আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে একদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
নদভীকে সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক এই এমপিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লালবাগের আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা কামরুল হাসান ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে বোরো ধানের জমি থেকে নাক ও কান কাটা এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের উকারগাঁও গ্রামের বোরো জমি থেকে রোববার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ওই যুবকের নাম মনির হোসেন (৩০), যিনি শান্তিগঞ্জের উকারগাঁও গ্রামের প্রয়াত মোকসেদ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুজন পরিচিত মানুষ ওই যুবককে ডেকে নিয়ে যায়। সারা রাত বাড়িতে না ফেরায় সকালে পরিবার ও গ্রামের লোকজন খোঁজাখুঁজি করলে উকারগাঁও গ্রামের বোরো জমিতে নাক-কান কাটা অবস্থায় যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ বোরো জমি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
কী কারণে যুবককে এভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, ‘নাক-কান কাটা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে শহিদুল ইসলাম নামের এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তি গোপনে রংপুরে চিকিৎসাধীন বলে খবর পাওয়া যায়।
আহত শহিদুল ইসলামের (৪০) বাড়ি পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের কাশিরডাঙ্গা গ্রামে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বিজিবি জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের প্রধান পিলার ৮৫৯ নম্বরের ৪ নম্বর উপপিলার এলাকা দিয়ে বাংলাদেশি গরু পারাপারকারীদের চার থেকে পাঁচজনের একটি দল ভারতের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার ময়নাতলী গ্রামে গরু আনতে যান। ওই সময় ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় শহিদুল গরু নিয়ে ফেরার পথে ১৬৯ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বুড়াবুড়ি ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা পাঁচটি গুলি ছোড়েন। এতে তার পায়ে গুলি লাগে।
পরে সঙ্গীরা তাকে রাতেই রংপুরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে গোপনে চিকিৎসাধীন তিনি।
বিজিবির কমান্ডার সুবেদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আহত গরু ব্যবসায়ী (ডাঙ্গোয়াল) ছিলেন। এ ঘটনায় রোববার সকালে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠক করা হয়েছে।
‘বৈঠকে মীররাপা বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহম্মেদকে রোববার একটি কক্ষে আটকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চাকরি হারানো অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তাৎক্ষণিকভাবে থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ডা. শামীম।
অভিযোগে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক লিখেন, ‘১০০ শয্যাবিশিষ্ট ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শাহাদাত হোসেন ১২ জানুয়ারি দুপুর দেড়টায় আমার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাকে উদ্ধার করেছে।’
লিখিত অভিযোগে সদর হাসপাতালের শাহাদাত হোসেন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে গাড়িচালক শাহাদাত হোসেনের চাকুরির মেয়াদ শেষ হয়েছে। চালক শাহাদাতের কাছে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহন বাবদ সরকারি ইউজার ফি জমা প্রদানের জন্য পত্র দেওয়া হয়েছে।
‘সে হাসপাতালের অফিসার্স কোয়ার্টারে অবৈধভাবে রুম দখল করে মাদক সেবন ও মাদকের কর্মকাণ্ড করে। তাহার কর্মকাণ্ডে ও চলাফেরায় সন্দেহ হয়েছে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘ইতিপূর্বে শাহাদাতের অ্যাম্বুলেন্স থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১১ জানুয়ারি গাড়িচালক শাহাদাত আমাকে হুমকি প্রদান করে। সে আমার সরকারি বাসভবনের সিসি ক্যামেরাটি নষ্ট করেছে, যা তার আচরণে প্রমাণিত হয়।’
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাত হোসেনের এমন কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বেআইনি ও হত্যাচেষ্টার শামিল। তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানা পুলিশকে লিখিত অবগত করেন তত্ত্বাবধায়ক শামীম আহম্মেদ।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহম্মেদের দেওয়া লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগে উল্লেখিত আসামি গাড়িচালক শাহাদাতকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।
‘এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। মামলা রুজুর পরে আসামি শাহাদাতকে আদালতে পঠানো হবে।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন এইচএম জহিরুল ইসলাম হাসপাতালের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আমার বিরুদ্ধে লাগিয়ে রেখেছে। তার উদ্দেশ্য মহৎ নয়। শাহাদাতকে দিয়ে গ্যাঞ্জাম করানোর পেছনেও তার হাত আছে।’
আরও পড়ুন:‘বিডিআরের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের আর মাত্র তিন মাস বাকি ছিল আমার বাবার। আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। এখন আমি দুই সন্তানের জননী।
‘দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত বাবার জন্য অপেক্ষা করছি। কী দোষ ছিলো আমার বাবার? আমার বাবা মিথ্যা সাক্ষী দেয়নি বলেই কি জেলে তাকে আটকে রেখেছেন আপনারা? মিথ্যা রাজসাক্ষী না দেওয়াই কি ছিল তার অপরাধ? আমি স্বাধীন তদন্ত কমিশনকে বলব যেন দ্রুত আমার বাবাসহ নির্দোষ সকল বিডিআরকে মুক্তি দেওয়া হয়।’
অশ্রুসিক্ত চোখে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন জেলবন্দি বিডিআর সদস্য আক্তার আলীর কন্যা আফরিন আক্তার।
একই মানববন্ধনে কাঁদেন অন্য এক বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তান জয়দেব বিডিআরের মুক্তি চাই। তার চাকরি ফেরত চাই।’
মানবন্ধনে এ প্রতিবেদককে ডেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি চন্দন বিডিআরের বোন মুক্তি রাণী বলছি ভাই। আমার ভাইটাকে কবে ফেরত পাব? আমার ভাইয়ের ছেলে শ্রাবণ বুঝ হবার পর থেকে বাবাকে খুঁজছে।
‘কেন তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না? তাদের নিয়ে কি নতুন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে? আমরা খুব আশা নিয়ে আছি ফ্যাসিস্ট সরকার চলে যাবার পর তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিবে।’
ঠাকুরগাঁওয়ে তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা।
ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার দুপুর ১২টার দিকে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার পিলখানাসহ সারা দেশে চাকুরিচ্যুত সব বিডিআর সদস্যের পরিবারকে পুনর্বাসনপূর্বক চাকরিতে পুনর্বহাল, ১৬ বছর যাবত জেলবন্দি সব নির্দোষ বিডিআর সদস্যকে জেল থেকে মুক্তি, স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সত্য উদঘাটন ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।
দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উপজেলার রাউতি ইউনিয়নের বানাইল গ্রামে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত আবুল হাসান রতন (৫৫) বানাইল গ্রামের প্রয়াত নূরুল হকের ছেলে ও রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, তাড়াইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাঈদুজ্জামান মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন লিটনের পরস্পরবিরোধী দুটি গ্রুপ আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি তাড়াইল উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে দুজনই সভাপতি প্রার্থী। সম্মেলনকে সামনে রেখে শনিবার রাতে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন রাউতি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য গিয়াস উদ্দিন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন লিটনের সমর্থক।
অপরদিকে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান রতন উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাঈদুজ্জামান মোস্তফার সমর্থক। আবুল হাসান রতন ও গিয়াস উদ্দিন আত্মীয়তার সূত্রে চাচা-ভাতিজা। পথসভায় গিয়াস উদ্দিন সভাপতিত্ব করায় ক্ষিপ্ত হন আবুল হাসান রতন ও তার লোকজন। রোববার সকালে এ নিয়ে কথাকাটাকাটি থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে আবুল হাসান রতন নিহত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে আহত হন আটজন।
স্থানীয় বিএনপির দাবি, দলীয় বিষয় নয়; পারিবারিক বিষয় নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির রহমান জানান, উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবুল হাসান রতন নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে হত্যাকণ্ডের প্রতিবাদে নিহত রতনের সমর্থকরা রোববার দুপুরে তাড়াইল উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আরও পড়ুন:নেত্রকোণায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮) খুনের ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলার আলাদা দুটি স্থানে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ এবং নেত্রকোণা কার্যালয়ের সদস্যরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাদের আটক করে। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, অভিযান চালিয়ে সাজিবুল ইসলাম ওরফে অপূর্ব (২৮) এবং মো. বাকী বিল্লাহ (৩০) নামের দুই যুবককে আটক করা হয়। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত লাল রঙের একটি পালসার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
শফিকুল দুর্গাপুরের চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি জামালপুর পুলিশ লাইনসের বেতার বিভাগে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, থানা-পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম ছুটি নিয়ে গত বুধবার বাড়িতে আসেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি দুর্গাপুর পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হন। সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে পানমহাল রোড এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সর্বশেষ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা গত শুক্রবার সকালে বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত ছয়জনকে আসামি করা হয়।
হত্যাসংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে শফিকুল ইসলাম প্যান্ট ও শীতের পোশাক পড়ে পানমহালের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ওই সময় আকস্মিকভাবে তিন থেকে চারজন যুবক হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। ওই যুবকদের মধ্যে একজনের মাথায় টুপি রয়েছে। তিনজনই জ্যাকেট পরা। দুজনের জ্যাকেটে হাত হলুদ রঙের।
ওই এলাকার একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে জানান, তিনি চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে দেখেন কয়েকজন দুর্বৃত্ত শফিকুলকে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে। পরে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে সটকে পড়ে। তবে অন্ধকার থাকায় কাউকে চেনা যায়নি।
নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারা, কেন আমার ছেলেকে হত্যা করল, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি তো আমার ছেলেকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু আমি চাই জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে তাদের ফাঁসি দেওয়া হোক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার জানান, রোববার দুপুরের দিকে নেত্রকোণা জেলা আদালতে গ্রেপ্তারকৃতদের সোপর্দ করা হয়।
আরও পড়ুন:গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখার ২৯ জন নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকও রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আবদুল কাদির স্বাক্ষরিত এক আদেশে রোববার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়।
এ নোটিশে বলা হয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা সংক্রান্ত বিষয়ে শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্তে ২৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে যাচাইপূর্বক অধিকতর শাস্তির বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আসিফুল ইসলাম, ২০২০-২১ সেশনের ইলিয়াস সানী, মো. আকাশ আহমেদ, একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের শাবিপ্রবির শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান হোসেন চৌধুরী, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি শিমুল মিয়া এবং একই বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী দুর্জয় সরকার নিলয়, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী মো. সিয়াম খান ও সজীব চন্দ্র নাথ এবং ২০২১-২২ সেশনের সৈয়দ মাজ জারদি।
পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের মনিরুজ্জামান মুন্না, ২০১৯-২০ সেশনের মোজিদুল হক, একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের শাবিপ্রবি শাখার সহসভাপতি মোহাম্মদ রাকিবুজ্জামান, একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. নাফিউজ্জামান, ২০১৮-১৯ সেশনের মো. ইসমাইল হোসেন ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইউসুফ হোসেন টিটু।
বায়োকেমিস্টি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শুভ্র রায় শ্যাম ও ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লোকমান হোসেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের মারুফ মিয়া, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তৈমুর সালেহীন তাউস, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের রওফুন জাহান (মিলিনিয়াম), ২০২১-২২ সেশনের শিহাব উদ্দিন মিশু ও মোজাহিদুল ইসলাম সাইমুন, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের রেদোয়ান হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান, একই বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি রেজাউল হক, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মাঈদুল ইসলাম ও ২০২০-২১ সেশনের তারেক হাসান, বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমান। বহিষ্কৃতরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এর মধ্যে শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুদ্র সেন হত্যা মামলার আসামি। এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা সিলেট কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য