বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তার বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে চান না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে সরকার চাপ দেয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা এসব কথা জানান।
তিনি বলেন ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করেছেন। তবে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণের সিদ্ধান্ত আমি একা নেব না। আগামীকাল রোববার (১১ আগস্ট) নির্ধারিত এক সভায় সবার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।’
এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে পদত্যাগ করতে সরকার কোনো চাপ দেয়নি বলে গণমাধ্যমকে জানান অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা। এনবিআর সূত্রে পাওয়া খবর বলছে, চেয়ারম্যান ৬ আগস্ট নিজেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের নিচে তার পদত্যাগ ও এনবিআর সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন এবং কর্মবিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যানের ব্যাপারে বর্তমান সরকার কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তাকে আরও শক্তভাবে কাজে মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে।
শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরই নন, ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন একজন ডেপুটি গভর্নরও। তবে এই দুজনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামীকাল গৃহীত বলে জানান অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে ব্যাংকে আর্থিক কেলেঙ্কারির যেসব ঘটনা ঘটেছে তিনি পদত্যাগ করলে সেসব জবাবদিহিতার জায়গা থেকে বের হয়ে যাবেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এখানে একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার রয়েছে। পদত্যাগপত্র উনি দিয়েছেন। তবে সেটা গ্রহণ কিংবা ওনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আমি একা নেব না। যেহেতু গভর্নরের পদটি স্পর্শকাতর সেহেতু বিষয়টি নিয়ে আগামীকালের সভায় সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
দেশের বাইরে বিপুল অংকের টাকা পাচার হওয়ার ব্যাপারে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা রাখতে পারে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘টাকা পাচার হয়েছে সেটা আমরা জেনেছি। তবে এটি হুট করেই ফিরিয়ে আনা যাবে না। এর জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া এ ব্যাপারে আরও অনেক তথ্যও লাগবে।’
শুক্রবার দুপুরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমানের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে এসেছে ১৩ হাজার ৯১০ কেজি মুরগির ডিম। এর আগে প্রথম ৬১ হাজার ৯৫০টি মুরগির ডিম আমদানি করা হয় গত বছরের ৫ নভেম্বর।
বেনাপোল কাস্টমসের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরীক্ষণ শেষ করে ডিমগুলো যত দ্রুত সম্ভব ক্লিয়ারেন্স দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, আমদানি করা এসব ডিমের ইনভয়েস মূল্য ১১ হাজার ২৭২ ডলার। প্রতি ডজন ডিমের মূল্য দশমিক ৫৬ ডলার। সে অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকায় প্রতিটি ডিমের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি ডজন ডিমের নির্ধারিত মূল্যের ওপর ৩৩ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি বাবদ ১ টাকা ৬৬ পয়সা যোগ হবে। সব মিলিয়ে প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৭ টাকার মতো।
ঢাকার হাইড্রো ল্যান্ড সলুশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই চালানে ১৩ হাজার ৯১০ কেজি ডিম আমদানি করেছে। এসব ডিম রপ্তানি করেছে ভারতের শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
আমদানিকারকের পক্ষে ডিমের চালানটি ছাড়করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কাগজপত্র দাখিল করেছে সিএন্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ।
বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাক্তার বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল ডিমের পরীক্ষণ সম্পর্কে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের কাগজপত্র পেয়েছি। এখানে ডিম পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। ভারতীয় সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে এখান থেকে ডিমের ক্লিয়ারেন্স দেয়া হবে। তাছাড়া দৃশ্যমান কোনো সমস্যা থাকলে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, ‘ডিমের চালানটি রোববার সন্ধ্যায় বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। ডিম আমদানির ওপর ৩৩ শতাংশ কাস্টমসের ভ্যাট-ট্যাক্স রয়েছে। সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের পর পরীক্ষণ করা হবে। এরপর ক্লিয়ারেন্স দেয়া হবে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক- বাণিজ্য সংগঠন) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, নিয়োগকৃত প্রশাসক চার মাসের (একশত বিশদিন) মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে তা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।
মূল্যস্ফীতি কমানোর বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে সরকারের এই উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। সূত্র: ইউএনবি
অর্থনীতিতে চাঁদাবাজির প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বার বার আহ্বান জানিয়েছি। এ বিষয়ে কখনোই নেতিবাচক অবস্থান নিইনি এবং অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘চাঁদাবাজি মোকাবিলা করা কেবল অর্থনৈতিক বা বাণিজ্য সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নয়, এর সঙ্গে রাজনৈতিক মূল্যায়ন এবং সামাজিক মূল্যবোধও জড়িত। যখন এক দল বেরিয়ে যায়, তখন অন্য দল অনিবার্যভাবে ওই শূন্যস্থানে চলে আসে। এই সমস্যাটি পুরোপুরি সমাধান করতে কিছুটা সময় লাগবে।’
আগস্টে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা ব্যক্ত করেন, মূল্যস্ফীতির প্রবণতা নিম্নমুখী হওয়ায় জনগণের কাছে এই বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে।
‘মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনা করা কেবল সরবরাহ বাড়ানোর চেয়ে আরও বেশি কিছু প্রয়োজন। এটি বিভিন্ন সম্পর্কিত কারণগুলো তুলে ধরার সঙ্গে জড়িত।
ড. সালেহউদ্দিন আশ্বস্ত করে বলেন, ঘাটতি রোধে সয়াবিন তেল ও রাইস ব্র্যান অয়েলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
‘খুচরা দামও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার অবস্থান হলো, ভোক্তাদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপানো উচিত নয়।’
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন ড. সালেহউদ্দিন।
সরকারের পদক্ষেপের সুষ্ঠু মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম রাতারাতি কমবে না।’
অতীতের মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন পূর্ববর্তী প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীন অর্থ মুদ্রণের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ওই সিদ্ধান্তের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে।
ইউএনডিপির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ইউএনডিপি চলমান প্রকল্পগুলোতে শুধু সহযোগিতাই অব্যাহত রাখছে না, বরং নতুন নতুন উদ্যোগেরও প্রস্তাব দিচ্ছে। ইউএনডিপি সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা, বিশেষ করে সবুজ প্রযুক্তি খাতে সমর্থন এবং স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের উত্তরণে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। অন্যদিকে আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের তিনটি তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কমপক্ষে ৫০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ইউএনবি জানায়- বিক্ষোভ, ভাংচুর, লুটপাটের এ ঘটনায় শিল্পাঞ্চলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে ১১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টহল দিচ্ছেন সেনা, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
হামলা-ভাঙচুরের শিকার তৈরি পোশাক কারখানাগুলো হলো- আশুলিয়া ইউনিয়নের টঙ্গাবাড়ি এলাকার আলিফ ভিলেজ লিমিটেডের আলিফ এমব্রয়ডারি ভিলেজ লিমিটেড, লাম মিম অ্যাপারেলন্স লিমিটেড ও লাম মিম অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড।
আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের আশুলিয়া জোনের ম্যানেজার মো. রেফাই সিদ্দিক বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল থেকেই কারখানায় প্রায় এক হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। কিছু সময় পর মাস্ক পরা দুশ’ থেকে তিনশ’ লোক হঠাৎ করে তিনটি কারখানায় একযোগে হামলা করে। তারা কারখানাগুলোর মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।’
তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা কারখানার ডিজিটাল মেশিন, কম্পিউটার, ফায়ার কন্ট্রোল প্যানেল, বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি, সিসি টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, গার্ডেনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করে। এছাড়াও কারখানা থেকে মূল্যবান পোশাক, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল ও মেশিন লুট করে নিয়ে যায়।’
কারখানার ডিজিটাল মেশিনগুলো ভেঙে ফেলায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান রেফাই সিদ্দিক।
তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীসহ ২০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা।’
অন্যদিকে হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বাড়ানো, বকেয়া বেতনসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানা ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:সুপারশপে আগামী ১ অক্টোবর থেকে কোনো পলিথিন শপিং ব্যাগ ও পলিপ্রপিলিনের ব্যাগ রাখা যাবে না এবং ক্রেতাদেরকে তা দেয়া যাবে না। বিকল্প হিসেবে সব সুপারশপে বা এর সামনে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের কেনার জন্য রাখতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পলিথিন শপিং ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় এই নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ১ অক্টোবর শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচার হবে। এখানে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এক সপ্তাহের মধ্যে সব সুপারশপের সঙ্গে সভা করে পাটের শপিং ব্যাগের সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সোমবার টেক্সটাইল ও পোশাকবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেক্সটাইল টুডের এক প্রতিবেদক ও দুই ফটো সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আশুলিয়ার টেক্সটাউন গ্রুপের সামনে সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। না ের সামনে সকাল ১০টার দিকে এ কবি
টেক্সটাইল টুডের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুর এলাকায় কয়েক দিন ধরে চলমান বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষের নামে চলমান আন্দোলনের খবর সংগ্রহের সময় এই হামলার শিকার হন তারা (সাংবাদিকরা)।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এই ন্যক্কারজনক হামলায় টেক্সটাইল টুডের তিন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তারা হলেন প্রতিবেদক এম এ মোহাইমিন তানিম এবং ফটো সাংবাদিক ইমন পাটোয়ারী ও আশরাফুল আলম। এদের মধ্যে ইমন পাটোয়ারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
‘গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের নামে বিভিন্ন দাবিতে কিছু কিছু জায়গায় শ্রমিক আন্দোলন চলছে, যা বাংলাদেশের পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করতে পারে। দেশের পোশাক শিল্পের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম টেক্সটাইল টুডের একটি অনুসন্ধানী দল আজ সকালে সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য আশুলিয়ার বিভিন্ন শিল্প এলাকা পরিদর্শন করছিল। তারা জানতে পারেন, আশুলিয়ার টেক্সটাউন গার্মেন্টসের সামনে একদল শ্রমিক বিক্ষোভ করছে। খবর পেয়ে আন্দোলনের কারণ জানতে গেলে আন্দোলনকারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের ক্যামেরা ছিনতাই করে ভেঙে ফেলা হয় এবং একজনকে কারখানার ভেতরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই ঘটনার পর আহত সাংবাদিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। টেক্সটাইল টুডে এই জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সরকারের কাছে দ্রুত সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবি করছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কয়েক দিন ধরে টানা শ্রমিক অসন্তোষে বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বিভিন্ন কারখানা খুলে দেয়া হয়। তবে রোববার সকালে কাজে যোগ দেয়ার পর শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
অবশ্য অন্যদিনের মতো এদিন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ বা ভাঙচুর করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিশৃঙ্খলা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, রোববার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ডিইপিজেডসহ অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় দল বেঁধে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। তবে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানাসহ ৩০টি কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা প্রবেশ করে বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন। একপর্যায়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে তারা বাড়ি ফিরে যান।
এদিকে পোশাক শিল্প খাতকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতার অভিযোগে সন্দেহভাজন আরও চারজনকে আটকের কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটককৃতরা হলেন– পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানার মোতালেব হোসেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার সেলিম রেজা, ভোলার চরফ্যাশন থানার রাসেল ও নওগাঁর আত্রাই থানার লিটন কুমার দাস। তারা সবাই আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়ায় হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে নাসা গ্রুপে অসন্তোষ চলে এলেও রোববার পুরোদমে উৎপাদন চালু ছিল।
তবে নিউ এইজ ও আল মুসলিম গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কারখানায় এসে কাজ যোগ না দেয়ায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘শ্রমিকরা সকালে কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগ দিলেও সকাল ১০টার পর থেকে বিভিন্ন কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন। ৩০টি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের পর সাধারণ ছুটি দিলে শ্রমিকরা বাসায় ফিরে যান।’
তিনি জানান, হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট সমাধান দিতে না পারায় সেখানে ঝামেলা হয়।
আর গার্মেন্টস খাতকে অস্থিতিশীল করার তৎপরতায় জড়িত সন্দেহে শনিবার চারজনকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য