× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
57 killed in violence in 11 districts of the country
google_news print-icon
অসহযোগ

সহিংসতায় দেশের ১৯ জেলায় ১৪ পুলিশসহ নিহত ৯৬

সহিংসতায়-দেশের-১৯-জেলায়-১৪-পুলিশসহ-নিহত-৯৬
কিশোরগঞ্জে সহিংসতার সময় সড়কে পুড়তে থাকা টায়ার। ছবি: নিউজবাংলা
নিউজবাংলার প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, ঢাকায় ১৪জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, কিশোরগঞ্জে পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, নরসিংদীতে ছয়জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, মাগুরায় চারজন, বগুড়ায় দুজন, শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, লক্ষ্মীপুরে আটজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হয়েছেন।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে রোববার দেশের ১৯ জেলায় সহিংসতায় ১৪ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলা, সংঘর্ষ, গুলিসহ সহিংসতায় সারাদেশে আহত হয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।

নিউজবাংলার প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, ঢাকায় ১৪জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, কিশোরগঞ্জে পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, নরসিংদীতে ছয়জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, মাগুরায় চারজন, বগুড়ায় দুজন, শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, লক্ষ্মীপুরে আটজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হয়েছেন।

ঢাকা

ঢাকায় ধানমন্ডি, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাভারের আশুলিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নয়জনের মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের একজন হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএ দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও এবং অপরজন তাহিদুল ইসলাম।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার পর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে আব্দুল্লাহ ও ৫টা ২৫ মিনিটে তাহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আব্দুল্লাহ জিগাতলা এলাকায় এবং তাহিদুল ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ হন।

মিটফোর্ড হাসপাতালের আনসার কমান্ডার আব্দুল আহাদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে গুলিস্তান এলাকা থেকে রেজাউর রহমান নামে এক যুবককে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। রেজাউরের বুকে গুলি লেগেছে। তার বাড়ি কুমিল্লায়।

উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হন।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুর রহমান জানান, ওই হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় রোববার দুপুরে হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান এবং সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা এনায়েতপুর হাট থেকে কেজির মোড়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং ছড়রা গুলি ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হন।

ওই খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায় এবং প্রথমে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে একেক করে তারা ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্যসহ এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।’

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলায় আরও ১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে, তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।

কিশোরগঞ্জ

জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সৈয়দ টিটুর বাসায় দেয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দুজন।

এ ছাড়া এক যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেধে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারী একজন স্ট্রোক করে এবং বাজিতপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন একজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরান থানা মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নি সংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করেন। পরে অফিসের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তারা।

ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা চালান। দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। ওই সময় আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশেই সৈয়দ টিটুর ছয় তলা বাসভবনের নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনেও আগুন দেয় তারা। ভাঙচুর করা হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসাও।

আগুন সৈয়দ টিটুর বাসার তিন তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সৈয়দ টিটুসহ তার বাসার ভাড়াটিয়ারা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কিছুটা দেরিতে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তারা বাসার গেট ভেঙে আগুনে পোড়া এক নারীসহ দুজনের লাশ এবং আহতদের উদ্ধার করেন।

কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. একরাম উল্লাহ জানান, এ হাসপাতালে আগুনে পোড়া অঞ্জনা (৩০) নামে এক নারীসহ দুজনের লাশ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ২০ জনকে।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে ৩০ বছর বয়সী একজনের মরদেহ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ৬৫ জনকে। গুরুতর আহত দুজনকে ময়মনসিংহে রেফার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্রের অভিযোগ, সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মবিনকে (৩০) হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তার মরদেহটি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় স্ট্রোক করে মারা গেছেন ফরহাদুল ইসলাম রুবেল (৩২) নামের এক আন্দোলনকারী। তিনি তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে।

চর শোলাকিয়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে দেড় শর মতো আহত লোকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা শহরের পুরান থানা মোড় ও কাচারীবাজার বটতলা মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে।

বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে।

এদিকে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী কামরুল হাসানের বাসায়ও ভাঙচুর হয়েছে। এ ছাড়া জেলার বাজিতপুরে আন্দোলনকারীরা দুটি বাস ও সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং গণনাট্য সংসদের অফিসে আগুন দেয়।

ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে কুদ্দুস (৩২) নামের একজন স্থানীয় একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তার বাড়ি বাজিতপুরের দিঘিরপাড় এলাকায়।

সিলেট

জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি ও পুলিশের আলাদা সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় তিনজন ও উপজেলা সদরের চৌমুহনীতে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অনেকে।

চৌমুহনীতে সংঘর্ষে আহত দুজনকে রোববার সন্ধ্যায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক ।

এই দুজন হলেন ঢাকা দক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন (২৪), পৌর এলাকার ঘোষগাঁও গ্রামের গৌছ উদ্দিন (৪০)।

সিলেটের ওসমানী মেডিক্যালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী দুজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

এর আগে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও তিনজন মারা যান। রোববার দুপুর ২টা থেকে এ সংঘর্ষ বাধে।

ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষে নিহতরা হলেন উপজেলার বারকুট গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩), উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮) ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম (২২)। তিনি ঢাকা দক্ষিণ বাজারের তানজিনা সুজের সত্বাধিকারী।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদর্শন সেন সংঘর্ষে তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদের মৃত্যুর তথ্য মিশ্চিত করেছেন, তবে তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। আর নজমুলের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা তৈয়ব আলী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থী ও জনতা ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সংঘর্ষে পুলিশ-বিজিবি সদস্য ও বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা খবর পাওয়া গেছে।

নিহত তাজ উদ্দিনের আত্মীয় জাবেদ মাহমুদ জানান, বেলা দুইটার দিকে ঢাকা দক্ষিণ রোডের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন পুলিশের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

পাবনা

পাবনা শহরে গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। শহরের ট্রাফিক মোড়ে বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, পাবনার ট্রাফিক মোড়ে দুপুরে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ওই সময় অতর্কিত এসে কে বা কারা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ অপর দুজনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ট্রাফিক মোড়ে পাবনা সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদের অতর্কিত গুলিতে অন্তত ১০ বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়।

তারা আরও জানান, গুলির ঘটনার পর বিক্ষোভকারীরা আবু সাঈদকে ধাওয়া দিলে তিনি দুটি গাড়ি রেখে চলে যান। এর মধ্যে একটি জিপে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অপর গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়।

নরসিংদী

জেলা সদর উপজেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন উত্তেজিত জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ইউএনবিকে জানান, আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বের করলে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করতে মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুমন মিয়া, সোহেব ও আল আমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং মীর জাহাঙ্গীরকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়।

বার্তা সংস্থাটি আরও জানায়, গুলি উপেক্ষা করেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয় চার থেকে পাঁচ হাজার বিক্ষোভাকারী। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা দৌড়ে পালাতে শুরু করলে ধাওয়া করেন আন্দোলনকারীরা।

ওই সময় ছয়জন মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতা মসজিদ থেকে তাদের বের করে এনে মসজিদের সামনেই পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।

নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে নাতি মনির, শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল, মাধবদী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নওশের।

মাধবদী থানার ওসি কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ছয়জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় চত্বরে রোববার সকাল থেকেই ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা জেলখানা মোড় থেকে নরসিংদী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ফেনী

জেলায় সহিংসতায় আটজন নিহত ও ২৫ জন আহত হন।

সকাল থেকে জেলার মহিপাল এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল মহিপাল সিক্স লেইন ফ্লাইওভার এলাকায় অবস্থান করে মিছিল করেন।

দুপুর দুইটার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় গুলিতে আটজন নিহত হন বলে জানান ফেনী সদর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আসিফ ইকবাল।

তিনি জানান, নিহত সবার বয়স ১৭ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় হাসপাতালের আরএমও গুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল তিনটা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহগুলো নিয়ে আসার পর কিছু সময় সেখানে পড়ে ছিল। পরে খবর পেয়ে মৃত ব্যক্তির স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে পড়ে থাকা মরদেহ নিজেরা শনাক্ত করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। ফলে হাসপাতালে এসব মৃত ব্যক্তিদের কোনা হিসাব থাকল না।

সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ এভাবে বিনা ময়নাতদন্তে স্বজনদের দিয়ে দেয়ার কোনা নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজি মুঠোফোনে বলেন, ‘মরদেহগুলো মর্গে নিতে বাধা দেয় কিছু লোক। তারা হাসপাতালের মর্গেও হামলা করার চেষ্টা করে।

‘এ সময় হাসপাতালের পুলিশ বক্সের দায়িত্বে থাকা পুলিশরাও চলে যায়। নিরুপায় হয়ে তারা মরদেহগুলো স্বজনদের দিতে বাধ্য হয়েছেন।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহ নিতে আসা স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, নিহত লোকজন হলেন ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার উত্তর জায়লস্কর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান মাসুদ, ফেনী সদর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা দোকান কর্মচারী শিহাব উদ্দিন, সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রামের বাসিন্দা পথচারী সাকিব, ফেনীর ফাজিলপুর এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ, ফেনী সদর পৌরসভার গাজী ক্রস রোডের বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সাইদুল হক। অপর দুজনের নাম জানা যায়নি।

হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে গুলিতে ও ইট-পাটকেলে আহত ২৫ জনকে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আরও কিছু লোকজন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিকেলে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের একাধিকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের অবস্থা থমথমে দেখা যায়।

পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের টহল থাকলেও তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বা অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারবার কল দিয়েও কথা বলা যায়নি।

রংপুর

জেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মর্গের দায়িত্বে থাকা আবদুল জলিল দুজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও দুজন নিহত হওয়ার তথ্য জানান।

মুন্সীগঞ্জ

জেলায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে টানা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে রোববার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল চত্বর। এতে তিনজনের প্রাণহানি হয়।

সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা হয় অর্ধশত দোকানপাট ও বিএনপির কার্যালয়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় পাঁচটি মোটরবাইক, একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যান।

তিনজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও সিরাজদীখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে।
নিহত তিনজনই শ্রমিক বলে জানা গেছে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল দুজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

জেলার সিরাজদীখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার একেএম তাইফুল হক একজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, নিহতের নাম মো. সজল। তিনি আলী আকবরের ছেলে। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।

এ ব্যাপারে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায় পুলিশ। ফাঁকা গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন বাহিনীর সদস্যরা।

মাগুরা

মাগুরায় অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে দুই শিক্ষার্থীসহ চারজন নিহত হয়েছেন।

তারা হলো সদরের বরণাতৈল বিশ্বাসপাড়ার প্রয়াত ময়েন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬), যিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অপর তিনজন হলেন শ্রীপুরের নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২২) ,মহম্মদপুর সদরের ইউনুস আলীর ছেলে আহাদ আলী বিশ্বাস (১৯) ও মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রামের কানু মোল্যার ছেলে সুমন শেখ (১৭) ।

নিহত ফরহাদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থী ও আহাদ আলী বিশ্বাস মহম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এ সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।

সকাল থেকে মাগুরা শহরের নতুন বাজার, কেশব মোড়, চৌরঙ্গী মোড়, ঢাকা রোড়,পারনান্দুয়ালী ব্রিজ ও ভায়না এলাকায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।

সকাল ৯টায় মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় ছাত্রদের কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। ওই সময় পারনান্দুয়ালী এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমবেত হন।

বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। মুহূর্তের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যায় চারদিকে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদের লক্ষ করে টিয়ার শেল ও কয়েকটি গুলি ছোড়ে। ওই সময় পুলিশের গুলিতে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬) আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ রাব্বীকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনলে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুপুরে পারনান্দুয়ালী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।

সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের গুলিতে ফরহাদ (২২) গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে আনলে তিনি অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

অন্যদিকে মহম্মদপুর উপজেলায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলাকালে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তারা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের মৃত্যু হয়।

বগুড়া

জেলায় অসহযোগ আন্দোলনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়া শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন স্থান অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মাঝে।

আন্দোলনকারীরা তিন থানায় হামলা, টিঅ্যান্ডটি, পিবিআই, সদর ভূমি অফিস, আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

এ ছাড়া বিটাক বগুড়া কার্যালয়ের ফটকসহ কম্পিউটার হিউ মেডিকেল কন্ট্রোল রুমের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন।

ছাত্রদের এই আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের রাজপথে দেখা যায়। তারাও ছাত্রদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মুনিরুল ইসলাম (২২)। তার বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায়।

মুনিরুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। অপর জনের পরিচয় (৬০) এখনও পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত হয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহার জানান, মুনিরুলের মাথায় গুলি লেগেছিল।

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, এখানে যারা আহত অবস্থায় এসেছেন তাদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। তাদের কমপক্ষে ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, বগুড়া সদর, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুর থানায় হামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করা হয়। জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাতেও হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লা

পুলিশ সদরদপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলাটিতে আরও দুজন নিহত হয়েছেন জানালেও কীভাবে তারা নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি।

লক্ষ্মীপুর

জেলা সদরের উত্তর স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিক্ষোভকারী ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হন।

আহত লোকজনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুরুতে একজন প্রাণ হারান। হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয় তিনজনকে।

অন্যদিকে জেলার বাগবাড়ি ও ‍ঝুমুর এলাকায় দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হন। গুলিতে নিহত চারজনের নাম জানা গেছে, যারা হলেন সাব্বির, মিরাজ, কাউসার ও আফনান।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বাকি চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেলেও এ নিয়ে কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর বাইরে শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হওয়ার খবর জানায় ইউএনবি, তবে তারা কীভাবে নিহত হন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি বার্তা সংস্থাটি।

আরও পড়ুন:
সিলেটের গোলাপগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত অনেকে
রাজধানীসহ ১১ জেলায় নিহত কমপক্ষে ৩২, আহত শতাধিক
ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়েছে ৮০ আহতকে, এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু
নাশকতাকারীদের শক্ত হাতে দমনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Sagar Rooney Murder Report Report is a record of 120 times

সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্ত প্রতিবেদন ১২০ বার পেছানোর রেকর্ড

সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্ত প্রতিবেদন ১২০ বার পেছানোর রেকর্ড

বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আবার পেছানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত গতকাল সোমবার আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করেন।

এ পর্যন্ত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা মোট ১২০ বার পিছিয়ে এসেছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হন। ঘটনার সময় বাসায় তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ উপস্থিত ছিলেন। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামিরা হলেন — রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির দুই নিরাপত্তা রক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ এবং তাদের ‘বন্ধু’ তানভীর রহমান খান।

এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ জামিনে রয়েছেন, বাকিরা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন বারবার পিছিয়ে আসায় এ মামলার দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Abu Saeed Murder Hearing the charges against the accused today

আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সদস্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি আজ।

সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এই ছয় আসামি হলেন— সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, রাফিউল, আনোয়ার পারভেজ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আশেক।

গত ১০ জুলাই পলাতক ২৬ আসামিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে, ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের সদস্যসহ মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিকালে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former Chief Justice ABM Khairul Haque arrested

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, তথ্য এলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক এই বিচারপতিকে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
All courts have observed a minute of silence before the trial begins

বিচার শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে সকল আদালত

বিচার শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে সকল আদালত

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীসহ বহু হতাহতের ঘটনায় আজ বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে দেশের সকল আদালত।

আজ সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতি আপিল বিভাগ তাদের বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আগে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন। এদিকে আজ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আগেও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত অধস্তন আদালতে নীরবতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে হৃদয়বিদারক এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকার ২২ জুলাই সারা দেশে শোক দিবস ঘোষণা করেছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ শোক প্রকাশ করছেন। বিচার বিভাগীয় পর্যায়েও বিষয়টি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা আবশ্যক। এমতাবস্থায়, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২২ জুলাই দেশের সকল অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। সেই সাথে দেশের সকল অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। এছাড়া ২২ জুলাই হতে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সকল জেলা জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Corruption in the mural project in the Mujib year

মুজিববর্ষে ম্যুরাল প্রকল্পে দুর্নীতি, ৬৪ জেলায় দুদকের চিঠি

মুজিববর্ষে ম্যুরাল প্রকল্পে দুর্নীতি, ৬৪ জেলায় দুদকের চিঠি

সারাদেশে মুজিব শতবর্ষ পালন ও শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল নির্মাণের আর্থিক হিসাব চেয়ে ৬৪ জেলায় চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ অনুসন্ধানে উপপরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের উপপরিজালক আকতারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দুদক জানায়, ৬৪ জেলা পরিষদ বরাবর পাঠানো চিঠিতে মুজিবর্ষ পালনে কত টাকা ব্যয় হয়েছে, ব্যয় করা মন্ত্রণালয়ের নাম, ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ, ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তার নাম পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, জেলায় কতগুলো এবং কোথায় ম্যুরাল তৈরি হয়েছে, ম্যুরাল নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছে, ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তার পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ পালন ও শেখ মুজিবের ১০ হাজারেরও বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করে ওই অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। তাই রেকর্ডপত্র দ্রুত দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

বিভিন্ন দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর আগে দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল, ভাস্কর্য ও প্রতিকৃতি স্থাপন করে আওয়ামী লীগ সরকার। টানা ১৫ বছর ধরেই ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি তৈরির মহোৎসবে মেতে উঠেছিল দলটি। অভিযোগ রয়েছে, অপ্রয়োজনীয় ম্যুরাল ও ভাস্কর্য তৈরিতে ৪ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়ে থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, পুরো প্রকল্পই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

সূত্র জানায়, জেলা পরিষদে পাঠানোর আগে একই চিঠি বাংলাদেশ বেতার, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলেও পাঠানো হয়েছে।

গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর মুজিববর্ষ পালনে অর্থ অপচয় ও এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছিল দুদক।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Mob Violence cannot disrupt the normal activities of the country RAB Director General

মব ভায়োলেন্স করে দেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করা যাবে না: র‌্যাব মহাপরিচালক

মব ভায়োলেন্স করে দেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করা যাবে না: র‌্যাব মহাপরিচালক

র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি), অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান বলেছেন, মব ভায়োলেন্স বা মব সন্ত্রাস করে এ দেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করা যাবে না। অপরাধী যেই হোক বা যে দলেরই হোক, আমরা তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করব।

শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ঘটে যাওয়া ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবস্থা গ্রহণের অগ্রগতিসহ আরও কয়েকটি ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন র‌্যাবের ডিজি। ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘র‍্যাব এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের বিষয়ে তৎপর রয়েছে। দেশে বিগত কয়েক মাসে ঘটে যাওয়া অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাদের যেন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়, সে ব্যাপারে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। মব ভায়োলেন্স সৃষ্টির অপরাধে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন অপরাধীকে র‍্যাব আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।’

‘গত ২ জুলাই লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় সন্ত্রাসী কর্তৃক মব সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের আহত করে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ছাড়াও গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় একই পরিবারের মা ও দুই সন্তানের ওপর মব ভায়োলেন্সের অযাচিত ঘটনায় ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

সলিমুল্লাহ মেডিকেলের সামনে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এজাহারনামীয় ৪ নম্বর আসামি আলমগীর (২৮) এবং ৫ নম্বর আসামি মনির ওরফে লম্বা মনিরকে (৩২) আমরা গতকাল (শুক্রবার) রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’

‘এ ঘটনায় আমরা ছায়া তদন্ত করছি, আর পুরো বিষয়টি দেখছে ডিএমপির তদন্ত বিভাগ।’

র‍্যাবের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
ACCs Sharifs direction to return the job to the High Court

দুদকের সেই শরীফকে চাকরি ফেরত দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

দুদকের সেই শরীফকে চাকরি ফেরত দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (৯ জুলাই) বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

তিন বছর আগে ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই কোনো কর্মীকে চাকরি থেকে অপসারণ-সংক্রান্ত দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪(২) বিধির বৈধতা নিয়ে ও চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে একই বছরের ১৩ মার্চ শরীফ রিট করেন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পদ থেকে শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির আদেশ কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বেতন, সব সুবিধাসহ তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় রুলে। দুদকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

রুলের ওপর গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত আজ রায়ের জন্য দিন রেখেছিলেন। রুল যথাযথ (অ্যাবসোলিউট) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হলো।

রায়ের সময় শরীফ উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে শরীফ উদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দীন দোলন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান।

রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দীন দোলন বলেন, শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। জ্যেষ্ঠতা ও সব সুযোগ-সুবিধাসহ তাঁকে চাকরিতে ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, রায়ের বিষয়টি দুদককে জানানো হবে। আপিল করবে কি না, সে বিষয়ে দুদক সিদ্ধান্ত নেবে।

মন্তব্য

p
উপরে