পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় পদ্মা নদীতে যানবাহনসহ ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধার কাজ। এ ছাড়া এখনও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ন কবিরের।
গত দুদিনে উদ্ধারকারী তিনটি জাহাজ মিলে আরও একটি পণ্যবাহী ট্রাক উদ্ধার করেছে। এনিয়ে ডুবে যাওয়া ৯টি যানবাহনের মধ্যে ৪টি যানবাহন উদ্ধার করা হলো। কিন্তু হুমায়ন কোথায়, এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছোট-বড় ৯টি পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক) নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ফেরি রজনীগন্ধা। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে রাতে নোঙর করে রাখা হয় এই ফেরি।
এরপর বুধবার ভোর ৪টার দিকে ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে, সকাল ৮টার দিকে কাত হয়ে এবং ৯টি যানবাহন ও ২১জনকে নিয়ে ধীরে ধীরে ফেরিটি উল্টে যায়। ফেরিতে থাকা ২০জন ব্যক্তি পাড়ে ওঠতে পারলেও ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ন কবির নিখোঁজ হন।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা যায়, যানবাহন নিয়ে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধার স্বাভাবিক ওজন ছিল ২৫০ টন। কিন্তু ফেরিটি ডুবে যাওয়ার ফলে ওজন বেড়েছে এবং ফেরিতে প্রচুর বালি মাটি পড়েছে। এতে ফেরির ওজন প্রায় সাড়ে ৩০০ টনের মতো হয়ে গেছে। ফেরি যত বেশি ডুবে থাকবে তত বেশি ওজন বাড়বে। কিন্তু উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার ওজন ৫০ টন, রুস্তমের ওজন ৬০ টন এবং উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের ওজন ২৫০ টন।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, ডুবে যাওয়া ৯টি যানবাহনের মধ্যে গত পাঁচদিনে ৪টি পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুটি ট্রাকের সন্ধান পাওয়া গেছে। ফেরি উদ্ধারের জন্য সবার আগে ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধার করা হচ্ছে। যানবাহন উদ্ধার করা হলে ফেরিটি উদ্ধার করা সহজ হবে।
তিনি বলেন, ডুবে যাওয়া যানবাহনের সন্ধান পেতে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করতে ঝিনাই নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ এসে কাজ শুরু করেছে। কারণ নদীর পানি বেশি হওয়ায় ডুবে যাওয়া যানবাহনের সঠিক লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব ছিল না। এ কারণে উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য ঝিনাই যোগ দিয়েছে। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েই একটি ট্রাক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে এবং আরও দুটি ট্রাকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এরপর ফেরি উদ্ধার কাজ করা হবে।
খালেদ নেওয়াজ আরও বলেন, আমরা আশাবাদী, যানবাহন উদ্ধার শেষ হলে উদ্ধারকারী এসব জাহাজ ফেরিটিকে সোজা করবে। তারপর ফেরিটিকে পাড়ে নিয়ে আসা হবে। যদি ফেরিটির তলায় ফুটো বা তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে নদীতে ফেরি উল্টো করে, নদীতেই ফেরিটি মেরামত করা হবে। ফেরিটি যেহেতু নদীর পাড়ে ওঠাতে হবে না। এ কারণে আমাদের উদ্ধারকারী জাহাজগুলোই ফেরির জন্য যথেষ্ট।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-সংরক্ষণ পরিচালক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক এসএম আকবর আলী বলেন, উদ্ধার কাজে ঝিনাই যোগ হওয়ার পর আমাদের উদ্ধার কাজ সহজ হয়েছে। কারণ নদীতে পানি বেশি হওয়ায় ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের যানবাহনের সন্ধান পেতে কষ্ট হয়েছে। ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধার করতে সময় বেশি লাগছে। তবে এখন উদ্ধার কাজে বেশি সময় লাগবে না। আশা করা যাচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি যানবাহন উদ্ধার করতে পারব এবং ডুবে যাওয়া ফেরিটিও নদীর পাড়ে ভাসাতে পারব।
এদিকে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান ইমন জানান, উদ্ধার কাজে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও বিআইডব্লিউটিএর অর্ধশতাধিক ডুবুরি সদস্য কাজ করছেন। ফেরি ও যানবাহন উদ্ধার করতে ফেরির একপাশে বড় বড় ওয়্যার রোপ দিয়ে উদ্ধারকারী প্রত্যয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ফেরিটি কাত করে আরেক পাশে ওয়্যার রোপ যুক্ত করতে পারলে ফেরিটি ভাসানো সম্ভব।
তিনি জানান, কিন্তু প্রচণ্ড শীতের কারণে ডুবুরিরা পানিতে বেশিক্ষণ থাকতে পারছেন না। ঝুঁকি নিয়ে এই প্রচণ্ড শীতের ডুবুরি সদস্যদের কাজ করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও নিখোঁজ ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ন কবিরের সন্ধানেও কাজ চলছে।
জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, ফেরি ডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি। তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বললো এবং তদন্ত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৭ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩৫১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের জাতীয় বীর আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জামায়াত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
খুলনা নগরীর ইস্টার্ন জুট মিল শ্রমিক মাঠে জামায়াতের খানজাহান আলী থানা ইউনিটের কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদরা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা তাদের স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছে এবং স্বৈরাচারের অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই- যেখানে জাতি, দল, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এদেশের নাগরিক হিসেবে সব মানুষ মর্যাদার সঙ্গে তাদের ন্যায্য অধিকার ভোগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘শত শত ছাত্রের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বাংলার মাটিতে স্বৈরাচারীরা যাতে আর ফিরে আসতে না পারে, সেজন্য যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর বলেন, ‘দেশের মানুষ গত ১৭ বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ‘লগি-বৈঠা’র মাধ্যমে তাদের হত্যা যাত্রা শুরু করে।
‘ফ্যাসিবাদী এই শাসক বিডিআর বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন প্রতিভাবান সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে এবং তাদের অনেককে গুম করে- যা এ বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা এই অঞ্চলের সব পাটকল ও কৃষি জমি ধ্বংস করেছে। সব বন্ধ পাটকল পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি গাজী মোরশেদ মামুনের পরিচালনায় এবং থানা আমির সাঈদ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
জামায়াতের আমির এর আগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে মহিলা জামায়াত খুলনা সিটি ইউনিটের মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া গারো লাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গারো জনগোষ্ঠীর ওয়ানগালা উৎসব। রোববার সকালে ওয়ানগালা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে গারো সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী এই উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গারো জনগোষ্ঠী তাদের নতুন ফসল সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করেন।
ওয়ানগালা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় একসময় জুম চাষের মাধ্যমে বছরে মাত্র একটি ফসল ফলতো। তখন ওই জুম বা ধান ঘরে তোলার সময় গারোদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’-কে উৎসর্গ করে এ উৎসবের আয়োজন করা হতো।
মূলত গারোরা ছিল প্রকৃতিপূজারী। সময় পরিক্রমায় গারোরা ধীরে ধীরে খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রথাটি এখন ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে একত্রে পালন করা হয়। এক সময় তারা তাদের শস্য দেবতা মিসি সালজংকে উৎসর্গ করে ‘ওয়ানগালা’ পালন করলেও এখন তারা নতুন ফসল কেটে যিশু খ্রীষ্টকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করে থাকেন।
ওয়ানগালা উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রীতম দাস প্রমুখ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সিলেটে দায়ের করা দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছগির আহমেদ মামলা দুটি খারিজ করে তারেক রহমানকে খালাসের রায় দেন।
এর আগে ২০১৪ সালে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সিলেটে মামলা দুটি দায়ের করেন ছাত্রলীগের দুই নেতা।
মামলা খারিজের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে হাসিনা সরকারের আমলে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছিল। আজ আদালত দুটি মামলাই খারিজ করে দেন।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে এই দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর একটি করেছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান আহমদ চৌধুরী এবং অপরটি করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সে সময়ের সভাপতি শামীম মোল্লা।
আদালতের তৎকালীন বিচারক আনোয়ারুল হক মামলা দুটি গ্রহণ করে সরকারের অনুমোদনক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে সিলেটের শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
মামলা দুটিতে অভিযোগ করা হয়- ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিরোধিতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেন।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়া এক যুবককে হত্যার পর মরদেহ গুমের মামলায় সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেছে আদালত।
রোববার সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করলে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশরাফুজ্জামান জামিন না-মঞ্জুর করে সুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের মহাজনপাড়ার মৃত ইমাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা সদরের উত্তর দর্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নূরুল ইসলাম সুজনকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী মো. মনুর ছেলে আল আমিন পেশায় রিকশাচালক। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এজন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেয়া হতো।
এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আলামিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব প্লাবন পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে জখম করে। এতে রক্তাক্ত হয়ে আলামিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় আসামিরা। তখন থেকে আল আমিনের সন্ধান নেই।
মামলার বাদী মো. মনু বলেন, ‘আল আমিনের সঙ্গে সেদিন যারা ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই মামলা করেছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণমতে, আমি ধারণা করছি আমার ছেলেকে হত্যার পর তার মরদেহ গুম করে রাখা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।’
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে সড়কের পাশে বাজারের ব্যাগে ফেলে রাখা একটি ছেলে নবজাতক উদ্ধার হয়েছে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার বারাকপুর চুনাখোলা সড়কের পাশ থেকে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ ও সমাজ সেবা অধিদপ্তর শিশুটিকে উদ্ধার করে।
নবজাতকটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটি সুস্থ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে চুনাখোলা এলাকায় মোতালেব নামে এক পথচারী বাজারের ব্যাগ থেকে একটি শিশুর কান্নার আওয়াজ পান। এলাকার লোকজনকে সংবাদ দিলে নাজমা নামক এক নারী গিয়ে ব্যাগটিতে একটি নবজাতক দেখতে পান।
সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল মোকাররম মোহাম্মদ ফজলে এলাহী বলেন, ‘সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি যে সড়কের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি অজ্ঞাত নবজাতক পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। নবজাতকটি আপাতত এখানে থাকবে। পরবর্তীতে করণীয় বিষয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পার্শা সানজানা বলেন, ‘অজ্ঞাত একটি নবজাতককে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। নবজাতকটির ওজন প্রায় আড়াই কেজি। প্রাথমিকভাবে বাচ্চাটি সুস্থ মনে হলেও অভিভাবক না থাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের নাশকতা মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম দাশড়া ও সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের সলন্ডী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং পৌর আওয়ামী লীগের নেতা শরিফুল ইসলাম নান্টু।
পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ রফিক সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৯১ নেতাকমীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এস.এম আমান উল্লাহ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে রোববার বিকেলে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য