মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই কলেজ ছাত্র প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন।
বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল সড়কের বটতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জ আসার পথে ভানুগাছ বটতলা এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে একটি শিশু সিটকে পড়ে। এ সময় শিশুটিকে রক্ষা করতে অটোরিকশাটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন অটোরিকশাটির যাত্রী সায়েম মিয়া, অমিত সূত্রধর, জান্নাতুল ও শওকত দেব। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক সায়েম মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক অমিত সূত্রধরকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সায়েম মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্ব মাইজদী এলাকার কাশেম মিয়ার ছেলে এবং কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী। অমিত সূত্রধরও কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী। আহত অপর দু’জনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর সায়েম মিয়াকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে অমিত সূত্রধর মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারান্তরীণ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি হয়নি। এ সংক্রান্তে ঢাকা থেকে আসা এক আইনজীবীর তিনটি আবেদনই নাকচ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালতে বুধবার উপস্থিত হয়ে চিন্ময়ের জামিন শুনানি এগিয়ে আনাসহ তিনটি আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী। কিন্তু ওকালতনামা না থাকায় আদালত তার তিনটি আবেদনই নামঞ্জুর করে।
এ সময় ওই আদালতে উপস্থিত চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, আসামি পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আদালতে তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন। এর একটি চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ ২ জানুয়ারি থেকে এগিয়ে আনার জন্য, একটি নথি উপস্থাপনের জন্য এবং অপরটি তাকে শুনানি করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য।
আদালত অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চায়, তার কাছে ওকালতনামা আছে কিনা বা মামলা পরিচালনার জন্য আসামি পক্ষের আইনজীবীর অনুমতি আছে কিনা। এ সময় তিনি নেই বলে জানালে আদালত তাকে আইন মেনে আসতে বলেন।’
অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি ওনার এ ধরনের দরখাস্ত দেয়ার আইনি অধিকার নেই। তার কাছে আসামির ওকালতনামা নেই এবং যিনি এই মামলা ফাইল করেছেন তার পক্ষ থেকেও তাকে কোনো পাওয়ার দেয়া হয়নি।
‘শুনানি করা বা নথি উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই ওকালতনামা দিতে হবে অথবা ফাইলিং আইনজীবীকে বলতে হবে- ঢাকা থেকে যিনি এসেছেন তিনি তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই আইনজীবীর কাছে এর কোনোটাই ছিল না। তাই আদালত এটা রিজেক্ট করে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন থাকলেও কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানির দিন আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে একদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫৩৬ জন। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৬০৩ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৩, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৮৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৭৮, খুলনা বিভাগে ৪৫, রাজশাহীতে ২৭, ময়মনসিংহে ১৩, রংপুরে ৩ এবং সিলেট বিভাগে দুজন রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৯৭ হাজার ৬০৩ জনের মধ্যে ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী। একই সময়ে মারা যাওয়া ৫৩৬ জনের মধ্যে ৫১ দশমিক ৭০ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ পুরুষ।
এছাড়াও একই সময়ে সারা দেশে ৫১৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯৫ হাজার ১৫১ জন।
আরও পড়ুন:দেশের উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। অন্যান্য অঞ্চলেও ক্রমেই কমছে তাপমাত্রা। আগামী পাঁচ দিনে সারাদেশে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে আগামী পাঁচ দিন তাপমাত্রা কমতে পারে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।’
সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পেতে পারে। আর দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপ দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে নেয়ার পর গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে। এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে না। এতে করে সীমান্তে বসবাসকারীদের মাঝে এক ধরনের ‘স্বস্তি’ ফিরেছে।
তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা মংডু শহর পুরোপুরি আরাকান আর্মি দখলে নেয়ার পর নিরাপত্তার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নয়াপাড়া ও শাহপরীর দ্বীপের লোকজন সীমান্তে লবণ চাষসহ নাফ নদের তীরে টেলা জালে মাছ ধরতে ব্যস্ত ছিল জেলেরা। তবে নাফ নদে আগের মতো দেখা যায়নি জেলে নৌকা।
নাফের তীরে টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটের ভ্রাম্যমাণ দোকানি বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে রাতে মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দে আমাদের র্নিঘুম রাত কেটেছে। কেননা সেদেশে যুদ্ধের কারণে বোমা-গুলির শব্দে এপারে বাড়িঘর বার বার কেঁপে উঠছিল।’
তিনি বলেন, ‘গত দুদিন ধরে পাশের দেশ (রাখাইন) থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যায়নি। যার ফলে রাতে নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছি।’
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘গত দুদিন ধরে ওপারে সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। এজন্য আপাতত এপারে দ্বীপের ৩০ হাজার মানুষ স্বস্তিতে আছে। লোকজন চাষাবাদেও ফিরছে।’
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের বোট মালিক সমিতির সভাপভি আবদুর রশিদ বলেন, ‘সীমান্তে আগের মতো গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও নিরাপত্তার কথা ভেবে সামায়িকভাবে আমাদের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন এলাকা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এজন্যই নিরাপত্তার জন্য সীমান্তবর্তী নাফ নদ ও সাগরে মাছ শিকার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে সেন্টমার্টিনে পর্যটকের আগমনসহ দ্বীপবাসীর জন্য ইমার্জেন্সি সাপ্লাইয়ের জন্য কিভাবে ঝুঁকিহীনভাবে নৌযান চলাচল করতে পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের জোরদার টহল রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সীমান্তে চরম উত্তেজনায় মাছ ধরার নৌকাগুলোকে নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মাছ ধরার নৌকার মালিকরা মিয়ানমার সংলগ্ন এলাকায় মাছ শিকারে যাবেন না বলে আস্বস্তু করেছেন। আপাতত সীমান্তে গোলার শব্দ বন্ধ থাকলেও কখন আবার গোলাগুলি শুরু হয় বলা মুশকিল।’
টেকনাফ-২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিকনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ রোধসহ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে বিজিবি।’
আরও পড়ুন:ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে যাত্রা করা বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের লংমার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে।
বুধবার বিকেল ৪টার দিকে লংমার্চের বহর স্থলবন্দর মাঠে এসে পৌঁছে। সেখানে সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে সকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সকাল ৯টার দিকে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী আনুষ্ঠানিক লংমার্চ শুরু করেন।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননাসহ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপির তিন সংগঠন।
কর্মসূচি ঘিরে স্থলবন্দর এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আখাউড়া স্থলবন্দরে গ্রামপুলিশ, থানা–পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে সংগঠন তিনটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছেন।
লংমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের পথসভায় বক্তব্য দেন নেতারা।
এদিকে স্থলবন্দর মাঠ থেকে আধ কিলোমিটার আগেই জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লার নেতৃত্বে নেতা–কর্মীসহ সব মানুষের যানবাহন থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। সেখানে একটি ফাঁকা জায়গায় নেতা–কর্মীদের পাঁচ হাজার যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরে বিজিবির পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে লংমার্চ শুরুর আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় রিজভীসহ তিনটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তারা ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমের আধিপত্যবাদী মনোভাব এবং মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান।
পরে কয়েক শ’ গাড়ি, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন থেকে কাঁচপুরের দিকে লংমার্চ শুরু করেন।
লংমার্চের গাড়িবহরটি ফকিরাপুল, মতিঝিল ও ইত্তেফাক মোড় ও হানিফ ফ্লাইওভার অতিক্রম করে যাত্রাপথে এগিয়ে যায়।
কাঁচপুর থেকে ভৈরবের দিকে যাত্রা করে আগরতলার কাছে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছানোর আগে একটি পথসভা করবে বিএনপির এই তিন সহযোগী সংগঠন।
কর্মসূচিতে যোগ দিতে বুধবার সকাল ৭টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
এর আগে রোববার বিক্ষোভ মিছিলের পর ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেয় বিএনপির তিনটি সংগঠন।
এর একদিন পর তারা আগরতলা অভিমুখে লংমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা সরকার ঘোষিত বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাখান করে ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন।
কর্মবিরতির কারণে এ অঞ্চলের অনেক কারখানায় বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজিএমইএ ও শিল্প পুলিশ বলছে, আশুলিয়ায় আজ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করার দাবিতে কাজ বন্ধ বা শ্রমিকরা কাজ না করে চলে গেছে, এমন কারখানার সংখ্যা ৩৫টি।
আশুলিয়ার নরসিংহপুর ও আশপাশের এসব কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, হা-মীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার, নেক্সট কালেকশন, আল মুসলিম, সেতারা গ্রুপ, নিউ এইজ, ডেকো, ব্যান্ডো ডিজাইন, ভিনটেজ, নীট এশিয়া, মানতা, ডেবুনিয়ার, অরবিটেক্স, এএম ডিজাইন, ইসলাম গার্মেন্টস, দ্য রোজ, অ্যাপারেলস গ্যালরি, এথিক্যালসহ বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এলেও ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন।
শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে নাসা ও ট্রাউজার লাইন শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
শ্রমিকরা কোনো বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা না করলেও বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি পালন করেন এবং কেউ কেউ কারখানা থেকে বেরিয়ে যান।
এর আগে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবারও আশুলিয়ার অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
নীট এশিয়ার একজন শ্রমিক বলেন, ‘গত ৩ দিন যাবতই আমাদের কারখানায় ঝমেলা চলছে। শ্রমিকরা কাজ করে না।
‘আশপাশের কারখানার সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও একই দাবিতে আন্দোলন করছি; দাবি বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ করার।’
দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক সাধন কুমার বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) শ্রমিকরা আমাদের কারখানায় কাজ করেছিল, কিন্তু আজ কারখানায় এলেও আর কাজ করেনি। পরে অবশ্য আমরা কথা বলার পর শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছিল, কিন্তু আশেপাশের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আমরা আর চালাতে পারিনি।’
শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা। তাই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছে, তবে কোনো প্রকার অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা তারা করছেন না।
‘এ অঞ্চলের ১৯টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর কাজ না করে চলে গেছে এমন কারখানার সংখ্যা ১৫ থেকে ১৬টি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য