চলছে প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। সোমবার শেষ হয়েছে মেলার পঞ্চম দিন। প্রথম দিন থেকেই লেখকরা বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া তাদের বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করে চলছেন।
এখন পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২৪১টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতা আর উপন্যাসের বই। এ ছাড়া, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে।
বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মেলার প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘কালেক্টেড ওয়ার্কস অফ শেখ মুজিবুর রহমান: ভলিয়ম-২’ ও ‘প্রাণের মেলায় শেখ হাসিনা’ (বাংলা একাডেমীতে শেখ হাসিনার গত ২০ বারের ভাষণের সংকলন) এই দুটি নতুন বইয়ের গ্রন্থ-উন্মোচন করেন। এ সময় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আরও ৬টি অনুবাদ গ্রন্থ ও নজরুল ইন্সটিটিউট প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরুল-কথা নামের একটি বাংলা গ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২৪১টি। এরমধ্যে কবিতার বই ৭৫টি, উপন্যাসের বই ৪৭টি, জীবনীগ্রন্থ ১৯টি, গল্পের বই ২১টি, প্রবন্ধ ১০টি, ভ্রমণের ৯টি, অনুবাদগ্রন্থ ৭টি, ইতিহাসের ৭টি, মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৭টি, গবেষণাধর্মী বই ৫টি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর দুটি, রাজনীতি, রচনাসমগ্র, শিশুসাহিত্য আর ধর্মের ওপর বই এসেছে একটি করে।
উপন্যাসের উপর উল্লেখযোগ্য বই হলো- সাব্বির জাদিদ লিখিত আজাদীর সন্তান। বইটি প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখিত পরিণীতা, দেবদাস এবং পল্লিসমাজ। বই তিনটি প্রকাশ করেছে মিজান পাবলিশার্স। সাদাত হোসাইন লিখিত আগুনডানা মেয়ে। বইটি প্রকাশ করেছ অন্যপ্রকাশ।
প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলা একাডেমি প্রকাশিত মোহাম্মদ নুরুল হুদা লিখিত সংস্কৃতি ও সদাচার, পাঠক সমাবেশ প্রকাশিত স্বকৃত নোমান লিখিত বাংলায় ইসলাম : সহজিয়া ও রক্ষণশীল ধারা, অন্যপ্রকাশ প্রকাশিত আবুল কাসেম লিখিত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অর্থনীতি।
কবিতার উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হলো- ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত লতিফুল ইসলাম শিবলীর যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে, আগামী প্রকাশনী প্রকাশিত শামসুর রাহমানের প্রেমের কবিতা, ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ প্রকাশিত তানজীনা ফেরদৌস লিখিত প্রেমের হুলিয়া জারি হোক তোমার নামে, আসাদ চৌধুরী লিখিত ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত একাত্তরের ৭১ কবিতা।
মুক্তিযুদ্ধের ছয়টি বইয়ের মধ্যে পাঁচটি বই-ই প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। বইগুলো হলো- সুজন বড়ুয়া লিখিত মুক্তিযুদ্ধের কিশোর উপন্যাসসমগ্র, রফিকুর রশীদ লিখিত মুক্তিযুদ্ধের গল্পসমগ্র, আরেফিন বাদল লিখিত এই যুদ্ধ সেই যুদ্ধ : মুক্তিযুদ্ধের গল্প, এম আবদুল আলীমের বঙ্গবন্ধু: মুক্তিযুদ্ধ এবং ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম লিখিত মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর বগুড়া। আর ড. নুসরাত রাব্বি অনূদিত war heroines speak বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আজিজুর রহমান আজিজের লিখা অন্তরে বঙ্গবন্ধু বইটিও প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হারুনুজ্জামানের An Untold Story বইটিও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে।
জীবনীগ্রন্থের মধ্যে আইভি সাহার লিখিত জলছবি প্রকাশিত স্বাধীন বাংলা বেতারের কন্ঠযোদ্ধা: অরুণা, শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান লিখিত বিজয় প্রকাশ থেকে প্রকাশিত কাজী নজরুলের কারাজীবন, অনুপম প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আবদুল্লাহ আল-মুতীর স্মৃতিকথা ও সাগরপারের চিঠি, পাঠক সমাবেশ থেকে প্রকাশিত আবদুল মমিন চৌধুরী/সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ শত মনীষীর জীবনী।
গবেষণাধর্মী বইয়ের মধ্যে ড. মাহবুবুল হকের চাটগাঁইয়া সঅজ পন্না বইটি অন্যতম। এটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। ভাষাবিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম মুস্তাফা মজিদ সম্পাদিত মারমা জাতিসত্তা বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী।
ইতিহাসের মধ্যে ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত মহিউদ্দিন আহমদের চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ, কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত জাহীদ রেজা নূরের ৬ দফা থেকে স্বাধিকার, জ্যোতি প্রকাশ থেকে প্রকাশিত মো. রফিকুল হক আখন্দের বিশ্বজুড়ে আখন্দ বংশ। আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ড. মুকিদ চৌধুরীর জার্মানি: অতীত ও বর্তমান।
রাজনীতি নিয়ে উল্লেখযোগ্য বই পুথিনিলয় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আতিউর রহমানের বাংলাদেশ নেতৃত্বের পরম্পরা ও উন্নয়ন। ভ্রমণবিষয়ক উল্লেখযোগ্য বই অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হাসনাত আবদুল হাইয়ের একদা সোভিয়েত ইউনিয়নে, ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত আশির আহমেদের জাপান কাহিনি (দশম খণ্ড)।
অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত মুমিত আল রশিদের মাজার শরিফ-এর আর্তনাদ এবং কিংডম অফ সোলায়মান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত কবি সুফিয়া কামালের স্মৃতিকথার অনুবাদ 1971 : A Dairy, রিজিয়া রহমানের উপন্যাসের অনুবাদ An Untold Story এবং সেলিনা হোসেনের উপন্যাসের অনুবাদ The Glorious Afternoon উল্লেখযোগ্য।
পঞ্চম দিনে নতুন বই ৭০টি
সোমবার মেলায় নতুন বই এসেছে ৭০টি। বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সার্ধশত জন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসুদ রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইসরাইল খান এবং তপন বাগচী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাইফুল আলম।
প্রাবন্ধিক বলেন, মানোত্তীর্ণ সাহিত্যসৃষ্টির সমূহ প্রতিভা ছিল মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরীর। মাত্র ষাট বছরের জীবনে তার যে সাধনা ও কীর্তি, তা তাঁকে বাঙালির নবজাগরণের ইতিহাসে স্মরণীয়জনের আসন দিয়েছে। একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাংবাদিক-সম্পাদক, সংগঠক ও রাজনীতিক হিসেবে তিনি বরেণ্য।
সভাপতির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরী একাধারে একজন লেখক, সংগঠক, রাজনীতিবিদ এবং সম্পাদক ছিলেন। তিনি নিজে যেমন লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, তেমনি লেখক-সাহিত্যিকদের একত্রিত করেছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবগত করার দায়িত্ব আমাদের যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি নাসির আহমেদ, কবি ইসলাম রফিক, শিশুসাহিত্যিক চন্দনকৃষ্ণ পাল এবং লোকসাহিত্য গবেষক সৈয়দা আঁখি হক।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, সরকার মাসুদ এবং মাসুদ পথিক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, সাফিয়া খন্দকার রেখা এবং শামস্ মিঠু। দলগত আবৃত্তি পরিবেশন করেন ফয়জুল আলম পাপ্পুর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন’-এর শিল্পীরা।
মঙ্গলবারের সময়সূচি
মঙ্গলবার মেলা শুরু হবে বিকেল তিনটায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত।
আলোচনা অনুষ্ঠান
বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জফির সেতু। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শাহিদা খাতুন এবং সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আবদুল খালেক।
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার প্রতিবাদ ও ছয় দফা দাবি বাস্তাবায়নের দাবিতে ফুঁসে ওঠেছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীর ও বাসচালকরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— প্রভাবশালী গোষ্ঠী কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তারা পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে প্রকৌশল পেশায় প্রবেশের পথ সংকুচিত করছে। এ ছাড়া চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল, তাদের পদবি পরিবর্তন ও সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা।
২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা।
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ ও আইনানুগভাবে নিশ্চিত করা।
এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন।
উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ের নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা।
সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৬৭টি মামলা করেছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রোববার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য