নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হুমকির পাশাপাশি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনা উল্লেখ করে জেলা শহরে সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেছেন ডালিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি।
বারহাট্টা উপজেলার চিরাম ইউনিয়নের নৈহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আলাউদ্দীন তালুকদারের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ডালিম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত একই গ্রামের মো. মানিক শেখ।
সাংবাদিকদের কাছে রোববার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ডালিম মিয়া লিখিত অভিযোগে জানান, নৈহাটি গ্রামে তার বাড়িতে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আইরিন আক্তার, সাত বছরের ছেলে আল আদিয়াত আইয়ান ও বৃদ্ধ মা, বাবা থাকেন। ডালিম মিয়া কাজের সুবাদে নেত্রকোণা জেলা শহরে থাকেন। শুক্রবার রাত আটটার দিকে এলাকা থেকে ডালিমের মোবাইলে তার কাজের ছেলেকে জিম্মি করে আটকে রেখে অভিযুক্ত মানিক শেখ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
তিনি জানান, তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মানিক শেখ হুমকি দেন এবং মানিকের লোকজন নিয়ে রাতে ডালিমের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেন।
ডালিম মিয়া জানান, মানিক শেখ ও তার কিশোর গ্যাং বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের সময় ডালিমের আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আইরিন আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দেন। ওই সময় ডালিমের স্ত্রী আইরিন আক্তার অজ্ঞান হয়ে যান। পরে মানিক শেখ ডালিমের ঘরে থাকা তিন ভরি স্বর্ণ ও পারিবারিক কাজের জন্য ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে যান।
তিনি আরও জানান, মানিক শেখ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। এলাকার লোকজন তার ভয়ে আতঙ্কিত থাকেন। মানিক শেখের সঙ্গে জড়িত এলাকার কিছু মাদক কারবারি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মানিক শেখকে কল করে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন পরিকল্পিতভাবে অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘এই অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে অন্যায়ভাবে চিত্রিত করছে।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শনিবার করা এক পোস্টে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও অধিকার গোষ্ঠীগুলোকে তিনি বাংলাদেশে এসে এ বিষয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
শফিকুল বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। আমরা আশা করি, শীর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ এবং উদারপন্থি সংবাদপত্রগুলো কাউন্সিল দ্বারা প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনকে বিশ্বাস না করে তারা নিজেরা তদন্ত করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এসব মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে কেউ কেউ বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানোর বা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা এ ধরনের বার্তার প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
শফিকুল বলেন, ‘আমরা আশা করি আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠী, যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করবে; যেভাবে তারা তদন্ত করেছিলেন ২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যার বিষয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন যে অতিরঞ্জিত, তা প্রমাণিত হয়েছে নেত্র নিউজের একটি প্রতিবেদনে।’
নেত্র নিউজ একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট এবং নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের জন্য তাদের খ্যাতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম নেত্র নিউজের প্রতিবেদনের পর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অন্তত একটি বিবৃতি দেবে। কারণ, তাদের প্রকাশিত অতিরঞ্জিত প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করেছে একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট, কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা কোনো বিবৃতিও দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে নয়জন হিন্দু সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু এটা কোনোভাবেই সত্য নয়। তারা কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়নি, বরং তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুর পেছনে রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত এবং অন্যান্য কারণ ছিল।
‘এই একই সময়ে একই কারণে আরও বহু মানুষও নিহত হয়, যারা হিন্দুও নয়, সংখ্যালঘু নয়, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী হামলার প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ মিলিয়নেরও বেশি বার উদ্ধৃত করা হয়েছে। বিশেষ করে এটা প্রচার করছে শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী একটি হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতীয় মিডিয়া এবং ভারতীয় ভাষ্যকাররা।
‘তারা বাংলাদেশ নিয়ে ভুল মেসেজ তৈরি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’
আরও পড়ুন:নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে নারীসহ দুই ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের নজরপুর এলাকায় শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মানিক মিয়া (৫৫) ও সাবেক নারী ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম (৩২)। তারা উভয়ই রুবেল গ্রুপের সদস্য।
আহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন আমির হোসেন (২১) ও রাব্বি মিয়া (২৪)।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে উপজেলা যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেল ও রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হারুন অর রশিদের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সংঘর্ষে রুবেলের চাচা মানিক মিয়া পার্শ্ববর্তী চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বশির উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
‘এ সময় হারুন অর রশিদের সমর্থকরা তাকে বশির উদ্দিনের উঠানে কুপিয়ে হত্যা করে বলে জানা যায়।’
নিহত মানিক মিয়া চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। কল্পনা বেগম একই ইউনিয়নের সাবেক নারী ইউপি সদস্য।
ওসি জব্বার বলেন, ‘দুই গ্রুপের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে ভোর থেকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ দুইজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার বিস্তারিত পরে জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠীর যুদ্ধের মধ্যে শুক্রবার রাত থেকে গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এ শব্দ শনিবার ভোর পর্যন্ত পাওয়া যায়।
এমন বাস্তবতায় নতুন করে অনুপ্রবেশের শঙ্কার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।
সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাংয়ের পূর্বে নাফনদীর ওপারে রাখাইনের মংডু টাউনশিপের বিপরীতে মংডু শহরের অবস্থান। ওই সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
চলমান যুদ্ধে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি অধিকাংশ এলাকা তাদের দখলে নেয়। এসব জায়গা পুনরুদ্ধারে কয়েক দিন ধরে ব্যাপক হামলা চালায় দেশটির জান্তা সরকার। এ কারণে সে দেশের গোলার শব্দে এপারের সীমান্ত কেঁপে উঠছে।
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘রাতভর মিয়ানমারের গোলার কারণে নির্ঘুম রাত কেটেছে। সকাল পর্যন্ত বড় ধরনের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে।
‘তাই আমরা রাত জেগে বসে ছিলাম। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে ছিল।'
সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারে এখনও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। বর্তমানে মংডুতে হামলা হচ্ছে। সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গার বসবাস। এভাবে যুদ্ধ চলমান থাকলে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।
সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক মুর্শেদ।
এদিকে খারাংখালী, টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদীর মোহনায় থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।
সীমান্তের বাসিন্দা গফুর আলম বলেন, ‘সীমান্তে রাতভর গোলার বিকট শব্দে মানুষ ঘুমাতে পারিনি। একটু পরপর গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে, যার কারনে ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি।
‘রাতের মতো এমন গুলির শব্দ আগে কখনও শুনিনি। এ পরিস্থিতিতে যেকোনো মুহূর্তে সীমান্তে আবারও অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।’
ক্যাম্পে বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘রাখাইনে কয়েক দিন ধরে ফের যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে, যার কারনে সে দেশে থাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করছে পালিয়ে আসার জন্য, কিন্তু তাদের এ দেশে না আসতে নিরুৎসাহিত করছি। তবু মানুষ প্রাণে ভয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
অন্যদিকে মিয়ানমারের মংডু শহরের মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে।
এমন বাস্তবতায় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার এলাকায় নাফ নদে বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা দিন-রাত টহল বৃদ্ধি করেছেন।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আমিও গোলার বিকট শব্দ শুনেছি। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
‘আমরা সীমান্তের বসবাসকারী মানুষের খোঁজখবর রাখছি। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রবেশে বাধা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ।
এসপি শুক্রবার রাত আটটার দিকে প্রবেশ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তাকে বাধা দেয়া হয়।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক পক্ষ চলমান ‘ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী সংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ’-এর বিরোধিতা করে সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই কুমিল্লার এসপি মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে নিয়ে একটি গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসে। গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ তার প্রবেশে বাধা দেয়।
পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন এসে এসপিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করাতে চান। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের হট্টগোলে পুলিশ সুপার কিছুক্ষণ ফটকে অপেক্ষা করেন। পরবর্তী সময়ে ফিরে যান।
জানতে চাইলে এসপি নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসা হয়নি। তাই আজকে এক জায়গা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম।’
সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আমরা উনাকে ইনভাইট করেছিলাম, কিন্তু উনি যে আসবে বিষয়টি বিকেল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিলাম না।
‘স্যারের ব্যস্ততার কারণে উনি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একটু আলোচনা করতে এসেছিলেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. হান্নান রহিম খিচুড়ি ভোজ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘যেখানে আন্দোলনে আহতরা এখনও হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে, দাউদকান্দিতে আজকেও একজন মারা গিয়েছে, সেখানে খিচুড়ি ভোজ, নাচ-গান এসব তো এক প্রকার তাদের প্রতি মশকরা করার মতো।
‘আহত অনেকেই চাচ্ছে তাদের যেন যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থাটা অন্তত করে দেয়া হয়। এমন একটা সিচুয়েশনে এ রকম একটা আয়োজনের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। আর সেই আয়োজনে এসেছেন পুলিশ সুপার। তাই আমরা ঢুকতে দিইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি টাকার যে জোগান, সেটা একজন সাবেক কাউন্সিলর থেকে আসছে। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করার জন্য আন্দোলনের এই পর্যায়ে এমন একটি আয়োজনের অর্থায়ন করেছেন। তাই তাকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, ‘পুলিশ সুপার যে আসবেন, আমরা জানি না। আমাদের কাউকে জানানোও হয়নি।
‘তাকে যে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে, সেটাও আমাদের জানানো হয়নি।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের রাজনগরে খাল সেচ দেয়া নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বল্লমের আঘাতে মিছরাফ খাঁ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সোনাটিকী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনাটিকী গ্রামের হান্নান মিয়ার বাড়ির সামনে বিরোধপূর্ণ খাল সেচ দিতে আসে এলাকার নুরুল আমিনের লোকজন। এ সময় সৈয়দ জুয়েল আলীর লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে এক পর্যায়ে দুপক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে গুরুতর আহত হন ৪৬ বছর বয়সী মিছরাফ খাঁ। তাকে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নানু মিয়া বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে মিছরাফ খাঁ নিহত হন। দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মাঝে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘সংঘর্ষ চলাকালে ফাঁকা গুলির শব্দে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মুবাশ্বির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
ট্রাক্টর দিয়ে বাড়ির পাশেই জমিতে চাষ দেয়া হচ্ছিল। শব্দ শুনে জমির আইলে জড়ো হয় উৎসুক শিশুরা। প্রতিবেশী সহপাঠীদের সঙ্গে ট্রাক্টরে হাল চাষ দেখতে যায় ছয় বছর বয়সী সাদমান হোসেন সাফিন। চাষ করা জমিতে নানা রকমের পাখির ঝাঁক, সহপাঠীদের হৈ-হুল্লোড় আর ট্রাক্টরের শব্দে ছন্দপতন ঘটে সাফিনের।
এরই মাঝে ট্রাক্টরের হালের ভেতরে ঢুকে ফালে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় শিশুটির শরীর। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। বিষয়টি টের পেয়ে ট্রাক্টর রেখে পালিয়ে যান চালক।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বলেয়াপাড়া এলাকায় শুক্রবার দুপুরে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটি সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া এলাকার আবু জিন্নাত সুমনের ছেলে। জন্মের দুই মাসের মাথায় মাকে হারানো শিশুটির এমন মৃত্যুতে এলাকায় মাতম চলছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় থানা-পুলিশ। জব্দ করা হয় হালসহ ট্রাক্টরটি।
এলাকাবাসীর সহায়তায় পরিবারের লোকজন শিশুটির ছিন্নভিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। কীভাবে সে হালের ভেতর ঢুকে গেছে তা কেউ বলতে পারছেন না। চালকের অজান্তে শিশুটি হালের ওপরে উঠে পিছলে পড়ে ভেতরে ঢুকে গেছে বলে ধারণা করছেন স্বজনেরা।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইমরান খান বলেন, বিষয়টি পঞ্চগড় সদর থানার পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নারীসহ দুজনকে আটক করেছে। এ সময় বন্দুক, বিপুল পরিমাণ কার্তুজ-গুলি ও বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের উত্তর মূলচর ও চরবেশনাল গ্রামে অভিযান চালিয়ে এক নারী ও যুবককে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরি একটি একনলা বন্দুক, ৪৬ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, ৩ রাউন্ড পিন্তলের গুলি ও ২৫ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।
আটক দুজন হলেন- দীঘিরপাড় ইউনিয়নের বেশনাল গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলাম সৈয়ালের ছেলে মো. সোহেল সৈয়াল ও চরবেশনাল গ্রামের হামিদ আকনের স্ত্রী মোছা. বেগম।
শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন টঙ্গীবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার উত্তর মূলচর গ্রামে দীঘিরপাড়-সিপাহীপাড়া সড়কে অভিযান চালায় পুলিশের টিম। এ সময় ৬ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজসহ সোহেল সৈয়ালকে আটক করা হয়।
তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাতেই চরবেশনাল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় হামিদ আকনের বসতঘরে ৪০ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, ৩ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ২৫ বোতল মদ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মোছা. বেগম নামে নারীকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য