× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
29 candidates across the country boycotted the vote
google_news print-icon

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা

২০-জেলায়-৪২-প্রার্থীর-ভোট-বর্জনের-ঘোষণা
রোববার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ছবি: নিউজবাংলা
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশের ২০ জেলা থেকে ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। নিউজবাংলার সারা দেশের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এসব খবর জানা গেছে। এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন আসন থেকে মোট সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া কুমিল্লায় পাঁচজন, কক্সবাজারে চারজন, ময়মনসিংহে চারজন, পাবনার তিনজন খুলনা, নড়াইল, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে দুইজন করে প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের কথা জানতে পেরেছে নিউজবাংলা।

ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সারা দেশ থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে এসব ঘোষণা আসে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশের ২০ জেলা থেকে ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। নিউজবাংলার সারা দেশের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এসব খবর জানা গেছে। এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন আসন থেকে মোট সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া কুমিল্লায় পাঁচজন, কক্সবাজারে চারজন, ময়মনসিংহে চারজন, পাবনার তিনজন খুলনা, নড়াইল, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে দুইজন করে প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের কথা জানতে পেরেছে নিউজবাংলা।

সিলেট থেকে সাত প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা

ভোটের দিন দুপুরে নানা অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন সিলেট জেলার বিভিন্ন আসনের অন্তত সাতজন প্রার্থী। এদের মধ্যে সিলেট-২ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে একযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান চার প্রার্থী।

সিলেট-২: বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা নিয়ে গড়া এ আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থীরা হলেন- গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া চৌধুরী এবং তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব (সোনালী আঁশ)।

রোববার দুপুরে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
সিলেট-২ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে একযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান চার প্রার্থী। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট-৪: এদিকে প্রায় একই সময়ে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এবং জৈন্তাপুর) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

সিলেট-৩: এ আসনের অন্তর্গত বালাগঞ্জ উপজেলার দুটি ভোটকেন্দ্রের ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক)।

কেন্দ্রগুলো হল-বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বোয়ালজুড় বাজার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র।

দুপুরে ডা. দুলাল উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় বাজার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে। আর সোনাপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জাল ভোট প্রদানের অভিযোগ পেয়েছি।’

এসব ঘটনায় ডা. দুলাল নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের অভিযুক্ত করেছেন।

এ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিকও ভোট বর্জন করেছেন। বিকাল পৌনে ৫টায় তিনি নিজে তথ্যটি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।

কুমিল্লায় ৫ প্রার্থীর ভোট বর্জন

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে কুমিল্লা জেলাজুড়ে মোট ৫ প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। ওইসব কেন্দ্রের সবকটিতেই জালভোট হচ্ছে দাবি করে আরেক প্রার্থী পুনরায় ভোট গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

কুমিল্লা-১: কুমিল্লা-১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের আমির হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন করেন। নির্বাচনে তারা ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করেন।

কুমিল্লা-১১: এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান ভোট বর্জনের ঘোষণায় বলেছেন, ‘ভোটের পরিবেশ নেই।’

মিজানুর রহমানের ভোট বর্জনের ঘোষণার পর চৌদ্দগ্রামে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

কুমিল্লা-৭: কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইগল প্রতীকের মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি চান্দিনার ৮৯টি কেন্দ্রেই জালভোটের অভিযোগ তুলেছেন।

কুমিল্লা-১০: এ ছাড়া কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসনে নির্বাচন বর্জন করেছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোনাকি মুন্সি।

এদিকে অনিয়মের দায়ে জেলার ৭ টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।

কুমিল্লার এনডিসি কানিজ ফাতিমা বলেন, ‘প্রার্থীদের কেউ আমাদের লিখিতভাবে ভোট বর্জনের কথা জানায়নি। তবে একজনকে ভোট বর্জন করতে ভার্চুয়ালি দেখেছি।’

কক্সবাজারের তিন আসনে ৪ প্রার্থীর ভোট বর্জন

কক্সবাজারে তিনটি আসনে তিন স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির (জাপা) এক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।

কক্সবাজার-৪: ভোট চলাকালে রোববার দুপুর একটার দিকে প্রথম ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়, কিন্তু যেসব কেন্দ্রে আমি ভোট পাব, সেসব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে, উখিয়ার জালিয়াপালং, রত্নপালং ও রাজাপালং ইউনিয়ন থেকে আমার সব এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়।

‘বিষয়টি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই সঙ্গে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট প্রদান ও কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। তাই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের সামনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-৪ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমীন সিকদার ভুট্টো। ছবি: সংগৃহীত

বেলা তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের নুরুল বশর। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতি, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেয়া ও নজিরবিহীন অনিয়ম, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পক্ষপাতিত্ব করে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তাই আমি এই ভোট বর্জন করলাম।’

কক্সবাজার-১: বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিওবার্তায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি জাফর আলম। তিনি বলেন,‘কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়। অনেক প্রিসাইডিং অফিসারকেও আহত করা হয়। তাই আমি ভোট বর্জন করলাম।’

ওই সময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে চকরিয়া-পেকুয়াবাসীর কাছে ক্ষমা চান।

কক্সবাজার-৩: সদর-রামু-ঈদগাঁও এলাকার এ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ ভোট বর্জন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

বেলা দুইটার দিকে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-৩ আসনে ১৬৭টি কেন্দ্রের মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতৃত্বে ১৩০টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালেট পেপারে জোরপূর্বক সিল মারা হচ্ছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়।

‘আবেদনে ভোট স্থগিত করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ভোট বর্জন করলাম।’

চট্টগ্রাম-১২: পটিয়ার এ আসন থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙর প্রতীকের প্রার্থী এম এয়াকুব আলী। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি ভোটে প্রভাব বিস্তার, নোঙ্গর প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তিনি।

রোববার বিকেল তিনটার দিকে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিনখাইন এলাকায় তার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেন এয়াকুব আলী।

তিনি বলেন, ‘আমার অধিকাংশ কেন্দ্রের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটার ও কর্মীদের হুমকি দেয়া হয়েছে। সবকটি কেন্দ্র দখল করে নেয়া হয়েছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাসে আমি প্রার্থী হয়েছি, কিন্তু তারা তাদের কমিটমেন্ট রাখেনি। তারা আবারও প্রমাণ করছে, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, ‘হয়ত ১০-১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু তারা ৫০ শতাংশ ভোট দেখানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।’

ঢাকা-২ আসনে ডা. হাবিবুর রহমানের ভোট বর্জন

কেন্দ্রে অনিয়ম, ভোটারদের মারপিট, পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেয়াসহ নানা অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ, কামরাঙীরচর-সাভার একাংশ) আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. হাবিবুর রহমান।

রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার নিজ বাসভবন থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ট্রাক প্রতীকের এ প্রার্থী।

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ঢাকা-২ আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. হাবিবুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা

সংবাদ সম্মেলনে ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম, ভোটারদের মারপিট, পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেয়া এবং নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি। আমার পরিবার ও নেতা-কর্মীদের কথা চিন্তা করে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এ আসনে প্রার্থী বাকি তিন প্রার্থী হলেন- ইসলামী ঐক্যজোটের (মিনার প্রতীক) আশ্রাফ আলী জিহাদী, জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল প্রতীক) শাকিল আহমেদ এবং আওয়ামী লীগের (নৌকা) অ্যাডভেকেট কামরুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জ-২: নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে প্রায় সব কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর শিকদার লোটন।

রোববার তার নিজ এলাকায় রামচন্দ্রদী কেন্দ্রে নৌকার এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সেখানে বাদানুবাদ ঘটে। এ বাদানুবাদের একপর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে গুলি ছুড়লে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এ কারণে নির্বাচন বর্জন করেন তিনি।

খুলনায় দুই প্রার্থীর ভোট বর্জন

খুলনা-১ ও ৩ আসনের দুই প্রার্থী ভোট বর্জানের ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের শেষ দিকে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট বর্জনের কথা জানান। যদি এই দুটি আসনে আওয়ামী লীগের কোন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

খুলনা-১: খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সাড়ে ৩টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

‘দাকোপ উপজেলার বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রে এজেন্টদের ও আমার ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় তারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হননি। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রে সরজমিনে গিয়ে খুব কম সংখ্যক ভোটার পেয়েছি। তাতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করছি। কিন্তু ১২টার দিকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারি, ৬০ শতাংশ ভোট কাউন্ট হয়েছে। তাই প্রহসনের ভোট আমি বর্জন করছি।’

খুলনা-৩: অন্যদিকে খুলনা-৩ আসনের (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী বেলা ৩টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘সব সেন্টারে জালিয়াতি হচ্ছে। আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে, আটকে রাখা হয়েছে। প্রশাসন নীরব ভূমিক পালন করছে। ভোট চুরির সময় আমি নিজে গিয়ে ধরেছি…. এ কারণে আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।’

যশোর-১: নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৫৫টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগে এনে ভোট বর্জন করেছেন যশোর-১ আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন।

রোববার বেলা ১১টার দিকে বেনাপোল মাদ্রাসা কেন্দ্রের পাশে নিজের একটি নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন লিটন।

লিটন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোলের সাবেক পৌর মেয়র।

নড়াইল-২ আসনে ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন

ভোটগ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন।

রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

একই অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিকের লায়ন নূর ইসলামও ভোট বর্জন করেছেন।

বিকেল তিনটার পর ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন এ প্রার্থী।

ময়মনসিংহে চার প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা

ভোট শুরুর পর থেকে বিকেলের মধ্যে ময়মনসিংহের মোট চারজন প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ময়মনসিংহ-১০ আসনের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ময়মনসিংহ-২ ও ৭ আসন থেকে যথাক্রমে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।

ময়মনসিংহ-১০: গফরগাঁওয়ের এ আসনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট কায়সার আহাম্মদ এবং ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আবুল হোসেন দীপু নির্বাচন বর্জন করেছেন।

রোববার সকালে কায়সার আহাম্মদ গফরগাঁওয়ের ধামাইলে তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। অপর প্রার্থী আবুল হোসেন দীপু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। পরে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে কায়সার আহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সকাল থেকেই নৌকার কর্মী-সমর্থকরা প্রতিটি কেন্দ্রে ঢুকে ভয় দেখিয়ে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারার মহোৎসব করছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকার এজেন্ট এবং কর্মী-সমর্থকরা নৌকায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখছে।’

প্রশাসনকে জানিয়েও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি উল্লেখ করে কায়সার আহাম্মদ এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় এ আসনে নির্বাচন দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।

অপরদিকে সাংবাদিকদের আবুল হোসেন দীপু বলেন, ‘গফরগাঁওয়ের প্রতিটি কেন্দ্র এবং পাগলা থানার বেশিরভাগ কেন্দ্র তাদের দখলে চলে গেছে এবং তারা জোরপূর্বক ভোট দিচ্ছে। এখানে প্রশাসন নীরব। আমি জেলা রিটার্নিং অফিসার, ইউএনও, সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করেছি। কেউ কোনো ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসনও নীরব। সুতরাং এই নির্বাচন অর্থহীন। ভোট দেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নিরাপত্তা না থাকায় আমি এই আসন থেকে আমার ট্রাক প্রতীকের যে প্রার্থিতা, তা বর্জনের ঘোষণা দিলাম।’

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
‘কালোটাকা ছড়ানো’র অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ময়মনসিংহ-৭ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ডক্টর আব্দুল মালেক ফরাজি। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ-২: একই ধরনের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এনায়েত হোসেন মন্ডল।

রোববার দুপুর ২টার দিকে ভোট বর্জন করার ঘোষণা দেন এনায়েত হোসেন মন্ডল।

ময়মনসিংহ-৭: ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ডক্টর আব্দুল মালেক ফরাজি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। কিন্তু এ নিয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেই। তাই আমি ভোট বর্জন করে এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

জামালপুরে দুটি আসনে ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ -মাদারগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মীর শামসুল আলম লিপ্টন ও জামালপুর-৫ (সদর) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ভোট বর্জন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

এ সময় প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।’

জামালপুর-৫ সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, এজেন্ট বের করে দেয়াসহ ভয়াবহ ভোট ডাকাতি এবং প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে ভোট স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছেন।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে লাঙ্গলের ভোট বর্জন

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী জাল ভোটের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন।

রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে তিনি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

এ সময় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোট দিতে এসে বাধার মুখে পড়েন। সবার সামনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ানো হচ্ছে, জাল ভোট দেয়া হচ্ছে। এই দেশে মানুষের ভোটের অধিকার নেই- তার প্রমাণ আজ সবাই দেখতে পেলেন।’

মৌলভীবাজার-২ আসনে ট্রাক ও পাট প্রতীকের প্রার্থীর ভোট বর্জন

মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ একেএম সফি আহমদ সলমান ও তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী এম এম শাহীন।

রোববার বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে তারা এ ঘোষণা দেন।

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সলমান বলেন, ‘কুলাউড়ার প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম এবং জাল ভোট দেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। ভোট চলাকালে এসব অনিয়মের কথা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকতাদের অবহিত করার পর‌ও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভোট চলাকালীন সময়ে এজেন্টদের তালা দিয়ে কেদ্র দখল করে ভোট কারচুপি করা হয়। বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেটরা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর দখল করে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। এ জন্য আমি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি।’

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এমএম শাহীন। রোববার দুপুরে এ বিষয়ে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত

অপরদিকে এম এম শাহীন বলেন, ‘ভোটের দিন নৌকা মার্কার সমর্থকরা জাল ভোট দিচ্ছেন। একইসঙ্গে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন কেন্দ্র থেকে। নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বললেও ভোটের দিন দুপুর থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পরিবেশ আর থাকেনি। এ জন্য আমি ভোট বর্জন করলাম।’

বাগেরহাট-৪: জাল ভোট, কর্মী-সমর্থকদের মারিপট, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ- শরনখোলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জামিন হোসাইন ভোট বর্জনের করেছেন।

রোববার দুপুরে তিনি নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঈগল প্রতিকের প্রার্থী জামিল হোসাইন জানান, উল্লিখিত অনিয়মের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েচেন তিনি। এ সময় তার সহধর্মিণী শেখ শারমিন রিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

টাঙ্গাইল-২: টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আস‌নে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু জাল ভোট, এজেন্ট‌দের মারধরসহ বি‌ভিন্ন অভি‌যো‌গ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দি‌য়ে‌ছেন।

রোববার দুপু‌রে গোপালপুর উপ‌জেলার ঝাওয়াইল বাজার প্রচার প্রচারণার নির্বাচন অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

ঠান্ডুর অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর হাসান ছোটমনিরের কর্মী সমর্থকরা ঈগল প্রতীকের কর্মীদের ব্যাপক মারধর করে। ঈগলের এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি। অনেকের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে বহু কর্মীকে আহত করে। স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’

এ বিষয়ে জানতে জেলা পু‌লিশ সুপার‌কে একাধিকবার ফোন কর‌লেও তি‌নি তা রি‌সিভ ক‌রে‌ননি।

চাঁদপুর-৪: নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চাঁদপুর-৪ আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সাজ্জাদ রশিদ।

রোববার দুপুর ২টার দিকে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় সাজ্জাদ রশিদ বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাত থেকে আমার বাড়ির সামনে ককটেল ফুটিয়ে আমার ভোটার ও এজেন্টদের হুমকি-ধামকি দিয়ে ভীতি সঞ্চার করে আসছে। আমার গাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমার কর্মীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করেও এর কোনো প্রতিকার পাইনি।’

প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, ‘এই কি আপনাদের ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন? এমতাবস্থায় আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩: এ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল মতিন ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের ফেসবুকে ৫৬ সেকেন্ডের লাইভে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি, তাদেরকে (এজেন্ট ও কর্মী) বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় গিয়ে হামলার ভাব দেখতে পাই। সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে নোঙ্গর প্রতীকের এজেন্ট নেই।’

কিন্তু কাকে বা কাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে ফেসবুক লাইভটি থেকে সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি নিউজবাংলা।

ফেনী-৩: ১৪ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জাল ভোট ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন ফেনী-৩ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ।

রোববার বেলা একটার দিকে দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় রহিম উল্যাহ বলেন, ‘৯০ ভাগ কেন্দ্রে লাঙ্গলের এজেন্ট ও সমর্থকরা আমার সকল এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের এজেন্ট ফর্ম ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। এক ভাগ ভোটও সুষ্ঠু হচ্ছে না। আমি পুলিশ সুপার, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সকলকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি।’

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, ‘কোথাও কোনো প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদেরকে বাধা দেয়া ঘটনা ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।’

ভোট বর্জন করলেন পাবনার তিন প্রার্থী

চুরি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচনকে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ বলে পাবনা-২ আসনের বিএনএমের প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী, পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ও পাবনা-৫ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেন ভোট বর্জন করেছেন।

পাবনা-২: চুরি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পাবনা-২ আসনের নোঙর প্রতীকের বিএনএম-এর প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস।

রোববার দুপুর আড়াইটায় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে ভোট বর্জনের ঘেষণা দেন ডলি সায়ন্তনী।

এ বিষয়ে তিনি সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ডলি সায়ন্তনী জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তা দেখে নৌকার লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিজয় নিশ্চিত করার জন্য নৌকার পোলিং এজেন্ট ও বাইরের সমর্থকরা ব্যালট পেপার নিয়ে জোর করে নৌকায় সিল মারতে থাকেন। গোপালপুর স্কুল, ভবানীপুর স্কুল, জাহানা কাঞ্চন উচ্চ বিদ্যালয়, শান্তিপুর স্কুল, চিনাখড়া হাইস্কুল কেন্দ্রে ৬০-৭০ শতাংশ ভোট কেটে নেয়া হয়।

এসব ঘটনার অনেক ফুটেজ মোবাইলে ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ডলি।

২০ জেলায় ৪২ প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
ভোট বর্জনের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডলি সায়ন্তনী। ছবি: সংগৃহীত

পাবনা-৪: এ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ভোট বর্জন প্রসঙ্গে বলেন, ‘সকাল থেকেই পাবনা-৪ আসনের লক্ষীকুণ্ডা, দাশুড়িয়া, আটঘরিয়ার বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে শুরু করে নৌকার লোকজন। তারা প্রকাশ্যেই ভোটারদের সিল দিতে বাধ্য করেন। এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। তাই আমি এই নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন বর্জন করেছি। এই ভোট বাতিল হওয়া উচিৎ।’

এদিকে পাবনা-৫ আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেনও একই অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

লালমনিরহাট-২: লালমনিরহাট-২ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রাথী দেলোয়ার হোসেন দুপুর ১২টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘ভোটে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট ও পেশি শক্তির প্রয়োগ হচ্ছে। বিষয়গুলো প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনা হলেও তারা কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় ভোট বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি। এভাবে তো আর ভোটে থাকা যায় না।’

আরও পড়ুন:
ভোট শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে বাতিল এমপি মোস্তাফিজুরের প্রার্থিতা
খুলনায় ভোটকেন্দ্রের সামনে থেকে ককটেল সদৃশ বস্তু উদ্ধার
মাটিতে পড়ে গিয়েও সাহায্য নিয়ে ভোট দিলেন বৃদ্ধ 
৭ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ২৭%
ভোট শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে বর্জনের ঘোষণা জাপা প্রার্থীর

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Government is committed to organizing elections within the stipulated time Chief Advisor

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: বাসস
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।

ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।

তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।

ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।

আরও পড়ুন:
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশোধনী পাসসহ উপদেষ্টা পরিষদে বেশকিছু সিদ্ধান্ত
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট হবে বাস্তবসম্মত ও যুক্তিসঙ্গত: অর্থ উপদেষ্টা
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
সেনাবাহিনীকে পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The chief adviser

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: ইউএনবি
আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

এর আগে গত ১৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন ও কী ধরনের সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।

আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবস্থার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার আজকের মূল নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা, পুলিশের জন্য নতুন ৩৬৪টি পিকআপ ও ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়া, পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পের ৭০ শতাংশের নিচে সম্পাদিত হওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড় করা, ভাড়াকৃত ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় করা এবং পুলিশের এসআই ও এএসআই পদবির কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেল কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের বিষয়টি বিবেচনা করা।

কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে জেলা পুলিশকে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও তিনি নিম্ন কর্মদক্ষতার ইউনিটগুলোর কর্মক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেন।

আরও পড়ুন:
সেনাবাহিনীকে পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক জাতিসংঘ মহাসচিবের
নওগাঁয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের লাল কার্ড

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Elections from December to December of this year Chief Advisor

এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি সংস্কার কার্যক্রম আমাদের প্রত্যাশিত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ভর করবে সরকার গৃহীত প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।

তিনি সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যদি সংস্কার কার্যক্রম আমাদের প্রত্যাশিত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যখন তাকে দায়িত্ব নিতে বলা হয়, তখন তিনি ‘হতচকিত’ বোধ করেন।

বিবিসিকে ড. ইউনূস বলেন,‘আমি কখনও ভাবিনি যে আমি সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেব। আমি আগে কখনও প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলাম না। তাই সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমাকে উপায়গুলো খুঁজে নিতে হয়েছে।

‘যখন বিষয়টি ঠিক হলো, তখন আমরা সংগঠিতভাবে কাজ শুরু করলাম।’

শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমার কাছে দেশের জন্য আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতি পুনর্গঠন মূল অগ্রাধিকার ছিল।’

বিবিসির আজকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়, যা অধ্যাপক ইউনূস এ বছরের শেষের দিকে আয়োজনের আশা করছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

ঢাকার সরকারি বাসভবনে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় কি না। আমি তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন,‘নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি অর্থনীতি। এটি একটি বিচূর্ণ অর্থনীতি, একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি।

‘এমন মনে হচ্ছে যেন গত ১৬ বছর ধরে কোনো ভয়ংকর টর্নেডো চলছে আর আমরা এখন সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

আরও পড়ুন:
শ্রম আইনকে বিশ্বমানের করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
সরকারি প্রাথমিকে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষকের যোগদান ১২ মার্চ
হাসিনার নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা দরকার: প্রধান উপদেষ্টা
শেখ পরিবারের নামে থাকা ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Before the advisor to the local government election

আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে উপদেষ্টা আসিফ

আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে উপদেষ্টা আসিফ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ফাইল ছবি
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মত তুলে ধরেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’

অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের দাবি উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারাও এ মতের পক্ষে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন।

‘সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো অ্যাড্রেস করেছি।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যেকেই মূল দায়িত্বের বাইরে কিছু না কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অতিরিক্ত সময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সমস্যাটা হলো একজন অফিসার যখন নিজ দায়িত্বের বাইরে আরও দুই-তিনটা দায়িত্ব পালন করেন, তার পক্ষে কোনোটাই যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, যে কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে নিয়ে আসা উচিত।’

অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়েও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা এখনও চলমান আছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও সরকার নেয়নি।

‘আশা করছি খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় আমরা দ্রুতই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করব, অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’

আরও পড়ুন:
দেশ গড়তে তরুণদের দেওয়া সুযোগ যেন গ্রহণ করি: ফখরুল
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে মাথাব্যথা নেই, সংস্কার আগে: জামায়াত
ক্ষমতায় যে দলই আসুক, মিলেমিশে কাজ করব: মির্জা আব্বাস
ডিসেম্বরে নির্বাচনের জন্য অক্টোবরের মধ্যে আইন-কানুন ঠিক করতে হবে: সিইসি
অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে বদ্ধপরিকর সরকার: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The importance of the chief adviser in the process of ensuring free and fair elections

অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াব বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: পিআইডি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।

বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ অভিমত দেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‌‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল।’

তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।

ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কী ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’

বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।

আরও পড়ুন:
ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসায় আল গোর
পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ইসিবির সহায়তা চান ড. ইউনূস
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ
সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনে দুর্নীতি কমবে: বদিউল আলম
সংস্কার ও নির্বাচন সমান্তরালে এগিয়ে যেতে পারে: ফখরুল

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Corruption in elections will be reduced if recommendations are implemented Badiul Alam

সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনে দুর্নীতি কমবে: বদিউল আলম

সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনে দুর্নীতি কমবে: বদিউল আলম নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। ফাইল ছবি
বদিউল আলম বলেন, ‘হত্যাকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। এটা জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।’

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নয়, নির্বাচন ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে।

কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যাবে বলে প্রকাশ করেন তিনি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দেওয়া প্রস্তাব ও তা বাস্তবায়নে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের করণীয় নিয়ে এ বিটের সাংবাদিকদের সংগঠনের (আরএফইডি) সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি; বরং এ সংস্থার ক্ষমতায়নে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।’

ফেরারি আসামি, বিচারিক আদালতে দোষী হলেই অযোগ্য, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত বা অর্থ পাচারকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

বিষয়টি বিতর্কিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, ‘হত্যাকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। এটা জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহিতায় আনতে গিয়ে তাদের ক্ষমতা খর্ব হবে না বলেও মত দেন তিনি।

এদিকে আরেক অনুষ্ঠানে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র। চোখ এবং আঙুলে ক্ষতিগ্রস্তদের ইসির নির্দেশনায় দেওয়া হবে এনআইডি। নতুন ভোটার ছাড়াও স্মার্ট কার্ড এবং ভুল সংশোধনের সুযোগও পাবেন আহতরা।

‘এ ছাড়াও সারা দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা পাবেন এ সেবা।’

আরও পড়ুন:
সংস্কার ও নির্বাচন সমান্তরালে এগিয়ে যেতে পারে: ফখরুল
সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি: সিইসি
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের জয়
আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে কি না, বলে দেবে সময়: সিইসি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Election preparation within the time frame announced by the government CEC

সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি: সিইসি

সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি: সিইসি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রবিবার এক অনুষ্ঠানে সিইসিসহ সংশ্লিষ্টরা। ছবি: ইউএনবি
নির্বাচন ভবনের অনুষ্ঠানে সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‌‘আমরা বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছি।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাছির উদ্দিন।

রাজধানীর আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে রবিবার এক অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা জানান।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে কম সংস্কার হলে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে।

নির্বাচন ভবনের অনুষ্ঠানে সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‌‘আমরা বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছি।’

ওই সময় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে সব সন্দেহ দূর করতে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘সংশয় দূর করার জন্য আমরা এটা (ভোটার তালিকা হালনাগাদ) করছি। আমরা মাঠে অনেক মানুষকে সম্পৃক্ত করছি।’

সারা দেশে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কিছু উপকরণ সহায়তা দেয় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০টি স্ক্যানার ও ৪ হাজার ৩০০ ব্যাগ সিইসির কাছে হস্তান্তর করেন।

নাছির উদ্দিন জানান, তারা ছয় মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ বিশাল এ কর্মসূচিতে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, ‘এই ছয় মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য আমাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে হবে।’

চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, তারা রাজনৈতিক বক্তব্য (বিতর্ক) করেন না এবং আইন ও বিধিবিধানের মধ্যে থাকবেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’

ইউএনডিপির সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, তারা আমাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’

আরও পড়ুন:
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের জয়
আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে কি না, বলে দেবে সময়: সিইসি
সংসদীয় পদ্ধতিতে সব নির্বাচনের প্রস্তাব দেবে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন
ভোটবঞ্চনার দুঃখ ঘোচানোর অঙ্গীকার সিইসির

মন্তব্য

p
উপরে