বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার নির্লজ্জভাবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। দিল্লির অধীনস্ত হওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ) করিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা মানুষ কখনও এ ধরনের গোলামি মেনে নেবে না।’
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘অরক্ষিত স্বাধীনতা, মানবাধিকার, গণতন্ত্রবিহীন ও বিপন্ন বাংলাদেশ এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। সব সময় বিদেশি শক্তির দিকে তাকিয়ে থাকে তারা। এটা বর্তমান শাসক দলের অভ্যাস।
‘জনগণের প্রতি সরকারের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণের আজ নাভিশ্বাস অবস্থা। কিন্তু এটা নিয়ে সরকারের কোন মাথাব্যথাই নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখানে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা প্রশ্ন তুলে বলেছেন- আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করে সঠিক কাজ করেছি নাকি ভুল করেছি। প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার মনে এই প্রশ্ন আজ জাগরূপ হয়েছে।
‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন এই প্রশ্ন মুক্তিযোদ্ধাদের মনে আসবে? কাদের দুঃশাসনের ফলে আজকে মুক্তিযোদ্ধারা আত্মসমালোচনায় লিপ্ত? মুক্তিযোদ্ধাকে বর্তমানকালে শাসক গোষ্ঠী একটি হেলা-ফেলার বিষয়ে পরিণত করেছে।’
মেজর হাফিজ বলেন, ক্ষমতাসীনরা বলার চেষ্টা করে যে বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন যদি ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের সাধারণ নাগরিকদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিএনপি তো সংগ্রাম করছে দেশবাসীর ভোটাধিকার অর্জনের জন্য এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করা দেশের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। কিন্তু তারা যদি না আসে এর দায় তো বিএনপির না। সেটা জনগণের ব্যাপার। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তার দায়িত্ব পালন করেছে।
আয়োজক সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ তার জনগণের কথায় চলুক, সেটি চায় না ভারত।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-আগরতলা লংমার্চ শুরুর আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘ভারত নিজেরা গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু তারা চায় না বাংলাদেশ এর জনগণের কথায় চলুক। বাংলাদেশের মানুষের রক্তের যে তেজ, আত্মশক্তি, বীরত্ব, এটা দিল্লির শাসকরা বুঝতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি। এই স্বাধীনতা আমরা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব?’
ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ভারত সীমান্ত অভিমুখে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ‘লংমার্চ’ উদ্বোধন করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ লংমার্চ করছে তিন সংগঠন।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাতটার পর থেকে বিএনপির তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন।
সংগঠন তিনটির নেতা-কর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিএনপির তিন সংগঠনের আয়োজনে এই লংমার্চ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।
আরও পড়ুন:জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগণের জন্য জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কুমিল্লার ফান টাউন পার্ক মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হলো দেশের মানুষের কাছে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা; যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। তাহলে দেশের সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবো পর্যায়ক্রমে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কী করবে তার বর্ণনা হলো রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১-দফা। সংস্কার প্রস্তাব শুধু দলীয় কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, প্রতিটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ৩১ দফায় কারও আপত্তি বা কোনো প্রস্তাবনা থাকলে সংস্কার কিংবা সংযোজন করা হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইতো না যে স্বৈরাচারের বিদায় হবে, আমরা সেই সময় এই দফা দিয়েছিলাম। সেটা প্রায় দুই বছর আগে। আমরা প্রথমে এটা ২৭ দফা দিয়েছিলাম, পরবর্তীতে ৩১ দফা হয়েছে। কারণ আমাদের সঙ্গে অনেক গণতান্ত্রিক দল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিল। তাদের মতামত যুক্ত করা হয়েছে এখানে।’
বিতর্কিত কাজ থেকে নেতা-কর্মীদের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দলের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কাজ করা যাবে না। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে। স্বৈরাচারীরা দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। এখনও সময় আছে। আসুন, আমরা দেশ ও মানুষের কাজে সময় ব্যয় করি। মানুষ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।’
দেশ ও মানুষের জন্য জিয়া পরিবারের অবদানের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমার বাবা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে গিয়েই ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে জীবন দিয়েছেন। আমার মা বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষের পক্ষে থাকার কারণে কীভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তা আপনারা দেখেছেন। আমার ভাই আরাফাত রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের অত্যাচারে শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশের বহু বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবারের কাহিনী আমার পরিবারের মতোই।’
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি কীভাবে গত ১৫ বছরে পলাতক স্বৈরাচার সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। কীভাবে দেশকে দুর্নীতিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। কীভাবে অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে।
‘তারা দুর্নীতির ওপর টিকে থাকতে চেয়েছিল এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এই দুর্নীতি থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে হয় তাহলে প্রাইমারি স্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে।’
কর্মশালায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় নিযুক্ত নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেন। তারেক রহমান এবং কর্মশালার প্রশিক্ষকরা তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। দেশের যানজট একটি প্রধান সমস্যা। এ সমস্যা মোকাবিলা করতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের নামে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা হবে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো যাবে না। যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় অবধারিত বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। পলাতক সরকারের কিছু লোক ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করবে। দেশের মানুষ এসব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে।
বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
কর্মশালায় অংশ নেন কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি, মহানগর এবং পৌরসভার শীর্ষ নেতারা।
সভা শেষে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ সময় নেতাকর্মীরা আগামী দিনে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত হবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন।
আরও পড়ুন:দেশীয় সংস্কৃতির প্রচারের লক্ষ্যে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সূচনা করেছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশান-১ এ উদয় টাওয়ারে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন।
‘সবার আগে বাংলাদেশ’-এর আহ্বায়ক এ্যানী বলেন, এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নতুন পরিবেশে নতুনভাবে বিজয়ের মাস উদযাপনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, “গত ১৬-১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা নিজেদের মতো করে বিজয় দিবস পালন ও উদযাপন করতে পারিনি। এবার বিজয় দিবসে আমরা নতুন প্রত্যাশা নিয়ে, নতুনভাবে বাংলাদেশের জনগণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির হব। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।
“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ব্যাপক কর্মসূচি ও কার্যক্রম প্রণয়ন করেছে।”
এই কনসার্টে বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও ব্যান্ডদলের মধ্যে- সৈয়দ আব্দুল হাদী, খুরশীদ আলম, বেবী নাজনীন, মনির খান, কনক চাঁপা, দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল, প্রীতম, জেফার, মৌসুমী, নগর বাউল (জেমস), ডিফারেন্ট টাচ, অর্ক, সোলস, শিরোনামহীন, আর্টসেল, এভয়েডরাফা এবং সোনার বাংলা সার্কাস অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানি ও যুবদল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সন্দেহ করছি- সংস্কারের নামে একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। এই সরকারকে দিয়ে সম্পূর্ণ মেরামত সম্ভব নয়। পুরো সংস্কারের জন্য দলীয় সরকার প্রয়োজন। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি কুমিল্লা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভুইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
কুমিল্লা বিভাগীয় এই কর্মশালায় অংশ নেন কুমিল্লার ছয়টি জেলা বিএনপি, মহানগর ও পৌরসভার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া ছেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলি, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবা হাবিব।
আরও পড়ুন:র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে এই সুপারিশ করেছে দলটি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘র্যাব আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দনীয় হয়েছে। আর দেশের মধ্যে তো র্যাব মানেই দানব। যত ধরনের খুন, জখম, বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড অধিকাংশই র্যাবের মাধ্যমে হয়েছে। সেজন্য এটাকে আমরা বিলুপ্ত করার জন্য সুপারিশ করেছি।’
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন, কাশ্মীর, মিয়ানমারের রাখাইন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।
অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আগামীকাল মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী মূলত মুসলিম জাতিগোষ্ঠী চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। খুনি ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, বুদ্ধিজীবী কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে জামায়াতের আমির অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের সব মানবতাবাদী রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে আমাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রব্যবস্থা এমন হতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং কেউ আর নিপীড়িত হবে না। আজ আমরা এক নতুন যাত্রায় আছি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সুরক্ষার যাত্রা।
জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘ ১৯৫০ সালে ১০ ডিসেম্বরকে ‘মানবাধিকার দিবস’ ঘোষণা করে। সেই থেকে প্রতি বছর এদিন আন্তর্জাতিক ‘মানবাধিকার দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।
এ বছরের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ, এখনই’।
তারেক রহমান এই দিনে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক অধিকার হারানো নির্যাতিত মানুষের প্রতি গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও যেন ভবিষ্যতে আর কেউ মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত না হন- সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ দীর্ঘ একদলীয় শাসনের কালো অধ্যায় পার করেছে। তখন মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছিল, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ব্যক্তিগত ক্ষমতায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
‘এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তারা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র, শ্রমিক কিংবা সাধারণ মানুষ যেই হোন না কেন- মিথ্যা মামলা, কারাবাস, শারীরিক নির্যাতন, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অতীতে বাক, ব্যক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মুদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে যারা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নির্মম নিপীড়নে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং যারা এখনও নির্যাতিত-নিপীড়িত, তাদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জানান।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য জনগণকে সচেতন ও সংগঠিত হয়ে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের আপামর জনগণের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দি থেকে, মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে যে নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন, তা আমাদের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই অধ্যায় আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কখনও থেমে থাকা উচিত নয়।
‘এই মুহূর্তে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। মানবাধিকার সুরক্ষিত রেখে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এ যাত্রায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে- জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য