জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে চট্টগ্রাম থেকে এমপি হতে চান ৭৪ জন নারী। রাজনীতিক, রাজনৈতিক পরিবারের স্ত্রী, সন্তান ও নানা পেশার নারীরা ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনা এসব নারীর মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গেরও একজন রয়েছেন।
একাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনে চট্টগ্রাম থেকে দুজন নারী এমপি ছিলেন। এবার একজন বেড়ে সংখ্যাটা তিনজনে দাঁড়াতে পারে বলে সূত্রে খবর। আর এই আসনগুলো বাগাতে ফরম সংগ্রহকারীরা ঢাকায় অবস্থান করে দৌড়ঝাঁপ করছেন। তারা ধরনা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মন্ত্রী-নেতাদের কাছে।
এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের জনপ্রতিনিধি, আইনজীবীসহ সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে এবং জাতীয়ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমন নারীর সংখ্যাই বেশি।
দলীয় জানা গেছে, পর পর দুবার নারী এমপি হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ওয়াশিকা আয়েশা খান। তিনি প্রয়াত বর্ষীয়াণ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে। একাদশ সংসদে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। আরেকজন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এবার ফটিকছড়ি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হয়। এ সময়কালে চট্টগ্রামের ৭৪ জন নারী ফরম সংগ্রহ করেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার প্রথম দিন চট্টগ্রামের ৩৭জন, বুধবার ২৪ জন ও বৃহস্পতিবার ১৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
অন্যান্য বারের চেয়ে এবার সংরক্ষিত নারী আসনে চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সালাউদ্দিন সাকিব।
প্রথম দিন যারা মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন তারা হলেন- চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নীলু নাগ, মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপিকা সায়েরা বানু রৌশনী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাজেদা সুরাত, সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরী, ডবলমুরিং আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ডা. আফছারুল আমীনের স্ত্রী ডা. কামরুন নেছা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা খালেদা আক্তার চৌধুরী, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর আফরোজা জহুর, মহানগর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কাউন্সিলর জোবাইরা নার্গিস খান, সাবেক সংসদ সদস্য মঈনুদ্দীন বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদের বড় মেয়ে দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজি শারমিন সুমি, বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে রাওকাতুন নুর, মেহ-ই জাবীন, সৈয়দা সাহেদা সুলতানা, মমতাজ খান, উম্মে হাবিবা, ইয়াছমিন সুলতানা, বিলকিস আকতার চৌধুরী, ফারহানা জাবেদ, রোকসানা পারভীন, জেসমিন পারভীন, রিক্তা বড়ুয়া, জেসমিন প্রেমা, সাবেক কাউন্সিলর রেহানা বেগম রানু, রেহেনা আকতার, জান্নাতুন নূর তানিয়া, ফেরদৌসি আলী রুবী, হেমন্তি শুক্লা মল্লিক, পাপড়ি সুলতানা চৌধুরী ও জীবন আরা বেগম।
দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারীদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমানা নাসরীন, সৈয়দা রাজিয়া মোস্তাফা, কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, সাহেলা আবেদীন রীমা, তাহমিনা হক শিরিন, অধ্যাপিকা ববি বড়ুয়া, কাউন্সিলর লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী, রেহেনা বেগম চৌধুরী, ফারজানা আফসার, উম্মে কুলসুম, সালেহা কাদের, জুবাইদা ছরওয়ার চৌধুরী নীপা, রেখা আলম চৌধুরী, আবিদা আজাদ, শাহিদা আকতার জাহান, জাহেদা বেগম পপি, শামীম আরা লিপি, ফাতেমা বেগম, নাজমা আক্তার, ফারিহা আকবর রিয়া, সিদরাতুল মুনতাহা তৃনা, ববিতা বড়ুয়া ও তৃপ্তি রানী বড়ুয়া।
তৃতীয় দিনে তৃতীয় লিঙ্গের মনা প্রকাশ ফাল্গুনীসহ মোট ১৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন- চেমন আরা বেগম, চসিকের কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নি, সাংবাদিক শাহীন আরা বেগম (ডেইজী মউদুদ), মনা প্রকাশ ফাল্গুনী হিজড়া, জেরিন তাসলিম চৌধুরী, নাসরিন আক্তার, সৈয়দা তাহমিনা সুলতানা, দিপ্তী দাশ, বিনা চৌধুরী, বিবি মরিয়ম, রেহেনা আক্তার, রোকসানা আলম ও তাহেরা মেহের।
চট্টগ্রাম থেকে এবার কারা হচ্ছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি তা নিয়ে সর্ মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা। গত নবম, দশম ও একাদশ সংসদে চট্টগ্রাম থেকে দু’জন করে সংরক্ষিত আসনে এমপি ছিলেন। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে তিনজন হতে পারে বলে নানাভাবে আলোচনা হচ্ছে।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘মনোনয়ন ফরম নেয়ার অধিকার সবার আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তার সঙ্গেই আছি। সংরক্ষিত আসনে যোগ্যরাই মনোনয়ন পাবেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নির্দেশে এবং সাভার পৌর ছাত্রদলের মেহেদী হাসান সানির উদ্যোগে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অপারেটিভ অগ্রণী হাউজিং সোসাইটি মাঠে সম্প্রতি এ ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী লায়ন মো. খোরশেদ আলম।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
ওই সময় প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।
‘কারণ চরম ধৈর্য না ধরলে এই দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কড়াভাবে লড়ে না গেলে আমরা সফল হতে পারতাম না।’
তিনি আরও বলেন,‘৫ আগস্ট যে স্বাধীনতা এসেছে, এই স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুস্থতা কামনা করছি। ’
সাভারের উন্নয়ন নিয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা একটু সাভারের দিকে তাকাই। এই সাভার একটি অবহেলিত সাভার। দীর্ঘদিন এই সাভারে যে পরিমাণ উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এই না হওয়ার পিছনে একটি জিনিস দায়ী। সেটি হলো দায়িত্বশীল যারা ছিলেন তারা কখনোই, আপনাদের নিজের মানুষ মনে করেনি। যদি তারা কাজ করত বা সাভারকে নিজের পৌরসভা হিসেবে যদি গ্রহণ করত, তাহলে কাজ করতে পারত।
‘আমি দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলাম। সমস্যাগুলো আমি কাছ থেকে দেখেছি। এখানে শুধু দরকার একটু প্রচেষ্টা এবং জনগণের সহযোগিতা। একজন মেয়র যদি চিন্তা করে আমি সাভারের জন্য কাজ করব আর জনগণ যদি চিন্তা করে আমরা মেয়রের পাশে আছি, তাহলে কোনোকিছুতেই সেই উন্নয়ন ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাজ দ্বারা যদি আমাকে আপনাদের যোগ্য মনে হয়, তাহলে আপনারা আমাকে নির্বাচিত করবেন। যতদিন বেঁচে আছি আমি সাভারের জন্য এবং সাভারের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’
আরও পড়ুন:সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে খেলাফত মজলিসের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল ও এ বি এম সিরাজুল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম এবং প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত ১৩ মার্চের মধ্যে জানাতে অনুরোধ জানিয়ে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়।
এ পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন:কোনো মহল যাতে অযাচিত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘সর্বোচ্চ মাত্রার’ নিরপেক্ষতা চেয়েছে বিএনপি।
দলটি বলেছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা করা স্বাভাবিক, যেমনটি তারা অতীতে করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যই দেশ ও জনগণের মূল চালিকাশক্তি। এই ঐক্য অটুট রেখেই এই জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, এই ঐক্যের চর্চাকে অবশ্যই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ও গণঐক্যকে ধ্বংস বা ফাটল ধরায়, এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বোচ্চ মাত্রার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য কোনো মহলের এজেন্ডা যাতে সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয়ে যায়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মূল অগ্রাধিকার হলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রেখে প্রায় ১৬ বছর ধরে চলা ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সকল সংস্কার প্রচেষ্টা বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর কেন্দ্রীভূত, এটাই জাতির প্রত্যাশা।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
রাত দুইটায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত এবং প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে হল থেকে রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে একদল শিক্ষার্থী।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে শুরু হয়ে মলচত্বর, ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়।
পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চায় না ছাত্রজনতা। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া মানে জুলাই শহীদের সঙ্গে প্রতারণা করা।
মিছিলে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফাহিম বলেন, আওয়ামী লীগকে ফেরাতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রে যারা মদদ দেবে, তারা যেই হোক না কেন, ছাত্রসমাজ রুখে দাঁড়াবে।
ঢাবির ছাত্রী তাবাসসুম বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। দেড় হাজার মানুষ হত্যার পর তারা ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। অথচ সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অন্তর্ভুক্ত করতে এখন থেকে নানা ফন্দি-ফিকির হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেবে না ছাত্রসমাজ।
যতদিন পর্যন্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত লড়াই চলবে জানিয়ে বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার হতেই হবে। গণভোটের মাধ্যমে হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধি শুক্রবার বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক এ কথা জানিয়েছেন।
বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
এম এ মালেক বলেন, ‘আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম ঈদ করে দেশে যেতে। তিনি আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। এখন তিনি ঈদের পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন।’
তিনি বলেন, ‘ডাক্তাররাও সে অনুপাতে প্রস্তুতি নিয়ে ম্যাডামকে সেভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে এখানে ফ্লাইটেরও একটি বিষয় আছে। ফ্লাইট যদি নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া যায়, তাহলে দুই এক দিন এদিক সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’
তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের লিডারের দেশে যাওয়ার সময় নিয়ে এখনো নিশ্চিত বলতে পারছি না। ম্যাডাম খালেদা জিয়া যাওয়ার কিছু দিন পরে হয় তো তিনি দেশে ফিরবেন। এক সাথে দুই জন অবশ্যই যাবেন না এটা আমি বিশ্বাস করি।’
লন্ডন মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা আবুল হোসেন জসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ইউকের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফেন্দী লিটন, জিয়া পরিষদ যুক্তরাজ্য শাখা সভাপতি প্রফেসর ড. সাইফুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আনিসুল হক, দীপু মনি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ তাদের কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাতদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডের আদেশ দেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে ওবায়দুল ইসলাম নিহতের মামলায় হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, দীপু মনিকে চার দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় মো. সুজন নামের এক ব্যক্তি গুলিতে নিহতের মামলায় আনিসুল হকের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরের বসিলায় মিরাজুল ইসলাম অর্ণব নিহতের মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ইনু, মেনন, দীপু মনির মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা পেট্রোল পাম্পের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে ওবায়দুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৫৮ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন নিহতের আত্মীয় মো. আলী।
আনিসুল হকের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের সামনে মো. সুজন নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
সাদেক খানের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় গত ১৯ জুলাই অংশ নেন মিরাজুল ইসলাম অর্ণব। পরে আসামিদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শুক্রবার লিখেন, ‘এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।’
তিনি লিখেন, ‘মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া গত কয়েক দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মৃত্যুবরণ করে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে।’
তিনি লিখেন, ‘আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একই সঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে এলাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের।’
তারেক রহমান আরও লিখেন, ‘আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদের বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
‘বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে, যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য