মাসব্যাপী চলছে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। দেখতে দেখতে এ বছরের মেলা প্রায় শেষের পথে। আর মাত্র দুদিন পরই পর্দা নামবে অমর একুশে বইমেলার।
শেষ সময়ে এসে বইপ্রেমীদের মনে বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করেছে। এই সময়ে ক্রেতাদের ভিড়ে মেলা প্রাঙ্গণ জমজমাট হয়ে উঠেছে।
রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী অমর একুশে বইমেলার। তবে বইয়ের দোকান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেশি হওয়ায় এই অংশেই দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় দেখা যায়।
মঙ্গলবার বিকেলে মেলায় বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যায়। মেলায় ক্রেতারা আসছেন, দেখছেন, বই কিনছেন। তবে অনেক দর্শনার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে আড্ডায় মেতে থাকতে দেখা যায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই মেলায় বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।
এদিন লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন বয়সের মানুষের হাতেই ছিল বইয়ের ব্যাগ। অন্যান্য দিনের মতো বেশি ভিড় দেখা যায় মেলার শিশু কর্ণার ও স্টলগুলোতে।
বইমেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী ক্রেতাদের ভিড়। তবে ক্রেতার থেকে দর্শনার্থীদের সংখ্যাই মেলায় বেশি। বিক্রিও হচ্ছে দেদারসে।
বইমেলা প্রাঙ্গণে এদিন যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। সব বয়সের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় মেলা। লোকসমাগমে জমজমাট হয়ে ওঠে বইমেলা। স্টলগুলোতে বিক্রি বাড়ায় খুশি বইয়ের দোকানিরাও।
বাতিঘর, মাওলা ব্রাদার্স, কথা প্রকাশ, ঐতিহ্য, অন্যপ্রকাশ, আগামী প্রকাশনীসহ অধিকাংশ স্টল ও প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল এদিন। ছোট প্রকাশনীগুলোতেও ছিল প্রচুর মানুষের সমাগম।
মঙ্গলবারের মেলায় তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছেন তরুণ-তরুণীরা। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে, আবার কেউ এসেছেন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে।
প্রকাশকরা বলছেন, মেলার শেষ সময়ে পছন্দের বই কিনতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে। নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখরিত মেলা। এতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। অন্যদিকে লেখক-পাঠক আড্ডায় বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিণত হয়েছে মিলন মেলায়।
মেলার দর্শনার্থীরা বলছেন, দুই দিন পরে শেষ হয়ে যাবে মেলা। ফলে যারা নানা ব্যস্ততার কারণে এতোদিন মেলায় আসতে পারেননি, তারাও শেষ সময় এসে নিজেদের পছন্দের লেখকের বই কিনছেন।
মেলার বিভিন্ন স্টলের দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শেষ সময়ে এসে বেচাবিক্রি বেড়েছে, কমবেশি সবাই বই কিনছেন। তবে ক্রেতারা তাদের বাছাই করা তালিকা ধরেই পছন্দের লেখকের বই ক্রয় করছেন।
তাম্রলিপি প্রকাশনীতে তাশফিকালের লেখা সামিনব্বই দশকের ভালোবাসা বইটি কিনছিলেন ফৌজিয়া আফিয়া। তিনি বলেন, প্রথম বইমেলায় এসেছি। যদিও শেষ সময় তবুও ইচ্ছা আছে বেশ কয়েকটা বই কেনার।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোট গল্পের বই বিক্রি করা হচ্ছে ভাষাপ্রকাশ প্রকাশনীতে। বইটি কিনছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাহি বুশরা। তিনি বলেন, ছোট ভাইকে উপহার দেবার জন্যই বইটি কিনলাম।
অনন্যা প্রকাশনের সর্বাধিক বিক্রিত বই হুমায়ুন আহমেদের হিমু সমগ্র। স্মিতা দেবনাথ নামে এক চাকরিজীবী কেনেন বইটি। তিনি বলেন, হুমায়ুন আহমেদ স্যার চির যৌবনা। স্যারের বই সংগ্রহে রাখার জন্যই কেনা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় এসেছেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন শান্ত। তিনি বলেন, এবার মেলায় এর আগে দুই দিন এসেছি। তবে খুব বেশি বই কেনা হয়নি। আমরা এবার সব বন্ধুরা একসঙ্গে মেলায় এসেছি। সবাই-সবাইকে একটি করে বই উপহার দিয়েছি। এছাড়া সবাই নিজেদের পছন্দের বইগুলোও কিনেছি।
ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম এবছর প্রথমবারের মতো মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, দিনের বেশিভাগ সময় টিউশনি করে সময় পার হয়ে যায়। ফলে এবারের মেলায় আসা হয়নি। এজন্য সকালে একটি টিউশনি করার পর বাকি দুইটি থেকে ছুটি নিয়ে মেলায় এসেছি।
মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী রুহুল সরকার বলেন, মেলা প্রায় শেষের দিকে। বেশ কয়েক দিন ধরে মেলায় মানুষের উপস্থিতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ কারণে আমাদের বিক্রিও বেড়েছে।
অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী আশিক মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রকাশনী থেকে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ বই ছাপানো হয়। এজন্য আমাদের স্টলে হুমায়ূনপ্রেমীদের ভীড় সবসময় একটু বেশিই থাকে, বিক্রিও হয় অনেক।
পাঞ্জেরী প্রকাশনীর বিক্রেতা অনামিকা শিকদার জানান, আমাদের এখানে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ বই বিক্রি হচ্ছে। আগে যেখানে পঞ্চাশ হাজার টাকার বই বিক্রি হতো, সেখানে এখন লাখ ছুঁই ছুঁই অবস্থা। বিক্রি বেশ ভালো চলছে।
অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন কান্তি নাথ বলেন, শেষ সময়ে ক্রেতা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সবসময় এমনটাই হয়ে আসছে। বিক্রি নিয়ে আমাদের সন্তুষ্টির কিছু নেই। কেননা বইয়ের বিক্রি সংখ্যা কিন্তু তেমন নয়। আমরা যতটা আশা করছি বা সবাই যা ভাবছে বাস্তবে তা হচ্ছে না।
শব্দশৈলীর প্রকাশক ইফতেখার আমীন বলেন, সারা বছর যে বই আমরা বিক্রি করি তার একটা বড় অংশই মেলায় বিক্রি হয়। আর সেই বিক্রিটাই হয় মেলার শেষ সময়ে। স্বভাবতই আমরা খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে আমরা এতোটাও সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আশা করছি শেষ দুই দিন বেচাকেনা ভালো হবে।
অমর একুশে বইমেলার ২৭তম দিন মঙ্গলবার মেলা শুরু হয় বিকেল তিনটায় এবং চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ৯৫টি। বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: সেলিম আল দীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লুৎফর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রশীদ হারুন এবং জাহিদ রিপন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ।
প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা নাটকের ইতিহাসে সেলিম আল দীনের অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অস্থির পরিস্থিতিতে প্রকৃত বাস্তবকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে উপস্থাপন করাকেই তার কর্তব্য বলে মনে করেছেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক চিত্র তার নাটকে মূর্তরূপ লাভ করেছে। নাটক রচনাকালে তার চেতনার ভূগোল তৈরি হয়েছে সমগ্র প্রকৃতি, মানুষ, জনপদ, জীবন এবং গ্রামীণ ও নাগরিক সমাজের বিদ্যমান দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে।
আলোচকরা বলেন, সচেতন নাট্যকার হিসেবে সেলিম আল দীন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে উপেক্ষা করতে পারেননি। তার নাটকের ভেতর সমকালীন বাস্তবতার চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। সমাজ-চেতনা এবং পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেলিম আল দীনের নাটকেও বিবর্তন এসেছে। তিনি এ অঞ্চলের শিল্পরীতি ও শিল্পদর্শনকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে চালিত করেছেন এবং বাঙালির নাট্য- সংস্কৃতি ও নাট্যযাত্রার পথকে সুগম করার জন্যে আজীবন কাজ করে গেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বলেন, সেলিম আল দীন রাজনীতি ও মানুষকে একীভূত করে তার নাট্যভূমি নির্মাণ করেছেন। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতবাদের পক্ষাবলম্বন না করে শিল্পীর নির্মোহ অবস্থান থেকে তিনি নাট্যচর্চা করেছেন।
বইমেলায় হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ
বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীতে এদিন বিকেল পাঁচটার দিকে হুমায়ুন আজাদ দিবস পালন উপলক্ষে লেখক-পাঠক ফোরামের উদ্যোগে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার তথ্যকেন্দ্রের সামনে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
বিশিষ্ট প্রকাশক ওসমান গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বক্তৃতা প্রদান করেন কবি মোহন রায়হান, কবি আসলাম সানী, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি: ডিএনসিসি প্রশাসক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে ডিএনসিসি ও ডিএমপি যৌথভাবে কাজ করছে। ঢাকা শহরের ভিতরে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে।
তিনি জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা করেছে। শিগগিরই রাতে অভিযান করে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএনসিসির ৬, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকায় ৭টি প্যাকেজে মোট ২০ কিলোমিটার রাস্তা, ৩৪ কিলোমিটার নর্দমা ও ১৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকার বাড়ির মালিক সমিতিকে অনুরোধ করব আপনারা আপনাদের এলাকায় অবৈধ অটোরিকশা ঢুকতে দেবেন না। আপনাদের আবাসিক এলাকাগুলো যে পরিকল্পনা করে করা হয়েছে, সেই পরিকল্পনার বাহিরে কিছু করতে দেবেন না। আবাসিক এলাকায় কোনো বাণিজ্যিক কাজ করতে দেবেন না। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আপনারা স্থানীয় কমিউনিটি সোচ্চার হলে অবৈধ অটোরিকশা, অবৈধ হকার বন্ধ করা সহজ হবে।’
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি থেকে প্লট কেনার আগে মৌজা ম্যাপ চেক করে দেখবেন জলাধার কিনা। জলাধার হলে দয়া করে সেই প্লট কিনবেন না। জলাধার হলে পরবর্তী সময় সেই প্লট পেতে ঝামেলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সবাই একসময় ভাবতেন পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় কোনোদিন পাকা রাস্তা হবে না। এই এলাকায় শুধু গোডাউন ভাড়া দেওয়া হতো একসময়। পরিকল্পিতভাবে মাঠের জায়গা রাখা হয়নি, কোনো গাছ লাগানো হয়নি। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ভিতর দিয়ে খাল ছিল। আমরা নাগরিক সমাজ আন্দোলন করেছি সেই খাল উদ্ধারের জন্য, মামলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ৭টি প্যাকেজের নির্মাণকাজ শেষ হলে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে এবং জলাবদ্ধতাও দূর হবে।’
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখে প্রতিবাদ করছেন কোহিনুর ক্যামিকেল কোম্পানির কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
কারখানার কসমেটিকস বিভাগের বাবু নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।পরে তারা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত মানুষ। মহাখালী থেকে আসা যাওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, সেই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন। বারবার তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
তারা আরও বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ঠিক বিপরীত পাশে সড়কে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির অবস্থান। সেই কারখানাটির গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার এসে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণের পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
এমন বিষয় জানানোর পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানাটির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভাঙচুর বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মহাখালী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ট্রাফিক) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা ব্লকের কারণে তেজগাঁও সাত রাস্তাসহ আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা হবে।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয় সংক্রান্ত সেমিনার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে। পাটের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। টেকসই ব্যবস্থার জন্য জেডিপিসি, এসএমইএফ, জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’
‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই—এই ধারণা ঠিক নয়। সরকারের সব উদ্যোগ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অ
নুষ্ঠানে বক্তব্য দেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি; ঢাকা নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ; ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকি উজ জামান; ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ; বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।
সময় পরিবেশ উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
রাজধানীতে পরিচালিত পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এসব সংগঠনের সাম্প্রতিক ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ ও তাদের সমভাবাপন্ন বিভিন্ন সংগঠন ঝটিকা মিছিল করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা পুলিশের গতিবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে দুয়েক মিনিট মিছিল করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এসব মিছিলের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।
তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। পৃথক অভিযানে রাজধানীতে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ছয় সদস্য হলেন- পল্লবী থানা ছাত্রলীগের ৫ নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নাইম, যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রিপন হোসেন ফাহিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. সোহেল, বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল রানা, বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়ামিন ও বাড্ডা ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার খান।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পল্লবী থানার বাউনিয়া এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম নাইমকে গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগ।
অন্যদিকে, মহানগর গোয়েন্দা সাইবার বিভাগের বিভাগের একটি দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. রিপন হোসেন ফাহিমকে গ্রেফতার করে। ডিবি-ওয়ারী বিভাগ কদমতলী থানাধীন মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে শেখ মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে।
এরপর শনিবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ডিবি সাইবারের একটি টিম রাজধানীর বাড্ডা থানার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে মো. সোহেল রানা ও মোহাম্মদ ইয়ামিনকে এবং শাহ আলি এলাকা হতে অপর একটি টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে আবুল বাশার খানকে গ্রেফতার করে।
ডিএমপি জানায়, এসব সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় সাধারণ জনগণকে এসব সংগঠনের বিচ্ছিন্ন অপতৎপরতা সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছে মহানগর পুলিশ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।
পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।
এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর বনানীতে নৌবাহিনী সদরদপ্তর ও আর্মি স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি স্থানে শুক্রবার পোশাকশ্রমিক বহনকারী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাত নারী আহত হয়েছেন।
তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত সাত শ্রমিক হলেন রাশেদা (২৮), লাকি আক্তার (৩৫), পারভিন বেগম (৩৪), নিলুফা আক্তার (৩০), হোসনেয়ারা (৩৫), রাশেদা আক্তার (৩১)।
আহত নারী শ্রমিকদের ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘নারী শ্রমিকরা গাজীপুরের কালীগঞ্জের পূর্বাচল অ্যাপারেল লিমিটেডের পোশাকশ্রমিক। আজ ভোরে ডিউটি শেষ করে সকালে ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম ও নৌ বাহিনী সদরদপ্তরের মাঝামাঝি স্থানে বাসটি উল্টে যায়। এতে আহত হয় অনেকে। পরে আমরা খবর পেয়ে আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই।
‘এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাতজন শ্রমিককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক জানান, বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের বাস দুর্ঘটনায় আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শ্রমিকদের কারও মাথায়, কারও শরীরে এবং পায়ে হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলমান।বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য