বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় প্রতিটি প্রাণহানির ঘটনার বিচার হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা সহিংসতা চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হবে।
তিনি বলেন, ‘যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে।’
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করে আসছি।’
তিনি বলেন,‘একাত্তরে যারা বেইমানি করেছে, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা এখনও বেইমান। একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনি, ২১ আগস্টের খুনি, ২৪ সালেও একই খুনিরা। তারা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে।
‘নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো।’
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় ও অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব নির্ধারণ ও ভবিষ্যৎ উত্তরণের পথ’ শীর্ষক একটি গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকটের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, সংকট পর্যালোচনা ও প্রশমনের জন্য কার্যকর উপাত্তভিত্তিক নীতিগুলো নিয়ে কাজ করাই এ গবেষণার মূল লক্ষ্য।
ঢাকায় বুধবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে গবেষণাটির পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তারা গবেষণার ধারণাপত্রের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব ও টেকসই সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপসচিব ও অক্সফ্যামের উপদেষ্টা ড. শরিফুল আলম এ গবেষণার ধারণাপত্রটি উপস্থাপন করেন।
ওই সময় অংশগ্রহণকারীরা রোহিঙ্গা সংকটের তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলো তুলে ধরেন এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সুপারিশ প্রদান করেন।
এসব সুপারিশ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোকে চিহ্নিত করে।
দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট নিরসন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।
গবেষণাটির অন্যতম লক্ষ্য, রোহিঙ্গা সংকটের বর্তমান বাস্তবতা এবং ভবিষ্যত, পরিবেশ, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক ও সার্বিক নিরাপত্তার ওপর সংকটের প্রভাব খুঁজে বের করা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গবেষণাটির নীতি ও তথ্যের বিষয়গুলো উল্লেখ করে বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে, তবে এ সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করতে গবেষণাভিত্তিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
‘এই গবেষণা উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় এবং কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের পাশে থাকতে নীতি-সুপারিশের লক্ষ্যে কাজ করছি।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে শুরু করে জনসেবা পর্যন্ত সমাজের সকল দিককে প্রভাবিত করছে।
‘গবেষণাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের বাস্তবতাগুলোকে তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বয় করতে সহযগিতা করবে।’
অনুষ্ঠানে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে গবেষণাটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি মানবিক সমস্যা নয়, এটি একটি পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, যা কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীদেরও প্রভাবিত করছে।
‘গবেষণাটি এসব বিষয় তুলে আনবে এবং উভয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি অর্থবহ টেকসই সমধানের দিকে আমাদের নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন:দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা হিসেবে নিজেও চাপে আছেন।
খাদ্য অধিদপ্তরে বৃহস্পতিবার খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে সমন্বয় সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য ক্রেতা হিসেবে নিজেও চাপে আছি। আমি মধ্যবিত্ত। নিজে বাজার নিজে করে খাই।’
নতুন ধান ও সবজির সরবরাহ বাড়লে বাজারে স্বস্তি আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
খাদ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমন ধান উঠলে ও শীতের সবজি ভালো করে বাজারে আসলে আশা করি বাজার পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে।’
সাবেক এ সচিব জানান, চলতি বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ১৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান সংগ্রহ করা হবে। এবার সাড়ে পাঁচ লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি আমদানি করা হবে দেড় লাখ টন ধান ও গম।
গতবারের চেয়ে কেজিতে তিন টাকা বাড়িয়ে এবার আমন ধান ৩৩ টাকা কেজি দরে কেনা হবে বলেও জানান আলী ইমাম মজুমদার।
তিনি বলেন, আমন ধান বাজারে এলে চালের দাম কমতে শুরু করবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘খাদ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। তাই দেশের চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ বাড়াতে ইতোমধ্যে চালের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর প্রভাবও পড়বে দামে।’
ধান ও চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এবার বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামসহ আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে বুধবার রাত দেড়টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ।
চকবাজার থানায় হওয়া হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোলায়মান সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এমপি হাজি সেলিমের বড় ছেলে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার গভীর রাতে চকবাজার থানার একটি টিম সোলায়মান সেলিমকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, চকবাজার থানায় হওয়া একটি হত্যা মামলায় সোলায়মানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজি সেলিমের ছেলে সোলায়মান সেলিম গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে করা সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার রাজধানীর বনানীতে জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এই চক্ষুসেবা ক্যাম্প কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপিকে দমন-নিপীড়নই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণাম হয়েছে ভয়াবহ। সঙ্গী-সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন তিনি।
‘শেখ হাসিনা শুধু নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করে দিয়েছিলেন।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এর কার্যক্রম চলে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩ পর্যন্ত। এতে প্রায় ৪০০ জন সেবা গ্রহণ করেন।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং স্বেচ্ছাসেবকসহ ২৫ জনের একটি মেডিক্যাল টিম ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার আদানি নামে ভারতের একটা কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুতের অত্যন্ত অসম চুক্তি করেছে। আদানির কাছ থেকে কেনা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে- তাকে যদি কখনও পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনো চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে? শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত-প্রেম।’
রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘মার্কেট ও বাজারগুলো এখনও আওয়ামী সিন্ডিকেটের দখলে। দাম কমানোর জন্য সরকার শুল্ক কমিয়েছে। তারপরও কি দাম কমছে? কমছে না। কারণ সিন্ডিকেটবাজদের সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এই বিষয়গুলো যদি সরকার না দেখে তাহলে পরাজিত ফ্যাসিস্টরা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই ভূত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দেবে।’
আরও পড়ুন:কাকরাইল মসজিদ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভিপন্থিরা।
তারা দাবি করেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জুবায়েরপন্থিরা পুরো কাকরাইল মসজিদে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চায়। মুসল্লিরা তাদের এসব কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে সংঘাত তৈরি হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন আশঙ্কার কথা জানান সাদ অনুসারীরা।
তাবলিগ জামাতের বিবাদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত সাত বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিলেন সাদপন্থিরা।
এখন জুবায়েরপন্থিরা পুরো কাকরাইল মসজিদে ১৫ নভেম্বর থেকে সার্বক্ষণিক অবস্থান নিতে চায় বলে অভিযোগ করেন সাদপন্থিরা।
তাদের অভিযোগ, কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদ্রাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন, কিন্তু হেফাজতপন্থি আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা সংঘাতের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ ধর্মীয় সংঘাত ও হতাহতের মতো ঘটনার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মুসল্লি ও তাবলীগের সাথীরা। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে উভয় পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন দরকার।
এতে উল্লেখ করা হয়, আলেম-ওলামারা এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে পূর্বের মতো কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমা ও সারা দেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাবলিগ জামাতের মুরুব্বি জিয়া বিন কাসেম, আবদুর রাজ্জাক কাসেমী, মুফতী মু’আজ বিন নূর, বিশিষ্ট লেখক গবেষক ও জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকার মুহতামিম সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ, জাতীয় ইত্তেহাদুল উলামা ও আইম্মা পরিষদের সভাপতি মুফতী শফিউল্লাহ মক্কী, মুফতি আরীফুর রহমান আলীফসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার বকুল মিয়া হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালত বুধবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়।
কারাগার থেকে আজ আতিকুলকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
ওই সময় আসামিপক্ষ তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নাকচ করে রিমান্ডের আদেশ দেয়।
এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন ভুক্তভোগী বকুল মিয়া। ওই সময় এলোপাতাড়ি গুলি তার মাথায় লাগে। পরে ১৯ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোছাম্মৎ মনিকা আক্তার বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় জামিন নাকচ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
ছয় দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আমুকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
পরে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমান জামিন নাকচ করে আমুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা এ মামলায় তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউ মার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ নিহত হন।
এ ঘটনায় তার শ্যালক আবদুর রব নিউ মার্কেট থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য