রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫ মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিকেল ৫টায় তিনি হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে রওনা হন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবনে পৌঁছার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান সেখানে আসেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে তিনি জানান, মেডিক্যাল বোর্ড আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত বছরের ৯ আগস্ট গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি বৃদ্ধি এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে গত বছরের ২৬ অক্টোবর ট্রান্সজুগার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক পদ্ধতিতে তার অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের চিকিৎসক হামিদ রব, ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস ও জেমস পি এ হ্যামিল্টন গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে টিআইপিএস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।
টিআইপিএস এমন একটি পদ্ধতি যা পোর্টাল শিরাগুলোকে নিম্ন চাপযুক্ত সংলগ্ন রক্তনালীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করতে একটি স্টেন্ট (টিউব) সন্নিবেশ করে। এটি রোগাক্রান্ত লিভারের মাধ্যমে প্রবাহিত রক্তের চাপ উপশম করে এবং রক্তপাত ও তরল ব্যাকআপ বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে। একটি টিআইপিএস পোর্টাল শিরার (পোর্টাল হাইপারটেনশন নামে পরিচিত) উচ্চ রক্তচাপকে উপশম করে, যা প্রায়শ লিভার সিরোসিসের বিন্যাসে ঘটে।
২০২১ সালের নভেম্বরে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারও তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি দিতে বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে আবেদন করেছে।
তবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির মামলায় সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে একাধিকবার তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৪ জন।
এদিকে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬০ জন ডেঙ্গু রোগী। এই সংখ্যাসহ চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪২ হাজার ৪৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে রোববার পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি একজন ময়মনসিংহ বিভাগের।
একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনে ৩২৮ ও বাকিরা ঢাকার বাইরে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৯৭ জন। আর জানুয়ারি থেকে রোববার ১৩ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন মোট ৩৮ হাজার ৬৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১ ও খুলনা বিভাগে ৭১ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে রোববার সকালে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের নতুন ভবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট কাজ করেছে। এ ছাড়াও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা আগুন নেভাতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এগিয়ে এসেছে।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন জানান, সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের নিচ তলায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। তীব্র ধোঁয়া হাসপাতাল ভবনের পুরো পাঁচ তলায় ছড়িয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন এসে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ধোঁয়া বের হওয়া বন্ধ হয়নি।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে থাকা প্রায় ৫০০ রোগীকে সরিয়ে নেয়া হয়। বর্তমানে রোগীদের হাসপাতালের বাইরে মাঠে রাখা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের পুরোনো ভবনে নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আগুনে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি হাসপাতালের উপপরিচালক।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন শামিম আহম্মেদ জানান, ধোঁয়ায় সব আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ার পর রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই তাড়াহুড়া করে বাইরে বের হয়ে আসতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিনা মূল্যে ৩৭ জন গরিব ও দুস্থ রোগীর চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়।
যৌথভাবে এ অপারেশন কার্যক্রমের আয়োজন করে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্ট ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে এ সার্জারিতে অংশ নেন ডা. অ্যান্থনি অ্যালবার্ট, ডা. তাসরুবা শাহনাজ, ডা. জেরিন পারভীন এবং ডা. নুসরাত লুবনা ইসলাম।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণগোবিন্দপুর ডিগ্রি কলেজে একটি আই ক্যাম্প করা হয়। সেখানে ১ হাজার ২০০ রোগীর চোখ পরীক্ষা করে ৪২০ জনকে অস্ত্রোপচারের জন্য বাছাই করা হয়। বৃহস্পতিবার সেই রোগীদের পঞ্চম ব্যাচের ৩৭ জনের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। এর মধ্যে ১৫ পুরুষ ও ২২ জন নারী রয়েছেন।
এ বিষয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আমরা বিনা মূল্যে রোগীদের চোখ অপারেশন করার এই কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা দেশের দূরদুরান্ত অঞ্চলে গিয়ে বিনা মূল্যে আই ক্যাম্প করি। সেখানে অপারেশনের রোগী বাছাই করে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি।
‘অপারেশন শেষে আবার তাদের নিজ বাড়িতে দিয়ে আসি। এ পুরো কার্যক্রমই আমরা আমাদের নিজ খরচে করে থাকি। আমি মনে করি এই কার্যক্রমে আমাদের সফলতা শতভাগ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষরা চোখ নিয়ে অবহেলা করেন। শিশুদের কিছু জন্মগত চোখের রোগ হয়, যেটা বাবা-মা বুঝতে পারেন না। পরবর্তী সময়ে শিশু যখন স্কুলে যায় তখন সেসব সমস্যা ধরা পড়ে।
‘তাই শিশুদের পাঁচ বছরের আগে চোখের স্ক্রিনিং করে নেয়া দরকার। এ ছাড়া ৪০ বছরের পরে চোখের ছানি পড়াসহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাদেরও নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো দরকার, যাতে চোখ ভালো থাকে এবং ভালোভাবে দেখতে পায়।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বসুন্ধরা আই হসপিটালে চোখের ছানির অস্ত্রোপচার করাতে আসা মো. ইকরামুল হক বলেন, ‘এই কার্যক্রমটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ। মানবসেবা সবচেয়ে বড় ধর্ম।
‘এ ধর্মটা সবাই পালন করতে পারেন না। বসুন্ধরা আই হসপিটাল সেটা করতে পারছে। এখানকার ডাক্তারসহ অন্যান্যদের ব্যবহার খুবই চমৎকার। তারা রোগীদের বাবা-চাচা-ভাইয়ের মতো করে সেবা যত্ন করেন। তাদের ব্যবহার অতুলনীয়, যেন সবাই তাদের আপনজন।’
একই এলাকা থেকে অস্ত্রোপচার করতে আসা মোমেনা বেগম বলেন, ‘আমি আগে চোখে ঝাপসা দেখতাম। টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারিনি। আমাদের এলাকার একজনের কাছে খবর পেয়ে আই ক্যাম্পে বিনা মূল্যে চোখ পরীক্ষা করাতে যাই। পরে তারা চোখ পরীক্ষা করে অপারেশনের জন্য নিয়ে আসে।
‘আমার কোনো খরচ হয়নি। এখন আবার আমি ঠিকভাবে দেখতে পারব। আল্লাহ এদের ভালো করুক।’
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজার (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, ‘গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগে থেকেই এ ধরনের কার্যক্রম চলমান আছে।
‘সারা দেশে বিনা মূল্যে এ ক্যাম্পটি অনুষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত এই ক্যাম্পের মাধ্যমে তিন হাজার ১৪৫ জনের বেশি রোগীর চোখ বিনা মূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত রমজান মিয়া জীবন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল ৩টার দিকে মারা যান তিনি।
জীবন পুরান ঢাকার বংশালের আলুবাজার এলাকায় স্যান্ডেল তৈরির একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
জীবনের চাচা মোহাম্মদ রোমান মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের পাঠানহাটি গ্রামে। ওর বাবার নাম মোহাম্মদ জামাল মিয়া। ভাই-ভাবী পরিবার নিয়ে মিরপুরের লালমাটি এলাকায় থাকেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে জীবন ছিল তৃতীয়। ওর স্ত্রী সাহারা খাতুন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওর বাবা নর্দা এলাকার একটি বাসার নিরাপত্তা কর্মী।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবন বিএনপির কর্মী ছিল। ৫ আগস্ট মিরপুরের বাসায় যাওয়ার কথা বলে সকালে সে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে। পরে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের আশপাশের এলাকায় বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে আহত হয় সে। পরে লোকজন তাকে রিকশায় ঢামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
‘সংবাদ শুনে ঢামেক হাসপাতালে এসে শতাধিক আহতের মাঝে ওকে খুঁজে পাই। শুনেছি ওর মাথায় গুলি লেগেছে। জ্ঞান ছিল না। আর জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে আজ ছেলেটা একেবারে চলেই গেল।’
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৯৬ জন। তাদের মধ্যে ৯৮ জন পুরুষ ও ৯৮ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮২২ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। এই সময়ে ৯৩৯ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে আহত অবস্থায় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি এম এ লতিফ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাথরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। বর্তমানে তিনি নিউরোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
চমেক সূত্র জানায়, এম এ লতিফ মাথায় আঘাত পেয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্তের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসা চলছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে এখানে আনা হয়েছে। তিনি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার মাথায় একটা সমস্যা পাওয়া গেছে। সমস্যাটা হলো ব্রেনে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে, যেটাকে আমরা চিকিৎসা ভাষায় হেমাটোমা বলি। এছাড়া তিনি বাইপাসের রোগী। তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন।’
এ বিষয়ে কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘এম এ লতিফ অজু করতে গিয়ে বাথরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান। এই ঘটনাকে অন্যভাবে বলে গুজব রটানো হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১৬ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে এম এ লতিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এরশাদ নামে এক ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনায় এম এ লতিফসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৯৩ জন। তাদের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ ও ৯৭ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৮৯ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী। এই সময়ে ৯৭১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
মন্তব্য