সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত মাচা। তার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। দিন কুড়ি পরে পেকে উঠলে তা সংগ্রহ করা হবে বাগান থেকে।
আঙুর বাগানের এমন দৃশ্য দেখা গেল কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মরিচা গ্রামে। ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোসেন সরকার আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বাগানটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করছেন প্রতিদিনই।
স্থানীয়ারা জানান, মো. আনোয়ার হোসেন সরকার সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যতিক্রম ফসলের চাষ করেন। এবার তিনি মনোযোগী হয়েছেন আঙুর চাষে। ১৫ মাস আগে দুই বিঘা জমিতে আঙুর চাষ করেন। চারা এনেছেন ঝিনাইদহ থেকে।
দলাহাস গ্রামের পাশে সড়কের পাশে উঁচু জমি। সেখানে বাঁশ ও সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাচা করা হয়েছে। মাচায় লতানো আঙুর গাছ। হালকা বাতাসে ঝুলছে আঙুর। প্রতিটি থোকায় ৫০ থেকে ১০০ করে আঙুর রয়েছে।
আনোয়ার হোসেন সরকার জানান, ৬ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রথমবারেই বাগানে ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন সামনের বছর এই ফলন আরও বাড়বে। একই গাছ থেকে ২০-২৫ বছর ফল আসবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও তিন বিঘা জমিতে আগামীতে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে আঙুর নিয়ে আনোয়ারের শুরুটা ভালো ছিল না। প্রথম প্রথম এলাকার লোকজন হাসিঠাট্টা করতো। বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন আঙুর চাষে।
উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, বাণিজ্যিক উদ্দেশে ৬০ শতাংশ জমিতে আঙুর বাগান করেছেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। আমরা বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পরিপক্ক হতে আরও ১৫-২০ দিন লাগবে। ফলন বা বাণিজ্যিক সফলতা ব্যর্থতা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা পরামর্শ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছি।
শুধু দেবিদ্বার নয়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলারামপুর গ্রামেও আঙুর চাষ করা হয়েছে। সেখানেও বাগান থোকায় থোকায় আঙুর ঝুলে রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, আঙুর মূলত ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভালো হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আঙুর বিচ্ছিন্নভাবে চাষ হচ্ছে। তবে কুমিল্লায় যারা আঙুর চাষ করেছেন তাদের ফল সংগ্রহের পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব, তারা কেমন সফল হয়েছেন।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পুলিশ কনস্টেবল পাপেল হাসানের (বিপি-৯৩১৩১৬৯২৮২) বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, যৌতুক দাবি এবং স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলে তৃতীয় স্ত্রী হাফিজা আক্তার আঁখি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বদলগাছীর বিষ্ণুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে হাফিজা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর পারিবারিকভাবে পাপেল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার পরিবারের কাছ থেকে বাড়ি মেরামতের কথা বলে ৭ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর পাপেল কর্মস্থল বগুড়ায় থাকাকালীন তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ভাড়া বাসা ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, সাত মাস পর পাপেলের নতুন কর্মস্থল বগুড়ার সারিয়াকন্দির চন্দন বাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ওঠার পর সংসার শুরু হলেও সেখানে কোনো খরচ দিতেননা পাপেল। এরপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বিষয়টি জানিয়ে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
হাফিজা আক্তারের দাবি, পরে পাপেল আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। এরপর তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। কিছুদিন পর হাফিজা জানতে পারেন, পাপেল এর আগেও দুটি বিয়ে করেছেন এবং যৌতুকের জন্য তাদেরও তালাক দিয়েছেন। একই কৌশলে তাকে গোপনে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন।
তিনি জানান, এসব ঘটনায় তিনি বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার, পাবনা পুলিশ সুপার, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টারেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তাকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করতে করতে বলেছেন।
পাপেলের প্রথম স্ত্রী সোনালী আক্তার বলেন, পাপেলের পরিবারের অবস্থা ভালো ছিল না। পুলিশে চাকরির জন্য তার বাবার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেওয়ার পর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু কিছুদিন পরই পাপেল তালাক দিয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, পাপেল একজন অর্থলোভী মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল পাপেল হাসান মুঠোফানে বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি, কেন ভরণপোষণ দিব না? আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলবোনা।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজা আক্তারের বাবা রকিব উদ্দিন, চাচা রফিকুল ইসলাম, চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ব্রিজের নিচের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে বাঁধ অপসারনে স্বস্তি প্রকাশ করেছে দুর্ভোগে থাকা পানিবন্দি অর্ধশতাধিক পরিবার।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশিনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ কান্দি ইউনিয়নের লেবুবাড়ি গ্রামে এক অভিযান চালিয়ে ব্রিজের নিচের এই বাঁধ অপসারণ করেন।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম, কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের নিচে অবৈধভাবে পাকা দেওয়াল দেওয়ায় পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পরে অর্ধশতাধিক পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিবন্দী একাধিক ভূক্তভোগী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছি প্রভাবশালী ঘের মালিকদের কাছে। ভয়ে আমরা কিছু বলতেও সাহস পাইনি। বাধ্য হয়ে বাঁধ অপসারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন জানাই।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ব্রিজের নিচে পাকা দেয়াল দিয়ে পানি আটকিয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাভূমিকে ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এতে জলাভূমির মাঝে বসত করা প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। মাছের ঘেরের কারনে এ সকল বাড়ির পাড়গুলো দিন দিন ভেঙে পড়ছিল। বর্ষার পানি কমে গেলেও ব্রিজের নিচে পাকা বাঁধ থাকার কারনে জলাভূমির পানি না কমায় দূর্ভোগে পরে ঘেরের ভিতরে বসবাস করা পরিবারগুলো।
অভিযান পরিচালনাকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক স্যারের নির্দেশনায় সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ব্রিজের নিচে পানি আটকিয়ে রাখা পাকা ইটের দেওয়াল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জনদুর্ভোগ রোধে উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই তৎপর রয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের নিয়ে প্রাণবন্ত ‘শিশু সমাবেশ’। শনিবার (১১ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বদলগাছী কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিসম)-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর রহমান।সম্মানিত বক্তা ছিলেন ফটোসাংবাদিক মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং সোহানি ইসলাম সমাপ্তি, বিসম অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিনিধি। অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা সমাজকল্যাণ সংস্থা-এর প্রকাশনা সম্পাদক আলেয়া বেগম আলো।
ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ বলেন, “শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ— তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ত্ব করেন মিস অন্নি ইসলাম, অ্যাক্রেডিটেড মেডিয়েটর ও কিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের যুগ্ম সম্পাদক।মডারেটর ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন জনাব এস. এন. ঘোষামী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বিসম-এর চেয়ারম্যান।অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের হাতে জাতীয় পতাকা, খাতা ও শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বক্তারা শিশুদের দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও স্বপ্নমুখী জীবনের গুরুত্ব সম্পর্কে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনকিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করে না।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ মিলনায়তনে এক 'স্মরণসভা'য় তিনি এসব কথা বলেন। ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
তিনি বলেন, বিএনপি বিরুদ্ধে অপ্রচার চলছে, বিএনপি নাকি সংস্কার চায় না। বিএনপি সংস্কারের পক্ষে। আপনারা অপ্রচারে কান দিবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে জনগণ বোঝে না, সেই পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি দল আন্দোলন করছে। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।
শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।
রোববার সকাল ১০ টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এই অবস্থান শুরু করেন শিক্ষকরা। সারা দেশ থেকে আসা ব্যাপকসংখ্যক শিক্ষকের অবস্থানের কারণে ওই সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব, সচিবালয় ও মেট্রোরেলের প্রবেশ পথে সাধারণ মানুষের চলাচলও চরমভাবে বিঘ্ন হচ্ছে।
প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জোটের মহাসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানিয়েছেন। দাবি আদায়ে অবস্থান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা আসতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের শিক্ষক সমাবেশে লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিল। ওইদিন শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসিকের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ।
সূত্রমতে, শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে নতুন করে বাড়িভাড়া ভাতা ও মেডিকেল ভাতার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাবনা গত ৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ নির্ধারণে নতুন প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ এবং চিকিৎসা ভাতা এক হাজার টাকার প্রস্তাব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি৷
উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় মূলত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্নকরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করার বিষয় আলোচনা হয়েছে৷
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোনো আইন বহির্ভূত কাজ না করে সে বিষয়েও নির্দেশনা প্রদান করার আলোচনা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।
তিনি বালেন, গত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত থাকা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা।
আপনারা জানেন, এ প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ সারা দেশে (জেলা, মহানগর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান) ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং আরেকটি (২য়) ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনের জন্য পুলিশের চূড়ান্ত
(৪র্থ পর্যায়ের) প্রশিক্ষণ গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে শুরু হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য ‘প্রাক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন হারে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। তন্মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জনকে অস্ত্রসহ ও ৪ লাখ ৫০ হাজার জনকে নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। এর জন্য ৩১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০% নির্বাচনি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল যেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফ্যাসিস্টের লোকজন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীও এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতার কারণে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। সবার সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য