আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সালমান ফজলুর রহমান এমপি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেছেন, ‘গত নির্বাচন নিয়েও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই নির্বাচন আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পেরেছি। আগামীতেও সব ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে রোববার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সালমান ফজুলর রহমান এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজকের অবস্থায় নিয়ে এসেছেন। যখনই বিদেশে যাই, সব জায়গা থেকেই জানতে চাওয়া হয়- বাংলাদেশ এত উন্নয়ন কীভাবে করতে পেরেছে? তাদের বলি- শেখ হাসিনার ম্যাজিকের কারণেই আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি।
‘শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে আমাদের কী অবস্থা হতো, সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমাদের ভাগ্য ভালো- তার মতো একজন নেতা ও প্রধানমন্ত্রী আমরা পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধের জন্য আমরা দায়ী না হলেও এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়েছে। এটা মোকাবিলা করতে হবে। আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আসছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন সব বক্তব্য প্রচার করা হবে, যেটা সম্পূর্ণ ভুয়া। এটাও বিরাট চ্যালেঞ্জ। এই প্রযুক্তি মোকাবিলায়, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এটা শিখতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য এখনই প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সালমান রহমান বলেন, ‘পাঁচ বছর অনেক সময় মনে হলেও দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে। তাই এখন থেকেই আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
‘এদেশের সবাই আওয়ামী লীগ করে না। কেউ কেউ বিএনপি করে। আবার অনেকে নিরপেক্ষ আছে। আমাদের কাজ নিরপেক্ষদের মনজয় করা। এটা তখনই সম্ভব, যখন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি বলেন, দেশের মানুষ যখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে, তখনও বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরা গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণের শত্রু। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের বহিষ্কার করছে দলটি। এমনকি যারা জিতেছেন তাদেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে। এরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তবে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটানো যায় না। ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচন করেই আসতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘১৫ বছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম আর আজ কোথায় আছি। এই সবকিছুর কারিগর শেখ হাসিনা। সেদিন আর খুব বেশি দূরে নেই, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আর কোনো হতদরিদ্র মানুষ থাকবে না। বছর পাঁচেকের মধ্যেই হতদরিদ্র মানুষ দেখতে হলে এদেশের তরুণ সমাজকে জাদুঘরে যেতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এমপি, মির্জা আজম এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা-১৯ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. এনামুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ঝিলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আলম সমর, সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাকুর রহমান সাকো, দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আয়কর অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নামে আন্দোলন চালিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল’র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা আয়কর অফিসে বা অন্যান্য বিভাগে বিএনপির নামে আন্দোলন করছেন—তারা বিএনপির অংশ নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এটা করছে।’
শুক্রবার (২৭ জুন) রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রিজভী এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সরকারি অফিসে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নামে নতুন নতুন কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সকলেরই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও অনেকে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’
রিজভী বলেন, তিনি এমন একজনের কথা শুনেছেন যিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে আয়কর অফিসে আন্দোলন করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি (সেই ব্যক্তি) এখন (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কাউকে অপসারণের চেষ্টা করবেন। কে তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব—আমি এ বিষয়ে জানি না। আপনি নিজেই বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অফিসে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেখানে আরও অনেক বিএনপি নেতা আছেন, কেউ এ সম্পর্কে জানেন না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, ‘রক্তপাত এবং সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ আগামী দিনে একটি উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করলেও সরকারের ভালো কাজের প্রতি সমর্থন জানায় বিএনপি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনা অনুসারে, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল স্বীকার করেছেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল একটি ভুয়া নির্বাচন। ‘তার এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে (শেখ) হাসিনার আমলে সমস্ত নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা দাবি করেন, প্রশাসনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু লোক—যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেনসহ ১০১ জন আইনজীবী। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনা আক্তার লাভলী এবং লাবাবুল বাসার স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি জানানো হয় এই মত।
বিবৃতিতে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩) এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুসারে এনসিপির শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে উল্লেখ করে বলা হয়, ১৯৭২ সালের অর্ডারের তৃতীয় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দু’পাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ। অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান কিন্তু এনসিপি ‘ভাসমান শাপলা’ প্রতীক হিসেবে চায়নি।
একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতীকে হিসেবে জাতীয় প্রতীকের উপাদান বরাদ্দ দেওয়ার নজির উপস্থাপন করে বিবৃতিতে বলা হয়, ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক, যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদান ইতোমধ্যে দুইটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সুতরাং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণসাপেক্ষে এনসিপির নিবন্ধিত হবার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং প্রতীকের তালিকায় সংযোজনপূর্বক শাপলা প্রতীকটি এনসিপিকে বরাদ্দ দিবে বলে বিবৃতিদাতা আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড, উত্তরা সেন্টার, মেট্রো রেল স্টেশন, উত্তরা এবং বিজয় সরণিতে অগ্নিনির্বাপণ, উদ্ধার, প্রাথমিক চিকিৎসা ও বহির্গমন বিষয়ক মহড়া করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ২৫ জুন সকাল ১১টায় উত্তরা সেন্টারে এবং বিকেল ৩টায় বিজয় সরণি সেন্টারে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় ওয়াটার টেন্ডার, পাম্প ক্যারিং টেন্ডার, সিজার লিফট, অ্যাম্বুলেন্স ও স্নোরকেল গাড়িসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়।
মেট্রো রেলে বা মেট্রো রেল স্টেশনে হঠাৎ করে অগ্নিদুর্ঘটনা সংঘটিত হলে কিভাবে যাত্রীদের সুরক্ষা দিতে হবে, কিভাবে অগ্নিনির্বাপণ করতে হবে, কিভাবে সাধারণ লোককে ইভাকুয়েট করতে হবে এবং আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক শুশ্রূষা প্রদান করে কিভাবে হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে মহড়ায় তার বাস্তব অনুশীলন দেখানো হয়। মহড়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মী এবং ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ভলান্টিয়াররা অংশগ্রহণ করেন। মহড়া চলাকালীন মেট্রোপলিটন পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যগণ যানবাহন নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
মহড়া শেষে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক (প্রশাসন) একেএম খায়রুল আলম। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক জনাব মোঃ ছালেহ উদ্দিন। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সচেতনতা সৃষ্টিসহ প্রকৃত দুর্ঘটনায় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এবং যাত্রী সাধারণের কার কী করণীয় সে সম্পর্কে অবহিত করার লক্ষ্যে এ প্রশিক্ষণ মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
মহড়া দুটি পরিচালনা করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকার সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাজাহান শিকদার ও সিনিয়র স্টেশন অফিসার একেএম রায়হানুল আশরাফ। এ সময় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জোন প্রধানগণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। খবর : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আবারও তিন ঘণ্টার কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন কর্মকর্তারা ও কর্মচারীরা।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে কাফনের কাপড় পরে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এর আগে শনিবার (২১ জুন) এ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এনবিআর কর্মকর্তাদের সংগঠন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
কাউন্সিলের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার এবং সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত কর কমিশনার সহেলা সিদ্দিকা পুনরায় এনবিআরে ‘যুক্তিসংগত সংস্কার’ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
তারা বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে, কারণ তার নেতৃত্ব সংস্কার প্রক্রিয়া শুধু বিলম্বিত হয়েছে।
এর আগেই তাকে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
গত ১৯ জুন গঠিত এনবিআর সংস্কার কমিটি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তারা।
এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, রাজস্ব অধ্যাদেশ সংশোধনের লক্ষ্যে এনবিআরের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের ছয়জন সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, এ কমিটিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১২ মে জারি করা এক অধ্যাদেশে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বাতিল করে সরকার রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে।
এরপর থেকেই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এনবিআর কর্মকর্তারা নানা ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা দেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার নতুন এই কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, শিশুমেলা থেকে এনবিআর কার্যালয় পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রবিবার থেকে কার্যকর হওয়া নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সব কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হবে। তবে প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের কক্ষ তালাবদ্ধই থাকবে।
গতকাল রোববার দুপুরে নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, নাগরিক সেবার স্বার্থে আঞ্চলিক অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো চালু রাখা এবং কর্মরতদের নিজ নিজ দফতরে ফিরে গিয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। একই সঙ্গে নাগরিক সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ না করিয়ে আদালত ও সংবিধান লঙ্ঘন করায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার অপসারণ দাবি করছি।’
মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ভাণ্ডার ও ক্রয়, হিসাব ও অডিট, সমাজ কল্যাণ, আইন, রাজস্ব, সম্পত্তি, পরিবহন, বিদ্যুৎ, যান্ত্রিক, সংস্থাপন, নিরাপত্তা, জনসংযোগ, আইসিটি সেল, নগর পরিকল্পনা বিভাগ এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে থেকে জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, মশক নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ এবং সড়কবাতি সচল রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কোনও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, সাবেক সরকারের দোসর বা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর নগরভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। দেখামাত্র প্রতিহত করা হবে। কোনও কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে নগর ভবনের বেশ কিছু কক্ষে শিকল দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই তালা খুললেও প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের কক্ষ বন্ধই থাকবে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, নতুন করে কেউ নিয়োগ দিতে চাইলে সেটিও প্রতিহত করা হবে।
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) অংশগ্রহণ করা সব প্রার্থীকে সনদ প্রদানের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
রবিবার (২২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর ফলে ওই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এর আগে, সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ বারবার সরে যেতে বললেও স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে তাদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ এবং প্রেসক্লাব ফাঁড়িতে বসেই তাদের কথা হবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ভাইভায় রেকর্ড ২০ হাজার ৬৮৮ জন প্রার্থীকে ইচ্ছে করে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করে ভাইভায় অংশ নেওয়া সবাইকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিতে হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জুন তারা এনটিআরসির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামীকাল রবিবার (২২ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। শনিবার (২১ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘শেরেবাংলা নগর থানার অন্তর্গত শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডে অবস্থিত এনবিআর কার্যালয় (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), বিডা কার্যালয় (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও আশেপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’
ডিএমপি জানিয়েছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী রবিবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে সই করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।
মন্তব্য