বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীতে নিহত ১১ জনের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দিয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
রোববার বিকেল থেকে রাত অবধি জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্বজনহারা পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দেন নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা নিহতদের কবর জিয়ারত করেন।
জেলা যুবদল সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এস এম কায়সার এলিন, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন খোকন, জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রাসেল পাটোয়ারী, দাগনভূঞা উপজেলা যুবদলের সভাপতি কবির আহমদ ডিপলু, সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন টিংকু, সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক খুরশিদ আলম, সদস্য সচিব প্রবীর আহমেদ, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুর নবী মেম্বার, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলনসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘সেদিন ফেনীর গডফাদার নিজাম হাজারীর নির্দেশে তার ক্যাডাররা মহিপালে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। শিহাব, মাসুদ ও শ্রাবণদের মতো তরুণদের রক্তের ওপর দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতনের মাধ্যমে এ চূড়ান্ত বিজয় এসেছে। এ আন্দোলনে জেলার প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এক প্রবাসীর মাধ্যমে এক লাখ টাকা করে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আহতদের জন্যও আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুযোগ সন্ধানীদের অনেকে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি এ ধরনের কাজ করার চেষ্টা করে আমাদের জানাবেন। এ ধরনের অপরাধে কেউ জড়িত থাকলে দলের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নওগাঁ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক।
ছেলের মৃত্যুর পর থেকেই আব্দুল মালেক অনেকটা ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি স্ত্রী শাহানাজ মালেক ও মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
আব্দুল মালেকের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার চন্ডিপুর। তার স্ত্রী শাহানাজ মালেক জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, আব্দুল মালেক বেশ কিছুদিন থেকে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান তিনি।
জনদুর্ভোগ এড়াতে সাংগঠনিক সফরের সময় দল ও সহযোগী সব সংগঠনের নেতাদের গাড়িবহর পরিহারের নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। বলা হয়েছে, এসব মোটর বহর সাধারণ মানুষের যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটায়।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপি এবং দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দলের অধস্তন কোনো শাখায় সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল, গাড়ি বা অন্য যানবাহনসহ সব ধরনের গাড়ির বহর পরিহার করতে হবে।’
জেষ্ঠ নেতাদের জন্য মোটর শোভাযাত্রা ব্যবহারের নিন্দা জানানো হয়েছে। কারণ এটি তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। এছাড়াও এটি সাংগঠনিক সভা বা দলীয় কর্মীদের সভা বা এমনকি জনসমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য মারাত্মক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে।
বিএনপি যেহেতু জনবান্ধব রাজনৈতিক দল, সেহেতু মোটরসাইকেল বা অন্য যানবাহন নিয়ে মোটরসাইকেল বহর এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ এগুলো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে।
পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন থেকে বিরত থাকুন
বিএনপি নেতা-কর্মীদের নিজস্ব ছবি সংবলিত পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শনকে অপ্রীতিকর আখ্যা দিয়ে তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী রঙিন পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়েছে।
দলের কিছু অতিউৎসাহী নেতা তাদের ছবি দিয়ে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়াকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দলের শৃঙ্খলাপরিপন্থী বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের আধিপত্যবাদী মনোভাবের সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আধিপত্যবাদের রাজনীতি করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি রাজনীতি ও আচরণের কারণগুলো তারা ভালোভাবেই বোঝে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে সোমবার শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল। তারা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে- শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে।
‘আমার মতে এর প্রধান কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের ধারাবাহিক আধিপত্যের রাজনীতি। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভারত বা তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মর্যাদা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা উচিত।’
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শান্তি বজায় রাখতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছর পর দেশ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। এই বিপ্লবে বহু ছাত্রের পাশাপাশি নারী ও শিশু তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলনে নারীর অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনে অর্জিত স্বাধীনতা সুসংহত করা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশে আইনের শাসন ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার শপথ নিয়েছি।
‘একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করছি- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দুবার সাক্ষাৎ করেছি। সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং একটি সময়সীমা নির্ধারণের অনুরোধ করেছি, যাতে সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়।’
আরও পড়ুন:সিলেট মহানগরের ৭ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদসহ দুজনকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত অপরজন হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী রুমেল আহমদ। তাদের বাসা বনকলাপাড়ার লাল-সবুজ আবাসিক এলাকায়।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের বনকলাপাড়ায় একটি গলিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মনজুর আহমদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা মনজুরের হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহত রুমেল আহমদ দাবি করেন, গত সিটি নির্বাচনের সময়ের বিরোধের জের ধরে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কিছু নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করেছে।
তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ সোমবার সকালে বলেন, ‘মনজুর আহমদ ও রুমেল আহমদের ওপর বনকলাপাড়ার ভেতরেই তাদের বাসার সামান্য দূরে হামলা হয়েছে। মনজুর গুরুতর আহত। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘হামলার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে স্ক্র্যাপবাহী একটি ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সেনা সদস্যদের হাতে আটকের পর দলীয় পদ হারালেন সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ফজলুল করিম চৌধুরী।
শনিবার যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দফতর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ফজলুল করিম চৌধুরীকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।
এর আগে চট্টগ্রামে আমদানি করা লোহার স্ক্র্যাপ বহনকারী ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ফজলুল করিম চৌধুরীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। শনিবার দুপুরে হালিশহর এলাকার ওয়াপদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থেকে খালাস করে পোর্ট কানেক্টিং রোড দিয়ে আমদানি করা লোহার স্ক্র্যাপ নিয়ে যাচ্ছিল আবুল খায়ের কোম্পানির (একেএস) একটি ট্রাক। চলন্ত ট্রাকের পেছনে উঠে কিছু পথশিশু ও কিশোর সেখান থেকে লোহার স্ক্র্যাপ রাস্তায় ফেলছিল।
চালক ও হেলপার বিষয়টি খেয়াল করলে ওয়াপদা এলাকায় থামেন তারা। ট্রাক থেকে নেমে তাদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সেখানে হাজির হন ফজলুল করিম। তিনি ট্রাকচালককে আবুল খায়েরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এসে তার সঙ্গে কথা বলতে চাপ দেন। এ সময় তিনি চাঁদা দাবি করেন।
কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সেখানে হালিশহর থানার টহল পুলিশ আসে। পুলিশের সঙ্গেও বাগবিতণ্ডায় জড়ান ফজলুল। এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়। সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে ফজলুলকে আটক করে। পরে তাকেসহ দুজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুজনকে আটক করে থানায় দিয়ে গেছেন। আমরা রাজনৈতিক পরিচয় জানি না। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাতে শহরের পুরান বাজারে বউবাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি মীমাংসার কথা থাকলেও শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৩৫ জন চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জরুরি বিভাগ জানায়।
আহতদের দাবি, চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় স্থানীয় বিএনপি দু’শতাধিক মানুষ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা অনেককে বেদম পিটিয়ে ও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে।
সংঘর্ষে আহত চাঁদপুর পৌর ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলম খান বলেন, ‘স্থানীয় রব মিজি ও তার ছেলে রানা মিজি এক নিরীহ ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা চেয়ে তাকে মারধর করেন। এ সময় এলাকার এক যুবক বাধা দিতে গেলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় এলাকার গণ্যমান্যরা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
‘ইতোমধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে রব মিজি ও তার সহযোগীরা অস্ত্র নিয়ে আমাদের এলাকার দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে ৫০ জনকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়।’
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন রনি ইউএনবিকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরানবাজারে দুপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস নয়, শুধু আবাসিক ও একাডেমিক স্থানগুলোতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিসহ ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে ইউনিভার্সিটি রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইউআরআই)।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলেও থাকতে পারবে। তবে সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মুখপাত্র শহীদুল্লাহ্ হলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আদনান মুস্তারি এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা।
সংগঠনটির পক্ষে আদনান মুস্তারি আটটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রস্তাবনাগুলো হলো-
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক স্থান (হল, হোস্টেল প্রভৃতি) ও একাডেমিক স্থানে (অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট প্রভৃতি) সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি (সভা-সমাবেশ, মিছিল, মিটিং, সম্মেলন, শোভাযাত্রা, শোডাউন প্রভৃতি) নিষিদ্ধ করা হবে।
২. কোনো প্রকার রাজনৈতিক পরিচয় বা সংশ্লিষ্টতা ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উল্লিখিত স্থানগুলোতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা, কোনো সুযোগ-সুবিধা আদায় বা বিশেষ বিবেচনালাভের প্রচেষ্টা চালাতে পারবে না।
৩. কোনো শিক্ষার্থী যদি উল্লিখিত কর্মকাণ্ডগুলোতে জড়িত হয় তবে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এই মর্মে সিন্ডিকেটে আইন পাস করতে হবে।
৪. উল্লিখিত স্থানগুলোতে কোনো দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের প্রচেষ্টা ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত পরিসরে কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলে বা নিজস্ব মত প্রকাশ করলে তাকে কোনো শাস্তির আওতাভুক্ত করা হবে না।
৫. দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। স্নাতক পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ভর্তি হওয়ার সেশন থেকে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের পার্থক্য ছয়ের বেশি হবে না। যেমন- ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষ ধরে নিয়ে ২০১৭-১৮ সেশনের সব বৈধ শিক্ষার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। একইভাবে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভর্তি সেশনের সঙ্গে বর্তমান সেশনের পার্থক্য দুইয়ের বেশি হতে পারবে না।
৭. ডাকসু বা হল সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। সব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে। কোনো প্যানেল হিসেবে কেউ নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
৮. ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে অভিজ্ঞ প্যানেল তৈরি করে ডাকসুর সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার সুপারিশমালা প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের সংশোধনী বাস্তবায়ন করতে হবে।
হলে রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবেন কি-না এমন প্রশ্নে আদনান মুস্তারি বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। আমরা কারও সাংবিধানিক অধিকার বঞ্চিত করার পক্ষে না। রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন। তবে সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী তামিম মুনতাসির, ফজলুল হক মুসলিম হলের আনোয়ার ইব্রাহীম বিপ্লব, বিজয় একাত্তর হলের জোবায়ের হোসেন শাহেদ, ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের রেদওয়ানুল হাসান শান্ত প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য