হয়ে পরেছে।
তিনি আরো বলেন, আগে আমাদের তৈরি মাটির হাঁড়ি-পাতিল, সানকি, কলসির খুব চাহিদা ছিল। এখন আর তেমন বিক্রি হয় না। মানুষ এখন প্লাস্টিকের জিনিস বেশি ব্যবহার করে। আমাদের যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃৎশিল্প শুধু একটি শিল্প নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহায়তা এবং তাদের তৈরি পণ্যের বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করতে পারে। ডিজাইনের আধুনিকীকরণ এবং নতুন প্রজন্মের আগ্রহ সৃষ্টির মাধ্যমেও এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। আর যদি সময় মতো উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তবে হয়তো খুব শিগগিরিই গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প কেবলই স্মৃতি হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় এককালে মূৎশিল্পের সুনাম ছিল কিন্ত নানা প্রতিকূলতার বর্তমানে নবীনগরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিপন্ন হতে চলেছে।এ এ উপজেলার ভোলাচং, নারায়ণপুর, ভেলানগর, ইব্রাহিমপুর, শ্রীরামপুর, বিটঘর প্রভৃতি গ্রাম এক সময় মৃৎশিল্পের প্রাণ কেন্দ্র ছিল। এ সব গ্রামে ন্যূনতম তিন হাজার মুৎশিল্পী রাত দিন কাজ করত। তারা সুনিপুণ ভাবে হাড়ি, পাতিল, বাসন, ডাকনা, কলকে ও কলস, হরিণ, হাতি, গরু, জলকাদা, মটকা, মুক্তি, বসার- পিড়ি, ঘোড়া, বাঘ, ফুলদানী, টব, ব্যাংক, প্রভৃতি তৈরি করত। তাদের তৈরি পুতুল শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় নয় কুমিল্লা, নরসিংদী নারায়ণগঞ্জ প্রভৃতি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সরবরাহ হতো, কিন্তু বর্তমানে নানা প্রতিকূলতার নবীনগরের মুৎশিল্পীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এখন মাত্র শ'খানেক মৃৎশিল্পী তাদের পেশা কোনো মতে আঁকড়ে ধরে আছে। তাদের পেশার দৈন্য দশায় সংসার জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে।
মৃৎশিল্পী জয় পাল জানান- ‘মৃৎশিল্প তৈরির উপকরণের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়। ফলে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পে আমাদের ঋণের বোঝা ভারী হয়ে গেছে’। নানা প্রতিকূলতায় অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। তাই নবীনগর উপজেলার মৃৎশিল্প বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে ১ বৈশাখ উপলক্ষে কয়েক জন মৃৎশিল্পী ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়েক বছর আগে নবীনগর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ও স্থানীয় এনজিও হোপ এর সহযোগিতায় অত্র এলাকার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য স্থানীয় কারিগরদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যদিও এর প্রতিফলন খুব একটা চোখে পড়েনি। ভবিষ্যতে যদি সরকারিভাবে তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ করানো ও সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হয় তাহলে হয়তো এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে হানা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম। এই দুটি রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি নিজেদের দখলে নিতে নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে না আসতে পারে সেক্ষেত্রে এই দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে লড়াই হবে বলে মনে করছেন এ আসনের ভোটাররা। তবে যদি এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের কোনো শীর্ষ নেতা সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে বদলে যেতে পারে ভোটের এই হিসাব-নিকাশ।
দেশ স্বাধীনের পরে এই আসনটি সবসময়ই আওয়ামী লীগ তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। ১৯৮৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। তখন তিনি দেশের ৫টি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৫টি আসনে নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি এই আসনটি ছেড়ে দেন। তখন উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ নৌকা প্রতীককে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে শেখ হাসিনা টানা আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এসব নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিপক্ষে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তারা সবাই তাদের জামানাত হারিয়েছেন।
এই সংসদীয় আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হলেও ৫ আগস্টে বদলে গেছে এখানকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। পতিত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, কয়েকদিন কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এলাকায় থেকে তাদের দলীয় প্রধানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন শুরু করে। এর কিছুদিন পরে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করলে মামলা-হামলার ভয়ে এ সব নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। বর্তমানে এ দুটি উপজেলার অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা জেলে এবং আত্মগোপনে রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াত ইসলাম তাদের নির্বাচনী মাঠ গোছাতে তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করে উপজেলা ও পৌর সম্মেলন করেছেন। এসব সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সে কমিটিগুলোর নেতারা তাদের নির্বাচনী মাঠ তৈরির জন্য পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে বসে নাই বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের নেতারা।
তারা তাদের শক্তি সমর্থন জানান দিতে বিভিন্ন সময়ে শোডাউনসহ সভা সমাবেশ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে এই নির্বাচনী আসনে জামায়াত ইসলামের পক্ষ থেকে প্রফেসর রেজাউল করিমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তার এই ঘোষণার পরে জাতীয় থেকে শুরু করে সামাজিক সব অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে বসে নেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী। তিনি কেন্দ্র এবং নিজ নির্বাচনী এলাকায় সমান তালে সময় দিচ্ছেন। কয়েকদিন পরপর দলের এক একটি সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে মতবিনিময় সভা করছেন। বিভিন্ন এলাকার সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেকে জানান দিচ্ছেন। এই আসন থেকে তিনি এর আগে ২০০৮ এবং ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার বিপক্ষে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তবে এই দুটি নির্বাচনে তিনি জামানাত নিয়ে ঘরে ফিরতে পারেননি। তবে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এস এম জিলানীর প্রতিটি সভাসমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
শুধু বিএনপি ও জামায়াতই নয়। এ আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী শাসনন্ত্র আন্দোলন, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্বল্পপরিসরে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তেমন কোনো কার্যক্রম নজরে আসেনি এ আসনের ভোটারদের। কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়ায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কাজ চলছে বলে জানাগেছে।
গণঅধিকার পরিষদের কোটালীপাড়া উপজেলার আহ্বায়ক আবুল বাশার দাড়িয়া বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে গণঅধিকারে কোনো প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে আমারা নির্বাচনকে সামনে রেখে গণসংযোগ শুরু করেছি।
জনগণের কাছে আমাদের দলের নীতি আদর্শ নিয়ে লিফলেট বিতরণ করছি। খুব শীঘ্রই আমরা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন করব। দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তার পক্ষে কাজ করব।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত দেশটির সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে দামেস্কে অবস্থিত প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের কাছেও হামলা চালানো হয়েছে। বুধবার (১৬ জুলাই) লাইভ প্রতিবেদনে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা দামেস্কে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের প্রবেশপথে বোমা হামলা চালিয়েছে। রাজধানীতে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পরপরই ইসরায়েলি বাহিনীর এই বিবৃতি আসে।
ইসরায়েলি বাহিনী পৃথকভাবে জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার দক্ষিণে ড্রুজ-সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর সুওয়াইদায় আক্রমণ করছে।
এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, শহরটিকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ড্রোনগুলো হামলা চালিয়েছে, যার ফলে বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও আজ সুয়ায়দায় সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি এই হামলার ঘটনা ঘটল।
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের দিন থেকেই ইসরায়েল ইতোমধ্যেই সিরিয়ার সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দিয়েছে। এর ফলে দামেস্কে বিশাল হামলা সত্ত্বেও সিরিয়ার সামরিক বাহিনী কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখাতে পারছে না।
এর আগে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সুইদায় দেশটির সরকারি বাহিনীর ওপর টানা দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই হামলা চালিয়েছে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে অসামরিক এলাকা হিসেবে বজায় রাখার এবং সেখানে বসবাসরত সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষার লক্ষ্যেই।
গত সপ্তাহ থেকেই সুইদায় দ্রুজ মিলিশিয়া ও সুন্নি বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বহু প্রাণহানি ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সেখানে হস্তক্ষেপ করলে তাদের সঙ্গে দ্রুজদেরও সংঘর্ষ শুরু হয়।
এই উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার ইসরায়েল প্রথম দফা হামলা চালায়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফা হামলায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনাস্থল থেকে রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, তারা ড্রোনের শব্দ ও অন্তত চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। একপর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ট্যাংক টেনে নিতে দেখা গেছে। রাস্তায় পড়ে ছিল তিনটি মৃতদেহও।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় গুলি ছোড়ার শব্দ ও ধ্বংসের চিত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
সিরিয়ার বর্তমান অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে গিয়ে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত নানা চাপে পড়েছেন। সাম্প্রতিক এই সংঘাত দেশটির পুরনো সাম্প্রদায়িক বিভাজন এবং ইসলামপন্থিদের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি সংখ্যালঘুদের অবিশ্বাসকেই নতুন করে সামনে এনেছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, 'সুইদায় ইসরায়েলের এই হামলা ও তার পরিণতির সম্পূর্ণ দায় তাদেরই নিতে হবে।' তারা সকল নাগরিক, বিশেষ করে দ্রুজ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরায়েলি হামলায় সিরীয় সেনা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তর জানিয়েছে, কেউ যদি এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনো অপরাধ করে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত টম বারাক বলেন, 'শান্তি ও সংহতির লক্ষ্যে' সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানায়, ওয়াশিংটন ইসরায়েলকে সিরিয়ায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানানো হয়, ইসরায়েল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে হামলা বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছে।
তবে এটিই প্রথম নয়—এর আগেও ইসরায়েল নিজেদের সীমান্ত রক্ষা এবং দ্রুজদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অজুহাতে সিরিয়ায় বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে।
সিরিয়ার প্রভাবশালী দ্রুজ নেতা শেখ হিকমত আল-হাজরি এক বিবৃতিতে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে দ্রুজ যোদ্ধাদের ‘বর্বর হামলা’ প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
এই ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সেনাবাহিনীকে সুইদায় সিরীয় সরকারি বাহিনীর অবস্থানে এবং তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রভাণ্ডারে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন।
তারা বলেন, 'ইসরায়েলের দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সিরিয়ার দ্রুজদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। আমরা তাদের রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সীমান্ত অঞ্চলের অসামরিকীকরণ নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব।'
গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ‘জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।
বুধবার (১৬ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা লিখেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানগণ।’
এর আগে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে পর দিন বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তিনি ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় তিনি নিজে ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ নামে একটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে ছাত্র জনতার সর্বশেষ বিজয় না আসা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তার সঙ্গী সাথীদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এখনো অনেকেই সেই করুণ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তার সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে এ কথা বলেন।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন,অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করছে। শুধু এই বর্ষপূর্তি নয়, সারা জীবন- বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বাংলাদেশের মানুষ ততদিন এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানান। পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা এবং তাদের কর্মসংস্থান ও জীবন মান উন্নয়নের জন্য সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, তিনি ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিজয় হাতে না আসা পর্যন্ত সর্বক্ষণ মাঠে ছিলেন। তিনি দেখেছেন- ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তাদের বাবা-মায়েরা কিভাবে সমভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।
ফরিদা আখতার বলেন, আন্দোলনের মাঝামাঝি এক পর্যায়ে এমন হয়েছিল যে, তখন আমাদের নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা একে অপরকে ফোন করে কথা বলতাম, সারারাত অস্থিরতায় ঘুমাতে পারতামনা। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলামনা। চারদিকে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানূষের উপর অত্যচার নির্যাতন, গুলি, ছাত্রলীগের হামলা। মানে এমন একটা নিষ্ঠুরতার চিত্র দেখছিলাম কিন্তু কিছু করাও যাচ্ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমে অনেক কিছু করার কথা ভাবছিলাম কিন্তু তাতেও অনেক রকম বাধা ছিল। আমরা শেষে কয়েকজন নারী মিলে একটা ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ নাম দিয়ে একটা প্লাটফর্মের মতো করি। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, নারী আন্দোলন কর্মী, শ্রমিক নেত্রীরা এসে জড়ো হতে শুরু করলেন। এক পর্যায়ে আমরা ভাবলাম, একটা প্রেস কনফারেন্স করব। তখন আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। এরপর আমরা ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ এর পক্ষ থেকে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটা প্রেস কনফারেন্স করি। প্রেস কনফারেন্সে আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরি। তখন আমরা শুধু একটা কথায় বলেছি যে, চারিদিকে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এটা নির্মম নিপীড়ন। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর নিপীড়ন দেখে জুলাইয়ের শেষ দিকে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠছিলাম। দেশের মানুষের সাথে আমরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠছিলাম। আমরা ধরে নিয়েছি নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমাদেও মাঠে নামতে হবে। আমাদের উপর ঝড়-ঝাপটা যা আসুক,সেটা মাথায় নিয়ে আমরা রাস্তায় অবস্থান নেব। এরমধ্যে শুনলাম হাইকোর্টের সামনে অনেকেই জড়ো হচ্ছে। তখন আমরা প্রেস কনফারেন্স করে রিপোর্টারস ইউনিটি থেকে বের হয়ে প্রেস ক্লাবের দিকে এগুচ্ছি। সেখানে পুলিশ আমাদের আটকিয়ে দেয়।
পুলিশের বাধায় আমরা আর হাইকোর্টের দিকে যেতে পারলাম না। তখন দুপুর প্রায় ১২ টা। পুরুষ পুলিশের সাথে আমরা যখন সামনে এগুবার জন্য তর্ক করছি, এমন সময় আমাদেরকে মহিলঅ পুলিশ এসে ঘিরে ফেললো। আমাদের সামনে এগুতে না দিয়ে পুলিশ বললো, ওদিকে গোলাগুলি হবে যেতে পারবেননা। পরে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পুলিশের বাধায় আমরা ফিরে আসলাম।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের শেষের দিকে আমরা শাহবাগে জড়ো হওয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থেকে শাহবাগে দিকে আসতে থাকি। কিন্তু সেখানে দেখি, একদিকে পুলিশ অন্যদিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের উছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। ফলে আমরা শাহবাগে অবস্থানের চেষ্টা করেও পারলাম না। ওইদিন দুপুরে আমরা মোহাম্মদপুরে সাত মসজিদ রোডে একত্রিত হয়ে সমাবেশ করলাম। উন্মুক্ত রাস্তার উপরে আমাদের কর্মী সমর্থকরা মুহুর্মুহু শ্লোগানে মুখরিত করে তুললো। আমরা সমাবেশে বক্তব্য দিলাম। এ সময় মহিলা যুবলীগের একদল উছৃংখল নারী কর্মী মিছিল নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করলো। আমরা তখন জীবনের নিরাপত্তায় শঙ্কিত হয়ে কোনমতে পাশের একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নিলাম। সেখানেও তারা আমাদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ এবং যুব মহিলালীগ কর্মীদের যৌথ হামলায় আমাদের অনেক কর্মী সেদিন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এত কিছুর পরও আমাদের আন্দোলন দমাতে পারেনি স্বৈরাচারী সরকারের পেটোয়া বাহিনী।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা স্মরণ করে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সাতমসজিদ রোডের সেই ঘটনায় আমাদের নারী নেত্রী ও কর্মীরা পুলিশের পাশাপাশি যুবলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলায় সবচেয়ে বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যেই ভবনে আমরা আশ্রয় নিতে গিয়েছিলাম, পুলিশ ছাত্রলীগের যৌথ হামলা দেখে সেই ভবন এবং আশপাশের ভবনগুলোর সিকিউরিটি গার্ডরা ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে গেইট বন্ধ করে দিলো। ফলে আমাদের অনেক কর্মি ভবনগুলোতে আশ্রয় নিতে পারেনি। যারা একটু ঢুকতে দেরি করেছিল তাদের কয়েকজন পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা অনেকক্ষণ ভবনগুলোতে আটকে থাকার পর আস্তে আস্তে যার যার বাসার দিকে চলে যাই।
উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আর তারপর আমরা একদিন সাত মসজিদ রোডে দাঁড়াইছি। সেদিন আবার খুবই বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু সবাই ওখানে দাঁড়িয়ে গান গাইলাম আমরা। ছেলে মেয়েরা এসে অভিনয় করছিল বৃষ্টিতে ভিজে।
উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমরা আরেকদিন শাহবাগে গিয়েছি। সেখানে দেখি ছেলে মেয়েরা পোস্টার লিখছে। আমাদেরকে দেখার পর তারা বললো আমাদের পাশে বসেন। আমরা যেহেতু একটু বয়স্ক, তারা আমাদের কষ্ট হচ্ছে সেটা বুঝতে পারলো। তাই আমাদের কষ্ট লাঘবের জন্য তারা বারবার বলছিল আপনারা বসেন। আমরা তাদে পাশে বসতেই ওরা খুশি হলো। আমরা আন্দোলনরত ছেলে মেয়েদের বললাম, তোমরা টেনশন করো না। তোমাদের জন্যই তো আমরা আসছি। তোমাদের বিজয় হবেই।
সেদিন পিজি হাসপাতালের ভিতর থেকে আগুন বেরোচ্ছে দেখে খবর নিলাম। ওখানে নাকি কয়েকটা গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্র বা সাধারণ জনগণ, রিক্সাওয়ালা, হকার শ্রমিক সত্যি সত্যি তারা এই আন্দোলনে মাঠে মাটি কামড় দিয়ে পড়েছিল। আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তাদের কষ্টের সেই দৃশ্য আমরা চোখে দেখেছি।
তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় আমাদের একমাত্র বাহন ছিল রিক্সা বা সিএনজি। আমরা রিকশায় বসে তাদের কথা শুনতাম। রিক্সাওয়ালার মাধ্যমে বোঝা যেত জনগণ কি চাচ্ছে। তাদে কথায় একদম পরিষ্কার ছিল যে, জনগণ কি চায়। পরিবর্তন। এই রিক্সাওয়ালা-সিএনজি ড্রাইভারদের মনের ভাবটায় ছিল আমাদের বার্তা। এই কারণে আমি মনে করি যে, বাংলাদেশের ইতিহাস যদি সত্যিকার অর্থে লেখা হয়, তাহলে রিক্সাওয়ালাদেরকে নিয়েই একটা চ্যাপ্টার হওয়া উচিত।
ফরিদা আখতার জানান, তিনি আন্দোলনের সময় একদিন শহীদ মিনারে গিয়েছেন। শহীদ মিনারে তার চারপাশে স্কুলের ড্রেস পড়া মেয়েরা দাঁড়ানো। তিনি বললেন, তোমরা এসেছো, ওরা সবাই খুব খুশি। পরে দেখলাম আশেপাশে দাঁড়িয়ে আছে তাদের বাবা- মা। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের বাবা-মাদের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন গতি পেয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের গণতন্ত্রেও লড়াইয়ে জাগিয়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনে বাবা মায়েরা যে ভূমিকাটা রেখেছে এটা তিনি রাজপথে স্বচক্ষে দেখে অভিভূত হয়েছেন। একজন বাবা কোথাও সরকারি চাকরিজীবী, কোথাও ব্যবসায়ী, কোথাও মৎস্যজীবী। কিন্তু আন্দোলনের পুরোটা সময় তিনি আন্দোলনকারী সন্তানের বাবা হিসেবে মাঠে ছিলেন। এজন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মায়েদের পাশাপাশি বাবাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা জানান, জুলাই গণ আন্দোলনে শহীদ যোদ্ধাদের স্মরণে তার মন্ত্রণালয় জুলাই আন্দোলনের আবহে বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতি দিয়ে সাজানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আহতদের কথা আমরা হয়তো অনেকেই জানি। কিন্তু এমনও কিছু আহত আছে জুলাই অভ্যুত্থানে যাদেরকে আমরা হয়তো সেভাবে চিনি নাই। তার পরিচিত ২৫ বছর বয়সের এক যুবকের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সেই যুবকটি পিঠে এত বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে যে, এখন সে পাঁচ কেজি ওজনও হাতে তুলে নিতে পারেনা।
আমাদের চেষ্টা আছে, এ ধরনের আহতদের নিয়েও কাজ করব। তাদের উন্নয়নের জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬০শতাংশ হলো ৩০ থেকে ৫০ বয়সের মধ্যে। তাই আগামীর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ সব যুবক যুবতীদের কথা মাথায় রেখে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজাতে হবে। আমি নিজেও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে কৃতজ্ঞ মনে করব।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে বিএমইউ’র শহীদ ডা. মিলন হলের সম্মুখ করিডোরে ফটো এক্সিবিশন উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।
এ এক্সিবিশনে ১৬ই জুলাই শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার বিজয়সহ জুলাই বিপ্লবের নানা ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহ স্থিরচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
একই সাথে শহীদ ডা. মিলন হলে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও ফ্রি স্ক্রিনিং এবং রক্তদাতা নিবন্ধীকরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এছাড়া এদিন জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের অংশ হিসেবে সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ করা হয় এবং বাদ যোহর জুলাই শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিএমইউ’র কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এ সকল কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ অংশ নেন।
গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ স্মরণে ফটো এক্সিবিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, জুলাই বিপ্লব বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক একটি অধিকারপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় চিরকাল অনুপ্রেরণা যোগাবে। জুলাই বিপ্লবের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিসহ সব দিক দিয়ে দেশকে সামনে দিকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।
বিএমইউ’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন দেশে পরাধীন ছিল। ক্ষমতার জন্য নিজ দেশের নিজ সন্তানকে হত্যা করা যায়, এটা ভাবা যায় না। ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’- এ কথা স্মরণে রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। তা না হলে ফ্যাসিবাদরা পুনরায় সুযোগ নিবে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনীকে মনের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। চিন্তা-চেতনায় জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রাত্যহিক কর্মে এর প্রতিফলন থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে দেশ ও জাতি পুনর্গঠনে কাজ করতে হবে।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, আবু সাঈদ, ওয়াসিম ও মুগ্ধসহ আমরা যেন জুলাই শহীদের ভুলে না যাই। তাদের স্মৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে। জুলাই চেতনাকে অন্তরে ধারণ করতে হবে এবং জুলাই বিপ্লবের চেতনা ও আদর্শে বাংলাদেশকে গঠন করতে হবে।
বিএমইউ’র রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন, ডেন্টাল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্ত ও ডা. এমদাদুল হক ইকবাল। এ সময় বিএমইউ’র সম্মানিত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার শফিকুল হাসান রতন, সহকারী প্রক্টর ডা. রিফাত রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) নাছির উদ্দিন ভূঞাঁ, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ বদরুল হুদা, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের একান্ত সচিব ডা. মো. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. লুৎফর রহমান, উপ-রেজিস্ট্রার সাবিনা ইয়াসমিন, উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, উপ-রেজিস্ট্রার ইয়াহিয়া ও সেকশন অফিসার (জনসংযোগ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) শামীম আহম্মদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলার ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণরূপে অমার্জনীয়’ উল্লেখ করে ওই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে সরকার বলেছে, ‘এটা সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট করে বলা দরকার যে, আমাদের দেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। ন্যায়বিচার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত করা হবে।’
সরকার বলেছে, তরুণ নাগরিকরা তাদের বিপ্লবী আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উদযাপনের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। এই সমাবেশে বাধা দেওয়া তাদের মৌলিক অধিকারের ‘লজ্জাজনক লঙ্ঘন’।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), পুলিশ এবং গণমাধ্যমের সদস্যদের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং ব্যক্তিদের ওপর সহিংস আক্রমণ করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের কর্মীদের—যারা এই জঘন্য হামলা চালিয়েছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ‘অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে সম্পূর্ণ বিচারের আওতায় আনা হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
সরকার সেনাবাহিনী ও পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের প্রশংসা করেছে। একইসঙ্গে, এই আক্রমণের মুখেও যারা সাহসিকতার সঙ্গে সমাবেশ চালিয়ে গেছেন—সেই ছাত্র ও জনগণের দৃঢ়তা ও সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মন্তব্য