নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের ও সাবেক মেয়র আইভিসহ আওয়ামী লীগের ১৩০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গার্মেন্টকর্মী মিনারুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় এই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জের সাবেক চার সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও বহিষ্কৃত মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মকুলসহ ১৩০ জনের নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত মিনারুলের ভাই নাজমুল হক মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও নিহতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় এ নিয়ে ৩২টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে এই প্রথম একটি মামলায় সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে আসামি করা হলো।
মামলার এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছে ওবায়দুল কাদেরকে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের চার সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী ও কায়সার হাসনাত, সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০/৪০০ জনকে আসামি করা হয়।
বাদী নাজমুল হক এজাহারে বলেন, ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী রুটের আমিন নগর পাওয়ার হাউজের সামনে আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ও চারদিকে গুলি ছুড়তে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার ভাই মিনারুলের শরীরে গুলি লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ তিনশ’ শয্যা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেখ হাসিনাকে আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা
সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মঙ্গলবার বিকেলে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৈয়দ মোস্তফা কামাল রাজু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫০/২০০ জনকে আসামি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ৩২টি মামলা দায়েরের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ দুটি ছাড়াও এর আগে আরও নয়টি মামলা হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দুটি, ফতুল্লা থানায় আটটি, সোনারগাঁও থানায় চারটি, আড়াইহাজার থানায় চারটি ও রূপগঞ্জ থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে ২৪ আগস্ট ঢাকায় আটক সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক আট হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৪৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সাবেক এই পুলিশ প্রধানকে মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অপরদিকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে বিভিন্ন মেয়াদে আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে সাকিব হাসান নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় মামুনের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এরপর ইমন হোসেন গাজী নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পুলিশের সাবেক এই প্রধানকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এছাড়া ইরফান ভুইয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পাঁচ দিন, মুনতাসির রহমান হত্যা মামলায় পাঁচ দিন ও ভ্যানচালক সুজন হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
এর বাইরে রফিকুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় চারদিন, একই থানায় করা মাহমুদুল হাসান জয় হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেয়া হয়। আর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় পৃথকভাবে তাকে আরও পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর তএক আটদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ছয়টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর খিলগাঁও থানার চারটি ও পল্টন থানার দুটি মামলা রয়েছে।
জামিন পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এছাড়া পল্টন থানায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত মঙ্গলবার শুনানি শেষে খিলগাঁও থানার মামলাগুলোতে সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিনের আদেশ দেন। আর পল্টন থানার দুটি মামলায় জামিন আদেশ দেন বিচারক জিয়াদুর রহমান।
প্রসিকিউশনের আসাদুল ইসলাম বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আর মামলা না থাকায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা গ্রহণ করেছে আদালত। একইসঙ্গে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে তাকে সমন জারি করা হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে মঙ্গলবার গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিকে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধানসম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদ্গার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে আসন্ন দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের (ভারত) গণমাধ্যমে উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর নানা খবর প্রচার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পূজা পালন নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ অনেক কিছুই বলছে। তাদের মিডিয়া বিভিন্ন উস্কানি ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার করছে।
‘আমি দেশের সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, আপনারা পূজা নিয়ে সত্যি ঘটনা মিডিয়ার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন। আমরা সত্যি ঘটনা সবাইকে জানাতে চাই। পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুর্গাপূজা এবার ভালোভাবে, নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইতোমধ্যে আট দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
‘তাছাড়া দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পর্যাপ্ত সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অধিকন্তু কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে যাতে এর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মাধ্যমে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার সব পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্বরত থাকবে।’
বিগত ১৫ বছরে রামু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
পরিদর্শনকালে রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম পূজা পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস ও সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ ভদ্রসহ মন্দিরের পূজা পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এম এ মান্নানকে সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এম এ মান্নানকে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে তিনি মেডিসিন বিভাগের কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন রুবেল জানান, শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীকে চেকআপের জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেন। তার নিরাপত্তায় জেল পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।
এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর বুকে ব্যথা রয়েছে। এ ছাড়া তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মেডিসিন বিভাগের কেবিনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের আবেদন করা হয়েছে।
এম এ মান্নানকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন তাকে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন।
সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় শনিবার সকালে অসুস্থ বোধ করলে সাবেক এমপিকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে ওসমানীতে চেকআপ শেষে তাকে সিলেট কারা হাসপাতালে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত থেকে দুজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করার কথা জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাহিনীটি মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অদ্য ০৮ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ সকাল ০৭০০ ঘটিকায় বিজিবির সরাইল ব্যাটালিয়নের (২৫ বিজিবি) ফকিরমোড়া বিওপির টহলদল দায়িত্বপূর্ণ আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী আব্দুল্লাপুর নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে পান্না রানী দেব (৫৪) নামের একজন ভারতীয় নারী ও তার ছেলে অভি দাশকে (১৮) আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আটককৃতরা ভারতের ধলায় জেলার কমলপুর থানার মানিক ভান্ডার এলাকার জহর লাল দাসের স্ত্রী-সন্তান।
‘আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ৭ দিন পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা জেলার রামনগর থানার সরমালংগা গ্রামের বাসিন্দা ও মানব পাচারকারী দালাল মানিক দাশের সহযোগিতায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত হতে বাংলাদেশে আসে এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে। আজ আখাউড়ার হিরাপুর গ্রামের বাছির মিয়ার ছেলে ও মানব পাচারকারী দালাল মো. তোফাজ্জল হোসেন এবং নূরুল মিয়ার ছেলে মো. তৌহিদ মিয়ার সহযোগিতায় সীমান্ত পিলার ২০২২/৭-এস-এর নিকট দিয়ে ভারতে ফেরত যাচ্ছিল।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আটককৃত ভারতীয় নাগরিক এবং মানব পাচারকারী দালালচক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করত ভারতীয় নাগরিকদের আখাউড়া থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ক্ষমতার পালাবদলের পর এক আওয়ামী লীগ নেতার লিজ নেয়া কোটি টাকার সরকারি জলমহাল দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার বিরুদ্ধে।
জেলা শহরের একটি আবাসিক হোটেলে সোমবার বিকেলে কয়েকজন বিএনপি নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ কমল।
ওই সময় বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, হুমাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রাশিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আদেল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোস্তাক আহমেদ কমল অভিযোগ করেন, তিনি অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর জলমহালটি এক বছরের জন্য ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪১ টাকায় লিজ নেন। ভাটিনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনিতা রানীর নামে জলমহাল লিজ নেয়া হলেও সব টাকা পরিশোধ করেন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ কমল, তবে জলমহালটি পরিচালনা করছিলেন অনিতা রানীসহ ছয়জন মিলে।
কমলের অভিযোগ, হঠাৎ করে সরকার পতনের সুযোগ নিয়ে অনিতা রানী দাসের যোগসাজশে হুমাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হেলাল খান জলমহালটি দখল করে নেন।
মিথ্যা মামলা দায়েরসহ নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মোস্তাক আহমেদ কমল।
জলমহালের মালিকানা উদ্ধারে প্রশাসনের কাছে আবেদন করাসহ উপজেলা বিএনপির নেতাদের সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হেলাল খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেগুলো রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া অনিতা রানীর নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য