ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত করতে নিকটস্থ সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সঙ্গে জনসাধারণের যোগাযোগের জন্য হালনাগাদ যোগাযোগ নম্বর প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আজ মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে আপডেটেড নম্বরসমূহে যোগাযোগ করুনঃ
১। গাজীপুর, কোনাবাড়ী, পূবাইল, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গি, কাপাসিয়া, কালিগঞ্জ, কাশিমপুর, শ্রীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বন্দর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও এবং গজারিয়া।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, খ। ০১৭৬৯-০৯৫২৫০, গ। ০১৭৬৯-০৯১০২০।
২। ডেমরা, ওয়ারী, রমনা, শাহবাগ, পল্টন, মতিঝিল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, শাহজাহানপুর, কোতোয়ালী, বংশাল, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর এবং কদমতলী।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৯২৪২৮, খ। ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, গ। ০১৭৬৯-০৯৫২৫০,
ঘ। ০১৭৬৯-০৯১০২০।
৩। সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, হেমায়েতপুর, বাইপাইল, দোহার, গাজীপুর, মৌচাক এবং মানিকগঞ্জ।
যোগাযোগের নম্বরসমূহ
ক। ০১৭৬৯-০৯৫২০৯, খ। ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, গ। ০১৭৬৯-০৯৫২৫০,
ঘ। ০১৭৬৯-০৯১০২০।
৪। ফরিদপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ এবং শরীয়তপুর।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৯৩৫০৯, খ। ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, গ। ০১৭৬৯-০৯৫২৫০,
ঘ। ০১৭৬৯-০৯১০২০।
৫। বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, দক্ষিন খান, উত্তরখান, উত্তরা পূর্ব।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০২৫৭৬৬, খ। ০১৭৬৯-০২৫৭৬৯, গ। ০১৭৬৯-০২৫৮৬৫,
ঘ। ০১৭৬৯-০২৫৭৬৭।
৬। মিরপুর মডেল থানা, মিরপুর-২, ৬, ৭, ১০, দুয়ারীপাড়া, রুপনগর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মনিপুর।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৫০৭১০, খ। ০১৭৬৯-০৫০৬৯৩, গ। ০১৭৬৯-০৫০৬৯৫,
ঘ। ০১৭৬৯-০৫০৬৯৬।
৭। উত্তরা তুরাগ থানা ও উত্তরা পশ্চিম থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৮২৮৩৬, খ। ০১৩১৮-৩৭১৫৫৪, গ। ০১৩১৮-৩৭১৫৫৫।
৮। দারুসসালাম থানা এবং শাহআলী থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৩৩৭০০,খ। ০১৭৬৯-০৩৩৭০২, গ। ০১৭৬৯-০৩৩৭০৪।
৯। গুলশান, বনানী, ভাটারা এবং বাড্ডা থানা
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯০৫০২৮৩, খ। ০১৭৬৯০১১৫৫৯।
১০। খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানা
যোগাযোগের নম্বরঃ
ক। ০১৭৬৯০৫৩১৪৪।
১১। রামপুরা, সবুজবাগ এবং তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা
যোগাযোগের নম্বরঃ
ক। ০১৭৬৯০৫৩১৬৮।
১২। ক্যান্টনমেন্ট, কাফরুল, ভাসানটেক।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯-০৫১৮২৫, খ। ০১৭৬৯-০১৯০৭৩, গ। ০১৭৬৯-০১৩২৩৬।
১৩। হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, কলাবাগান এবং নিউমার্কেট থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৮৯৭৯১৪৮৬২, খ। ০১৮৯৭৯১৪৮৬৩, গ। ০১৮৯৭৯১৪৮৬৪,
ঘ। ০১৮৯৭৯১৪৮৬৫, ঙ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৮, চ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৯।
১৪। শের-ই-বাংলা নগর, আদাবর এবং মোহাম্মদপুর থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৮১৫৭৯৫৯৫১, খ। ০১৭৬৯০৫৯৮৮৮, গ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৮
ঘ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৯।
১৫। তেজগাঁও থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯০১৯৪০৯, খ। ০১৭৬৯০১৯৪১৫, গ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৮
ঘ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৯।
১৬। লালবাগ, চকবাজার এবং কামরাঙ্গীরচর থানা।
যোগাযোগের নম্বরসমূহঃ
ক। ০১৭৬৯০১৩৪৩৯, খ। ০১৬১৯৮৩২০৬৯, গ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৮
ঘ। ০১৭৬৯০৫১৮৩৯।
দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোন সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য প্রদান করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানানো হয়।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে হকার মো. সাগর হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই গোল চত্ত্বরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন বিকেল ৪ টায় তিনি সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদি হয়ে মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। এ মামলার ৪৯ নং এজাহারনামীয় আসামি মমতাজ বেগম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। এই মামলার আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে তার ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। জোবাইদা রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
কায়সার কামাল জানান, সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট করা এই মামলার রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। ওই রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে এই মামলায় জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে সাজা স্থগিত চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন জোবাইদা রহমান। এরপর থেকে লন্ডনেই ছিলেন তিনি।
সেখান থেকে ৬ মে শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৭ বছর পর দেশে ফেরেন জোবাইদা রহমান।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনটি আজ (মঙ্গলবার) কার্যতালিকায় উঠলে সেটি মঞ্জুর করেন আদালত।
মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে পিকনিক পার্টির দুই নারীকে প্রকাশ্যে প্রহারের ঘটনায় ভাইরাল হওয়া যুবক নেহাল আহমেদ জিহাদকে আটক করা হয়েছে। নেহাল যোগনি ঘাটের মনির হোসেনের পুত্র।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে সদর থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা জানান, নেহাল আহমেদ জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছে।
তারা জানান, ‘খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে লঞ্চটিকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে দিয়ে এসেছি। লঞ্চে থাকা স্টাফ ও পিকনিকের যাত্রীরা বলেছেন—হামলাকারীরা তাদের টাকাপয়সা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল আলম বরেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। নেহালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এমভি ক্যাপ্টেন নামে একটি লঞ্চে করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পিকনিকের ৩০০-৪০০ লোকসহ মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে ভিড়ে। লঞ্চ থেকে নেমে কয়েকজন ঘাট এলাকায় নাস্তা কিনতে যায়, সেখানে বাজে মন্তব্য করা নিয়ে ঝগড়া বাধে।
পরে ৫০-৬০ জন লঞ্চে উঠে পিকনিকের লোকজনকে মারধর ও ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে দুই নারীকে লঞ্চের সামনে এনে প্রকাশ্যে বেধরক পেটায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা মডেল টাউন থেকে প্রাণঘাতী মারনাস্ত্রের ৭.৬২ বোরের ২৯টি গুলি. দেশীয় অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণে মাদকসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২। গত শুক্রবার মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো- মো. সাগর হোসেন (৩৭), মো. হেলাল কবির (৩৩) এবং মো. আসিফ (২৭)।
গতকাল শনিবার র্যাব-২ জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) খান আসিফ তপু দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, সূচনা মডেল টাউন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী সাগর হোসেন তার ভাড়া বাসায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য বিক্রির জন্য মজুদ করে রেখেছে। এমন তথ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালাতে চেষ্টা করেন। তবে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সাগর হোসেনের দেয়া তথ্যে প্রাণঘাতী ৭ দশমিক ৬২ বোরের ২৯ রাউন্ড গুলি, ২টি চাপাতি, ২টি ছুরি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, সাড়ে ১৫ কেজি গাঁজা, ১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও নগদ ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামিরা জানায়, দীর্ঘদির ধরে তারা দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এনে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বিক্রি করেন।
তিনি আরও বলেন, আসামীদের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। কোথা থেকে তারা এসব গুলি পেয়েছে, কিভাবে ব্যবহার করার পরিকলপনা রয়েছে ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে। আসাদিরে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে
ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় তিন জনকে হত্যার মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—রাকিবুল হাসান সৌরভ ওরফে সৌরভ প্রধান, শিহাব প্রধান এবং রনি বেপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাকিব প্রধান, শামীম প্রধান, অনিক বেপারী, রায়হান এবং জাহাংগীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর।
তাদেরকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।ৎ
এক মেয়েকে ইভটিজিং করা নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ উত্তর ইসলামপুর এলাকায় আওলাদ হোসেন মিন্টুর বাড়ির সামনে অভি, ইমনসহ অন্যদের নিয়ে সালিশ হয়। সেখানে তাদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
পরে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস করে দেয়া হয়। তবে, এর কিছু সময় পর অভির নেতৃত্বে কয়েকজন ইমন, শাকিব ও আলফাজের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমন বাঁশ দিয়ে অভিকে আঘাত করতে গেলে তা গিয়ে লাগে সৌরভের গায়ে। সৌরভের সাথে ইমন ও শাকিবের হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা জামাল হোসেন আওলাদ হোসেনের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে। পরে রাত ১১টার দিকে আবার সালিশে বসেন তারা।
এ সময় জামাল হোসেনের লোকজন আওলাদ হোসেন, আফজাল হক, ইমন, শাকিবদের ওপর হামলা করে। অভি ও শিহাব ইমনকে, রনি আওলাদ হোসেনকে এবং শিহাব শাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে লোকজন এলে জামালদের লোকজন পালিয়ে যায়। আহত তিন জনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য অপর দুই জনকে নেওয়ার পথে শাকিব মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন ২৫ মার্চ মারা যান। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় ১২ জনের নামে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে মুন্সীগঞ্জ সিআইডির ইন্সপেক্টর আসলাম আলী অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
প্রায় দুই যুগ আগে রাজধানীর রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৯ জন নিহত হন
পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। এ ঘটনায় করা মামলা ‘রমনায় বোমা হামলা মামলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান।
রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন— আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
প্রসঙ্গত, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন।
হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। শুনানিও শুরু হয়। পরে কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে এ মামলায় আজ রায় হতে যাচ্ছে।
মন্তব্য