তাবলিগ জামায়াতের বিবদমান দুই পক্ষের শীর্ষ মুরব্বিদের সম্মিলিতভাবে একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনের অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে টঙ্গীর বাটা গেট এলাকায় ফলোআপ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা সারা পৃথিবীতে খুবই জনপ্রিয় ছিল। পৃথীবির বিভিন্ন দেশ থেকে তাবলীগ জামায়াতের মুসল্লিরা এখানে উপস্থিত হন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, বিভিন্ন জায়গায় আপনাদের পাঠিয়েছি, অনেক পানি গড়িয়েছে, কিন্তু আপনাদের মনোভাবটা পরিবর্তন হয়নি। সেজন্য আমরা কষ্ট পাই। আমরা মনে করি, যদি আবার মিলেমশে এক প্লেটে মাওলানা ওয়াসিফুর রহমান এবং মাওলানা জোবায়ের সাহেব খেতে পারতেন, তাহলে খুব খুশি হতাম।’
তিনি বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, তিনি যদি নেতৃত্ব নিয়ে এই দুই পক্ষকে একসঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারেন। একসঙ্গে এক প্লেটে খাওয়াতে পারতেন, তাহলে আমরা শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাব।’
মাওলানা জোবায়েরপন্থী আহলে শুরার মুরব্বিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের দাবি অনুযায়ী প্রতিবার আপনাদের প্রথম পর্বে ইজতেমা করতে দেয়া হয়। সেই দাবি অনুযায়ী সম্মানের সহিত মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। কোনো ধরনের ভাঙচুরের অভিযোগ যেন না ওঠে। গতবারও শুনেছি অনেক কিছু ভাঙচুর হয়েছে, কিছু জিনিস খোয়া গিয়েছে। এবার যেন তেমন কিছু না হয়।’
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গতবারের ন্যায় এবারও ইজতেমা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ড্রোন, সিসিটিভি ক্যামেরা, ইউনিফর্ম এবং সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি থাকবে। ইজতেমায় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
সভায় অনুমতি ছাড়া উত্তরার দিয়াবাড়ীতে ইজতেমার খিত্তা স্থাপন না করার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ইজতেমা নিয়ে প্রশাসনের গৃহীত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন নিয়ে সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, র্যাব প্রধান খুরশিদ আলম, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, জিএমিপি কমিশনার মাহবুব আলমসহ দুই পর্বের শীর্ষ মুরুব্বিরা।
প্রসঙ্গত, টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ে প্রথম দফায় ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফায় ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে এবার মিলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ।
শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শুরু হয়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২৮ বস্তা টাকা। তখন দিনভর টাকা গণনা শেষে পাওয়া যায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
ঐতিহাসিক এই মসজিদে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন অনেকে।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকা বস্তায় ভরা হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বস্তা থেকে টাকাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। গণনা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূইয়া বলেন, ‘টাকা গণনায় অংশ নেন পাগলা মসজিদ মাদ্রাসার ১৩০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ১৫৫ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৬ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ১০ জন সদস্য, ১০ জন আনসার সদস্য, ২০ জন পুলিশ, পাঁচজন র্যাব সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের ২০ জন।’
তিনি জানান, এবার দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় একটি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে আগে নয়টি দানবাক্স থাকলেও এখন দুটি বাড়ানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছয় তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প করা হবে। এতে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এরকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সে সঙ্গে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে । তারা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত করে দিলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। মনের আশা পূরণের জন্য তারা এই দান করে থাকেন।
দানবাক্স খোলার পর থেকেই টাকা গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। তাদের একজন শেখ বোরহান উদ্দিন বাজিতপুর উপজেলার বাসিন্দা।
বোরহান বলেন, ‘মানুষের মুখে আর বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়া টাকার কথা শুনি। গতবার দেখতে এসেছিলাম। এবারও নিজ চোখে দেখতে এসেছি। এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে কখনও দেখিনি।’
গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমদাদুল্লাহ জানান, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেন।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, যেগুলোর গণনা চলছে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ৯টি দানবাক্স আছে, যেগুলো সাধারণত তিন মাস পরপর খোলা হয়। এবার খোলা হয় তিন মাস ১৪ দিন পর।
৯টি দানবাক্স ছাড়াও এবার দুটি ট্রাংক যুক্ত করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে সকাল সাতটার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
ডিসি ফৌজিয়া খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল সাতটার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ৯টি দানবাক্স ও দুটি ট্রাংক খোলা হয়। এসব দানবাক্সে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। টাকা গণনা শেষে ব্যাংকে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মী ছাড়াও আছেন মাদ্রাসার ২৮৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য।
দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।
এর আগে ১৭ আগস্ট সকালে মসজিদটির ৯টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬। সেই সঙ্গে মিলেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না।
মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়ায় তিন একর ৮৮ শতাংশে।
আরও পড়ুন:সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এটাই শেষ। এর পর আর কোনো সময় বৃদ্ধি করা হবে না।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্ধিত এই সময়ের মধ্যে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে। একইসঙ্গে হজ প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করার জন্য সম্মানিত হজযাত্রীগণকে অনুরোধ করা হলো।
বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদে হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরেই সোচ্চার হিন্দু উগ্রবাদীরা। আদালতেও গড়িয়েছে বিষয়টি। এতে বিতর্কিত নির্দেশনাও দিয়েছে আদালত। এর পরে উত্তর প্রদেশের সন্তুলে জামা মসজিদ নিয়ে একই দাবি তোলার রাজনীতি চলছে। এর জের ধরে সেখানে সংঘর্ষে সম্প্রতি চারজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।
সন্তুলে জামা মসজিদের জায়গায় হিন্দু মন্দির ছিল দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন এক ব্যক্তি। তারপরই আদালত সমীক্ষার নির্দেশ দেয়। আর শুরু হয়ে বিতর্ক, গোলমাল।
প্রথম দিন জরিপের কাজ চললেও দ্বিতীয় দিনে জরিপ শুরু হওয়ার পর প্রবল ক্ষোভ জানাতে থাকেন স্থানীয় মুসলমানরা। এক পর্যায়ে তা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পরিণত হয়। এখন সেখানে চলছে পুলিশের কড়া পাহারা। তবে উত্তেজনা থামেনি।
এবার রাজস্থানে আজমির শরিফের দরগা নিয়েও অনুরূপ বিতর্ক তুলতে মামলা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজমির শরিফের দরগায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। শুধু মুসলমানরাই নন, সব ধর্মের মানুষ প্রবল বিশ্বাস নিয়ে এখানে আসেন। এখানে রয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর সূফি সাধক খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির সমাধি। ভারত সরকারের আইনে একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয় এই দরগা।
কিন্তু সর্বধর্মের এই মিলনক্ষেত্র নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। গত বুধবার হিন্দু সেনা নামের একটি সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত স্থানীয় আদালতে মামলা ঠুকেছেন। তার দাবি, শিব মন্দিরের ওপর তৈরি হয়েছে এই দরগা। তাই এটিকে ভগবান শ্রী সংকটমোচন মহাদেব বিরাজমান মন্দির বলে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজমির দরগা কমিটি, ভারত সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে নোটিশ জারি করেছেন দেওয়ানি আদালতের বিচারক মন মোহন চান্ডেল। মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক আগামী ২০ ডিসেম্বর শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, দরগা সরিয়ে ফেলারও আর্জি জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে দিয়ে জরিপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনকারীর আইনজীবী শশী রঞ্জন কুমার সিং আদালতে আবেদনে জানান, দরগার প্রধান ফটকের ছাদের নকশার সঙ্গে হিন্দু মন্দিরের নকশার মিল রয়েছে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হজযাত্রীদের সেবা না দেয়ায় দুটি এজেন্সিকে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা এবং লাকি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এজেন্সি সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজের (হজ লাইসেন্স নম্বর-১২৩৩) বিরুদ্ধে আ. মান্নান সরকার, মো. আশরাফুল আলম ও মো. জহরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন- প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদেরকে হোটেল না দেয়া, নিম্নমানের হোটেলে রাখা, গাইড না দেয়া, জিয়ারা না করানো, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, খারাপ আচরণ করা, কব্জি বেল্ট দেয়া হয়নি।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এজেন্সির স্বত্বাধিকারী ও গ্রুপ লিডারের বক্তব্য পর্যালোচনায় অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজ হজযাত্রী হিসেবে সৌদিতে গমনকারীদের প্রতিশ্রুত সেবা দেয়নি। এর মাধ্যমে এই এজেন্সি ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’ লঙ্ঘন করেছে।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলো। এই অর্থ অভিযোগকারী তিনজনকে সমান হারে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করে প্রমাণক ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার আদেশ দেয়া হয় প্রজ্ঞাপনে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানার অর্থ অভিযোগকারীদের ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এজেন্সির ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড বন্ধ করার আদেশ দেয়া হয়।
অন্যদিকে, লাকি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের (হজ লাইসেন্স নম্বর-২৬৮) বিরুদ্ধে মোস্তফা কবির হাবিব ও তার স্ত্রী শামীমা আক্তার অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, সংক্ষিপ্ত প্যাকেজের কথা বলে এজেন্সি তাদের কাছ থেকে প্রাক-নিবন্ধনের জন্য ৬২ হাজার টাকা এবং পাসপোর্টসহ মোট আট লাখ টাকা নেয়। হজযাত্রীদের বিমান টিকিট নিয়ে এজেন্সি ভোগান্তি করেছে। বিমান টিকিট পরিবর্তনের কথা বলে অতিরিক্ত ৯০ হাজার টাকা গ্রহণ ও মক্কায় নিম্নমানের হোটেলে রাখা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে এই এজেন্সির বিরুদ্ধে ‘আচরণ বিধি লঙ্ঘন, চুক্তিবদ্ধ প্রয়োজনীয় সেবা দিতে ব্যর্থতা’ এবং হজযাত্রীদের হয়রানি ও ভোগান্তি করেছেন বলে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১ অনুযায়ী এক লাখ টাকা জরিমানা করা হলো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই অর্থ হজযাত্রীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়ার আদেশ দেয়া হলো।
অন্যথায় এজেন্সির ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড বন্ধ করার আদেশ দেয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পবিত্র হজের পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জমায়েত আয়োজনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেয়া হয়েছে কোন পর্ব কাদের অধীনে আয়োজন করা হবে।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি শূরায়ী নেজামের অধীনে এবং দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থীদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজাম (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারী) আয়োজন করবেন। আর আগামী ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন।
বিশ্ব ইজতেমার মাঠ হস্তান্তর প্রসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ বিভাগীয় কমিশনার ঢাকার নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দেবেন। আর দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই কমিটি থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন এবং ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।
বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা যায় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এর আগে জানিয়েছিলেন যে বিশ্ব ইজতেমা এবার এক পর্বে আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পর্বেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই জামাত।
আরও পড়ুন:হাজীদের রিফান্ডের টাকা ফেরতের নামে প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। কেউ ফোন করে ডেবিড বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা নগদের তথ্য চাইলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তার জানানোরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
শনিবার মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র হজের রিফান্ডের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে হাজী, হজ এজেন্সির মালিক বা প্রতিনিধি ও হজ গাইডদেরকে ফোন করে তাদের ডেবিড বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা নগদ ইত্যাদির তথ্য চাচ্ছে। এভাবে দুয়েকটা প্রতারণার ঘটনাও ঘটেছে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হাজী, হজ এজেন্সি ও হজ গাইডদের রিফান্ডের টাকা সরাসরি ব্যাংক হিসাবে বিইএফটিএন অথবা চেকের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। এজন্য কোনো ডেবিড বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা নগদের তথ্য চাওয়া হয় না। প্রতারক চক্র ফোন করে টাকা ফেরতের কথা বলে এরূপ কোনো তথ্য চাইলে না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এছাড়া, এ ধরনের ফোন এলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করারও পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। ইতোপূর্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
মন্তব্য