ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমান সরকারি চাকরি করে দুই স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের সাংসারিক দায়িত্ব পালনের পরও তাদের ও আত্মীয়-স্বজনের নামে গড়েছেন বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। এ পর্যন্ত দেশেই তার প্রায় ৫০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের হদিস মিলেছে। ঢাকাতেই অন্তত দুই ডজন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে মতিউর রহমানের স্ত্রী-সন্তান ও ঘনিষ্ঠদের নামে।
তার অর্থ-সম্পদের অনুসন্ধানে নামা সাংবাদিক ও গোয়েন্দাদের ধারণা, চাকরির নামে সর্বক্ষণ অসাধু তৎপরতায় জড়িত হয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির ব্যবস্থা করে দিয়ে অবৈধভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই রাজস্ব কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর গুলশানের সাহাবুদ্দিন পার্কের পাশে ৮৩ নম্বর রোডের ১১ নম্বর প্লটে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের বেগ পার্ক ভিউতে রয়েছে এই রাজস্ব কর্মকর্তার চারটি ফ্ল্যাট।
সেখানেই প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে নিয়ে সপরিবারে বাস করতেন মতিউর। বেশুমার টাকার মালিক হওয়ায় দ্বিতীয় বিয়েতেও অসুবিধা হয়নি তার। তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার থাকেন লালমাটিয়ার ৮ নম্বর রোডের ৪১/২ ইম্পেরিয়াল ভবনে। তবে শাম্মীকে লালমাটিয়ায় রাখলে কী হবে, তার নামে কাকরাইলেও একটি ফ্ল্যাট কিনে দেন মতিউর। তার অবৈধ টাকার উৎস এত বিশাল ছিল যে, এর পরেও ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে একাধিক ফ্ল্যাট কিনতে অসুবিধা হয়নি।
সাংবাদিক ও দুদকের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মতিউরের এসব সম্পদের হদিস পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ডেভেলপার কোম্পানি শান্তা ডেভেলপারের করা বিভিন্ন ভবনে তার আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলেও জানা গেছে। এসব ফ্ল্যাট প্রথম স্ত্রীর সন্তান ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা ও ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে কেনা হয়েছে।
এ ছাড়া গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট-প্লট, রিসোর্ট রয়েছে এই রাজস্ব কর্মকর্তার। মতিউর সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে এফডিআর করেছেন। শেয়ারবাজারে মতিউরের নিজের নামে অর্ধশত কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে বলেও জানা গেছে।
দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বানিয়ে আইনগত ঝামেলা এড়াতে নিজের নাম এড়িয়ে স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের নামে সম্পদগুলো গড়েছেন মতিউর রহমান।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ছাগলকাণ্ডে আলোচিত পুত্রকেও কিনে দিয়েছিলেন প্রাডো, প্রিমিও ও ক্রাউনের মতো চারটি বিলাসবহুল গাড়ি। এসব গাড়ি তার বিভিন্ন কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন করা। বখে যাওয়া ছেলেকে কিনে দিয়েছেন দামি পাখিও। যদিও পাখি ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
তার পরিচিত কাস্টমস কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বেনামে এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
টঙ্গীতে ৪০ হাজার বর্গফুটের এসকে ট্রিমস নামের ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং ও অ্যাকসেসরিজ কারখানা রয়েছে তার। যদিও কাগজে-কলমে কারখানার মালিক তার ভাই এম এ কাইয়ুম হাওলাদার। ময়মনসিংহের ভালুকায় ৩০০ বিঘা জমিতে গ্লোবাল সুজ নামের দুটি জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে। নরসিংদীর রায়পুরায় ওয়ান্ডার পার্ক অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট রয়েছে। এসব রিসোর্টের মালিকানায় আছেন তার ছেলে ও মেয়ে, ভেতরের পুকুরের মালিক তার প্রথম স্ত্রী লাকী। এ ছাড়া পূর্বাচলে আপন ভুবন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পটের মালিকও তিনি।
গাজীপুর সদর এলাকায় ১৭১ নম্বর এসএ দাগে ১০.৫০ শতাংশ, ১৭২ নম্বর এসএ দাগে ৩.৯০ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৭.৫০ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৬ শতাংশ, ১৭০ নম্বর এসএ দাগে ৬ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৭ শতাংশ এবং ১৭০ নম্বর দাগে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৩০৩৫, ১৭৬৩ ও ১৭৬২ নম্বর দাগে ১২.৫৮ শতাংশ জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। এই আটটি খতিয়ানে রয়েছে তার ৬০ শতাংশ জমি। স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৩৬৯৬ নম্বর এসএ দাগে ১৪.০৩ শতাংশ, গাজীপুরে ৪৮.১৬ ও ১৪.৫০ শতাংশ এবং ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ০.৪৫১৬২৫ একর জমি রয়েছে।
এদিকে গত রোববার বিকেলের দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করতে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে। একই দিনে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত (ওএসডি) করা হয়েছে। হারিয়েছেন তিনি সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদও।
সব হারানোর পেছনে রয়েছে ‘ছাগলকাণ্ড’। ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকার ‘ছাগল কেনা’ ইস্যুতে তোপের মুখে পড়েন মতিউর। ইফাতের ছাগল কেনার বিষয়টি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পরই তা ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। শুধু তাই নয়, বেরিয়ে আসে এই কর্মকর্তা ও তার পরিবারের অঢেল সম্পদের চিত্র।
মতিউরের ঘনিষ্ঠ কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী এরপর মতিউর রহমান ভারত থেকে সরাসরি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিতে পারেন। প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছে।
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় তিনি আতঙ্কে ছিলেন। কারণ তার চেহারা সবার পরিচিত। তবে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের পরামর্শে তিনি মাথার চুল ফেলে টাক হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান। মূলত সবার কাছ থেকে চেহারা আড়াল করতে এই কৌশলের আশ্রয় নেন তিনি।
এনবিআরের পদ হারালেন
ছাগলকাণ্ডে সমালোচিত হওয়ার পর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে তাকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত (ওএসডি) করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি মো. মতিউর রহমানকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
জানা গেছে, মতিউর রহমানের উত্থান মূলত ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার থাকাকালে। পরে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক জায়গায় পদায়ন হয়েছে তার। এ ছাড়া দায়িত্ব পালন করেছেন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) ভ্যাটের কমিশনার হিসেবে। সেই সময় বিভিন্ন কোম্পানিতে ভ্যাট ডিমান্ড করে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমন একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মতিউরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য এনবিআর ও দুদককে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে রহস্যজনক কারণে বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংস্থা দুটি।
সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে অপসারণ
সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদে ছিলেন মতিউর রহমান। তবে ছাগলকাণ্ডে সমালোচিত হওয়ার পর সোনালী ব্যাংকের বোর্ড থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল পর্ষদ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘পরিচালক সরকারি পোস্ট। অর্থ মন্ত্রণালয় চিঠি ইস্যু না করলে চূড়ান্ত অপসারণ হবে না। তবে মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, তাকে সরানো হবে। আমাদের সোনালী ব্যাংকের বোর্ড থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অপসারণ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি ইস্যুর পর। তবে এখন থেকে মতিউর রহমান সোনালী ব্যাংকের কোনো সভায় থাকতে পারবেন না।’
দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের টিম গঠন
মতিউরের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য সংস্থাটির উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিমও গঠন করা হয়েছে। গতকাল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ গত ৪ জুন কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর আগেও গত দুই যুগে চারবার মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ পৃথকভাবে অনুসন্ধান করেছে দুদক। প্রতিবারই তিনি দুদক থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের কোনো তথ্য-প্রমাণ পায়নি দুদক। এ প্রসঙ্গে দুদক সচিব বলেন, চারটি পুরোনো অভিযোগের অনুসন্ধান হয়েছিল। তবে এখন নতুন করে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। পুরোনো কী কী অভিযোগে তিনি রেহাই পেয়েছিলেন- সেসব বিষয়ও খতিয়ে দেখবেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা।
এদিকে মতিউর রহমান, তার স্ত্রী নরসিংদী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার ২০২৪ সালে বাংলাদেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাববিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক ও বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীনের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি উন্মোচন করা হয়।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাবলিক ফার্স্ট পরিচালিত এ গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে উবার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মোট ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সমমূল্যের অবদান রেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে উবার মটো ও অটো সার্ভিস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৯২০ কোটি টাকার সমপরিমাণ অবদান রেখেছে। শহরের ব্যস্ত জীবনে সহজ ও সাশ্রয়ী মূল্যের পরিবহন হিসেবে এ সার্ভিসগুলো অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। উবার ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় সাশ্রয় করেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ যাত্রী অফিসে যাতায়াতের জন্য উবার ব্যবহার করেছেন। এতে প্রতি বছর আনুমানিক ১১ লাখ কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হয়েছে, যা ৯৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী উবারের অর্থনৈতিক অবদানের প্রধান দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
উপার্জনের সুযোগ: উবার চালকরা তাদের অন্যান্য বিকল্প কর্মসংস্থানের তুলনায় ৪২% বেশি আয় করছেন।
স্থানীয় পর্যটনে ভূমিকা: ২০২৩ সালে উবার বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে অতিরিক্ত ২৯০ কোটি টাকা অবদান রেখেছে ও ২০২৪ সালে ২১ লাখ ৪০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
ভোক্তা উপযোগিতা: ২০২৪ সালে উবারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা মোট ৬৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকার ভোক্তা উপযোগিতা লাভ করেছে।
কাজের সুযোগ: ৫০ শতাংশ চালক মনে করেন, উবার প্ল্যাটফর্ম না থাকলে তাদের জন্য কাজের সুযোগ কমে যেত।
প্রথম আয়: ৭৬ শতাংশ চালক বলেছেন যে, উবার তাদের প্রথম আয়ের প্ল্যাটফর্ম।
সহজে যাতায়াত: ৮১ শতাংশ যাত্রী একমত হয়েছেন উবারের মাধ্যমে রাইড বুক করা রাস্তা থেকে গাড়ি নেওয়ার চেয়ে অনেক সহজ।
পরিবহন প্রযুক্তির উদ্ভাবন: ৮৬ শতাংশ যাত্রী উবার অ্যাপকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবহন উদ্ভাবন হিসেবে মনে করেন।
নারীদের নিরাপত্তা: ৯৫ শতাংশ নারী যাত্রী বলেছেন, নিরাপত্তাই তাদের উবার ব্যবহারের অন্যতম প্রধান কারণ। ৮৯ শতাংশ যাত্রী উবারকে রাতে বাড়ি ফেরার সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম বলে মনে করেন।
সহজ চলাচল: ৮৭ শতাংশ যাত্রী উবারের কারণে শহরে যাতায়াত সহজ হয়েছে বলে মনে করেন। ৭৮ শতাংশ যাত্রী বলেছেন, উবারের মতো রাইডশেয়ারিং সার্ভিস না থাকলে রাতে নিরাপদ যাতায়াত কঠিন হতো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিআরটিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, কর্মসংস্থান তৈরি করা ও পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উবারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
‘রাইডশেয়ারিং শিল্প, যার মধ্যে উবারও অন্তর্ভুক্ত, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে পরিবহন খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে।’
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল বলেন, ‘২০২৪ অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কীভাবে উবার দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। আমরা আমাদের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে গর্বিত ও ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এর আগে পাবলিক ফার্স্ট-এর টেক, মিডিয়া ও টেলিকম প্রধান এমি প্রাইস প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়।
প্যানেল সদস্যরা ছিলেন বিআরটিএর পরিচালক সীতাংশু শেখর বিশ্বাস, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং পার্টনার শামস জামান ও উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল। সেখানে তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন:হুয়াওয়ের ফ্ল্যাগশিপ প্রতিযোগিতা ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার বাংলাদেশ’-এর ১২তম আসরের জন্য দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস রোডশো শুরু হয়েছে।
এ প্রতিযোগিতার লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের আইসিটিবিষয়ক জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, রুয়েট, এইউএসটি এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত রোডশোতে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন।
রোডশোতে হুয়াওয়ের ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ প্রোগ্রামের লক্ষ্য, পরিকল্পনা, প্রস্তুতির পরামর্শ ও শিক্ষার্থীদের সুযোগ সম্পর্কে জানানো হয়। দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রচারণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এ রোডশো অনুষ্ঠিত হবে। আগামী এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রোগ্রামটির উদ্বোধন হওয়ার পাশাপাশি আবেদনকারীদের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এ প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা পরবর্তী সময়ে চীনে আয়োজিত আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
হুয়াওয়ের ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত জ্ঞান ও দক্ষতাভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে শুরু হওয়ার পর আইসিটি খাতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য এটি শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।
প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের বিজয়ীরা এর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম, স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম এবং মেয়ে জেরিন করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব সোমবার এ আদেশ দেন।
আবেদনে দুদক বলেছে, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য-প্রমাণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবেদনে দুদক উল্লেখ করে, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয় আর্থিক খাতের গোয়েন্দা হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
তারও আগে ওরিয়নের মালিকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর তথ্য দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।
এদিকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তার স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিনসহ ৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত।
নাহিদের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের আভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তার স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিন দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
জেলা, উপজেলা এবং গ্রাম অঞ্চলে যেসব ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত আয় করেন কিন্তু ট্যাক্স দেন না, সেসব ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকদের ট্যাক্সের আওতায় আনতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সোমবারের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
একই সঙ্গে চিকিৎসক এবং আইনজীবীরা যে ফি নেন, সেটাও রসিদ বা ডিজিটাল পেমেন্ট মেথডে এনে তাদেরও করের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন,‘আপনারা জানেন, সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে। মাঠ পর্যায়ের অফিসাররা যদি দক্ষ এবং সেবক হন, তাহলে জনগণ যে সেবাটা পান, সেটা কার্যকর হয়।
‘চিকিৎসক, আইনজীবীরা সরাসরি ক্যাশ ট্রানজেকশন করেন। এর কারণে কিন্তু তাদের করের আওতায় আনা যায় না। চিকিৎসকরা যে ফি নেন, তার রিসিট তো আপনারা নেন না। এই ফি যদি ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু তার একটা রেকর্ড থাকে। বিদেশে কিন্তু এগুলো সব রেকর্ডেড।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এম্পলয়মেন্টটা বাড়াতে হবে। লোকাল লেভেলে এম্পলয়মেন্ট বাড়ানো সহজ। চায়নাতে গ্রাম্য শিল্পের সাথে গভীর যোগাযোগ।
‘চায়নার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তৈরি হওয়া পণ্য আমেরিকার ওয়ালমার্টেও পাবেন। অথচ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই জিনিসগুলো যোগাযোগের অভাবে উঠে আসে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিসিরাই উত্থাপন করেছে গ্রামাঞ্চলে ব্যবসায়ীরা অনেক আয় করেন। তখন এনবিআর এ বিষয়টি নিয়ে ড্রাইভ দিতে বলেছে। আমাদের ট্যাক্সের আওতা না বাড়ালে তো হবে না। এমনিতেই তো দাবি থাকে ভ্যাট কমান-ট্যাক্স কমান। সুতরাং ভ্যাট-ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে রেখে ট্যাক্স গ্রহণের পরিধিটা বাড়ানোর বিষয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই ট্যাক্স নেটটা বাড়িয়ে রাজস্ব আরও বিস্তৃত করতে পারি। মোটকথা জোর করে করের পরিমাণ না বাড়িয়ে ট্যাক্সের নেট বাড়ানো হবে। আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ, কিন্তু কর দেয় মাত্র পাঁচ লাখ।’
চিকিৎসকদের করের আওতায় আনতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের যেসব সহকারী বসে থাকেন, তারা টাকা নেন, কিন্তু রিসিট দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ইনসিস্ট করা যে আপনারা রিসিট দেন। আমি তো কোনো চিকিৎসককে দেখি না তারা রিসিট দেন।’
আরও পড়ুন:মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে প্রশাসক নিয়োগের বৈধতার প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ আদেশের ফলে নগদে প্রশাসক নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বৈধ বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আলাদা দুটি রিটের ওপর জারি করা রুল খারিজ করে রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
নগদ বাংলাদেশ ডাক বিভাগের এজেন্ট উল্লেখ করে রায়ে আদালত বলেন, ‘আইন বাস্তবায়ন করেই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে।’
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, মুহাম্মদ নওশাদ জমির, মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আবুল কালাম খান দাউদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি ও সাইফুল ইসলাম।
রায়ের পর আইনজীবী আবুল কালাম খান দাউদ বলেন, ‘নগদে প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। রিটকারীদের লুকাস স্ট্যান্ডি নাই (আইনগত এখতিয়ার নেই), এই গ্রাউন্ডে রিটটি খারিজ করেছে আদালত।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিটকারীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রায়ের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি বলেন, ‘নগদ ডাক বিভাগের এজেন্ট বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের আগে কারণ দর্শানোর জন্য ডাক বিভাগকে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ডাক বিভাগ নোটিশের জবাব দেয়। এ ছাড়া নগদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনিয়ম পায়। এসবের ভিত্তিতে গ্রাহকদের স্বার্থেই প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে রিট আবেদনকারীকে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয় রিটে।
‘যেহেতু নগদ ডাক বিভাগের এজেন্ট, তাই রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধতা থাকলে তিনি সেখানে আবেদন করতে পারতেন, যা তিনি করেননি। এসব দিক বিবেচনায় রিট গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তা খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নগদে প্রশাসক নিয়োগ বৈধ বলে প্রমাণিত হলো।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের ২১ আগস্ট এক বছরের জন্য নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অভ্যন্তরীণ আদেশে বলা হয়, “ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এ চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে এক বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক আনোয়ার উল্লাহ, পলাশ মন্ডল, আবু ছাদাত মোহাম্মদ ইয়াছিন, উপপরিচালক চয়ন বিশ্বাস ও আইয়ুব খানকে সহায়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলো।”
সে সময় নগদের আগের পর্ষদও ভেঙে দেওয়া হয়।
পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের জানান, নগদ ডাক বিভাগের সেবা। তাদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক সেবাটি পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নগদের নির্বাহী পরিচালক সাফায়েত আলম হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নগদে নিযুক্ত প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে বিবাদী করা হয়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রুল জারি করে হাইকোর্ট। রুলে নগদে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। ১০ দিনের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রুল শুনানির ধারাবাহিকতায় অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর নগদে নিয়োগ করা প্রশাসকের কার্যক্রমের ওপর দুই সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রবিবার রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
একই বিষয়ে মোহাম্মদ আমিনুল হক নামে নগদের অপর এক পরিচালক আরেকটি রিট করেন। ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত একইভাবে রুল জারি করে। আজ সেই রুল খারিজ করে রায় দেয় একই আদালত।
আরও পড়ুন:ভালোবাসার মুহূর্তগুলোকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে ইনফিনিক্স ঘোষণা করেছে এক বিশেষ ক্যাম্পেইন।
আসন্ন ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের সঙ্গে সেরা মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিতে শুরু হয়েছে ‘সারপ্রাইজ লাভ উইথ ইনফিনিক্স’ ক্যাম্পেইন।
প্রিয়জনকে চমকে দিতে এ ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে জিতে নেওয়া যাবে ইনফিনিক্স হট ৫০ প্রো প্লাস স্মার্টফোন।
ক্যাম্পেইনটি চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ভালোবাসার উদযাপন
ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ হলো প্রিয়জনের সঙ্গে ছোট ছোট অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া, সুখ-দুঃখের অংশীদার হওয়া, যা মানুষকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে দিতে পারেন ছোট্ট কিন্তু অর্থবহ উপহার; অংশ নিতে পারেন ‘সারপ্রাইজ লাভ উইথ ইনফিনিক্স’ ক্যাম্পেইনে।
ইনফিনিক্স বিশ্বাস করে, প্রযুক্তি বিশেষ এ মুহূর্তগুলোকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে পারে।
এ ক্যাম্পেইন আপনার বিশেষ দিনকে অবিস্মরণীয় করে তুলতে পারে। সঙ্গী, বন্ধু বা পরিবারের সদস্য—যে কারোর জন্যই এটি ভালোবাসার মুহূর্তগুলোকে আরও বিশেষ করে তুলতে পারে।
ভালোবাসা, হাসি ও একটি ছোট্ট চমক
ভালোবাসার আবেশ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এ বছর ইনফিনিক্সের ক্যাম্পেইন চলবে অনলাইন ও অফলাইনে। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে একটি আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া কনটেস্ট, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ কোনো স্মরণীয়, আবেগঘন বা মজার ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে হবে। এটি শুধু সঙ্গীর সঙ্গে হতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
এটি হতে পারে বাবা-মা, ভাই-বোন, পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো কোনো বিশেষ মুহূর্তও। শেয়ার করার সময় #SurpriseLovewithInfinix হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে হবে এবং একই সঙ্গে তিনজন বন্ধুকে ট্যাগ করে কনটেস্টে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাতে হবে।
অফলাইন ইভেন্ট
অন্যদিকে ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে অফলাইন ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ইনফিনিক্স ভ্যালেন্টাইনস ডে ফটো বুথ ও প্রোডাক্ট এক্সপেরিয়েন্স কর্নার স্থাপন করা হয়।
পাশাপাশি ইনফিনিক্স সার্ভিস সেন্টার কার্লকেয়ার একটি বিশেষ বুথ স্থাপন করা হয়, যেখানে প্রিমিয়াম বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওয়ারেন্টির বাইরে থাকা ডিভাইস সার্ভিসে ২১ শতাংশ ছাড়, বিনা মূল্যে সার্ভিস চার্জ, সফটওয়্যার আপডেট ও ফোন ক্লিনিং সার্ভিসসেরও ব্যবস্থা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য ইনফিনিক্স স্মার্টফোন কেনা আরও সহজ করতে পাম পে ইভেন্টে কার্ডলেস ইএমআই সুবিধা প্রদান করা হয়, যার মাধ্যমে তারা কোনো আর্থিক চাপ ছাড়াই ইনফিনিক্স স্মার্টফোন কিনতে পারবেন।
ক্যাম্পেইনের শেষে তিনজন ভাগ্যবান বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ইনফিনিক্স হট ৫০ প্লাস স্মার্টফোন।
ইনফিনিক্স বিশ্বাস করে, পুরস্কারটি ব্যবহারকারীদের প্রিয় মুহূর্তগুলো আরও সুন্দরভাবে ধারণ করতে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার আনন্দ আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন:চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাকি সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশ নির্ধারণ করে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ছাড়াও জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ থেকে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে নতুন মুদ্রানীতি উপস্থাপন করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বিনিময় হার, মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারসহ তিনটি মূল আর্থিক সূচক স্থিতিশীল করতে নজর দেওয়া হয়েছে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে।
এর লক্ষ্য বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে উল্লেখযোগ্য হ্রাস সত্ত্বেও কিছুটা আর্থিক সরবরাহ বাড়ানো। কারণ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রভাবের পাশাপাশি বাংলাদেশের জিডিপি ও ঋণ প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়েছে।
তবে নীতিগত সুদের হার অপরিবর্তিত থাকায় ঋণের সুদের হার আর বাড়বে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর ডিসেম্বরে ছিল ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য