× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
57 killed in violence in 11 districts of the country
google_news print-icon
অসহযোগ

সহিংসতায় দেশের ১৯ জেলায় ১৪ পুলিশসহ নিহত ৯৬

সহিংসতায়-দেশের-১৯-জেলায়-১৪-পুলিশসহ-নিহত-৯৬
কিশোরগঞ্জে সহিংসতার সময় সড়কে পুড়তে থাকা টায়ার। ছবি: নিউজবাংলা
নিউজবাংলার প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, ঢাকায় ১৪জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, কিশোরগঞ্জে পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, নরসিংদীতে ছয়জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, মাগুরায় চারজন, বগুড়ায় দুজন, শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, লক্ষ্মীপুরে আটজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হয়েছেন।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে রোববার দেশের ১৯ জেলায় সহিংসতায় ১৪ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলা, সংঘর্ষ, গুলিসহ সহিংসতায় সারাদেশে আহত হয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।

নিউজবাংলার প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, ঢাকায় ১৪জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, কিশোরগঞ্জে পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, নরসিংদীতে ছয়জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, মাগুরায় চারজন, বগুড়ায় দুজন, শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, লক্ষ্মীপুরে আটজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হয়েছেন।

ঢাকা

ঢাকায় ধানমন্ডি, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাভারের আশুলিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নয়জনের মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের একজন হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএ দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও এবং অপরজন তাহিদুল ইসলাম।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার পর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে আব্দুল্লাহ ও ৫টা ২৫ মিনিটে তাহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আব্দুল্লাহ জিগাতলা এলাকায় এবং তাহিদুল ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ হন।

মিটফোর্ড হাসপাতালের আনসার কমান্ডার আব্দুল আহাদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে গুলিস্তান এলাকা থেকে রেজাউর রহমান নামে এক যুবককে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। রেজাউরের বুকে গুলি লেগেছে। তার বাড়ি কুমিল্লায়।

উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হন।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুর রহমান জানান, ওই হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় রোববার দুপুরে হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান এবং সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা এনায়েতপুর হাট থেকে কেজির মোড়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং ছড়রা গুলি ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হন।

ওই খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায় এবং প্রথমে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে একেক করে তারা ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্যসহ এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।’

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলায় আরও ১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে, তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।

কিশোরগঞ্জ

জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সৈয়দ টিটুর বাসায় দেয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দুজন।

এ ছাড়া এক যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেধে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারী একজন স্ট্রোক করে এবং বাজিতপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন একজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরান থানা মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নি সংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করেন। পরে অফিসের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তারা।

ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা চালান। দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। ওই সময় আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশেই সৈয়দ টিটুর ছয় তলা বাসভবনের নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনেও আগুন দেয় তারা। ভাঙচুর করা হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসাও।

আগুন সৈয়দ টিটুর বাসার তিন তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সৈয়দ টিটুসহ তার বাসার ভাড়াটিয়ারা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কিছুটা দেরিতে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তারা বাসার গেট ভেঙে আগুনে পোড়া এক নারীসহ দুজনের লাশ এবং আহতদের উদ্ধার করেন।

কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. একরাম উল্লাহ জানান, এ হাসপাতালে আগুনে পোড়া অঞ্জনা (৩০) নামে এক নারীসহ দুজনের লাশ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ২০ জনকে।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে ৩০ বছর বয়সী একজনের মরদেহ আনা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ৬৫ জনকে। গুরুতর আহত দুজনকে ময়মনসিংহে রেফার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্রের অভিযোগ, সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মবিনকে (৩০) হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তার মরদেহটি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় স্ট্রোক করে মারা গেছেন ফরহাদুল ইসলাম রুবেল (৩২) নামের এক আন্দোলনকারী। তিনি তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে।

চর শোলাকিয়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে দেড় শর মতো আহত লোকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা শহরের পুরান থানা মোড় ও কাচারীবাজার বটতলা মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে।

বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে।

এদিকে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী কামরুল হাসানের বাসায়ও ভাঙচুর হয়েছে। এ ছাড়া জেলার বাজিতপুরে আন্দোলনকারীরা দুটি বাস ও সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং গণনাট্য সংসদের অফিসে আগুন দেয়।

ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে কুদ্দুস (৩২) নামের একজন স্থানীয় একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তার বাড়ি বাজিতপুরের দিঘিরপাড় এলাকায়।

সিলেট

জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি ও পুলিশের আলাদা সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় তিনজন ও উপজেলা সদরের চৌমুহনীতে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অনেকে।

চৌমুহনীতে সংঘর্ষে আহত দুজনকে রোববার সন্ধ্যায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক ।

এই দুজন হলেন ঢাকা দক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন (২৪), পৌর এলাকার ঘোষগাঁও গ্রামের গৌছ উদ্দিন (৪০)।

সিলেটের ওসমানী মেডিক্যালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী দুজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

এর আগে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও তিনজন মারা যান। রোববার দুপুর ২টা থেকে এ সংঘর্ষ বাধে।

ঢাকা দক্ষিণে সংঘর্ষে নিহতরা হলেন উপজেলার বারকুট গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩), উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮) ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম (২২)। তিনি ঢাকা দক্ষিণ বাজারের তানজিনা সুজের সত্বাধিকারী।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদর্শন সেন সংঘর্ষে তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদের মৃত্যুর তথ্য মিশ্চিত করেছেন, তবে তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। আর নজমুলের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা তৈয়ব আলী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থী ও জনতা ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সংঘর্ষে পুলিশ-বিজিবি সদস্য ও বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা খবর পাওয়া গেছে।

নিহত তাজ উদ্দিনের আত্মীয় জাবেদ মাহমুদ জানান, বেলা দুইটার দিকে ঢাকা দক্ষিণ রোডের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন পুলিশের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

পাবনা

পাবনা শহরে গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। শহরের ট্রাফিক মোড়ে বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, পাবনার ট্রাফিক মোড়ে দুপুরে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ওই সময় অতর্কিত এসে কে বা কারা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ অপর দুজনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ট্রাফিক মোড়ে পাবনা সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদের অতর্কিত গুলিতে অন্তত ১০ বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়।

তারা আরও জানান, গুলির ঘটনার পর বিক্ষোভকারীরা আবু সাঈদকে ধাওয়া দিলে তিনি দুটি গাড়ি রেখে চলে যান। এর মধ্যে একটি জিপে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অপর গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়।

নরসিংদী

জেলা সদর উপজেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন উত্তেজিত জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ইউএনবিকে জানান, আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বের করলে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করতে মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুমন মিয়া, সোহেব ও আল আমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং মীর জাহাঙ্গীরকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়।

বার্তা সংস্থাটি আরও জানায়, গুলি উপেক্ষা করেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয় চার থেকে পাঁচ হাজার বিক্ষোভাকারী। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা দৌড়ে পালাতে শুরু করলে ধাওয়া করেন আন্দোলনকারীরা।

ওই সময় ছয়জন মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতা মসজিদ থেকে তাদের বের করে এনে মসজিদের সামনেই পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।

নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে নাতি মনির, শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল, মাধবদী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নওশের।

মাধবদী থানার ওসি কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ছয়জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় চত্বরে রোববার সকাল থেকেই ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা জেলখানা মোড় থেকে নরসিংদী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ফেনী

জেলায় সহিংসতায় আটজন নিহত ও ২৫ জন আহত হন।

সকাল থেকে জেলার মহিপাল এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল মহিপাল সিক্স লেইন ফ্লাইওভার এলাকায় অবস্থান করে মিছিল করেন।

দুপুর দুইটার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় গুলিতে আটজন নিহত হন বলে জানান ফেনী সদর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আসিফ ইকবাল।

তিনি জানান, নিহত সবার বয়স ১৭ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় হাসপাতালের আরএমও গুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল তিনটা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহগুলো নিয়ে আসার পর কিছু সময় সেখানে পড়ে ছিল। পরে খবর পেয়ে মৃত ব্যক্তির স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে পড়ে থাকা মরদেহ নিজেরা শনাক্ত করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। ফলে হাসপাতালে এসব মৃত ব্যক্তিদের কোনা হিসাব থাকল না।

সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ এভাবে বিনা ময়নাতদন্তে স্বজনদের দিয়ে দেয়ার কোনা নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজি মুঠোফোনে বলেন, ‘মরদেহগুলো মর্গে নিতে বাধা দেয় কিছু লোক। তারা হাসপাতালের মর্গেও হামলা করার চেষ্টা করে।

‘এ সময় হাসপাতালের পুলিশ বক্সের দায়িত্বে থাকা পুলিশরাও চলে যায়। নিরুপায় হয়ে তারা মরদেহগুলো স্বজনদের দিতে বাধ্য হয়েছেন।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মরদেহ নিতে আসা স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, নিহত লোকজন হলেন ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার উত্তর জায়লস্কর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান মাসুদ, ফেনী সদর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা দোকান কর্মচারী শিহাব উদ্দিন, সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রামের বাসিন্দা পথচারী সাকিব, ফেনীর ফাজিলপুর এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ, ফেনী সদর পৌরসভার গাজী ক্রস রোডের বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সাইদুল হক। অপর দুজনের নাম জানা যায়নি।

হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে গুলিতে ও ইট-পাটকেলে আহত ২৫ জনকে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আরও কিছু লোকজন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিকেলে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের একাধিকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের অবস্থা থমথমে দেখা যায়।

পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের টহল থাকলেও তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বা অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারবার কল দিয়েও কথা বলা যায়নি।

রংপুর

জেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মর্গের দায়িত্বে থাকা আবদুল জলিল দুজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও দুজন নিহত হওয়ার তথ্য জানান।

মুন্সীগঞ্জ

জেলায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে টানা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে রোববার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল চত্বর। এতে তিনজনের প্রাণহানি হয়।

সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা হয় অর্ধশত দোকানপাট ও বিএনপির কার্যালয়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় পাঁচটি মোটরবাইক, একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যান।

তিনজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও সিরাজদীখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে।
নিহত তিনজনই শ্রমিক বলে জানা গেছে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল দুজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

জেলার সিরাজদীখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার একেএম তাইফুল হক একজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, নিহতের নাম মো. সজল। তিনি আলী আকবরের ছেলে। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।

এ ব্যাপারে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায় পুলিশ। ফাঁকা গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন বাহিনীর সদস্যরা।

মাগুরা

মাগুরায় অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে দুই শিক্ষার্থীসহ চারজন নিহত হয়েছেন।

তারা হলো সদরের বরণাতৈল বিশ্বাসপাড়ার প্রয়াত ময়েন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬), যিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অপর তিনজন হলেন শ্রীপুরের নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২২) ,মহম্মদপুর সদরের ইউনুস আলীর ছেলে আহাদ আলী বিশ্বাস (১৯) ও মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রামের কানু মোল্যার ছেলে সুমন শেখ (১৭) ।

নিহত ফরহাদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থী ও আহাদ আলী বিশ্বাস মহম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এ সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।

সকাল থেকে মাগুরা শহরের নতুন বাজার, কেশব মোড়, চৌরঙ্গী মোড়, ঢাকা রোড়,পারনান্দুয়ালী ব্রিজ ও ভায়না এলাকায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।

সকাল ৯টায় মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় ছাত্রদের কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। ওই সময় পারনান্দুয়ালী এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমবেত হন।

বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। মুহূর্তের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যায় চারদিকে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদের লক্ষ করে টিয়ার শেল ও কয়েকটি গুলি ছোড়ে। ওই সময় পুলিশের গুলিতে মেহেদী হাসান রাব্বী (২৬) আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ রাব্বীকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনলে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুপুরে পারনান্দুয়ালী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।

সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের গুলিতে ফরহাদ (২২) গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে আনলে তিনি অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

অন্যদিকে মহম্মদপুর উপজেলায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলাকালে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তারা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের মৃত্যু হয়।

বগুড়া

জেলায় অসহযোগ আন্দোলনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়া শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন স্থান অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মাঝে।

আন্দোলনকারীরা তিন থানায় হামলা, টিঅ্যান্ডটি, পিবিআই, সদর ভূমি অফিস, আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

এ ছাড়া বিটাক বগুড়া কার্যালয়ের ফটকসহ কম্পিউটার হিউ মেডিকেল কন্ট্রোল রুমের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন।

ছাত্রদের এই আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের রাজপথে দেখা যায়। তারাও ছাত্রদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মুনিরুল ইসলাম (২২)। তার বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায়।

মুনিরুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। অপর জনের পরিচয় (৬০) এখনও পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত হয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহার জানান, মুনিরুলের মাথায় গুলি লেগেছিল।

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, এখানে যারা আহত অবস্থায় এসেছেন তাদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। তাদের কমপক্ষে ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, বগুড়া সদর, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুর থানায় হামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করা হয়। জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাতেও হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লা

পুলিশ সদরদপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জেলাটিতে আরও দুজন নিহত হয়েছেন জানালেও কীভাবে তারা নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি।

লক্ষ্মীপুর

জেলা সদরের উত্তর স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিক্ষোভকারী ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হন।

আহত লোকজনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুরুতে একজন প্রাণ হারান। হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয় তিনজনকে।

অন্যদিকে জেলার বাগবাড়ি ও ‍ঝুমুর এলাকায় দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হন। গুলিতে নিহত চারজনের নাম জানা গেছে, যারা হলেন সাব্বির, মিরাজ, কাউসার ও আফনান।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বাকি চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেলেও এ নিয়ে কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর বাইরে শেরপুরে দুজন, কুমিল্লায় তিনজন, জয়পুরহাট, ভোলা, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে একজন করে নিহত হওয়ার খবর জানায় ইউএনবি, তবে তারা কীভাবে নিহত হন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি বার্তা সংস্থাটি।

আরও পড়ুন:
সিলেটের গোলাপগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত অনেকে
রাজধানীসহ ১১ জেলায় নিহত কমপক্ষে ৩২, আহত শতাধিক
ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়েছে ৮০ আহতকে, এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু
নাশকতাকারীদের শক্ত হাতে দমনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Corruption at Nuclear Power Center Palaya Limited is banned from departure from 5 people

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

দেশ ত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তারা হচ্ছেন: প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বুশরা সিদ্দিক, শেহতাজ মুন্নাসী খান, শহিদ উদ্দিন খান, শাহিন সিদ্দিক, শফিক আহমেদ শফিক, পারিজা পাইনাজ খান, নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আনজুম।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ যাতে সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এজন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রোধে আদালতের আদেশ দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

মন্তব্য

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা শেখ তন্ময়। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন, তার ভাই শেখ সোহেল ও শেখ জালাল উদ্দিন রুবেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তিরা তাদের নামে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former DB chief Aarons flat and plot seizure order

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ

সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নামে রাজধানীর উত্তরায় থাকা একটি ফ্ল্যাট ও মোট ১৮ কাঠার তিনটি প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, হারুনের নামে থাকা পৃথক তিনটি প্লট রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত। এছাড়াও জব্দের আদেশ দেয়া ১৫৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটিও উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত।

এদিন হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।

আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।

অনুসন্ধান চলাকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি এসব সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এজন্য সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়া প্রয়োজন।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন অর রশিদের ১০০ বিঘা জমি, পাঁচটি ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাবে থাকা ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়।

পাশাপাশি এদিনই তার ভাই এবিএম শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি জব্দ, ১১টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকার আদালত।

মন্তব্য

পারভেজ হত্যার এজহারনামীয় আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৬
পারভেজ হত্যার এজহারনামীয় আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার তাদের গাইবান্ধা ও চট্টগ্রাম থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ।

এর মধ্যে এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৩ এবং ৩ নম্বর আসামি মাহাথির হাসানকে (২০) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ।

বিকেলে র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারওয়ার মাহাথির হাসানের গ্রেপ্তারের বিষয়িটি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাব-১৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে জনা যায়, পাভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মেহেরাজ ইসলাম গাইবান্ধায় অবস্থান করছে। পরে গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাইবান্ধা সদরের ভবানীপুর গ্রামে অভিযান চলানো হয়। অভিযানে এরশাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সারওয়ার দৈনিক বাংলাকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে পারভেজ হত্যা মামলার ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মাহাথির হাসানের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে গতকাল সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানায় আনা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার রাতে পারভেজ হত্যা মামলায় তিন আসামিকে রাজধানীর মহাখালী ও আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া গত সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয় মিয়াজি (২৩) নামে মামলার এজহারনামীয় আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ১ ও র‌্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের যৌথ দল। পরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। সব মিলিয়ে পারভেজ হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি দোকানে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। একই সময় পারভেজ তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাসছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীর অভিযোগ পারভেজ তাদের দেখে হাসছিলেন। তাদের মধ্যে একজন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পিয়াসের বান্ধবী। পরে বান্ধবীরা মুঠোফোনে খবর দিলে পিয়াস ও তার দুই বন্ধু মেহরাজ ও মাহথির এসে পারভেজের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

একপর্যায়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসার করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর পারভেজকে একদল যুবক ছুরিকাঘাত করে। তার বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন রোববার তার ভাই হুমায়ুন কবির প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Arrested across the country in a special police operation

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৬১০

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৬১০

রাজধানীসহ সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৬১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯০৬ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৭০৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, এসব অভিযানে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ১টি দেশীয় পাইপগান, ১টি একনালা বন্দুক, ১ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও ২ রাউন্ড অকেজো কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত সোমবার ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ১ হাজার ৬৩১ জনকে। তার মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ১৩ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার আগে গত রোববার ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে ১ হাজার ৫৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Death Reference and Appeal Hearing Major Sinha Kill Tomorrow

মেজর সিনহা হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি আগামীকাল

মেজর সিনহা হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি আগামীকাল

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি আগামীকাল।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায় মামলাটি বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মূলতবি/নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে প্রধান বিচারপতি আলোচিত এই মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য এই হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক বরখাস্ত লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

বিচারিক আদালতের রায়ের পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে, দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The news of the burning of the Sagar Rooney murder case is not correct

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে যাওয়ার খবর সঠিক নয়

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে যাওয়ার খবর সঠিক নয়

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবিতে থাকা নথি আগুনে পড়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে, সঠিক নয়।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে নতুন উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথিপত্র ডিবি হেফাজতে পুড়ে যাবার তথ্যটি সঠিক নয়।’

‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের সময় আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে কেউ কেউ ডিবির নথি পুড়ে যাওয়ার নিউজ করছেন, যা সঠিক না,’ যোগ করেন তিনি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আদালতে আগুনে এসব নথি পুড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়নি। এডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদ রউফ বলেছেন, ডিবির অধিকাংশ অফিসার বদলি হওয়ায় পুরনো নথি খুঁজে পাওয়া সময়সাপেক্ষ।’

‘এ জন্য রাষ্ট্রপক্ষ নয় মাস সময় চাইলে বাদীপক্ষ তিন মাস সময়ের কথা বলেন। পরবর্তীতে আদালত ছয়মাস সময় দেন,’ যোগ করেন তিনি।

এরআগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার ডিবিতে থাকা নথি আগুনে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আরসাদুর রউফ বলেন, ‘আমি এমন কোনো কথা কখনোই বলিনি। সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পোড়েনি। আমি বলেছি, এটা পুরনো মামলা।’

মন্তব্য

p
উপরে