অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনস্থলে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক দল; যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। হাইকোর্টের আদেশ শোনার পর দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আপাতত আমার আন্দোলন স্থগিত রাখব। সরকারকে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে, তারা কী করে, তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশনা আসবে।
তিনি বলেন, আমি আসার সময় আমাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। হাইকোর্টে একটি ভুয়া রিট, বলা যায় সেই রিট দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে মেয়র পথে শপথ করানো থেকে বাধাগ্রস্ত করানোর একটা অপচেষ্টা করা হয়েছিল। সব শেষে আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যেহেতু আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আমরা আশা রাখব বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার আর একদিনও কালক্ষেপণ না করে, অবিলম্বে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে তাদের আগামী দিনের এজেন্ডা জনগণের কাছে ফুটিয়ে তুলে ধরবে। আজকে যেহেতু আমরা রায়টি পেয়েছি, যদি সরকার আবারও তালবাহানা করে, তাহলে কালকে সকালে আমরা আবার এখানে এসে ঘেরাও দেব।
তিনি বলেন, এই কর্মসূচির ফলে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। জনগণ দুর্ভোগে পড়ে। রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকে। নাগরিক বিভিন্ন সভা থেকে তারা বঞ্চিত হয়। সেটার জন্য আমাদের নেতা এবং আমি সাধারণ জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। শুরুতে কিন্তু আমাদের আন্দোলনের পরিকল্পনা ছিল না। বর্তমান সরকার অধিকার বঞ্চিত করতে গিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়, তখন আমরা বাধ্য হয়ে এ ধরনের কর্মসূচিতে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নেই।
ইশরাক হোসেন বলেন, গতকাল আমি বলেছিলাম, বর্তমান সরকারের ভেতরে যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছে, যারা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সমর্থক এবং সরাসরি সংগঠক হিসেবে কাজ করছে। তাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন শেষ হবে না, এই ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমি আমার ঘোষণাকে পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। তাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
ইশরাক হোসেন আরও বলেন, রায় এবং শপথ আলাদা বিষয়, এটা হয়ে যাওয়া মানে প্রথম যে দাবিটি করেছিলাম, ছাত্র প্রতিনিধিসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করতে হবে, সেটা কিন্তু পরিবর্তন হবে না। সেই দাবি সেই দাবির জায়গায় থাকবে, হয়তোবা সরকারের সঙ্গে আমাদের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আলাপ-আলোচনা করে এটি সমাধানের চেষ্টা করবেন। তখন যদি না হয় আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা একটা একটা ধাপ পার হয়ে আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এই কাজ করতে গিয়ে যদি সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দিতে হয়, তাহলে তৃণমূলের বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে এই কৃতিত্ব দিতে হয়। তারা কষ্ট করে আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে। যে আন্দোলনে ঢাকাবাসী অংশগ্রহণ করে সরকারকে বাধ্য করেছে তাদের জায়গা থেকে সরে আসতে। আমরা সরকারকে পর্যবেক্ষণে রাখব। তারা ধানের শীষের প্রার্থীর সঙ্গে এখন কী ধরনের আচরণ করে সেটি দেখার বিষয়।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল এটা নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তকর লেখা লেখছে। পোস্ট দিচ্ছে। ভুল আইনি ব্যাখ্যা দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, উনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। উনাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা বলতে চাই, উনার আশপাশে যে কুলাঙ্গার রয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের আপনি অপসারণ করে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন।
এর আগে বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। তারা সারারাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপি নেতাকর্মীরা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। একই সঙ্গে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করছেন তারা।
যমুনারে যমুনা আমরা কিন্তু যাব না, এই মাত্র খবর এলো ইশরাক ভাই মেয়র হলো, এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার, দফা এক দাবি এক নির্বাচিত সরকার, যমুনারে যমুনা শপথ ছাড়া যাব না— বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
কিছুদিন আগেই কর্ণাটকে শো করতে গিয়ে কন্নড় ভাষা নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন সংগীতশিল্পী সোনু নিগম। জল গড়ায় কোর্ট পর্যন্ত। সেই ইস্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই কর্ণাটকের এসবিআই কর্মীর কন্নড় বলায় আপত্তির ঘটনা নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আবারও ভাষা নিয়ে উত্তাল কর্ণাটক। এবার এর রোষানলে পড়েছেন দক্ষিণী সিনেমার নায়িকা তামান্না ভাটিয়া। সরকারি সাবানের বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে দক্ষিণী এ সুন্দরীকে বেছে নেওয়ায় বিক্ষুদ্ধ হয়েছেন কর্ণাটক রাজ্যের বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিক্ষোভের পাহাড়। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হচ্ছে সিদ্দারামাইয়ার সরকারকে। প্রতিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিতর্কের কারণে শেষমেশ মুখ খুলতে বাধ্য হলেন কর্ণাটকের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী এমবি পাতিল।
সম্প্রতি তামান্না ভাটিয়ার নাম কর্ণাটকের সরকারি সাবান ‘মাইসোর স্যান্ডেলর বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকেই প্রতিবাদের ঝড়। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বাসিন্দাদের দাবি, কন্নড় চলচ্চিত্রের কোনো নায়িকাকে না বেছে কেন তামান্নাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হলো? প্রশ্ন তুলে একই কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছে কর্ণাটকবাসীর একাংশ। অনেকে আবার কন্নড় অভিনেত্রী রুক্মিণী বসন্তের নামও প্রস্তাব করেছেন। জানা গেছে, ‘মাইসোর স্যান্ডেল’ সংস্থার সঙ্গে দুবছরের চুক্তি হয়েছে তামান্নার। যার জন্য মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পাচ্ছেন তিনি।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ৬.২০ কোটি রুপিতে চুক্তিবদ্ধ হন তামান্না। তবে এ প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্তরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণী সুন্দরীকে নির্বাচন করলেও সেটি ভালো মনে নেয়নি কর্ণাটকবাসীদের একাংশ। এরপর প্রতিবাদের আগুন তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে। বিপাকে পড়ে সবশেষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নামতে হয় মন্ত্রী এমবি পাতিলকে। তার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে তিনি তামান্না ভাটিয়াকে বিজ্ঞাপনী দ্যূত হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পাতিলের ভাষ্য, কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি আমাদের সম্পুর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। এমনকি কিছু কন্নড় সিনেমা তো বলিউড সিনেমার ব্যবসাকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে। মাইসোর স্যান্ডেল কর্ণাটকে খুব জনপ্রিয় এক প্রসাধনী সংস্থা। এবার সেই জায়গাটা আরও পোক্ত করতে হবে। ‘তবে এবার মাইসোর স্যান্ডেলের ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
জ্যৈষ্ঠ মাসের দশ দিন চলছে। এই সময়ে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা যেমন থাকে তেমনি থাকে বৃষ্টিপাতও। বাংলা এই মাসের শুরুতেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা কমেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আর এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে আগামী আরও দশ দিন। বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হওয়া গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার জন্য এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মিয়ানমারের আকিয়াব উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এটি আরও অগ্রসর হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামী ২৭ মে পশ্চিমমধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে সাগরে একটি নিম্নচাপ হতে পারে। এ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।
কাজী জেবুন্নেছা বলেন, ২৫ থেকে ২৬ মে সাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে কী না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। এ নিয়ে নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলার সময় আসেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। গত বছরের ২৬ মে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। এবারও নিম্নচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় কাছাকাছি। এর আগেও একাধিক বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে। তাই আবহাওয়াবিদরা এ সময় সতর্ক থাকতে বলছেন।
কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার উপযোগী রয়েছে। তবে নিম্নচাপ তৈরি হলে সেটি কোথায় যাবে, কীভাবে শক্তি সঞ্চয় করবে, এসব বিষয় আরও কিছুদিন পর জানা যাবে।’এবার যদি ঘূর্ণিঝড় হয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক একটি প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১৮০ কোটি রুপি) চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার ভারতের একাধিক শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তির আওতায় কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) নামের প্রতিরক্ষা কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি ৮০০ টন ওজনের টাগ বোট সংগ্রহ করার কথা ছিল।
এই চুক্তিটি হয়েছিল গত বছরের জুলাই মাসে, যেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ভারতীয় কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। চুক্তিটি ছিল ভারত সরকারের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার অংশ, যা ২০২৩ সালে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এই টাগ বোট কেনার উদ্যোগটিকে সেই ঋণচুক্তির প্রথম বড় প্রকল্প হিসেবে ধরা হচ্ছিল।
তবে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সরকার এই ক্রয়াদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এর পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক এক কূটনৈতিক উত্তেজনা। এর আগে গত শনিবার ভারত তাদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপরই বাংলাদেশ পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, এই চুক্তি বাতিলের ফলে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জিআরএসই কোম্পানিটি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। এনডিটিভি জানিয়েছে, কোম্পানিটি ভারতীয় পুঁজিবাজারকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে।
এদিকে, বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক কারণ দেখছেন অনেকে। ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্যমতে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’বলে অভিহিত করেন এবং এই অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি চীনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে, ভারত এর জবাবে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দু বিজনেস লাইন বলেছে, বাংলাদেশ সরকার ও জিআরএসইর মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতেই চুক্তি বাতিল হয়েছে। যদিও এই আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ পায়নি। ভারত ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশকে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) সুবিধার আওতায় ৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এই সহায়তার বেশিরভাগ প্রকল্পই বাস্তবায়ন হয়েছে শেখ হাসিনার আমলে।
চুক্তি বাতিলের এই সিদ্ধান্তকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভবিষ্যতে এর প্রভাব দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক লেনদেনে কতটা পড়ে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আরেকটি এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে- বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে সব ধরনের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশকে বারবার বিভাজিত করা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে, বাংলাদেশেকে দুর্বল করে রাখার লক্ষ্যে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে আবারো দিল্লি থেকে ছঁক আকা হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার, দেশকে বিভাজিত করার। গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশপন্থী ও ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতাকে সার্বভৌমত্ব, সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ও সৈনিকদের সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ড. ইউনূসকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তাকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সকল সমস্যার সমাধান করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একই সঙ্গে দিতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বাতিল করেছে এবং বর্তমানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অবস্থান হারাতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। হার্ভার্ড এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও প্রতিশোধমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) প্রত্যয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন।
ডিএইচএস-এর বিবৃতিতে বলা হয়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আগেই চাওয়া কিছু তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নোয়েম বলেন, 'এই প্রশাসন হার্ভার্ডকে জবাবদিহির আওতায় আনছে—যেহেতু তারা সহিংসতা ও ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ কোনো অধিকার নয়, বরং একটি সুবিধা, যা তারা অধিক টিউশন ফি নিয়ে বহু বিলিয়ন ডলারের তহবিল ফুলিয়ে তোলার কাজে ব্যবহার করে।'
হার্ভার্ড পাল্টা বিবৃতিতে জানায়, 'সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। আমরা হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপস্থিতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা এসব মানুষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরো জাতিকে অসামান্যভাবে সমৃদ্ধ করেন।'
হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ড-বিরোধী অভিযানের একটি বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ম্যাসাচুসেটসের এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘বামপন্থী’ বা ‘মার্কসবাদী’ আদর্শ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছেন।
গত মাসে হার্ভার্ড একটি ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বরাদ্দ স্থগিতাদেশের মুখে পড়ে, কারণ তারা হোয়াইট হাউসের দেওয়া একগুচ্ছ শর্ত প্রত্যাখ্যান করে।
এসব শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কাঠামো, নিয়োগ নীতি ও ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য সংক্রান্ত দপ্তরগুলো বন্ধ করা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্ক্রিনিংয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা।
হার্ভার্ড পরে এই বরাদ্দ স্থগিতাদেশ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
আগামী সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ায় দেশে অস্থিতিশীলতা বাড়ছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যদি অপমানজনকভাবে পদত্যাগ করেন—তাহলে তার দল ব্যথিত হবে।
শুক্রবার (২৩ মে) একটি প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক বলেন, ‘দেশে অস্থিরতার ঢেউ বইছে বলে মনে হচ্ছে। এই অস্থিরতার পিছনে মূলত দায়ী কারা? নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা কারা করছেন? আপনার (ড. ইউনূসের) মতো একজন সম্মানিত ব্যক্তির কাছ থেকে আমরা এই বিষয়গুলো জানতে চাই।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফারুক বলেন, সরকার যদি একটি স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ দিত—তাহলে শেখ হাসিনার আমলে যারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন এবং অসংখ্য মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—তারা গঠনমূলকভাবে জড়িত হয়ে নির্বাচনমুখী হতেন।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আপনি (ড. ইউনূস) এখনও কোনো রোডম্যাপ দেননি। যদি এই অস্থিরতা আপনার তৈরি হয়—তাহলে জেনে রাখুন, বিএনপি কখনই এর দায় নেবে না।’
সরকারকে অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানান সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ফারুক।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করুন—দেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়ান’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ সম্পর্কে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে ফারুক বলেন, ‘যদি আপনার মতো একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্বকে অপমানজনকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়—তাহলে তা আমাদের ক্ষতি হবে।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে যেভাবে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে, ঠিক সেভাবে আপনার নামও লেখা থাকুক। দিনের আলোতে ভোটদানের সুযোগ দিয়ে আমাদের ভোটাধিকার রক্ষা করলে... এমন উত্তরাধিকার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বিএনপি নেতা প্রধান উপদেষ্টাকে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করে একটি উদাহরণ সৃষ্টির আহ্বান জানান, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জাতির একজন গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে তাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি, আপনি অবিলম্বে আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলম এবং খলিলুর রহমান—এই তিন ব্যক্তিকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করে চিঠি দেন। অন্যথায়, তাদের অপসারণের দায় আপনার উপর বর্তাবে।’
ফারুক বলেন, সংস্কার অবশ্যই করা উচিত, কিন্তু এমনভাবে নয়—যাতে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি করিডোর তৈরি হয় বা চট্টগ্রাম বন্দর অন্যদের হাতে চলে যায়।
ষড়যন্ত্রকারীদের নির্বাচন বিলম্বিত করা ও অধ্যাপক ইউনূসের সরকারকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে পারে—এমন যেকোনা সংস্কারের বিষয়ে সতর্কও করেন তিনি।
এই অস্থিতিশীলতা দূর করতে অধ্যাপক ইউনূসকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান ফারুক।
প্রতারণা এড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন সেবা ও স্টেশন কাউন্টার ব্যতীত অন্য কোনো উৎস থেকে টিকিট সংগ্রহ করা হতে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
আজ এক তথ্য বিবরণীতে আরো জানানো হয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য বুধবার সকাল থেকে অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২৭ মে পর্যন্ত ৭ দিন রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। এ সময় ৩১ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত চলাচলকারী আন্ত:নগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এবারও ঈদযাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
মন্তব্য