অবশেষে এয়ার অ্যারাবিয়ার এবিওয়াই-৫২০ ফ্লাইটটি ১০২ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে যান্ত্রিক ত্রুটি সারানোর পর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিমানটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের কেউ কেউ টিকেট ক্যানসেল করেছে। ত্রুটি সারানোর পর রোববার সন্ধ্যায় বিমানটি চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।’
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে শারজাহর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এয়ার অ্যারাবিয়ার ওই ফ্লাইটটি। সে সময় যাত্রার ২ ঘণ্টা পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৯টা ৩৭ মিনিটে ১৪৯ জন যাত্রী নিয়ে ভারতের আকাশ থেকে চট্টগ্রামে ফিরে আসে।
তবে যাত্রীরা জানান, এয়ার অ্যারাবিয়ার ওই ফ্লাইটটির প্রথম যাত্রার সময় ছিল ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে। ওই সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানিয়ে বিলম্ব করে ফ্লাইটটি। পরে পরদিন যাত্রার কথা জানিয়ে যাত্রীদের নগরের কয়েকটি হোটেলে ভাগাভাগি করে রাখে এয়ার অ্যারাবিয়া কর্তৃপক্ষ।
পরদিন ফের সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রার সময় নির্ধারণ করেও আবার পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ শনিবার ৬টার দিকে রাত সাড়ে ৮টায় যাত্রার সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবারও সময় পরিবর্তন করে ৭টা ২০ মিনিটে যাত্রা করে বিমানটি।
ওই বিমানের যাত্রী ও চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা আইয়ুব খান বলেন, ‘৭টা ২০ মিনিটে যাত্রার প্রায় এক ঘণ্টা পর ভারতের দিকে পৌঁছাই। তখন বিকট একটা শব্দ হয়ে বিমানটি আকাশেই কাঁপতে থাকে। এতে সবাই চিৎকার শুরু করে, আমরাও দোয়া দরুদ পড়তে থাকি। পরে ক্রুরা জানাল যে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটা শারজাহ যেতে পারবে না, তাই চট্টগ্রামে চলে যেতে হবে।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন চারজন, যারা হাসপাতালে পাঞ্জা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।
সদর উপজেলার রুহিয়া থানা এলাকার পাটিয়াডাঙ্গী বাজারের খড়িবাড়ি হঠাৎপাড়া গ্রামে রবিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত চারজন হলেন আবদুল জলিল, তার স্ত্রী পারুল বেগম এবং তাদের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ও ইউনুস আলী।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাংবাদিকদের আবদুল জলিল বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাত থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে ভাড়া করা লোক এনে হামলা করা হয়েছিল। আমি তারাবির নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলাম। এরই মধ্যে আমার ছোট ভাইয়ের বউ খুব ডেঞ্জারাস। সে তার ভাইয়ের ছেলে এনে আমার বড় ছেলেকে মারধর করে। রাতে বিষয়টি কুলায়ে উঠতে পারিনি।
‘পরদিন সকালে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করি। আমার ছোট ভাইয়ের ছেলেকে শাসন করি। লাঠি দিয়ে মারি। এরই মধ্যে আমার আরেক ভাতিজা সাদেকুল ইসলাম ছুরি দিয়ে আমাদের আঘাত করে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদেকুলের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাকিবুল আলম বলেন, ‘ছুরিকাঘাতে চারজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আমরা রংপুর মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেছি। তাদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে।’
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম নাজমুল হুদা বলেন, ‘খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
‘স্থানীয়রা একজনকে আটক করেছে। তার পূর্ণাঙ্গ নাম, পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ফিরলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), ঝালকাঠি বারের সাবেক সভাপতি ও জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান রসুলের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঝালকাঠি জজ আদালতে রবিবার সকালে হাজির হলে তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম।
ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতিতে হামলা, জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, আইনজীবী শাহাদাৎ হোসেনের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলাসহ ছয়টি মামলার আসামি আবদুল মান্নান। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে পলাতক ছিলেন আওয়মী লীগের এ নেতা।
চার মামলায় আসামির পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবী বনি আমিন বাকলাই এবং মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন কবীর। আগামী ১৮ মার্চ একই আদালতে আসামির অন্য দুটি মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
সাবেক পিপি আবদুল মান্নান রসুলের জামিন নাকচের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘মান্নান রসুল আইনজীবী হয়েও তিনি আইনজীবীদের ওপর হামলা ও মিথ্যা মামলা করেছিল। তার পক্ষে আজ যে যে আইনজীবী দাঁড়িয়েছে, তারা নীতি নৈতিকতা হারিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের আইনজীবী জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান রসুল ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা ১৫ বছর ঝালকাঠিতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর একক সিদ্ধান্তে ঝালকাঠিতে এ পদে অন্য কেউ আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন:দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা ও নোয়াখালীর হাতিয়ার সঙ্গে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে ২০ মার্চ থেকে বিলাসবহুল দুটি অত্যাধুনিক জাহাজ সার্ভিস চালু হচ্ছে। এগুলো হলো এমভি বারো আউলিয়া ও এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস।
জাহাজ দুটি প্রতিদিন ভোলার চরফ্যাশন, মনপুরা, ঢালচর ও নোয়াখালীর হাতিয়া হয়ে চট্টগ্রামের সদরঘাটে ভিড়বে। প্রতিদিন একটি জাহাজ চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে নোয়াখালী এবং ভোলার চরফ্যাশনের উদ্দেশে যাবে।
অনুরূপভাবে ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাট থেকে আরেকটি জাহাজ যাত্রী নিয়ে একই সময়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বারো আউলিয়া জাহাজের ম্যানেজার মো. সাইফুল ইসলাম।
ইতোপূর্বে বছর দেড়েক আগে জাহাজ দুটি এ রুটে মাসখানেক চলাচল করেছিল, কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অভ্যন্তরীণ রুটের অসাধু দলীয় লঞ্চমালিক সিন্ডিকেট নিজেদের স্বার্থে এ জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।
অবশেষে নৌ পরিবহন উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে আগামী ২০ মার্চ থেকে উপকূলীয় জেলা ভোলা, নোয়াখালী থেকে চট্টগ্রাম রুটে নিয়মিত যাত্রীবাহী জাহাজ চালু হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জাহাজ দুটি প্রতিদিন ছেড়ে এসে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় ঘাট দেবে। হাতিয়া থেকে ছেড়ে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার ঢালচর ও রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটে ঘাট দেবে। মনপুরা থেকে লালমোহন উপজেলার মঙ্গল শিকদার ঘাট দেবে। মঙ্গলশিকদার থেকে চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাটে ভিড়ে যাত্রাবিরতি দেবে।
একই নিয়মে প্রতিদিন উভয় এলাকা থেকে জাহাজগুলো চলাচল করবে।
এ ব্যাপারে বারো আউলিয়া লঞ্চের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী ২০ মার্চ থেকে উপকূলীয় যাত্রী সেবা চালু হতে যাচ্ছে। দুটি বিখ্যাত উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ এমভি বারো আউলিয়া ও এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে বেতুয়া নৌ রুটে নিয়মিত চলাচল করবে, যা যাত্রীদের জন্য একটি আরামদায়ক ও নির্ভরযোগ্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির ভোলা অঞ্চলের ম্যানেজার (মেরিন) মো. আল-আমিন বাসসকে বলেন, ‘বারো আউলিয়া জাহাজটি সরকারের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও দ্রুতগতিসম্পন্ন নৌযান, যা উপকূলবাসীর জন্য খুবই গুরুত্ব বহন করবে।
‘অপর জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ব্যক্তি মালিকানাধীন হিসেবে আমাদের দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে যাত্রী বহন করে চলাচল করবে।’
আরও পড়ুন:দেশের অন্যতম আম উৎপাদকারী জেলা নওগাঁ। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার আমের মুকুল সবচেয়ে বেশি এসেছে জেলার আমের বাগানগুলোতে।
নওগাঁর বাতাসে এখন মুকুলের মো মো ঘ্রাণ ভেসে বেড়াচ্ছে। কয়েক দিনের বেশির ভাগ সময় আবহাওয়া আম উৎপাদনের জন্য অনুকূল রয়েছে।
এবার গাছে গাছে মুকুলের আধিক্য দেখে ব্যাপক ফলনের আশা করছেন আমচাষিরা।
কৃষিবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আম চাষের অনুকূলে রয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। এবার গত বছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর জমিতে বেড়েছে আমের বাগান। আশা করা হচ্ছে, গত বছরের চেয়ে এবার ২৫ হাজার টন ফলন বাড়তে পারে।
একজন কৃষিবিদের আশা, এবার জেলায় আমের বাণিজ্য হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার।
আমচাষিরা বলছেন, প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এক মৌসুমে ভালো ফলন হলে পরেরবার আমের ফলন কম হয়। সে হিসেবে গত বছর নওগাঁয় আমের ফলন কম হওয়ায় এবার তারা আমের বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন।
বাগানে প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে। মুকুলকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করছেন তারা। ক্ষেত্রবিশেষে ছিটানো হচ্ছে পানি। আমগাছের গোড়াতেও পানি দিচ্ছেন চাষিরা।
এদিকে বাগানে মুকুল আসা শুরু করতেই মৌসুমি বাগান ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা মাঠে নেমে পড়েছেন। তারা মুকুল দেখে বাগান কেনার জন্য মালিকদের কাছে যাচ্ছেন।
কয়েক দিন ধরে মুকুলে গুটি হওয়ার পর বাগান কেনাবেচার জন্য আমবাগানিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীরা বাগান কেনাবেচা নিয়ে কথা শুরু করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। গত বছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার টন। উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। এ ছাড়াও নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, ধামইরহাট, বদলগাছী উপজেলা আম উৎপাদনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নওগাঁ জেলায় নাগফজলি, ল্যাংড়া, আম্রপালি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, কাটিমন, বারি আম-৪, বারি আম-১১, গুটি আম ও ফজলি জাতের সুস্বাদু আমের উৎপাদন বেশি।
সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া এলাকাসহ ২০০ বিঘা জমির ওপর তিনটি আম বাগান রয়েছে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানার। তিনি স্থানীয় বাজারে আম বিক্রি ছাড়াও বিদেশে আম রপ্তানি করে থাকেন।
সোহেল রানা জানান, গত বছর তার বাগানে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। এবার এখন পর্যন্ত তার বাগানে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। ফাল্গুন মাস আমের মুকুল আসার উপযুক্ত সময়।
তার ভাষ্য, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাকি গাছগুলোতেও মুকুল আসবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আমের জন্য অনুকূলে আছে। রোদের তাপ কম পেলে ও প্রকৃতি কুয়াশায় ঢেকে থাকলে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে জন্য গাছে ছত্রাকনাশক কীটনাশক স্প্রে করছেন তিনি।
পোরশা উপজেলার বড়গ্রাম এলাকার আমাচাষি রায়হান আলম বলেন, ‘গত বছর শীতের কারণে অনেক দেরিতে মুকুল এসেছিল। গাছে মুকুল আসতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন দেরি হয়েছিল। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়েও অনেক গাছে মুকুল ধরেছিল।
‘সে তুলনায় এবার অনেক আগেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাধারণত ধরা হয় দীর্ঘস্থায়ীভাবে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আমের মুকুল ধরতে চায় না। তবে এবার জানুয়ারি মাসে দুই-এক দিন করে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী শৈত্যপ্রবাহ ছিল না। গড় তাপমাত্রা প্রায় ২০ ডিগ্রির কাছাকাছি ছিল। এই তাপমাত্রা আমের জন্য অনুকূল।
‘কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে কুয়াশা থাকছে। তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। কুয়াশার কারণে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমরা আমচাষিদের ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘চলতি বছরে কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে নওগাঁর আমের বাগান থেকে সাড়ে চার লাখ টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
‘আমের বাজার ভালো থাকলে এ বছর নওগাঁ জেলায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান থেকে চালবোঝাই আরও দুটি জাহাজ।
এক দিনের ব্যবধানে দুটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছায়।
এবার এসেছে ৪৮ হাজার ৭৫০ টন আতপ ও সিদ্ধ চাল। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসে ২৬ হাজার ২৫০ টন এবং ভারত থেকে আসে ২২ হাজার ৫০০ টন চাল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাইলো জেটি ও কাফকো-সংলগ্ন জেটিতে এই দুই জাহাজ নোঙর করে বলে শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেন খাদ্য অধিদপ্তরের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা।
পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজটি শুক্রবার চট্টগ্রাম সাইলো জেটিতে বার্থিং করেছে জানিয়ে তিনি জানান, জাহাজ এমভি মারিয়ম গত ১১ মার্চ ২৬ হাজার ২৫০ টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে।
অন্যদিকে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিম। জাহাজটি শুক্রবার কাফকো সংলগ্ন জেটিতে বার্থ করে।
এ জাহাজ থেকে ২২ হাজার ৫০০ টন বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল আনা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাহাজ এমভি মারিয়মে আসা চালের নমুনা সংগ্রহ শেষে ভৌত বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়েছে মন্তব্য করে জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা জানান, এ চালের খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আসা জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিমের চালগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা শেষ হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা ৩৮ হাজার ৮৮০ টন চাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে ১৭ হাজার ৮০০ টন আতপ চাল এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ২১ হাজার ৮০ টন সিদ্ধ চাল কেনা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আরও ৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজের ধাক্কায় বাল্কহেড থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ এক নৌযান শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রাণ হারানো নৌযান শ্রমিকের নাম ওমর আলী (৫৫), যার বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার মধ্যম পাটুলী গ্রামে।
গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ওই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় বাল্কহেড থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন ওমর আলী। তিনি ‘নাফিজ তাসিম’ নামের একটি বাল্কহেডে সুকানি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, ‘শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলের অদূরে নদীতে তার লাশটি ভেসে উঠলে স্থানীয়রা আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের নামাশুলাই এলাকায় শনিবার সকাল আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় ও ঘটনাস্থলেই চালক ও এক নারীসহ দুইজন যাত্রী নিহত হন। এ ছাড়া আরও একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান জানান, খবর পেয়ে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ট্রাক ও অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ট্রাকচালক পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য