সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিকের মুক্তি নিয়ে দরকষাকষি অব্যাহত রয়েছে। এখনও এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো ফল আসেনি।
সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সংশ্লিষ্টরা মোটামুটি নিশ্চিত, ঈদের আগে নাবিকরা মুক্তি পাচ্ছেন না। জাহাজ মালিক ও নাবিকদের স্বজনরা ঈদের আগে জিম্মিদের মুক্তির আশা ছেড়েই দিয়েছেন। অবশ্য যে কোনো সময় সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এমভি আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন সংস্থা কেএসআরএম সূত্রে জানা গেছে, জলদস্যুদের সঙ্গে শুরু হওয়া আলোচনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ আলোচনা এখনো অনেকদূর এগিয়ে গেছে।
গ্রুপটির মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, জাহাজ মালিকের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। এখনো সমঝোতা হয়নি। তবে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। এরপর জাহাজটির দুই দফা অবস্থান পরিবর্তন করে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূলে নিয়ে যায় দস্যুরা।
জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় জাহাজ থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে স্যাটেলাইট ফোনে যোগাযোগ করে দস্যুরা। মূলত জাহাজসহ নাবিকদের মুক্তির বিষয় নিয়ে এরপরই আলোচনা শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সমঝোতা নিয়ে জাহাজমালিক ও দস্যুদের মধ্যে দূরত্ব অনেকটা কমে এসেছে। জাহাজসহ নাবিকদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে।
সূত্র জানায়, এখন উভয় পক্ষের মধ্যে মুক্তিপণ নিয়ে দরকষাকষি চলছে। মুক্তিপণের অংক সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে চেষ্টা করছে মালিকপক্ষ। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কত মুক্তিপণ দাবি করেছে দস্যুরা, তা জানা যায়নি। মালিকপক্ষ কখনোই বিষয়টি স্বীকার করে না।
সমঝোতার পর কীভাবে জলদস্যুদের হাতে টাকা পৌঁছানো হবে তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে। সমঝোতার পর মুক্তিপণ দেয়া এবং নাবিকদের ফিরিয়ে আনা, সব বিষয়ে সময় লাগতে পারে। এ সময় দুসপ্তার কম নয় বলে জানা গেছে। ফলে ঈদের আগে নাবিকরা মুক্তি পাচ্ছেন না এটা প্রায় নিশ্চিত।
মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমঝোতার পর জাহাজটি ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ থেকে নতুন নাবিকদের একটি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দস্যুদের কাছ থেকে জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে মুক্তিপণ দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
বার্ষিক ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে একটি অবাধ্যতামূলক চুক্তিতে সই করেছে বাংলাদেশ।
আর্জেন্ট এলএনজি লুইজিয়ানায় বছরে ২ কোটি ৫০ লাখ টন (এমটিপিএ) এলএনজি সুবিধা সরবরাহ করছে।
আর্জেন্ট এলএনজির বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এলএনজি সরবরাহের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এটিই প্রথম বড় চুক্তি।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, এমন দেশগুলোতে সুপার-চিল্ড গ্যাস রপ্তানির লাইসেন্সের ওপর জ্বালানি বিভাগের স্থগিতাদেশ বাতিলের নির্বাহী পদক্ষেপ নেন। তিনি এলএনজি রপ্তানি বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন।
চুক্তি অনুযায়ী পোর্ট ফোরচনে আর্জেন্টের এলএনজি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এর কার্গো পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এই চুক্তি কেবল বাংলাদেশের সম্প্রসারিত শিল্প ভিত্তির জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকেও শক্তিশালী করবে।’
এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ এখনও মূল্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ আরও সাশ্রয়ী মূল্যের কয়লা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
আরও পড়ুন:দীর্ঘ ১৭ দিন পর বাসায় ফিরেছেন যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতি হওয়ায় চিকিৎসকরা আপাতত তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে তিনটা) বেগম খালেদা জিয়াকে তারেক রহমান তার বাসায় নিয়ে যান।
এর আগে তারেক বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রিকলেন মসজিদে তার প্রয়াত ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসবে। সবকিছু ভালো থাকলে তাকে রিলিজ দেওয়া হতেও পারে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক প্রফেসর পেট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি জানিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। কারণ উনার বয়সটা একটা বিবেচ্য বিষয়।
‘তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তখন তাকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে আরও হয়তো দ্রুত সুস্থ করা যেত। এখন আমাদের চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে আগে হলে হয়তো উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেত।’
ডা. জাহিদ আরও জানান, বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, প্রেশার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ সব রোগের জন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। আপাতত ওষুধের মাধ্যমেই এটি অব্যাহত থাকবে। এর বাইরেও আরও কোনো চিকিৎসা করা যায় কি না, সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হসপিটালের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে দ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন বাসা থেকে খাবার এনে দেওয়া হতো। ছেলে তারেক রহমান, পুৃত্রবধূ জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই কন্যা জাফিয়া ও জাহিয়া রহমান বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়মিত দেখাশোনা করতেন।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ প্রতিদিন হাসপাতালে উপস্থিত থাকতেন।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেদিন হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ীকে এ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ বন্দরে রূপান্তরে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি মালিকানাধীন কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল।
বিশ্বমানের টার্মিনাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি মাতারবাড়ীর গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সভার ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কোম্পানির নির্বাহী চেয়ারম্যান আমির এ আলীরেজা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ইউএনবিকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোম্পানিটিকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের এবং দেশে আরও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলকে এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য রপ্তানি ও শিপিং হাব হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে আরও বন্দর গড়ে তুলবে।
আলীরেজা বলেন, পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনাকারী রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, কোম্পানিটি সম্প্রতি চীন থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্রেন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম আমদানির আদেশ দিয়েছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও ২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সরঞ্জামের কার্যাদেশ দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো হাইব্রিড সরঞ্জাম, যার অর্থ হলো তারা বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি উভয়েই চলতে পারে ও কার্বন নিঃসরণ কমাবে।’
মাতারবাড়ীকে গভীর সমুদ্র বন্দরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসেবে বর্ণনা করে আলীরেজা বলেন, তার কোম্পানি এ বন্দরে বিনিয়োগ এবং এটিকে এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান শিপিং হাবে পরিণত করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বন্দরের দক্ষতা দেশে বিপুল বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। কারণ অনেক শীর্ষ নির্মাতা তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে আগ্রহী হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জেনেভায় জাতিসংঘে ঢাকার স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ অভিমত দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কী ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।
আরও পড়ুন:বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ও রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বিশিষ্ট রাজনীতিক আশরাফ হোসেন বড়দা (৮৫) আর নেই।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় তার।
তিনি এক কন্যাসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী, আত্মীয়স্বজন ও শুভান্যুধায়ী রেখে যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রংপুর মহানগরীর গুপ্তপাড়া জামে মসজিদে শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে নূরপুর কবরস্থানে বড়দাকে দাফন করা হবে।
আশরাফ হোসেন বড়দা ১৯৫২ সালে লালমনিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে যুক্ত হন। জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর একটি লেখা পড়ে রাষ্ট্রভাষার প্রতি উদ্বুদ্ধ হন তিনি।
পরে প্রগতিশীল শিক্ষক সন্তোষ গুহের সান্নিধ্য ও কবি শাহ আমানত আলীর অনুপ্রেরণায় আন্দোলনে অংশ নেন তিনি।
ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতির স্বপ্ন না দেখা এ ভাষাসৈনিকের চাওয়া ছিল ‘ভাষা আগ্রাসন’ যেন বন্ধ হয়।
ভাষা আন্দোলন অংশগ্রহণ করার কারণে আশরাফ হোসেন ১৯৫৪ সালে আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ১৯৫৫ সাল থেকে রংপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
নগরীর গুপ্তপাড়ার নিউ ক্রস রোডের ডুয়ার্স ভবনই ভাষাসৈনিক আশরাফ হোসেনের ঠিকানা।
ঢাকা পোস্টের দ্বিতীয় বর্ষে পদাপর্ণ অনুষ্ঠানে ২০২২ সালে ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজাল ও ভাষাসৈনিক আশরাফ হোসনে বড়দাকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।
এদিকে ভাষাসৈনিক আশরাফ হোসেন বড়দার মৃত্যুতে রংপুর বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস ক্লাব রংপুর, সিটি প্রেস ক্লাব, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, মাহিগঞ্জ প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-টিসিএ, রংপুর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলার চোখসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন শোক জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘন কুয়াশার কারণে দেশে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িক ব্যাহত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আবার কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িক ব্যাহত হতে পারে।
দেশে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল রাজশাহীর বাঘাবাড়ীতে। আর টেকনাফে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শনিবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানায়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, সারা দেশের তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর কার্বন নিঃসরণ, সম্পদের কেন্দ্রীকরণ, দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব দূরীকরণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে চালু হওয়া বিশ্বব্যাপী ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের পাহাড়ি শহর দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে আল গোর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় তিনি ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসা করেন।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু কর্মী হিসেবে পরিচিত আল গোর। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এ তথ্য জানান।
সাক্ষাৎকালে উভয় নেতা জুলাই বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি এবং নির্বাচন ও ভূরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সমর্থন করার কথা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস তাকে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আঁকা গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্রের ওপর ভিত্তি করে রচিত শিল্পকর্ম সংকলন ‘দ্য আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ বইটি উপহার দেন।
আল গোর শিল্পকর্ম সংকলনের বই এবং বাংলাদেশের তরুণদের বিপ্লবী চেতনাকে ‘অসাধারণ’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা মনোযোগ দিয়ে দেখেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য