সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে রোববার দেশের ১৯ জেলায় সহিংসতায় ১৪ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলা, সংঘর্ষ, গুলিসহ সহিংসতায় সারাদেশে আহত হয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।
নিউজবাংলার প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, ঢাকায় ১৪জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, কিশোরগঞ্জে পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, নরসিংদীতে ছয়জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, মাগুরায় চারজন, বগুড়ায় দুজন, শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, লক্ষ্মীপুরে আটজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হয়েছেন।
ঢাকা
ঢাকায় ধানমন্ডি, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাভারের আশুলিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নয়জনের মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের একজন হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএ দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও এবং অপরজন তাহিদুল ইসলাম।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার পর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে আব্দুল্লাহ ও ৫টা ২৫ মিনিটে তাহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আব্দুল্লাহ জিগাতলা এলাকায় এবং তাহিদুল ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ হন।
মিটফোর্ড হাসপাতালের আনসার কমান্ডার আব্দুল আহাদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে গুলিস্তান এলাকা থেকে রেজাউর রহমান নামে এক যুবককে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। রেজাউরের বুকে গুলি লেগেছে। তার বাড়ি কুমিল্লায়।
উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হন।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুর রহমান জানান, ওই হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় রোববার দুপুরে হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান এবং সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা এনায়েতপুর হাট থেকে কেজির মোড়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং ছড়রা গুলি ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হন।
ওই খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায় এবং প্রথমে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে একেক করে তারা ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্যসহ এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।’
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলায় আরও ১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে, তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।
কিশোরগঞ্জ
জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সৈয়দ টিটুর বাসায় দেয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দুজন।
এ ছাড়া এক যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেধে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারী একজন স্ট্রোক করে এবং বাজিতপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন একজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরান থানা মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নি সংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করেন। পরে অফিসের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তারা।
ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা চালান। দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। ওই সময় আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশেই সৈয়দ টিটুর ছয় তলা বাসভবনের নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেন।
পরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনেও আগুন দেয় তারা। ভাঙচুর করা হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসাও।
আগুন সৈয়দ টিটুর বাসার তিন তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সৈয়দ টিটুসহ তার বাসার ভাড়াটিয়ারা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কিছুটা দেরিতে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তারা বাসার গেট ভেঙে আগুনে পোড়া এক নারীসহ দুজনের লাশ এবং আহতদের উদ্ধার করেন।
কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. একরাম উল্লাহ জানান, এ হাসপাতালে আগুনে পোড়া অঞ্জনা (৩০) নামে এক নারীসহ দুজনের লাশ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ২০ জনকে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে ৩০ বছর বয়সী একজনের মরদেহ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ৬৫ জনকে। গুরুতর আহত দুজনকে ময়মনসিংহে রেফার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্রের অভিযোগ, সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মবিনকে (৩০) হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তার মরদেহটি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় স্ট্রোক করে মারা গেছেন ফরহাদুল ইসলাম রুবেল (৩২) নামের এক আন্দোলনকারী। তিনি তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে।
চর শোলাকিয়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে দেড় শর মতো আহত লোকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা শহরের পুরান থানা মোড় ও কাচারীবাজার বটতলা মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে।
বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে।
এদিকে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী কামরুল হাসানের বাসায়ও ভাঙচুর হয়েছে। এ ছাড়া জেলার বাজিতপুরে আন্দোলনকারীরা দুটি বাস ও সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং গণনাট্য সংসদের অফিসে আগুন দেয়।
ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে কুদ্দুস (৩২) নামের একজন স্থানীয় একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তার বাড়ি বাজিতপুরের দিঘিরপাড় এলাকায়।
সিলেট
জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি ও পুলিশের আলাদা সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় তিনজন ও উপজেলা সদরের চৌমুহনীতে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অনেকে।
চৌমুহনীতে সংঘর্ষে আহত দুজনকে রোববার সন্ধ্যায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক ।
এই দুজন হলেন ঢাকা দক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন (২৪), পৌর এলাকার ঘোষগাঁও গ্রামের গৌছ উদ্দিন (৪০)।
সিলেটের ওসমানী মেডিক্যালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী দুজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
এর আগে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও তিনজন মারা যান। রোববার দুপুর ২টা থেকে এ সংঘর্ষ বাধে।
ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষে নিহতরা হলেন উপজেলার বারকুট গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩), উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮) ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম (২২)। তিনি ঢাকা দক্ষিণ বাজারের তানজিনা সুজের সত্বাধিকারী।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদর্শন সেন সংঘর্ষে তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদের মৃত্যুর তথ্য মিশ্চিত করেছেন, তবে তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। আর নজমুলের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা তৈয়ব আলী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থী ও জনতা ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সংঘর্ষে পুলিশ-বিজিবি সদস্য ও বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা খবর পাওয়া গেছে।
নিহত তাজ উদ্দিনের আত্মীয় জাবেদ মাহমুদ জানান, বেলা দুইটার দিকে ঢাকা দক্ষিণ রোডের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন পুলিশের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
পাবনা
পাবনা শহরে গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। শহরের ট্রাফিক মোড়ে বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, পাবনার ট্রাফিক মোড়ে দুপুরে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ওই সময় অতর্কিত এসে কে বা কারা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ অপর দুজনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ট্রাফিক মোড়ে পাবনা সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদের অতর্কিত গুলিতে অন্তত ১০ বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়।
তারা আরও জানান, গুলির ঘটনার পর বিক্ষোভকারীরা আবু সাঈদকে ধাওয়া দিলে তিনি দুটি গাড়ি রেখে চলে যান। এর মধ্যে একটি জিপে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অপর গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়।
নরসিংদী
জেলা সদর উপজেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন উত্তেজিত জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ইউএনবিকে জানান, আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বের করলে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করতে মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুমন মিয়া, সোহেব ও আল আমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং মীর জাহাঙ্গীরকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়।
বার্তা সংস্থাটি আরও জানায়, গুলি উপেক্ষা করেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয় চার থেকে পাঁচ হাজার বিক্ষোভাকারী। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা দৌড়ে পালাতে শুরু করলে ধাওয়া করেন আন্দোলনকারীরা।
ওই সময় ছয়জন মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতা মসজিদ থেকে তাদের বের করে এনে মসজিদের সামনেই পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে নাতি মনির, শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল, মাধবদী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নওশের।
মাধবদী থানার ওসি কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ছয়জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় চত্বরে রোববার সকাল থেকেই ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা জেলখানা মোড় থেকে নরসিংদী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ফেনী
জেলায় সহিংসতায় আটজন নিহত ও ২৫ জন আহত হন।
সকাল থেকে জেলার মহিপাল এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল মহিপাল সিক্স লেইন ফ্লাইওভার এলাকায় অবস্থান করে মিছিল করেন।
দুপুর দুইটার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় গুলিতে আটজন নিহত হন বলে জানান ফেনী সদর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আসিফ ইকবাল।
তিনি জানান, নিহত সবার বয়স ১৭ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় হাসপাতালের আরএমও গুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল তিনটা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহগুলো নিয়ে আসার পর কিছু সময় সেখানে পড়ে ছিল। পরে খবর পেয়ে মৃত ব্যক্তির স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে পড়ে থাকা মরদেহ নিজেরা শনাক্ত করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। ফলে হাসপাতালে এসব মৃত ব্যক্তিদের কোনা হিসাব থাকল না।
সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ এভাবে বিনা ময়নাতদন্তে স্বজনদের দিয়ে দেয়ার কোনা নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজি মুঠোফোনে বলেন, ‘মরদেহগুলো মর্গে নিতে বাধা দেয় কিছু লোক। তারা হাসপাতালের মর্গেও হামলা করার চেষ্টা করে।
‘এ সময় হাসপাতালের পুলিশ বক্সের দায়িত্বে থাকা পুলিশরাও চলে যায়। নিরুপায় হয়ে তারা মরদেহগুলো স্বজনদের দিতে বাধ্য হয়েছেন।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহ নিতে আসা স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, নিহত লোকজন হলেন ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার উত্তর জায়লস্কর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান মাসুদ, ফেনী সদর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা দোকান কর্মচারী শিহাব উদ্দিন, সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রামের বাসিন্দা পথচারী সাকিব, ফেনীর ফাজিলপুর এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ, ফেনী সদর পৌরসভার গাজী ক্রস রোডের বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সাইদুল হক। অপর দুজনের নাম জানা যায়নি।
হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে গুলিতে ও ইট-পাটকেলে আহত ২৫ জনকে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আরও কিছু লোকজন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিকেলে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের একাধিকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের অবস্থা থমথমে দেখা যায়।
পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের টহল থাকলেও তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বা অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারবার কল দিয়েও কথা বলা যায়নি।
রংপুর
জেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মর্গের দায়িত্বে থাকা আবদুল জলিল দুজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও দুজন নিহত হওয়ার তথ্য জানান।
মুন্সীগঞ্জ
জেলায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে টানা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে রোববার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল চত্বর। এতে তিনজনের প্রাণহানি হয়।
সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা হয় অর্ধশত দোকানপাট ও বিএনপির কার্যালয়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় পাঁচটি মোটরবাইক, একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যান।
তিনজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও সিরাজদীখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে।
নিহত তিনজনই শ্রমিক বলে জানা গেছে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল দুজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
জেলার সিরাজদীখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার একেএম তাইফুল হক একজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, নিহতের নাম মো. সজল। তিনি আলী আকবরের ছেলে। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
এ ব্যাপারে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায় পুলিশ। ফাঁকা গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন বাহিনীর সদস্যরা।
মাগুরা
মাগুরায় অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে দুই শিক্ষার্থীসহ চারজন নিহত হয়েছেন।
তারা হলো সদরের বরণাতৈল বিশ্বাসপাড়ার প্রয়াত ময়েন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬), যিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অপর তিনজন হলেন শ্রীপুরের নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২২) ,মহম্মদপুর সদরের ইউনুস আলীর ছেলে আহাদ আলী বিশ্বাস (১৯) ও মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রামের কানু মোল্যার ছেলে সুমন শেখ (১৭) ।
নিহত ফরহাদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থী ও আহাদ আলী বিশ্বাস মহম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এ সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।
সকাল থেকে মাগুরা শহরের নতুন বাজার, কেশব মোড়, চৌরঙ্গী মোড়, ঢাকা রোড়,পারনান্দুয়ালী ব্রিজ ও ভায়না এলাকায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।
সকাল ৯টায় মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় ছাত্রদের কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। ওই সময় পারনান্দুয়ালী এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমবেত হন।
বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। মুহূর্তের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যায় চারদিকে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদের লক্ষ করে টিয়ার শেল ও কয়েকটি গুলি ছোড়ে। ওই সময় পুলিশের গুলিতে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬) আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ রাব্বীকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনলে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুপুরে পারনান্দুয়ালী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের গুলিতে ফরহাদ (২২) গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে আনলে তিনি অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অন্যদিকে মহম্মদপুর উপজেলায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলাকালে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তারা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের মৃত্যু হয়।
বগুড়া
জেলায় অসহযোগ আন্দোলনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়া শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন স্থান অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মাঝে।
আন্দোলনকারীরা তিন থানায় হামলা, টিঅ্যান্ডটি, পিবিআই, সদর ভূমি অফিস, আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এ ছাড়া বিটাক বগুড়া কার্যালয়ের ফটকসহ কম্পিউটার হিউ মেডিকেল কন্ট্রোল রুমের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন।
ছাত্রদের এই আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের রাজপথে দেখা যায়। তারাও ছাত্রদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মুনিরুল ইসলাম (২২)। তার বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায়।
মুনিরুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। অপর জনের পরিচয় (৬০) এখনও পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত হয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহার জানান, মুনিরুলের মাথায় গুলি লেগেছিল।
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, এখানে যারা আহত অবস্থায় এসেছেন তাদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। তাদের কমপক্ষে ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, বগুড়া সদর, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুর থানায় হামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করা হয়। জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাতেও হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লা
পুলিশ সদরদপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলাটিতে আরও দুজন নিহত হয়েছেন জানালেও কীভাবে তারা নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি।
লক্ষ্মীপুর
জেলা সদরের উত্তর স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিক্ষোভকারী ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হন।
আহত লোকজনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুরুতে একজন প্রাণ হারান। হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয় তিনজনকে।
অন্যদিকে জেলার বাগবাড়ি ও ঝুমুর এলাকায় দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হন। গুলিতে নিহত চারজনের নাম জানা গেছে, যারা হলেন সাব্বির, মিরাজ, কাউসার ও আফনান।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বাকি চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেলেও এ নিয়ে কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর বাইরে শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হওয়ার খবর জানায় ইউএনবি, তবে তারা কীভাবে নিহত হন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি বার্তা সংস্থাটি।
আরও পড়ুন:ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড বন্ধ করে দেয়ায় ১০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের ছয় মন্ত্রীসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। মামলায় সুনির্দিষ্ট ১৫ জন এবং অজ্ঞাত একশ’ জনকে আসামি করা হয়।
চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবির চৌধুরীর আদালতে সোমবার মামলাটি দায়ের করেন অনলাইন সফটওয়্যারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. নুর মোহাম্মদ।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
বাসসের আদালত প্রতিবেদক জানান, মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউল হক আহসান ও বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল মো. সোহায়েল।
মামলার আরজিতে বলা হয়, বাদী ফেনী জেলার সাফিয়াবাদ এলাকার ভুঞা বাড়ির মো. নুর নবীর ছেলে নুর মোহাম্মদ ‘দুরন্ত সাপ্লাইয়ার’ এবং ‘দুরন্ত বাজার’ নামে অনলাইন সফটওয়্যারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি দাবি করেন, ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড বন্ধ থাকা অবস্থায় বাদীর ব্যবসা অনলাইন ও সফটওয়্যারভিত্তিক হওয়ায় কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, গাড়ি ভাড়া, শো-রুম ভাড়া, বাসা ভাড়াসহ অনলাইন ব্যবসায় পণ্য সরবরাহ এবং আর্থিক লেনদেন ব্যাহত হয়। এতে বাদীর ১০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এবং জনগণের জনমালের ক্ষতিসাধনেরও অভিযোগ আনা হয়।
চট্টগ্রাম জেলার এক থানা হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ওসিসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার জেলার লোহাগাড়া থানায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই চার পুলিশ সদস্য হলেন- লোহাগড়া থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম, এসআই নাছিমা আক্তার, আমির হোসেন ও কনস্টেবল এম আমিরুল হক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৈয়ব (এসবি) গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার এলাকার লোকজন এক আসামিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। থানার হাজতখানা সংস্কারের কারণে ওই আসামিকে ডিউটি অফিসারের কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তিনি পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওসিসহ চারজনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর লোহাগাড়া থানায় হওয়া দুটি মামলার আসামি ছিলেন সাইফুল ইসলাম। পুটিবিলা এলাকা থেকে কিছু লোকজন তাকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় লোহাগড়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের পর নতুন ওসি হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে সদ্য যোগদান করা পরিদর্শক আরিফুর রহমানকে পদায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে ১৮ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৩০ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ও পাঁচজন জেলার বিভিন্ন থানার ওসি।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে রোববার এই বদলির আদেশ জারি হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) ১৩ ওসির মধ্যে খুলশী থানার কবিরুল ইসলাম ও কর্ণফুলী থানার জহির হোসেনকে পিবিআই, চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর ও পাহাড়তলী থানার কেপায়েত উল্লাহকে টুরিস্ট পুলিশ; কোতোয়ালির এসএম ওবায়দুল হক, আকবরশাহ থানার গোলাম রব্বানী, চকবাজার থানার ওয়ালী উদ্দিন আকবর ও হালিশহর থানার কায়সার হামিদকে নৌ-পুলিশে এবং পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা, সদরঘাট থানার ফেরদৌস জাহান, ডবলমুরিং থানার ফজলুল কাদের পাটোয়ারী, বন্দর থানার মনজুর কাদের মজুমদার ও ইপিজেড থানার মোহাম্মদ হোছাইনকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
জেলার ১৭ পরিদর্শকের মধ্যে রয়েছেন- সীতাকুণ্ড থানার কামাল উদ্দিন, ভুজপুর থানার মো. কামরুজ্জামান, রাঙ্গুনিয়া থানার চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তী, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার মীর্জা মো. হাছান ও জোরারগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহ আল হারুন।
তাদের মধ্যে কামাল উদ্দিন, মীর্জা হাছান ও আব্দুল্লাহ আল হারুনকে সিআইডি এবং কামরুজ্জামান ও চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তীকে পিবিআইতে বদলি করা হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার হওয়া ফটিকছড়ি থানার ওসি মীর নুরুল হুদা, হাটাহাজারি থানার মো. মনিরুজ্জামান, মিরসরাই থানার সহিদুল ইসলামকে পিবিআই; রাউজান থানার জাহিদ হোসেন ও বাঁশখালী থানার তোফায়েল হোসেনকে টুরিস্ট পুলিশে; আনোয়ারা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেনকে রেল পুলিশে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়া পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন, চন্দনাইশের ওবায়দুল ইসলাম, সাতকানিয়ার মিজানুর রহমান, বোয়ালখালী থানার আছহাব উদ্দিন, সন্দ্বীপ থানার কবির হোসেনকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে থানা থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় সোমবার প্রত্যাহার হওয়া লোহাগাড়া থানার ওসি রাশেদুল ইসলামকেও সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের ছাড়পত্র নিয়ে বদলি করা ইউনিটে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১০ পরিচালক ও ৪৮ উপ-পরিচালক পদে রদবদল করা হয়েছে।
সোমবার দুদকের জারি করা অফিস আদেশে এই রদবদল করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের ক্ষমতার ভার তুলে নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর থেকেই শৃঙ্খলা আর পেশাদারত্ব ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে আনা হচ্ছে পরিবর্তন।
এর ধারবাহিকতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ১০ পরিচালক ও ৪৮ উপ-পরিচালককে বদলি করা হয়েছে।
পৃথক আদেশে এসব কর্মকর্তাকে ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, নওগাঁ, খুলনা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, বদলিকৃত কর্মকর্তারা বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হওয়ার আগে সব নথিপত্র নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার কাছে বুঝিয়ে দেবেন। আর নথিপত্র বুঝে নিয়ে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তারা লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালককে অবহিত করবেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারে ইয়াবা কারবারে জড়িত বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ভাতিজা শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রোববার শেষ রাতের দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত শাহজাহান তালিকাভুক্ত একজন মাদক কারবারি এবং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
সোমবার র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান জানান, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টেকনাফে ছাত্রদের ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে শাহজাহান ও তার সহযোগীদের হামলা করার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সহিংসতা ও মাদকসহ বেশকিছু মামলা রয়েছে।
রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। অন্যদিকে আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের তিনটি তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কমপক্ষে ৫০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ইউএনবি জানায়- বিক্ষোভ, ভাংচুর, লুটপাটের এ ঘটনায় শিল্পাঞ্চলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে ১১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টহল দিচ্ছেন সেনা, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
হামলা-ভাঙচুরের শিকার তৈরি পোশাক কারখানাগুলো হলো- আশুলিয়া ইউনিয়নের টঙ্গাবাড়ি এলাকার আলিফ ভিলেজ লিমিটেডের আলিফ এমব্রয়ডারি ভিলেজ লিমিটেড, লাম মিম অ্যাপারেলন্স লিমিটেড ও লাম মিম অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড।
আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের আশুলিয়া জোনের ম্যানেজার মো. রেফাই সিদ্দিক বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল থেকেই কারখানায় প্রায় এক হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। কিছু সময় পর মাস্ক পরা দুশ’ থেকে তিনশ’ লোক হঠাৎ করে তিনটি কারখানায় একযোগে হামলা করে। তারা কারখানাগুলোর মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।’
তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা কারখানার ডিজিটাল মেশিন, কম্পিউটার, ফায়ার কন্ট্রোল প্যানেল, বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি, সিসি টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, গার্ডেনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করে। এছাড়াও কারখানা থেকে মূল্যবান পোশাক, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল ও মেশিন লুট করে নিয়ে যায়।’
কারখানার ডিজিটাল মেশিনগুলো ভেঙে ফেলায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান রেফাই সিদ্দিক।
তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীসহ ২০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা।’
অন্যদিকে হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বাড়ানো, বকেয়া বেতনসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানা ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:সিলেট মহানগরের ৭ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদসহ দুজনকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত অপরজন হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী রুমেল আহমদ। তাদের বাসা বনকলাপাড়ার লাল-সবুজ আবাসিক এলাকায়।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের বনকলাপাড়ায় একটি গলিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মনজুর আহমদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা মনজুরের হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহত রুমেল আহমদ দাবি করেন, গত সিটি নির্বাচনের সময়ের বিরোধের জের ধরে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কিছু নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করেছে।
তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ সোমবার সকালে বলেন, ‘মনজুর আহমদ ও রুমেল আহমদের ওপর বনকলাপাড়ার ভেতরেই তাদের বাসার সামান্য দূরে হামলা হয়েছে। মনজুর গুরুতর আহত। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘হামলার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য