সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াকে অতীতে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে এবং আইনি পদ্ধতিতে চলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী।
মোহাম্মদ শিশির মনির সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১৩ বছরে এই মামলার তদন্ত শেষ করে রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। আমরা মনে করি, এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে এই সরকার আসার পর হাইকোর্ট বিভাগের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি উচ্চতর টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
‘সে টাস্কফোর্স আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবেন।’
এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘অতীতে এই মামলাটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে দেওয়া হয়নি। এই মর্মেও তদন্তে কিছু তথ্য-উপাত্ত এসেছে। অতীতে এই ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত) সিস্টেমকে (প্রক্রিয়াকে) অবস্ট্রাকশন (বাধাগ্রস্ত) করা হয়েছে। ইনভেস্টিগেশন প্রসেসকে সঠিকভাবে আইনি পদ্ধতিতে চলতে দেওয়া হয়নি।
‘১৩ বছরে অনেক সাক্ষ্য-প্রমাণই গায়েব হয়ে গেছে। তবে সবকিছুর পরও এখন একটি আশার আলো দেখা যাচ্ছে। আমরা আশা করি স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই হাইকোর্ট তদন্তকারী কর্মকর্তারা একটি গ্রহণযোগ্য এবং সত্যিকার একটি বিচার পরিচালনা করার মতো উপযুক্ত তদন্ত রিপোর্ট আদালতের সামনে দাখিল করবেন।’
সাংবাদিক রুনির ভাই ও মামলার বাদী নওশের রোমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করব, যেহেতু আগের সরকার এখন নেই। আগের সরকারকে আমরা মনে করতাম যে, আগের সরকারের সংশ্লিষ্ট কেউ বা সরকার স্বয়ং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কারণ যত ধরনের নাটক হয়েছে, ডিএনএ টেস্ট থেকে শুরু করে আমাদের হয়রানি এবং নানা সময়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী যেসব কথাবার্তা বলেছেন, স্বয়ং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, কারও বেডরুমের পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব তার না।
‘এই শব্দটা থেকেই আমরা আসলে মনে করি যে, তৎকালীন সরকার বা তাদের সংশ্লিষ্ট কেউ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তবে এখন যেহেতু সব কিছু পরিবর্তন হয়েছে, এখন কিছুটা আশার আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
এ মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে সাগর-রুনির একমাত্র ছেলে মেঘ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন তো দেখতেছি ওরা কাজ করতেছে। একটু হইলেও আমরা হোপফুল। আশা করা যাচ্ছে পজেটিভ কিছু একটা শুনতে পারব।’
রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। এ সময় বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।
সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন।
এ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের আলম। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে তদন্তে ব্যর্থতার একপর্যায়ে ডিবি থেকে র্যাবকে এই মামলা তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের ধরা হবে বলে সময় বেঁধে দেন। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি কথার ফানুস হয়েই নিষ্ফল হয়। বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে এখন পর্যন্ত ১১৬ বার সময় নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে একটি মাইক্রোবাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
ওই সময় ছিনতাইকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসটির দুই যাত্রী।
আহত দুজন হলেন মাইক্রোবাসের যাত্রী তাহেরা বেগম (৬৫) ও আবদুস সালাম (১৮)। তাদের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায়।
প্রত্যক্ষদর্শী মাইক্রোবাসের যাত্রী হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমার ছোট ভাই হুমায়ুন কবির সৌদি আরব প্রবাসী। ছুটিতে তিনি আজকে বাংলাদেশে আসছেন। আমরা যাচ্ছিলাম তাকে এয়ারপোর্ট থেকে এগিয়ে আনতে। ভোর সাড়ে তিনটার দিকে আমরা সোনাইমুড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই। এ সময় চালকসহ আমরা চারজন মাইক্রোবাসটিতে ছিলাম।
‘শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় পৌঁছাই। এ সময় ঢাকাগামী লেনে একটি যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার শিকার হলে মহাসড়কের এই অংশে যানজট ছিল। যানজটে আটকে থাকার সময় হঠাৎ করে তিন-চারজন যুবক বগি দা, রামদা নিয়ে আমাদের গাড়িতে হামলা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের মারধর করে নগদ ২৮ হাজার টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ডাকাতের হামলায় আমার মা তাহেরা বেগম, আমার ভাগিনা আবদুস সালাম আহত হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় গজারিয়া থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’
ছিনতাইয়ের ঘটনায় আহত আবদুস সালাম বলেন, ‘দিনে-দুপুরে এভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। তা ছিল আমাদের কল্পনার বাহিরে। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে আমাদের সাথে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
‘আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে রামদা দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। আমি সরে গেলে তা আমার পাঞ্জাবিতে লাগে।’
আহত তাহেরা বেগম বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা আমার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চাইলে আমি তাদের বাধা প্রদান করি। এ সময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে। তাদের সাথে না পড়ে একসময় বাধ্য হয়ে আমি ভ্যানিটি ব্যাগ তাদের দিয়ে দিই।’
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানায় অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া মহল্লার ওলিউর রহমান নয়ন বাদী হয়ে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে, ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলাটি দায়ের করেছেন।’
মামলায় অপর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা সভাপতি আবু ইবনে রজবী, আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা রশিদুল ইসলাম, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী সমিতির সভাপতি মাসুদ আলম, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার শাহ আলম, ধীমান সরকার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মুক্তি বাবু ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী সৈয়দা সেলিনা মমতাজ।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি শহরের মুন্সিপাড়ার লুৎফুন্নেসা টাওয়ারে তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় রিজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৎকালীন প্রাথমিক গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছিলেন।
এ উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে আসামিরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
তিনি অভিযোগে জানান, ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে তার প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকি দেয় এবং তারা বলেন, ইকবালুর রহিমকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো নেতাকে দিয়ে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করায় তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে বাদী নয়নকে আসামিদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তাকে অপহরণ করে আসামি আবু ইবনে রজবীর সদর উপজেলার বাঙ্গিবেচা ঘাটের পাশে তার রিসোর্টে নিয়ে গিয়ে আটক করে রাখা হয়। পরে আসামিদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে বাদী ওই দিন বিকেলে তার স্কুলের কর্মচারী সাক্ষী মিজানুর রহমান ও মিজানুর রহমান জুয়েলের মাধ্যমে আসামি রশিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ধীমান সরকারকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা হিসেবে পরিশোধ করেন।
আসামিরা চাঁদা পেয়ে অবশিষ্ট ৭০ লাখ টাকা স্বল্প সময়ের মধ্যে দেওয়ার অঙ্গীকারে ওলিউরকে ছেড়ে দেয়।
ওলিউর তার মামলায় অভিযোগ করেন, আসামি ইকবালুর রহিমের প্রভাবে পরবর্তী সময়ে আসামি সৈয়দা সেলিনাল মমতাজ বাদী হয়ে তার কন্যাকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি নিয়মিত মামলা এবং অপরটি নারী নির্যাতন আইনে। এই মামলা দুটি অনেক অর্থের বিনিময়ে আপস-নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এরপর নয়ন নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্য চলে যান। বর্তমানে দেশে মামলা দায়ের ও বিচারের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর ৬৫ বছর বয়সী আসামিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে পারি। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
‘রাত ৯টার দিকে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী দাবিদার শিশুটির ফুফু জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের বাড়ির পাশের মুদি দোকানে যায় শিশুটি। দোকানের মালিক শিশুটিকে চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দোকানের ভেতরে নিয়ে যান। সে সময় তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। হঠাৎ তিনি (ফুফু) সেখানে উপস্থিত হলে হাতেনাতে বিষয়টি ধরে ফেলেন।
ফুফুর অভিযোগ, তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে উল্টো মুদি দোকানি ও তার ছেলেরা তার ওপর চড়াও হন। অভিযুক্তের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষণের অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা উল্টো নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
শিশুটি বলে, ‘শুধু আমি একা না, দাদার দোকানে যারাই যায় আশেপাশে কেউ না থাকলে তিনি বাচ্চাদের তার কোলে নিয়ে বসায়। বিস্কুট দেয়, বেলুন দেয়। তারপর শরীরে হাত দেয়।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মুদি দোকানির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আগেও পাওয়া গিয়েছিল। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত দোকানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে প্রদত্ত ‘নো অর্ডার’ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে বিভিন্ন মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হয়ে থাকে। বিষয়টির প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময়ে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
“ফলে ‘নো অর্ডার’-এর প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট হতে কোনো মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হলে আবেদনকারীর প্রার্থিত প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়নি এবং চেম্বার কোর্ট বিতর্কিত আদেশ বা রায়ের বিষয়ে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই আবেদনটি নিষ্পত্তি করেছেন মর্মে গণ্য করতে হবে।”
জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে থাকা ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুদকের আলাদা দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
মির্জা আজমের নামে ১৮টি ও স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া তাদের ১৯ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অষ্টম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আগামীকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে বিষয় করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি, টহল জোরদার এবং গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘ঈদ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে অভিযান বৃদ্ধি করা হবে।’
ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
ঢাকা জেলার আদালত পরিদর্শক আকতার হোসেন বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন মো. সজিব, মো. রাকিব ও শাওন ওরফে ভ্যালকা শাওন। এ ছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় তাদের তিনজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
এদিকে আলী আকবর ও মো. রিয়াজ নামে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা তিন আসামি রাকিব, রিয়াজ ও শাওনকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে দণ্ডিত রাকিব এবং শাওনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডিত সজিব পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ জুন কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আঁটিবাজার এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছিল। ডিউটি চলাকালে সকাল পৌনে ৮টার দিকে জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে সংবাদ পায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে পুকুরের পানিতে একজনের লাশ পানিতে ভাসছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় পুলিশ মামলা করে তদন্ত শুরু করে। প্রথমে ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার সাক্ষী হিসেবে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, এটা তার বান্ধবী মারিয়ার লাশ।
স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করে। শাওন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। সেখানে জানান, তিনি, মো. রাকিব, মো. সজিব, মো. আলী আকবর মিলে ভিকটিম মারিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের পানিতে ফেলে রাখেন। পরে রাকিব এবং সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও একই কথা বলে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক অলক কুমার দে। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য