কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়া গেলে শুধু প্রত্যাহার নয়, সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
থানায় থানায় গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘গ্রেপ্তার-বাণিজ্য অনেক পুরনো একটি শব্দ। ডিএমপি কমিশনার যেদিন থেকে ব্লক রেইডের নির্দেশ দিয়েছেন, সেদিন থেকেই গ্রেপ্তার-বাণিজ্য শব্দটির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে নিরস্ত্র মানুষকে পুলিশ গুলি করছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশ বিব্রত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘প্রতিটি ঘটনার পূর্বাপর বিচার করতে হবে। আমাদের সদস্য যদি গুলি করে থাকে, কোন প্রেক্ষাপটে গুলি করেছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রতিটি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘যখন একটি মামলা হয়, তখন কে কোন দলের, কে কোন মতের, কে পক্ষ বা বিপক্ষের এগুলো আমাদের কাছে বিচার্য বিষয় নয়। সাধারণ মানুষ যখন একটি এজাহার দায়ের করেন, তখন পুলিশের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। কোনো দল-মত কিংবা পক্ষ-বিপক্ষের সুযোগ নেই এখানে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং যে দোষী হবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযোগ আছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব সরকার বলেন, ‘ব্লক রেইড পরিচালনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং নিরপরাধ কাউকে ধরার সুযোগ নেই। ডিএমপি কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
‘ব্লক রেইডে ডিএমপির সিনিয়র অফিসারদের মোতায়েন করা হয়েছে। যেন ব্লক রেইডে কোনো ধরনের আইনের ব্যত্যয় না ঘটে, নিরপরাধ মানুষ যেন বিন্দুমাত্র পুলিশের দ্বারা হয়রানির শিকার না হয়। এরপরও যদি কোনো ব্যত্যয় হয়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। তবে অপরাধী যে তাকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের বিরোধ নেই জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের সন্তান সমতুল্য। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পুলিশ সংবেদনশীল। পুলিশের টার্গেট যারা নাশকতাকারী, যারা মেট্রো রেল, সেতু ভবন, টোল প্লাজা ও বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি পুড়িয়েছে। আমাদের শত্রু জামায়াত-শিবির চক্র এবং বিএনপির সন্ত্রাসীরা। তাদের ধরার জন্য ভিডিও ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দেখে কাজ করছি।’
ডিএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ঢাকা শহরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় ডিএমপির ৫০টি থানায় ২৬৪টি মামলা হয়েছে। আরও চার-পাঁচটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এসব মামলায় ২ হাজার ৮৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে আনা হয়েছে অসংখ্য আসামিকে। রিমান্ডে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পেয়েছি, সেসব তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।’
নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় বিভিন্ন থানায় ৫৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নিহতের পরিবার বাদী হয়েছে এবং কিছু মামলায় রাষ্ট্রের পক্ষে পুলিশ বাদী হয়েছে।
‘এসব মামলার শতভাগ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে। পুলিশ এখানে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তদন্ত করবে। সেই মামলাগুলো ডিএমপি কমিশনার নিজে তদন্ত-তদারকি করবেন। সিনিয়র অফিসারদের এসব মামলা মনিটরিংয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেকোনো হত্যাকাণ্ড অবশ্যই দুঃখজনক। পুলিশ কোনো মৃত্যু প্রত্যাশা করে না।’
রাজধানীতে কিছু এলাকায় ব্লক রেইড, কিছু এলাকায় টার্গেট অভিযান চলছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড বন্ধ করে দেয়ায় ১০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের ছয় মন্ত্রীসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। মামলায় সুনির্দিষ্ট ১৫ জন এবং অজ্ঞাত একশ’ জনকে আসামি করা হয়।
চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবির চৌধুরীর আদালতে সোমবার মামলাটি দায়ের করেন অনলাইন সফটওয়্যারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. নুর মোহাম্মদ।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
বাসসের আদালত প্রতিবেদক জানান, মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউল হক আহসান ও বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল মো. সোহায়েল।
মামলার আরজিতে বলা হয়, বাদী ফেনী জেলার সাফিয়াবাদ এলাকার ভুঞা বাড়ির মো. নুর নবীর ছেলে নুর মোহাম্মদ ‘দুরন্ত সাপ্লাইয়ার’ এবং ‘দুরন্ত বাজার’ নামে অনলাইন সফটওয়্যারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি দাবি করেন, ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড বন্ধ থাকা অবস্থায় বাদীর ব্যবসা অনলাইন ও সফটওয়্যারভিত্তিক হওয়ায় কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, গাড়ি ভাড়া, শো-রুম ভাড়া, বাসা ভাড়াসহ অনলাইন ব্যবসায় পণ্য সরবরাহ এবং আর্থিক লেনদেন ব্যাহত হয়। এতে বাদীর ১০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এবং জনগণের জনমালের ক্ষতিসাধনেরও অভিযোগ আনা হয়।
চট্টগ্রাম জেলার এক থানা হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ওসিসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার জেলার লোহাগাড়া থানায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই চার পুলিশ সদস্য হলেন- লোহাগড়া থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম, এসআই নাছিমা আক্তার, আমির হোসেন ও কনস্টেবল এম আমিরুল হক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৈয়ব (এসবি) গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার এলাকার লোকজন এক আসামিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। থানার হাজতখানা সংস্কারের কারণে ওই আসামিকে ডিউটি অফিসারের কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তিনি পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওসিসহ চারজনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর লোহাগাড়া থানায় হওয়া দুটি মামলার আসামি ছিলেন সাইফুল ইসলাম। পুটিবিলা এলাকা থেকে কিছু লোকজন তাকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় লোহাগড়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের পর নতুন ওসি হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে সদ্য যোগদান করা পরিদর্শক আরিফুর রহমানকে পদায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে ১৮ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৩০ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ও পাঁচজন জেলার বিভিন্ন থানার ওসি।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে রোববার এই বদলির আদেশ জারি হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) ১৩ ওসির মধ্যে খুলশী থানার কবিরুল ইসলাম ও কর্ণফুলী থানার জহির হোসেনকে পিবিআই, চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর ও পাহাড়তলী থানার কেপায়েত উল্লাহকে টুরিস্ট পুলিশ; কোতোয়ালির এসএম ওবায়দুল হক, আকবরশাহ থানার গোলাম রব্বানী, চকবাজার থানার ওয়ালী উদ্দিন আকবর ও হালিশহর থানার কায়সার হামিদকে নৌ-পুলিশে এবং পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা, সদরঘাট থানার ফেরদৌস জাহান, ডবলমুরিং থানার ফজলুল কাদের পাটোয়ারী, বন্দর থানার মনজুর কাদের মজুমদার ও ইপিজেড থানার মোহাম্মদ হোছাইনকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
জেলার ১৭ পরিদর্শকের মধ্যে রয়েছেন- সীতাকুণ্ড থানার কামাল উদ্দিন, ভুজপুর থানার মো. কামরুজ্জামান, রাঙ্গুনিয়া থানার চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তী, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার মীর্জা মো. হাছান ও জোরারগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহ আল হারুন।
তাদের মধ্যে কামাল উদ্দিন, মীর্জা হাছান ও আব্দুল্লাহ আল হারুনকে সিআইডি এবং কামরুজ্জামান ও চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তীকে পিবিআইতে বদলি করা হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার হওয়া ফটিকছড়ি থানার ওসি মীর নুরুল হুদা, হাটাহাজারি থানার মো. মনিরুজ্জামান, মিরসরাই থানার সহিদুল ইসলামকে পিবিআই; রাউজান থানার জাহিদ হোসেন ও বাঁশখালী থানার তোফায়েল হোসেনকে টুরিস্ট পুলিশে; আনোয়ারা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেনকে রেল পুলিশে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়া পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন, চন্দনাইশের ওবায়দুল ইসলাম, সাতকানিয়ার মিজানুর রহমান, বোয়ালখালী থানার আছহাব উদ্দিন, সন্দ্বীপ থানার কবির হোসেনকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে থানা থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় সোমবার প্রত্যাহার হওয়া লোহাগাড়া থানার ওসি রাশেদুল ইসলামকেও সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে।
বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের ছাড়পত্র নিয়ে বদলি করা ইউনিটে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১০ পরিচালক ও ৪৮ উপ-পরিচালক পদে রদবদল করা হয়েছে।
সোমবার দুদকের জারি করা অফিস আদেশে এই রদবদল করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের ক্ষমতার ভার তুলে নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর থেকেই শৃঙ্খলা আর পেশাদারত্ব ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে আনা হচ্ছে পরিবর্তন।
এর ধারবাহিকতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ১০ পরিচালক ও ৪৮ উপ-পরিচালককে বদলি করা হয়েছে।
পৃথক আদেশে এসব কর্মকর্তাকে ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, নওগাঁ, খুলনা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, বদলিকৃত কর্মকর্তারা বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হওয়ার আগে সব নথিপত্র নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার কাছে বুঝিয়ে দেবেন। আর নথিপত্র বুঝে নিয়ে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তারা লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালককে অবহিত করবেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারে ইয়াবা কারবারে জড়িত বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ভাতিজা শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রোববার শেষ রাতের দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত শাহজাহান তালিকাভুক্ত একজন মাদক কারবারি এবং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
সোমবার র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান জানান, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টেকনাফে ছাত্রদের ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে শাহজাহান ও তার সহযোগীদের হামলা করার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সহিংসতা ও মাদকসহ বেশকিছু মামলা রয়েছে।
রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। অন্যদিকে আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের তিনটি তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কমপক্ষে ৫০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ইউএনবি জানায়- বিক্ষোভ, ভাংচুর, লুটপাটের এ ঘটনায় শিল্পাঞ্চলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে ১১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টহল দিচ্ছেন সেনা, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
হামলা-ভাঙচুরের শিকার তৈরি পোশাক কারখানাগুলো হলো- আশুলিয়া ইউনিয়নের টঙ্গাবাড়ি এলাকার আলিফ ভিলেজ লিমিটেডের আলিফ এমব্রয়ডারি ভিলেজ লিমিটেড, লাম মিম অ্যাপারেলন্স লিমিটেড ও লাম মিম অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড।
আলিফ ভিলেজ লিমিটেড গ্রুপের আশুলিয়া জোনের ম্যানেজার মো. রেফাই সিদ্দিক বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল থেকেই কারখানায় প্রায় এক হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। কিছু সময় পর মাস্ক পরা দুশ’ থেকে তিনশ’ লোক হঠাৎ করে তিনটি কারখানায় একযোগে হামলা করে। তারা কারখানাগুলোর মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।’
তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা কারখানার ডিজিটাল মেশিন, কম্পিউটার, ফায়ার কন্ট্রোল প্যানেল, বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি, সিসি টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, গার্ডেনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করে। এছাড়াও কারখানা থেকে মূল্যবান পোশাক, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল ও মেশিন লুট করে নিয়ে যায়।’
কারখানার ডিজিটাল মেশিনগুলো ভেঙে ফেলায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান রেফাই সিদ্দিক।
তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীসহ ২০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা।’
অন্যদিকে হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বাড়ানো, বকেয়া বেতনসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানা ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:সিলেট মহানগরের ৭ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদসহ দুজনকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত অপরজন হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী রুমেল আহমদ। তাদের বাসা বনকলাপাড়ার লাল-সবুজ আবাসিক এলাকায়।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের বনকলাপাড়ায় একটি গলিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মনজুর আহমদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা মনজুরের হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহত রুমেল আহমদ দাবি করেন, গত সিটি নির্বাচনের সময়ের বিরোধের জের ধরে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কিছু নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করেছে।
তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ সোমবার সকালে বলেন, ‘মনজুর আহমদ ও রুমেল আহমদের ওপর বনকলাপাড়ার ভেতরেই তাদের বাসার সামান্য দূরে হামলা হয়েছে। মনজুর গুরুতর আহত। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘হামলার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য