জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের খসড়া তথ্য প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
নিহতদের নাম, তাদের বাবার নাম, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, জন্মতারিখ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। এসব তথ্যে ভুল থাকলে সংশোধন, তথ্য সংযোজন বা বিয়োজন করা যাবে। কারও তথ্য বাদ থাকলে তা-ও যুক্ত করা যাবে।
মঙ্গলবার বিকেলে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন সূত্রে নিহতের সংখ্যা এক হাজার চারশ’র বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে। সেগুলো ভেরিফায়েড বা যাচাই করা সংখ্যা নয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলা পর্যায় থেকে সংগৃহীত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের নামের খসড়া তালিকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ওয়েবসাইটে (www.hsd.gov.bd) এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে (www.dghs.gov.bd) প্রকাশ করা হয়েছে।
তথ্য সংশোধন/সংযোজন করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকাটি ২৩ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত করা হয়েছে। তা ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তালিকায় প্রকাশিত নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য যাচাই/সংশোধন/পূর্ণাঙ্গ করতে নিহতদের পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হলো।
প্রকাশিত তালিকার বিষয়ে কারও কোনও মতামত, পরামর্শ এবং নতুন কোনও তথ্য-উপাত্ত সংযোজন করার মতো থেকে থাকলে তা সেবা নেয়া সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল অথবা কাছের সরকারি হাসপাতালে জানানোরও অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রকাশিত তালিকার তথ্য সংশোধনের জন্য যা করতে হবে-
(ক) নিহত পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)/জন্মনিবন্ধন ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
(খ) রেজিস্ট্রেশনের পর নিহত ব্যক্তির তথ্য ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে হবে।
(গ) প্রিন্ট করা কাগজের যে ঘরগুলোতে তথ্য নেই, সেগুলো পূরণ করতে হবে।
(ঘ) পূরণকৃত তথ্য নিয়ে সেবা গ্রহণকৃত সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল অথবা কাছের সরকারি হাসপাতালে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তথ্য সংশোধনে সহায়তা করবে।
(ঙ) প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিহত পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধির পূরণ করা ফরমটি জমা নিয়ে অনলাইনে তথ্যগুলো হালনাগাদ করবেন।
(চ) দাখিলকৃত তথ্য যথাযথভাবে সন্নিবেশিত বা সংশোধিত হলো কিনা তা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পুনরায় যাচাই করা যাবে।
সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের মধ্যে যদি কারও নাম এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকে তাহলে তাদের পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধিদের উপযুক্ত প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক/সিভিল সার্জন/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নবীন শিক্ষার্থী বরণে মেতেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাস। একইসঙ্গে প্রায় একশ’ দিন পর সশরীরে ক্লাস পরীক্ষা শুরু হয়েছে রোববার। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল বন্ধু-সহপাঠী হারানোর বেদনা। বিরাজ করছিল হৃদয় ও ফরহাদের শূন্যতা।
এদিন ক্লাসে যোগ দেয়ার আগে শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে শহীদদের প্রতি সম্মান জানান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সমবেত হয়ে নিজ নিজ ধর্মমতে শহীদদের জন্য প্রার্থনা করেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে এ সময় ‘লাল ব্যাজ’ পরিধান করেন তারা।
দীর্ঘ ৯৭ দিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস।
আন্দোলন-পরবর্তী ক্লাসে ফেরা নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পৃথকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের পক্ষ থেকে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়েছে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে। ব্যতিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। এই বিভাগের দুজন শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। তাদের একজন হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, অন্যজন মো. ফরহাদ হোসেন।
হৃদয় ২৩ জুলাই চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট মোড়ে আন্দোলনে গিয়ে নিহত হন। আর ফরহাদ ৪ আগস্ট নিজ এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। হৃদয় ছিলেন ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ফরহাদ দ্বিতীয় বর্ষের।
আরও পড়ুন:নওগাঁ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. হাছানাত আলী। তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর মো. সাহাবুদ্দিন।
রোববার বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. হাছানাত আলী বিধি অনুযায়ী পদ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন। রাষ্ট্রপতি ও আচার্য প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
ড. হাছানাত আলী ১৯৮৫ সালে নিজ জেলা বগুড়া থেকে দাখিল ও ১৯৮৭ সালে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে ১৯৯১ সালে স্নাতক ও ১৯৯২ সালে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০০৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন ড. হাছানাত আলী। এরপর ১৯৯৯ সালে সহকারী অধ্যাপক হন।
ড. হাছানাত আলী ২০০৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস স্টাডিজ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০১৩ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। দেশ-বিদেশে অধ্যাপক হাছানাত আলীর ২৯টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছে।
পাঠ্যবই সংস্কারে তাড়াহুড়ায় কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
আগামীতে এর পুনরাবৃত্তি হবে না প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, যে ভুল হয়েছে, সেগুলো সংশোধন করা হবে। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে বিপাকে পড়েছি। সামনের বছরের পাঠ্যপুস্তকে পরিমার্জন অল্প সময়ে করতে হয়েছে। এ জন্য হয়তো কিছু ভুল থাকতে পারে। ভবিষ্যতে তা সংশোধন করা হবে।’
শিক্ষা সংস্কার নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষা কমিশন অনেক কঠিন কাজ। যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসবে, তারাই পূর্ণাঙ্গ কমিশন করবে। আমরা কিছু সংস্কার করব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। এটা শিক্ষকতায় মনোযোগের অন্তরায়। প্রতিটি পর্যায়ে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। বেসকরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দূর-দূরান্তে গিয়ে চাকরি করছেন। এটা পুরোপুরি সমাধান না হলেও আংশিক সমাধানে কাজ করা হবে।
‘অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা বিনা বেতনে শিক্ষকতা করছেন। শিক্ষকরা বঞ্চিত, এটা ঠিক। তেমনি অন্যান্য পেশার মতো তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’
বর্ষীয়ান এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অপরিকল্পিত। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির নামে শুধু অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার মান উন্নয়ন করা হয়নি। কর্মসংস্থানের যোগসূত্র তৈরি করিনি। এ জন্যই শিক্ষিত বেকার তৈরি হয়েছে। শিক্ষার বৈষম্যই অর্থনৈতিক বৈষম্যর প্রধান কারণ।’
ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের কারণে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল। ছাত্ররা তো ভোটার। তাদের সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নিজস্ব আচরণবিধিও তৈরি করা যেতে পারে।’
আরও পড়ুন:সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদের পুলিশে সোপর্দ করেন।
আটক দু’জন হলেন- ইবি ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক শাহিনুর পাশা এবং নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক আল আমিন সুইট। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বুধবার আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। ছাত্রলীগের ওই দুই পদধারী নেতা পরীক্ষা দিতে আসার খবর পেয়ে বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকরা তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে বের করে দেয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা বাধা হয়ে দাঁড়ান। পরে শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা দুই নেতাকে তাদের হেফাজতে নেন। বিকেল ৩টার দিকে প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাদেরকে ইবি থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আজ এই সেমিস্টারের সবশেষ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যেত। আমাদের ভুল হয়েছে বিভাগের শিক্ষকদের না জানিয়ে এসে। তবে আমাদের পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর যাতে মব জাস্টিস না হয় সেটাকে গুরুত্ব দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা মিলে তাদেরকে নিরাপদে থানায় সোপর্দ করেছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাদের আসার কথা জানতে পেরেই স্লোগান শুরু করে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের আইন নিজের হাতে না তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রক্টরের সহযোগিতায় তাদের পুলিশ সোপর্দ করা হয়েছে।’
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান বলেন, ‘তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়েই পরীক্ষা দিতে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করেন। তারা আমাদের হেফাজতে আছেন।’
আরও পড়ুন:দেশে মোট সার্টিফিকেটধারী বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৮২ হাজার। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা বেকার রয়েছেন প্রায় আট লাখ।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গণস্বাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘দেশে মোট সার্টিফিকেটধারী বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৮২ হাজার। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কর্মহীন থাকছেন প্রায় আট লাখ তরুণ।
‘এই বেকারত্বের হার দেখে বোঝা যায় যে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মৌলিক গবেষণার মাধ্যমে পেটেন্ট বা কপিরাইট তৈরির মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারছে না। আবার বিদ্যমান বা ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে যুগের প্রয়োজনে যে ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতার চাহিদা তৈরি হচ্ছে, তা বর্তমানে চালু গতানুগতিক বিষয় ও কোর্সগুলো ঠিকমতো পূরণ করতে পারছে না।’
তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত বাস্তবতায় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দীর্ঘ তাত্ত্বিক আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্সের পরিবর্তে মডিউলার অ্যাপ্রোচে প্রয়োগমুখী মাইক্রো-ক্রেডেনসিয়াল কোর্স চালু করা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় এ ধরনের কোর্সে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীর বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ মৌলিক যোগ্যতা অর্জন জরুরি হয়ে পড়েছে।’
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন আরও বলেন, ‘পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষার প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এসব কলেজের শিক্ষার মান ও পাঠ্য বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য বিলোপের আহ্বান জানান।
এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শাহিনুর আল আমিন, লালমাটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আকমল হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হয়েছে। যদিও এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের ফেসবুক পেজ থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় ১৪ জনের নাম রয়েছে।
কমিটিতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের একজন, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একজন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তিনজন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আটজন এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
এর আগে প্রকাশ্যে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি আবু সাদিক কায়েম ও সেক্রেটারি এসএম ফরহাদের নাম।
আবু সাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর এসএম ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনিস্টিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রকাশিত ১৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন মহিউদ্দিন খান, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক পদে হোসাইন আহমাদ জুবায়ের, ছাত্র আন্দোলন ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক পদে ইমরান হোসাইন, বায়তুল মাল সম্পাদক পদে আলাউদ্দিন আবিদ, দাওয়াহ ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক পদে হামিদুর রশিদ জামিল।
এছাড়া সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নুরুল ইসলাম নূর, বিজ্ঞান ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে মো. আনিছ মাহমুদ ছাকিব, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে রিয়াজুল মিয়া, ব্যবসায় শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে হাসান মোহাম্মদ ইয়াসির এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক হিসেবে আব্দুল্লাহ আল আমিনের নাম রয়েছে।
কমিটির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, ‘অন্যান্য সংগঠনের মতো করে আমাদের কমিটি হয় না। এজন্য আমাদের কমিটিতে সদস্য সংখ্যা কম মনে হতে পারে। ছাত্রদের নীতি-নৈতিকতা, স্কিল ডেভেলপমেন্টসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমাদের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। সেই বিভাগগুলো আমাদের কার্যক্রমগুলো তদারকি করে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই কমিটি গত জানুয়ারি মাসেই গঠিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে আমরা তা পাবলিকলি প্রকাশ করতে পারিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং শহীদদের আত্মত্যাগের ফলে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে এবং আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি।’
আরও পড়ুন:আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। অন্যথায় আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মঙ্গলবার আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার, এসব মামলায় হওয়া রায় বাতিল, তার ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ যাকে প্রমোশন দেয়া হয়েছে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়।
মানববন্ধনকালে শিক্ষার্থীরা ‘সাহসের অপর নাম, মাহমুদুর রহমান’; ‘জেলের তালা ভাঙবো, মাহমুদ ভাইকে আনবো’; ‘মাহমুদ ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’; ‘মাহমুদ ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপোষহীন মাহমুদুর রহমানকে যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি না দেয়া হয়, তার বিরুদ্ধে আনীত মামলাগুলো যদি আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে বাতিল না করা হয় তাহলে আগামী রোববার আমরা ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবো। আমরা সেদিন প্রয়োজনে রক্তাক্ত হবো। কিন্তু মাহমুদুর রহমান মুক্ত না হলে আমরা কেউ বাসায় ফিরবো না।’
এর আগে শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, মাহমুদুর রহমান প্রথম ব্যক্তি যিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে নৈতিকতার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে, একজন সম্পাদক হিসেবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। মাহমুদুর রহমানই প্রথম লিখেছেন ‘শাহবাগে ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি’। তিনি একাই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন৷
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ভাই যখনই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লেখা শুরু করলেন ঠিক তখনই তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের পক্ষ থেকে মামলা দেয়া শুরু হয়। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিফ হোসাইন বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ফ্যাসিবাদ বিলোপের অন্যতম অগ্রনায়ক। এই দ্বিতীয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রবক্তা এই মাহমুদুর রহমান। আর সেই মাহমুদ ভাইকে যদি দুই মিনিটের জন্য জেলে রাখা হয় তাহলে বুঝতে হবে বাংলাদেশকেও দুই মিনিটের জন্য জেলে রাখা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানে মুক্তি চাই।’
মানববন্ধনে আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল আনোয়ার ঠাকুর, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিক মুজাহিদ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য ও ঢাবি শিক্ষার্থী ফাতিমা তাসনিম, ঢাবি শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য