নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত গভীর একটি নলকূপ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পানির অভাবে ওই সেচযন্ত্রের আশপাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। সেচ সংকটের কারণে কিছু কৃষক ধানের আবাদ না করে জমিতে তিলের চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টির কারণে তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে।
সেচ নিয়ে কৃষকদের এমন দুরাবস্থা নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, সরদার পাড়া, শেখপুরা ও মন্ডলপাড়া এলাকায়।
কৃষকরা জানান, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লা সংলগ্ন মাঠে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। গভীর নলকূপটি মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে নলকূপটির মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য ২ হাজার টাকা করে দাবি করেন। আশপাশের অন্যান্য নলকূপের সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই পরিমান টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রেখেছেন গভীর নলকূপের মালিক মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
গত ১৯ মার্চ ৬০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছে। ওই দুটি সেচযন্ত্রের মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত গভীর নলকূপের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। গত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছেন।
পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া, শেখপুরা এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ খরচ বাবদ যেখানে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, সেখানে সবুজ তার সেচযন্ত্র থেকে সেচ খরচ দাবি করে ২ হাজার টাকা। অধিকাংশ কৃষক এই পরিমাণ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ সেচযন্ত্রটি থেকে পানি তোলা বন্ধ করে দেন।
ধানের বীজতলায় সেচ দিতে না পারায় কৃষকদের চারা নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে ধান লাগাতে না পেরে অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে এবং সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকায় অধিকাংশ তিল খেতের গাছ মরে যেতে বসেছে। এই দুরাবস্থা নিরসনে জেলা ও উপজেলা সেচ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকেরা।
সোমবার পৌরসভার হাজীপাড়া সংলগ্ন ওই ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ওই মাঠে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। কিছু জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে অনাবাদি জমি ও তিলের খেতের জমি শুকিয়ে আছে। পানির অভাবে শুকনো মাটিতে বপন করা তিল বীজ থেকে চারা গজায়নি। আবার কিছু কিছু জমিতে চারা গজালেও পানির অভাবে তিলের গাছগুলোর পাতা শুকিয়ে লালচে হয়ে মরতে বসেছে।
ওই এলাকায় তিন বিঘা জমি আছে হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন বাশারের। তিনি বলেন, এই জমির ইরি-বোরো ও আমন মৌসুমে যে পরিমান ধান তা দিয়ে সংসার চলে। জমিতে এবার ধান লাগানোর জন্য ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে বীজতলা চারা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি তোলা বন্ধ রাখায় এবং অন্য কোনো উপায়ে জমিতে সেচের ব্যবস্থা না থাকায় সেই চারা জমিতে লাগাতেই পারিনি। পরে সেই জমিতে তিলের বীজ বপন করি। পানির অভাবে খেতের তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে।
হাজীপাড়া মহল্লার আরেক কৃষক আলাউদ্দিন। জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেন। এবার ধান চাষের জন্য দেড় বিঘা জমি প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু সেচযন্ত্র বন্ধ রাখায় পানির অভাবে পরবর্তীতে সেই জমিতে তিনি আর ধান আবাদ করতে পারেননি।
আলাউদ্দিন বলেন, আশপাশের কোনো ডিপ টিউবওয়েলেই ২ হাজার টাকা করে সেচ খরচ নেয়া হচ্ছে না। অথচ মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার টাকা করে সেচ খরচ দাবি করেন। কৃষকেরা প্রথমে ১৪০০ টাকা করে দিতে চান। তাতে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে ১৬০০ টাকা করে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাতেও রাজি হননি সবুজ। লাভ কম হবে তাই সবুজ ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি তোলাই বন্ধ রাখে। অনেক অনুনয়-বিনয় করার পরেও ডিপ টিউবওয়েল চালু করেনি। ধান আবাদ করতে না পারায় তাঁর মতো কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক কৃষক পরিবার বিপাকে রয়েছে।
সরদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাব্বানী হোসেন বলেন, ‘কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য সরকার বরেন্দ্র এলাকার মাঠে মাঠে গভীর নলকূপ বসিয়েছে। অথচ ডিপ টিউবওয়েলের পরিচালক মকবুল ও তার ছেলে আমাদেরকে জিম্মি করে গত কয়েক বছর ধরে অধিক সেচ খরচ নিয়ে আসছে। এবার আমরা তার প্রতিবাদ করায় এবং প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করায় আমাদের শাস্তি দেয়ার জন্য ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি তোলা বন্ধ রেখেছেন। ডিপ টিউবওয়েলের পরিচালক হলেই যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন এমনটা হওয়া উচিত নয়।’
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচযন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো বলেন, ‘একটা মৌসুমে একটা ডিপ টিউবওয়েল চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এছাড়া ট্রান্সফরমার বা সেচযন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। তাই পানি তোলা বন্ধ রেখেছি।’
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সম্ভবত এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সেচযন্ত্রটি চালু করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সম্প্রতি, ফ্লোসোলার সল্যুশনস লিমিটেডের সাথে এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্ভাবনী ডিজিটাল অপারেটর বাংলালিংক। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতা সম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে বাংলালিংক। চুক্তিটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং জলবায়ু সহনশীলতা গঠনে ডিজিটাল অপারেটর বাংলালিংকের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশজুড়ে বাংলালিংকের টেলিকম নেটওয়ার্কে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী ফ্লোসোলার ও সংশ্লিষ্ট অংশীদারেরা এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির যথাযথ উন্নয়ন, অর্থায়ন ও পরিচালনায় কাজ করবে। অন্যদিকে, বাংলালিংক দীর্ঘমেয়াদী ‘কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’ (সিপিপিএ) -এর আওতায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় করবে।
এ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলালিংকের লক্ষ্য দেশের ১৫ হাজারেরও বেশি বিটিএস সাইট, ডেটা সেন্টার ও স্পেশাল পারচেজ ভেহিকল (এসপিভি) সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে পরিচালনা করা। অপারেটরটি মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৬০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ফলে, এ প্রকল্পটি প্রচলিত জীবাশ্ম-জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করবে।
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হলে দেশে বছরে প্রায় ৭৬ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে জ্বালানি ব্যবস্থার অভাবনীয় পরিবর্তন আনবে এবং বাংলালিংকের কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।
এ চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে বাংলালিংকের চিফ টেকনোলজি অ্যান্ড ইনফরমেশন অফিসার হুসেইন টার্কার বলেন, “বাংলালিংকে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফ্লোসোলারের সাথে অংশীদারিত্বে এ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যতের বড় আকারের নবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলোর জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও দূরদর্শিতার সঠিক সমন্বয়ে আমরা কম কার্বন নিঃসরণ ও নিরাপদ জ্বালানির ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।”
ফ্লোসোলার সল্যুশনস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আজিম কাসেম খান বলেন, “আমরা দেশের টেলিকম অপারেটরদের পরিচ্ছন্ন, নির্ভরযোগ্য ও টেকসই জ্বালানি ব্যবহারে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলালিংকের সাথে আমাদের এ অংশীদারিত্ব এ প্রতিশ্রুতির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। উদ্ভাবনী প্রকল্প কাঠামো ও দীর্ঘমেয়াদি কর্পোরেট ‘পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টের’ মাধ্যমে আমরা একটি পরিমাপযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ সমাধান প্রদান করতে চাই, যা কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার কৌশলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতীয় লক্ষ্যপূরণে অবদান রাখবে।”
প্রতিরক্ষা কাজে ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ উদ্ভাবন করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয়ী বাংলাদেশের গৌরব চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান জিহাদ। তার সাফল্যের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।
জিহাদের মেধাভিত্তিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান। গত শনিবার দুপুরে জিহাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দর্শনার পরানপুরে আসেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলার সদরের পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা খাতুনের ছেলে জাহিদ হাসান জিহাদ।
এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জাহিদ হাসান জিহাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তরুণ উদ্ভাবক জিহাদের প্রতি শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন আতিকুর রহমান রুমন। একই সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তার হাতে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন তিনি। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম ও ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য মাসুদ রানা লিটন ও মুস্তাকিম বিল্লাহ প্রমুখ।
এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবা ‘-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন বলেন, গণমাধ্যমে জিহাদের কৃতিত্বের খবর প্রচার হয়েছে। খবরের ফটোকার্ডটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসে। মেধাভিত্তিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে তার পাশে দাঁড়াতে আমাদের পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টিমকেও সহযোগিতা করেছিলাম। আমরা জিহাদের পাশে আছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও জিহাদের পাশে থাকবেন। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করব। জিহাদের উপস্থাপনা বিচারকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রোববার আরেকটি মদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। এ সময় প্রায় ৮ হাজার চোলাই মদ উদ্ধার করে বিনষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া একটি দেশীয় অস্ত্রসহ মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে আগেই পালিয়ে গেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। তবে যৌথবাহিনীর এমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গত বুধবার কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া এলাকায় একটি মদের আস্তানায় অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করে এবং পরে জনসম্মুখে সে মদ বিনষ্ট করা হয়। ওই সময় মদের আস্তানায় জড়িত থাকায় ছয়জনকে আটক করে যৌথবাহিনী। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় আটককৃত চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও আটককৃত অপর দুই শিশুকে মোচলেকা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার চারদিন পর রোববার সকালে ওই এলাকায় আবারো আরেকটি মদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। ওই এলাকার শ্রীধাম চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে মদের আস্তানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ যৌথ অভিযান চালানো হয়।
এ অভিযান চালিয়ে ওই আস্তানা থেকে প্রায় ৮ হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। পরে জনসম্মুখে সে মদ বিনষ্ট করে যৌথবাহিনী। এছাড়াও একটি দেশীয় অস্ত্রসহ মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী শ্রীধাম, অনিল ও শ্যামল মিলে দীর্ঘদিন ধরে ওই মদের আস্তানা চালিয়ে আসছিলেন। যৌথবাহিনীর অভিযানের খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে গেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করে যৌথবাহিনীর এমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এক ব্যতিক্রম উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। উপজেলার বালিয়াদহ গ্রামে দারুল আরকাম ফুরকানীয়া নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে এ উচ্ছ্বাস দেখা যায়। গত শনিবার দিনভর তারা বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ৮ নং মাগুরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জি এম শাহীন আলম, সাহাবাজ বিশ্বাস। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শাহিনুর বিশ্বাস, শেখ আশরাফুল ইসলাম, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সোহাগ মোড়ল প্রমুখ।
সকালে মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ লাফ, মোরগ লড়াই, উচ্চ লাফ, হাড়ি ভাঙা, ১০০ মিটার দৌড়, বিস্কুট খেলা, বালিশ খেলাসহ বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে বিকেলে আকাশি দল এবং সবুজ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় ট্রাইব্রেকারে সবুজ দলকে পরাজিত করে আকাশি দল। ইভেন্টে ১২৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ সহ অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। ইভেন্ট এবং প্রীতি ফুটবল খেলা পরিচালনা করেন স্থানীয় রেফারি সাহানাজ বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন, অর্থ মন্ত্রালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ মনিরুজ্জামানের ছেলে শেখ মাহিমুজ্জামান। শেখ মাহিমুজ্জামান মৃত. প্রফেসর শেখ ছানার উদ্দীনের প্রপৌত্র। তিনি ২০১৪ সালে ২৭শে জানুয়ারি মৃত্যু বরণ করেণ।
দারুল আরকাম ফুরকানীয়া নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাইম গল্দার, মনিরা খাতুন ও আমেনা খাতুন বলেন, সকালে আমাদেরকে পটেটো চিপস, এবং কেক খেতে দেওয়া হয়। দুপুরের খাবারে ছিল সবজি, চিংড়ি মাছ, মাংস এবং দই। দিনভর খেলা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
প্রধান শিক্ষক মাসুদুর জামান বলেন, দিনভর আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পেরে তারা উচ্ছ্বসিত। সাধারণত এ ধরনের খেলাধুলায় তারা অংশগ্রহণ করতে পারে না। যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানায়। সেই সাথে বিত্তবানদের কাছে এ সকল নিম্নবিত্ত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহম্মেদ বলেছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে শতভাগ ভাল হবে। গত শনিবার দুপুরে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের আয়োজনে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টার মিলনায়তনে ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিভিল সার্জন এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, এই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী দেরি করলে স্টেজ পার হতে হতে এই হার ২২% চলে আসে। তাই আমাদেরকে সেই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তাছাড়া স্তন ক্যান্সারের কোনো রোগী যদি টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পারে তাহলে তাকে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে দুই দশক ধরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হলেও প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে স্ক্রিনিংসেবা এখনো যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রতিবছর কত নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কতজন মারা যাচ্ছেন এর সঠিক তথ্য সরকারের কাছে নেই। ফলে বাংলাদেশকে এখনও আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে নির্ভর করতে হচ্ছে। এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা মো. সারোয়ার আকবর।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রমা সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা মো. জহিরুল ইসলাম। এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রেস্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট ডা. কাজী ইশরাত জাহান, ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. কামরুল ইসলাম মামুন এবং কুমিল্লা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস এর পরিচালক ডা. এম.এম. আরিফ হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. সফিউল আজম, প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জয়দীপ দত্ত গুপ্ত, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি কুমিল্লার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন ভূইয়া, মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. সফি উল্লাসহ হসপিটালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বরগুনার আমতলীতে বিদ্যালয়ের ভবনের নিচতলায় গোয়াল ঘর তৈরি করে গরু ও মহিষ লালন-পালনের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমভাবে দূষিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার প্রভাব খাটিয়ে ওই স্থানে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন দুর্গন্ধ ও বর্জ্যের মাঝে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করে। গত তিন মাস ধরে ভবনের নিচতলায় শাহ আলম হাওলাদার পাঁচটি গরু এবং ফোরকান হাওলাদার তিনটি মহিষ লালন-পালন করছেন। এতে বিদ্যালয়ের চারপাশে বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে এবং স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিকবার নিষেধ করলেও অভিযুক্তরা তা মানছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছা. নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের ভবনে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। এতে পুরো পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। বারবার বলার পরও তারা গোয়াল ঘর সরাচ্ছেন না। স্থানীয় সুশীল সমাজের সহায়তায় অনুরোধ করেছি, তবুও কোনো ফল হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচে ৫টি গরু ও ৩টি মহিষ বাঁধা আছে। গোবর, খড়কুটা ও ঘাসে চারপাশ একাকার হয়ে আছে। পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের নাক চেপে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের মাঠেও বর্জ্যের স্তূপ দেখা গেছে, এতে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিল, সাদিয়া, সাব্বির ও মুসাদ্দিকা বলেন, গোয়াল ঘর থেকে এমন দুর্গন্ধ আসে যে ক্লাসে টেকা দায়। আমাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত গোয়াল ঘর সরানোর দাবি জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত তিন মাস ধরে শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার বিদ্যালয় ভবনের নিচে গরু-মহিষ রাখছেন। এতে পুরো বিদ্যালয় এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। তারা দ্রুত গোয়াল ঘর অপসারণের দাবি জানান।
অভিযুক্ত শাহ আলম হাওলাদার স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে গোয়াল ঘর করা আমার ভুল হয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যেই গোয়াল ঘর সরিয়ে নেব।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি আগে জানতাম না। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি দ্রুত গোয়াল ঘর সরানো না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হওয়ার কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্বে বিগত প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি একথা বলেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হয়েছিল। প্রথমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ডটাকে ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীতে গুম-খুনের কালচার চালু করে। এরপর তারা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়। তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়। দেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ পায়। এ সবের মাধ্যমেই তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ক্রমান্বয়ে একটা দানবীয় সরকারে পরিণত হয়েছিল।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘জনগণকে নির্যাতন করা, হত্যা করা ও একটা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা ছিলো তাদের (আওয়ামী লীগ সরকারের) টার্গেট। এই দানবীয় শাসকই একটা পর্যায়ে ২০২৪ সালে আমাদের তরুণ-তরতাজা প্রজন্মের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।’
আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের আগে গত বুধবার এই মামলার শেষ সাক্ষী (৫৪তম) তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হলে, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন সাক্ষী।
এই মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করছেন।
সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত থাকেন।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে। সূত্র: বাসস
মন্তব্য