প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার পৌঁছেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।
সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বিমানবন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ায় যাবেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব একসঙ্গে ঢাকায় ফিরবেন।
যশোরের কেশবপুরে সড়ক দু'ঘটনায় লুৎফার রহমান (৬৫) নামে এক ভ্যান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২০ আগষ্ট) বেলা আড়াই দিকে পৌরসভার মধ্যকুল গ্রামের লুৎফার রহমান ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে কেশবপুর ফিলিং ষ্টেশনের সামনে পৌছাইলে বিপরীদিক থেকে আসা যশোর গামী একটি মালবাহী ট্রাক তাকে থাক্কা দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়। থানা পুলিশ ট্রাকটি আটক করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়। হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, সড়ক দু'ঘটনায় আহত লুৎফার রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা গেছে।থানার ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, কেশবপুরে সড়ক দু'ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে মামলা গ্রহন করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসুচি পালন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ও সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সালাউদ্দিন সালুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য শফিকুল রহমান দেওয়ান, সোনারগাঁ উপজেলার যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নুরে-এ ইয়াসিন নোবেল, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকারিয়া সালেহ স্বপন, সদস্য এজাজ ভূইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজী পিয়ার হোসেন নয়ন, সোনারগাঁ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আতিক হাসান, পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ফারুক আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক আলিম আল রাজি, আতা রাব্বি জুয়েল প্রমুখ। এসময় উপজেলা ও পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য র্যালি, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও বৃক্ষরোপণ করা হয়। বর্ণাঢ্য র্যালিটি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দল প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামে বুক পেতে অংশগ্রহণ করে, বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, এ অবস্থায় বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ আছি।
ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি চুল্লি ভবনে তেজস্ক্রিয় ধ্বংসাবশেষ অপসারণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জাপানি প্রযুক্তিবিদরা রিমোট-নিয়ন্ত্রিত রোবট মোতায়েন করেছেন।
টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
২০১১ সালের সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গলিত জ্বালানি এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করা, এই বিচ্ছিন্নকরণ প্রকল্পের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই কাজটি কয়েক দশক ধরে চলমান এবং এর জটিলতা ও বিপদ অনেক বেশি।
২০১১ সালের ৯.০ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামির কারণে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তাতে প্রায় ৮৮০ টন বিপজ্জনক পদার্থ এখনও কেন্দ্রের ভিতরে রয়ে গেছে। এই দুর্ঘটনাটি জাপানের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্ল্যান্ট অপারেটর টেপকোর একজন মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন যে, কোম্পানিটি মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লি ভবনগুলোর একটিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা পরিমাপ করার জন্য ‘স্পট’ এবং ‘প্যাকবট’ নামে দুটি রোবট মোতায়েন করা হয়েছে।
দুটিতেই তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত একটি যন্ত্র, ডসিমিটার এবং কুকুরের মতো দেখতে একটি ক্যামেরা রয়েছে।
টেপকো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তদন্তের ফলাফল ‘একটি পূর্ণাঙ্গ জ্বালানি ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার পদ্ধতি’ নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
সরকারি সম্প্রচারক এনএইচকে এবং অন্যান্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে জরিপটি প্রায় এক মাস ধরে চলবে।
বিশেষ সরঞ্জাম ব্যবহার করে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের অধীনে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্ষুদ্র নমুনা দুবার সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে এখনও পূর্ণাঙ্গ নিষ্কাশন করা হয়নি।
বিশ্লেষণের জন্য নমুনাগুলো একটি গবেষণাগারে সরবরাহ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার বালুর মাঠে আনন্দ মেলার আড়ালে চলছে রমরমা জুয়ার আসর ও মাদক ব্যবসা। এ শুরু হওয়া ‘আনন্দ মেলা’ স্থানীয়দের জন্য আনন্দ নয়, বরং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে,১২ দিন যাবত মেলার আড়ালে সেখানে চলছে অবাধে মাদক সেবন ও জুয়ার আসর। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় দেখা যায় অসামাজিক কার্যকলাপ। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তারাবো পৌরসভার তারাব বিশ্বরোড সংলগ্ন বালুর মাঠে অনুমোদনহীন ভাবে চলছে এই আনন্দমেলা। প্রায় শতাধিক দোকানপাট বসেছে মেলায়। মেলার দক্ষিণ কর্নারে চলছে রমরমা জুয়ার আসর, রাত ১০ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলে মাদক বিক্রি ও সেবন । ইয়াবা ফেন্সি গাজা সহ বিভিন্ন রকমের মাদক পাওয়া যাচ্ছে এই মেলাতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান,২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট আন্দোলনের পরে অনেকে নেতা বনে গেছেন,অনেকেই আবার দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে এসে বড় নেতা হয়ে গেছেন। তিন চার মাস পরে পরেই আয়োজন করা হয় এই মেলার, মূলত মেলার আড়ালে রয়েছে তাদের ভিন্ন ব্যবসা,মাদক এবং জুয়া তাদের মূল উদ্দেশ্য,মেলা হচ্ছে লোক দেখানো।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেলার ভেতরে বিভিন্ন স্টলের আড়ালে ছোট ছোট অংশে জুয়ার বোর্ড বসানো হয়েছে। এতে অল্প বয়সী তরুণ থেকে শুরু করে বয়স্করাও অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে, মেলার এক কোণে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদক। এতে উঠতি বয়সের যুবকদের একটি অংশ আসক্ত হয়ে পড়ছে। স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তাদের সন্তানেরা প্রতিদিন মেলায় গিয়ে টাকা নষ্ট করছে এবং মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তারাব পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য- জহিরুল ইসলাম, তারাব পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব- নাবির প্রধান, পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক- আশিক,পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ শরীফ, আল-ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারী- জুয়েল, যুবলীগ কর্মী বর্তমানে ছাত্রদল কর্মী তানভীর প্রধান, বিশ্বরোড বাগান বাড়ী এলাকার জাহাঙ্গীরসহ অনেকেই এই মেলার আয়োজক।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করে মেলাটিকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনা হোক। অন্যথায়, এই মেলা স্থানীয় সমাজে বিশৃঙ্খলা এবং অপরাধের হার আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেনঃ আমরা খুব হতাশ। আমাদের চোখের সামনেই এই ধরনের অসামাজিক কাজ চলছে। মেলা তো আনন্দের জন্য হয়, কিন্তু এটা এখন মাদকের আখড়া আর জুয়ার আড্ডায় পরিণত হয়েছে। আমাদের ছেলে-পেলেরাও এর শিকার হচ্ছে। মেলা বন্ধ করার জন্য আমরা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মনে হচ্ছে, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব চলছে। এই মেলা আমাদের সমাজের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। সন্ধ্যার পর থেকে এখানে যে নোংরামি শুরু হয়, তাতে সুস্থ মানুষ যেতে পারে না। জুয়া আর মাদকের কারণে অনেক পরিবারে অশান্তি শুরু হয়েছে। মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। আগে এই ধরনের মেলায় মানুষজন তাদের পরিবার নিয়ে আসত, এখন ভয়ে কেউ আসে না। প্রশাসন যদি এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিক। মেলার নামে যে অবৈধ কাজ চলছে, তা বন্ধ করা হোক। শুধু মেলার অনুমতি দিলেই হবে না, এর ভেতরের কার্যকলাপও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা দরকার। আমরা চাই আমাদের এলাকার যুবসমাজ এই সর্বনাশা পথ থেকে ফিরে আসুক। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)তরিকুল ইসলাম বলেন,তারাব পৌরসভার আনন্দ বিনোদন মেলার বিষয়ে বেশি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম বিষয়টি অতি শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন,তারাব পৌরসভার আনন্দ বিনোদন মেলার তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাননি। তবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ফকিরগঞ্জ বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪ ব্যবসায়ীর নিকট হতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, পঞ্চগড় জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (অ.দা.) এ.এস.এম মাসুদ উদ দৌলা’র নেতৃত্বে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী ফকিরগঞ্জ বাজারের ‘ফেন্সি ফার্মেসী’র (ভেটেরিনারি ঔষধ ও খাদ্যের দোকান) স্বত্বাধিকারী মোঃ ফজলুল হককে ১০,০০০/- টাকা, ‘ভাই ভাই স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারী মোঃ তৌহিদুল ইসলামকে ৩,০০০/- টাকা, ‘ইব্রাহিম স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারীকে ৩,০০০/- টাকা এবং ‘সোহেল স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল রানাকে ৪,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়।
এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন মোঃ আব্দুল্লাহ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি পরিদর্শক(ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আব্দুল গনি, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের অন্যান্য কর্মচারী ও আটোয়ারী থানার অফিসার সহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাতি সংরক্ষণে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি বলেন, হাতির উপযোগী গাছ লাগানো, করিডোর চিহ্নিত করে মুক্ত রাখা, জরিপের মাধ্যমে হাতির সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ এবং মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
বুধবার বন ভবনে বিশ্ব হাতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ক্যাপটিভ হাতি নিয়ন্ত্রণ, গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করা এবং হাতির জন্য টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা জরুরি। উপদেষ্টা জানান, হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী গাছের বাগান, ৫০ হেক্টর বাঁশবাগান সৃজন এবং রোপিত উদ্ভিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য ইকোলোজিক্যাল বাউন্ডারী বায়োফেন্সিং নির্মাণ করা হবে, যেখানে বেত, লেবু ও বড়ইসহ কাঁটাজাতীয় জীবন্ত বেড়া দিয়ে ১০ কিলোমিটার সীমানা তৈরি হবে। একইসঙ্গে এলিফ্যান্ট রিজার্ভ-সংলগ্ন এলাকায় “অ্যান্টি ডেপ্রেডেশন স্কোয়াড (এডিএস), এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ও এলিফ্যান্ট রেসকিউ টিম” গঠন করে কার্যক্রম জোরদার করা হবে। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণে ১৬টি ট্রি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে এবং গাজীপুর সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে দুটি হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
তিনি আরও জানান, আহত হাতির চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও শেরপুর অঞ্চলে অস্থায়ী সেড নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে এনথ্রোপোজেনিক প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ এবং নৃ-বৈজ্ঞানিক জরিপ পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রামের চুনতিতে দশ একর জায়গাজুড়ে একটি হাতি অভয়ারণ্য স্থাপন করা হবে, যেখানে পোষা হাতিদের পুনর্বাসন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল হাসান; দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ডলাইফ স্পেশালিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মনিরুল এইচ খান; বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক (কেন্দ্রীয় অঞ্চল) এ. এস. এম. জহির উদ্দিন আকন; আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও হাতি বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব এবং বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল) মো: ছানাউল্যা পাটওয়ারী।
তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটি আগে তিস্তা সেতু নামে পরিচিত ছিল।
সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে দুপুরে সেতুটির উদ্বোধন করবেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সেতুর উভয় পাশে স্থানীয় জনগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বড় মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাটের মধ্যে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে ভ্রমণের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি কমিয়ে দেবে।
সেতুটি সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, সংযোগ সড়কে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী ব্যবস্থাপনায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং ভূমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সেতুটিতে মোট ৩০টি পিলার রয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি নদীর ভেতরে এবং ২টি নদীর তীরে। নদী শাসনের আওতায় উভয় তীরে মোট ৩.১৫ কিলোমিটার কাজ করা হয়েছে।
এছাড়াও, মোট ৫৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন-এর মধ্যে চিলমারী মাটিকাটা জংশন থেকে সেতু পর্যন্ত ৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার এবং সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার।
এলজিইডি সূত্র জানায়, এই সেতুটি রংপুর শহর এবং কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা শহরের মধ্যে কৃষিপণ্যের পরিবহন জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে কৃষকেরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারবেন, আয় বাড়বে এবং অঞ্চলের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
মন্তব্য