টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও মানুষ। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ।
স্থানীয়রা জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এছাড়াও তুমব্রু এলাকায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পানিবন্দি বাসিন্দাদের।
এদিকে টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে বান্দরবানের সঙ্গে থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে থানচি সড়কের জীবননগর এলাকায় পাহাড়ের বিশাল একটি অংশ সড়কের ওপর ধসে পড়ে। এতে বান্দরবান ও থানচির মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণে কাজ করছে।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সেনাবাহিনীর সহায়তা মাটি অপসারণের কাজ করছি। দ্রুত মাটি অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়া হবে।’
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘ঘুমধুম ও তুমব্রু এলাকায় পানিবন্দি বাসিন্দাদের ত্রাণ সহায়তা প্রদান ও নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড় ধসের আশংকায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদেরকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন কপোতাক্ষ পাড়ের হাচিমপুর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দারা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সোমবার সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খননকৃত মরিচ্চাপ নদীর বাঁধ ভেঙে গেলে ওই নদীর পানির চাপ পড়ে পাইকগাছার চাঁদখালী ইউনিয়নের হাচিমপুর আশ্রয়ণ কেন্দ্র সংলগ্ন খননকৃত কপোতাক্ষ নদের বাঁধে।
টানা তিনদিন ধরে পানির চাপে বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের ২০০ ফুট এলাকা ভেঙে পড়েছে। বাঁধের একাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল।
বাঁধে ভাঙনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও ভাঙন রোধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দেবদুয়ার গ্রামের তোরাব হোসেন খান বলেন, ‘মরিচ্চাপ নদীর পানির চাপে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
হাচিমপুর আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা বেবী বেগম বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে গেলে সর্বপ্রথমে আমরা আবাসনের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হব। আমরা ৬০টি পরিবার বর্তমানে চরম ঝুঁকিতে রয়েছি।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হাচিমপুর, দেবদুয়ার, শাহপাড়াসহ চাঁদখালী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুটি ইটভাটা, আবাসন ও কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল।’
দেবদুয়ার গ্রামের আমিনুর রহমান বলেন, ‘জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়াটা জরুরি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার বলেন, ‘যেখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে এটি মূল বেড়িবাঁধ নয়। এরপরও এলাকার ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, ‘ভাঙনের বিষয় নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সাতক্ষীরা জেলা ও আশাশুনি উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বিশেষ নির্দেশনায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানী মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান তথা বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ ফি।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বুধবার জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে জনপ্রতি প্রবেশ ফি ১০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
১২ বছরের নিচে প্রতিজনের প্রবেশ ফি আগে ছিল ৫০ টাকা। বর্তমানে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সীদের প্রবেশ ফি করা হয়েছে ১৫ টাকা। এ ছাড়া শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা বিনা মূল্যে গার্ডেনে প্রবেশ করতে পারবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত ১০০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য দলগত ফি ১ হাজার টাকা। ১০১ থেকে ২০০ জনের দল হলে ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা।
বিদেশি পর্যটকদের জন্য জনপ্রতি প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা বা সমপরিমাণ ডলার।
উদ্যানে সকালে হাঁটার জন্য প্রতি ব্যক্তির বার্ষিক প্রবেশ কার্ড ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সকাল ছয়টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কার্ডধারীরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে সকালে ঘুরতে পারবেন।
কার্ড হারালে বা নবায়নের জন্য ২০০ টাকা ফি দিয়ে নতুন কার্ড নিতে হবে।
এর আগে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি পুনর্নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই প্রবেশ ফি নিয়ে জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ ফি পুনরায় নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
চট্টগ্রামে সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদসহ তাদের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করতে যারা সহযোগিতা ও উৎসাহিত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৯তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম।
কমিশনার বলেন, খাস ও ব্যক্তিগত পাহাড়ের কোনো ধরনের ক্ষতি করা যাবে না। অবৈধ বসতি উচ্ছেদসহ স্থায়ীভাবে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে।
এজন্য জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, রেলওয়ে, ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মধ্যে আন্তঃদপ্তর আলোচনা করে উচ্ছেদ-পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের নির্দেশনা দেন তিনি।
তোফায়েল ইসলাম বলেন, সরকারি, ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন সংস্থার পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে হবে। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে পাহাড় মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মালিকানাধীন পাহাড় থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করার পর যাতে বেদখল না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিছিন্নকরণ কার্যক্রমের অগ্রগতি কতটুকু তা ১৫ দিন পর পর প্রতিবেদন আকারে জানাতে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেন বিভাগীয় কমিশনার।
দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যাদুর্গত এলাকায় পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে এশিয়ান গ্রুপ। সম্প্রতি দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তার পর এমন উদ্যোগ এশিয়ান গ্রুপের।
শিল্প গ্রুপটি ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, নগরীর কালুরঘাট ও মোহরা এলাকায় বন্যার্তদের খাবার, কাপড় ও নগদ অর্থ বিতরণ এবং মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। এছাড়া বন্যা-পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
মানবিক এসব কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ সালাম ও পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম।
এ পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ ও মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে বানবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়েছে। কাপড় দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে।
এছাড়া নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের কাছে। অন্যান্য মানবিক কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে এশিয়ান গ্রুপের পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম বলেন, ‘এসব আমাদের ধারাবাহিক ও নিয়মিত মানবিক কার্যক্রমের অংশ। সাম্প্রতিক আকষ্মিক বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ অন্যান্য জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার লাখ লাখ মানুষ। ব্যাপক প্রাণহানি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জীবনযাপন।
‘আমরা চেষ্টা করেছি বন্যার্ত এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এখন আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর মেরামতের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের এসব মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন:সুপারশপে আগামী ১ অক্টোবর থেকে কোনো পলিথিন শপিং ব্যাগ ও পলিপ্রপিলিনের ব্যাগ রাখা যাবে না এবং ক্রেতাদেরকে তা দেয়া যাবে না। বিকল্প হিসেবে সব সুপারশপে বা এর সামনে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের কেনার জন্য রাখতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পলিথিন শপিং ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় এই নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ১ অক্টোবর শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচার হবে। এখানে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এক সপ্তাহের মধ্যে সব সুপারশপের সঙ্গে সভা করে পাটের শপিং ব্যাগের সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
কক্সবাজারের টেকনাফ শীলখালী বন বিভাগের জায়গাটির নামই পরিবর্তন হয়ে গেছে। মানুষ এখন এলাকাটিকে চেনে বনকর্তা শাফিউলের সাম্রাজ্য হিসেবে। বন বিভাগের প্রায় ৮০ বিঘা জমি দখল করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে দু’শতাধিক ঘরবাড়ি।
বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে সরকারি জায়গায় এই ‘গ্রাম’ গড়ে তুলেছে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। আর পুরো কাজটিরই ‘নাটের গুরু’ বন কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম, যিনি নিজেকে এক সচিবের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বেড়ান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফ শীলখালী রেঞ্জ বিটে প্রথম দিকে বাগান গড়ে তুললেও পরে সেগুলো কৌশলে বিনষ্ট করে জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেন বনকর্তা শাফিউল। আর সে সুবাদে বনের ওই জমি এখন হয়ে গেছে এই রেঞ্জ কর্মকর্তার।
সব মিলিয়ে দু’শতাধিক ঘর তোলা হয়েছে বন বিভাগের ওই জমিতে। আর সেসব ঘরের বাসিন্দাদের কাছ আদায় করা হচ্ছে মাসোহারা। ভাড়ার নামে এভাবে শফিউল মাসে ২০ লাখ টাকা আদায় করে আসছেন।
বনবিভাগের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব বাড়ি থেকে মাসিক ভাড়ার নামে চাঁদা আদায়ের জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউলের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধিও এই দখলদারত্ব ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করলে উল্টো তাকে হুমকি দেয়া হয়। দেখানো হয় মামলার ভয়।
তবে এবার শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার পর ভুক্তভোগী সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছে। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কক্সবাজার টেকনাফের রাজার ছড়া, হাবির ছড়া, কচ্ছপিয়া, করাচি পাড়া, বড় ডেইল, মাথা ভাঙ্গা, জাহাজ পুরা ও শীলখালী এলাকায় বন বিভাগের গাছ কেটে ফেলে ঘর তৈরির জন্য বনবিভাগ থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিছু অংশে গাছপালা রোপণও করা হয়েছিল। তবে সেখানকার প্রায় ৮০ বিঘা জমির মধ্যে এখন আর তেমন গাছ নেই। নির্মাণ করা হয়েছে ঘর-বাড়ি। আর এসব ঘর-বাড়ির ভাড়াটেদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।
ভাড়াটেদের একজন নুর উদ্দিন বলেন, ‘বনের লোকজন আমাদেরকে এ জায়গা বিক্রি করছে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে এবং মাসে ১০ হাজার টাকা করে নেয়। আর টাকা দিতে দেরি হলে ঘর-বাড়ি ভেঙে দেয়ার হুমকি দেয়।
‘বনবিভাগের জায়গায় এমন দুই শতাধিক বাড়ি আছে। এসব ঘর থেকে আদায় করা ভাড়ার একটা অংশ প্রতি মাসে সেখানে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে একপর্যায়ে চাপে পড়ে বন বিভাগ নিজেদের দায় এড়াতে মামলা করেছে।’
এ বিষয়ে বাহারছড়া ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য মুবিনা বেগম বলেন, ‘বন রক্ষক যদি ভক্ষক হয়ে এসব অপকর্ম করে বেড়ায় তাহলে আমরা জনপ্রতিনিধিরা যাব কোথায়। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তখন সে আমার বিরুদ্ধেই লেগে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বন কর্মকর্তা শাফিউলকে আমি বলেছি- আমার এলাকায় জনগণকে এভাবে হয়রানি করছেন কেন? তখন তিনি কোন জবাব দিতে পারেননি।’
প্রশ্ন তুলে এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘যাদের খতিয়ানভুক্ত জমি আছে তাদের ওপর পর্যন্ত এই বন কর্মকর্তা নির্যাতন করেন, গাছপালা কেটে দেয়। এতো সাহস তিনি কীভাবে পান? ওসি প্রদীপের চেয়েও ভয়ঙ্কর এই বন কর্মকর্তা। তার আমলে বন বিভাগ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আগে এরকম ছিল না।’
পরিবেশবাদীরা বলছেন, বনভূমি রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো উদাসীন। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বনভূমির সঠিক তথ্য নিয়েও চলছে লুকোচুরি। সে সঙ্গে দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারেও কোনো মাথাব্যথা নেই প্রশাসনের। ফলে কমছে বনভূমি, ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ।
কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুধু টেকনাফ নয়, কক্সবাজার জেলা জুড়ে বন বিভাগের জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। অথচ সরকারি হিসাবে দখল হয়েছে মাত্র ৮৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘বনভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে, দখল হচ্ছে; অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
টেকনাফ বাহারছড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াস জানান, কক্সবাজার জেলার মধ্যে বাহারছড়া একটি পর্যটন কেন্দ্র। চারদিকে পাহাড় এবং বনভূমি। সেই প্রাকৃতিক সম্পদে দখলদারদের থাবা পড়েছে।
‘এক কথায় বলতে গেলে শীলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলামের নেতৃত্বে গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে বৃহৎ এই বনভূমি। নানাভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে বন। এক সচিব তার আত্মীয়- এমনটা প্রচার করে এই বন কর্মকর্তা সবাইকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছে অবৈধভাবে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ শীলখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলামকে ফোন করে সাংবাদিক পরিচয়ে দিলে তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে ফোন দিলেও আর যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সরোয়ার আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। বেদখল হয়ে যাওয়া বনভূমি উদ্ধার করে আবার সামাজিক বনায়নের আওতায় আনা হবে।’
পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন বিশিষ্টজনেরা। নদীর বাঁধ কেটে দিয়ে ফেনীসহ দেশের ১১টি জেলাকে বন্যায় ডুবিয়ে দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাবি তুলেছেন তারা।
শুক্রবার ফেনীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘আমরা ফেনীবাসী’র ব্যানারে ‘স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস’ কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়।
দেশের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
কর্মসূচি থেকে ‘১১ দফা ফেনী ঘোষণা’তুলে ধরেন দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ফেনী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন।
আয়োজক প্লাটফর্ম ‘আমরা ফেনীবাসীর অন্যতম উদ্যোক্তা বুরহান উদ্দিন ফয়সলের সঞ্চালনায় স্ট্রাইক কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন নদী ও পানি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ এজাজ, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বাপা যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, নারী নেত্রী নুর তানজিলা রহমান, ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম, দৈনিক ফেনীর সম্পাদক আরিফ রিজভী, ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক এমদাদ হোসাইন, কবি ও সমাজকর্মী ফজলুল হক, সমাজকর্মী আমের মক্কি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলার সমন্বয়ক আব্দুল আজিজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ইমাম হোসেন, কবি ও সমাজকর্মী আলাউদ্দিন আদর।
অনুষ্ঠানের শেষ দিকে এসে এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুইয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন আমরা ফেনীবাসী প্লাটফর্মের অন্যতম উদ্যোক্তা কেফায়েত শাকিল। অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আরেক উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ হাসান।
অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এই বন্যা শুধুই প্রাকৃতিক নয়। ভারত কোনোভাবে এর দায় এড়াতে পারে না। এই বন্যায় ফেনীসহ ১১টি জেলার মানুষ মানসিক, শারীরিক ও আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। একইসঙ্গে সব অভিন্ন নদীতে ড্যাম বা বাঁধ অপসারণের দাবি জানান এই বিশেষজ্ঞ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ভারত চাইলেই যে এক দিনে বাঁধ কেটে বাংলাদেশের মানুষকে বিপদে ফেলে দিতে পারে এবারের বন্যা তার উদাহরণ। বাংলাদেশ ও ভারতের ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ৬৮টি বাঁধ দিয়েছে ভারত। প্রতিটির হিসাব ভারতকে দিতে হবে।’
এই পানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ভারত দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ফাঁরাক্কায় বাঁধ দিতে পারেনি। শেখ মুজিবের শাসনামলে ভারত এই বাঁধ দিতে সক্ষম হয়। ফেনী নদীর পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে। এ দেশে দিল্লির আধিপত্যবাদের প্রোডাক্ট ছিলেন শেখ হাসিনা। দেশে উন্নয়নের বয়ান হাসিনার ছিল না, এটি ছিল মোদির শেখানো বুলি। উন্নয়নের নামে নদী ও পরিবেশ ধ্বংস করেছেন শেখ হাসিনা।’
মিহির বিশ্বাস বলেন, ‘ফেনীর মানুষ লড়াই-সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে জানে। ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও ফেনীবাসী হারবে না।’
ভারতকে পানি নিয়ে বৈষম্যহীন আচরণের আহ্বান জানান তিনি।
হুমায়ুন কবির সুমন বলেন, ‘দেশের এবারের বন্যা যতটা না প্রাকৃতিক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার করতে হবে।’
সাংবাদিক নেতা এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ভারত শুধু পানি-সন্ত্রাস নয়, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা, এ দেশের ভোটাধিকার হরণ ও বাণিজ্য আগ্রাসন চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন। আচরণ না পাল্টালে ভারতকে এর মূল্য দিতে হবে।’
‘১১ দফা ফেনী ঘোষণার মধ্যে রয়েছে-
১. আন্তঃসীমান্তীয় সব নদী থেকে ড্যাম/ব্যারেজ বা যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তা অপসারণ করতে হবে;
২. এবারের বন্যার জন্য ফেনীর পরশুরামে ভারতের ইচ্ছাকৃত বাঁধ কেটে দেয়া বহুলাংশে দায়ী। এজন্য জাতিসংঘের সহায়তায় ভারতকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে;
৩. মুহুরীর চরে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে ভারতের কেটে দেয়া সুরক্ষা বাঁধটি অবিলম্বে পুনর্নির্মাণ করতে হবে;
৪. বাংলাদেশের পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে হবে এবং ফেনী নদী থেকে অবৈধভাবে পানি উত্তোলন চলবে না;
৫. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি নাগরিককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে;
৬. কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ, প্রণোদনা এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে;
৭. শিক্ষা ও অবকাঠামো খাতের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে অতিদ্রুত তা মেরামত করতে হবে;
৮. নদীভাঙন রোধে এখনি কার্যকর ব্যবস্থা চাই। মুছাপুর ক্লোজার পুনর্নির্মাণে কালবিলম্ব না করে পদক্ষেপ নিতে হবে;
৯. বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়ার পেছনে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনেরও দায় আছে। এজন্য দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। এবং বাংলাদেশ সরকারকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে;
১০. উন্নয়নের নামে জলাধারে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। ভরাট করা খাল ও নদীর নাব্য ফিরিয়ে দিতে হবে। দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে;
১১. নদী ও পরিবেশ দূষণ রোধ এবং বনভূমি উজাড় বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা চাই।
‘স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস’ কর্মসূচিতে স্থানীয় কিছু যুব সংগঠন অংশ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবার, ইয়ুথ নেট গ্লোবাল ফেনী শাখা, ইকো রেভ্যুলেশন, ফেনী ছাত্র ও যুব সমিতি, লস্করহাট ব্লাড ডোনেট অ্যাসোসিয়েশন, মির্জা ফাউন্ডেশন, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ), প্রয়াস, আমরাই আগামী ও ফেনী ফ্লাড রেসপন্স টিম।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য