বিনা মূল্যের বই বিতরণে টাকা নেয়ার অভিযোগ নিয়ে নিউজবাংলাসহ কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে।
মহাদেবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি বুধবার বিকেলে প্রকাশ করা হয়, যাতে বই বিতরণের সময় টাকা আদায় ও টাকা ছাড়া বই না দেয়ার বিষয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয় প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে।
নোটিশে রাজিফা আকতারসহ রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের বই না পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পুস্তক বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘নওগাঁয় বিনা মূল্যের বই বিতরণে টাকা নেয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে বুধবার দুপুরে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা। একই বিষয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়।
নিউজবাংলার প্রতিবেদনে টাকা দিতে না পারায় রাজিফা নামের ছাত্রী বই পায়নি বলে যে অভিযোগ করে, সেটি তুলে ধরা হয়। শিক্ষা কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষককে শোকজ পাঠানোর পর সেই রাজিফা বই পেয়েছে বলে জানান তার মা শাহিদা বেগম।
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে নতুন বই দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা আমাদের পাশে ছিলেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
নতুন বই পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রাজিফা বলে, ‘ভাইয়া, আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনারা যদি সংবাদ প্রকাশ না করতেন, যদি পাশে না দাঁড়াতেন, তবে হয়তো বই পেতাম না।
‘আমরা অনেক খুশি। নতুন বই নিয়ে স্কুলে যাব সবাই মিলে। মন দিয়ে পড়াশোনা করব।’
যা আছে নোটিশে
কারণ দর্শানোর নোটিশে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের উদ্দেশে বলা হয়, ‘সোমবার বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উপলক্ষে বই উৎসব পালনকালে রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে সেশন চার্জ ও অন্যান্য বাবদ অর্থ আদায় করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী সেশন চার্জ প্রদান করতে পারেনি তাদেরকে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হয়নি এই মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
‘অর্থ আদায় ও শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক প্রদান না করা সরকারি নীতিমালার পরিপন্থি। এ অবস্থায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জবাবপত্র প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের নিকট দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার ভাষ্য
জানতে চাইলে রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে তাকে তিন কার্যদিবসর মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। যেহেতু হাতে সময় আছে, এখনও নোটিশের কোনো জবাব দেননি, তবে তিন কার্যদিবসের মধ্যে এর লিখিত জবাব দেবে। তা ছাড়া যারা বছরের প্রথম দিনে বই পায়নি, তাদের সবাইকে বই দেয়া হয়েছে।
মহাদেবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে প্রধান শিক্ষককে। সব শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে বই পাবেন। যারা বই পায়নি বা যাদের দেয়া হয়নি, তাদের সবার হাতে বই তুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
নিউজবাংলার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ
নিউজবাংলায় বুধবার দুপুরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্কুলছাত্রী রাজিফাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘স্যার টাকা ছাড়া বই দিবে না। তাই কান্না করতে করতে বাড়ি এসে মাকে বলেছি, স্যার বই দেইনি মা। স্যার টাকা দিয়ে যেতে বলেছে।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজিফাসহ একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের অভিযোগ, স্কুল থেকে নতুন বই পেতে স্লিপ দিয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ টাকা নেয়া হয়েছে ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ। সেই স্লিপ দেখিয়ে বই সংগ্রহের পর আবারও নিয়ে নেয়া হয়েছে স্লিপ।
অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, বিষয়টি জানার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তারা প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।
আরও পড়ুন:পতিত সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রিমান্ড চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা পলক।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফারুক জানান, হেফাজতে থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিলে শনিবার রাত ৯টার দিকে জুনাইদ আহমেদ পলককে হাসপাতালে আনা হয়।
প্রসঙ্গত, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন রাজধানীর পল্টনে কামাল মিয়া নামে এক রিকশাচালক হত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর আরও একাধিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশ থেকে তাদের ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ’ বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
নূর হোসেন চত্বর নামে পরিচিত জিরো পয়েন্টে রোববার ভোর থেকেই নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যার জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানান তারা।
আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার শহীদ নূর হোসেন দিবস পালনের ঘোষণা দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের জিরো পয়েন্টে আসার আহ্বান জানায়।
এরপর তাদের প্রতিহত করতে পাল্টা সমাবেশ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
এদিকে শহীদ নূর হোসেন দিবসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের সারাদেশে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীতে সচিবালয়ের আশপাশ এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিসের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কিছু ব্যক্তিকে মারধর করতে দেখা যায় পুলিশকে। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেখানে কর্তব্যরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে, তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব নয়।’
ইউএনবির প্রতিবেদক রোববার ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন।
‘আমার সোনার বাংলায়, ফ্যাসিবাদের স্থান নেই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’—এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
নাইমুর নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই দেশে যেই দল ও সরকার ফ্যাসিবাদকে চরমে নিয়ে গেছে, যারা আমার ভাই-বোনদের হত্যা করেছে, তাদের জন্য কোনো দয়া নেই। আমরা কোনো লীগ চাই না, আর এ কারণেই আমরা আজ এখানে এসেছি।’
বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে ন্যায়বিচারের দাবি জানান।
এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিলে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে নিহত হন নূর হোসেন।
তার বুক ও পিঠে লেখা ছিল, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান।
আরও পড়ুন:দেশে বিদ্যমান সংবিধানের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে সেগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের বক্তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে শনিবার বিকেলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংবিধান ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এ মত দেন।
জনস্তরে সংবিধান চিন্তার প্রসারে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন (বিআইআরই) এ আলোচনা সিরিজের আয়োজন করে, যার প্রথম পর্ব হয় গতকাল।
আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মনযুর রাব্বি বলেন, রিপাবলিকের বাংলা অনুবাদ প্রজাতন্ত্র ঠিক নয়। সংবিধানে প্রজা কথাটি থাকায় তা ‘রাজা’র জন্ম দিয়েছে।
তিনি এ ধরনের শব্দ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে জনগণের বিভিন্ন অংশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য দরকার।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সংবিধানের ১৮টি মৌলিক অধিকারের মধ্যে ১৫টিই শর্তসাপেক্ষ (কনডিশনাল)। ফলত এক হাতে অধিকার দিয়ে অন্য হাতে কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি এ ধরনের শর্তারোপের বিরোধিতা করে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এটি সঞ্চালনা করেন মেহেরবা সাবরিন।
স্বাগত বক্তব্যে মো. জহির উদদীন সোহাগ কেন জনস্তরে সংবিধান চিন্তা প্রয়োজন, কীভাবে তা সম্ভব, সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
পরে সংবিধান নিয়ে জনমত জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপের ফল প্রকাশ করে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সাঈদ সারওয়ার জানান, অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী চান নতুন সংবিধান। প্রায় সবাই চান এ সংবিধানের সংস্কার।
ব্যতিক্রমী এ আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা সংবিধান নিয়ে তাদের মতামত দেন। তাদের অনেকে সংবিধান পুনর্লিখনের কথা বলেন। কেউ কেউ সংস্কারের পরামর্শ দেন।
অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য শেষে তিন বক্তা সংবিধান সংস্কার নাকি পুনর্লিখন দরকার, সে বিষয়ে তাদের মত দেন।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মো: ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে এ বদলি করা হয়।
প্রকল্পগুলোর প্রদর্শনী নামমাত্র বাস্তবায়ন, কোথাও আবার বাস্তবায়ন না করেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
আদেশের এক কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদও বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বদলি হওয়া কৃষি কর্মকর্তার নাম ফাহিমা আক্তার, যিনি ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর থেকে সদর উপজেলায় কর্মরত ছিলেন।
এর আগে একই উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা পদে ছিলেন তিনি।
এ কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ‘কিশোরগঞ্জে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। তাকে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় বেশির ভাগ প্রদর্শনীতে মোট বরাদ্দের ৩০ শতাংশও কৃষক পাননি।
ওই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগ, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ছয়টি প্রকল্প থেকে (ফ্রিপ প্রকল্প, ময়মনসিংহ প্রকল্প, পার্টনার, অনাবাদি, রাজস্ব প্রকল্প ও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনী) কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন ফাহিমা।
আরও পড়ুন:বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো টাকা আত্মসাৎ হয়নি বলে সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয়। এ সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্ট ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানি হয় রোববার।
শুনানিতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেন, ‘এই ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে, তবে সুদে-আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকা ব্যয় হয়নি।’
দুদক আইনজীবী মামলায় এজাহার, অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের অংশ তুলে ধরেন। তিনি মামলার নথি থেকে খালেদা জিয়া এ মামলার অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমন উপাদান পেশ করেন।
একপর্যায়ে এ মামলার দুটি আবেদনের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারকের আপিল বিভাগ বিভাগে বিষয়টি নিয়ে করা লিভ টু আপিলে আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
হাইকোর্টের রায়টি আদালতে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
আদালতের অনুমতি নিয়ে এ মামলায় বিচারিক আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার দেয়া জবানবন্দি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জবানবন্দি ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বেগম খালেদা জিয়ার এ জবানবন্দি তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব বহন করে।’
আরও পড়ুন:জুলাই গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিশ’ জারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে রোববার তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করতে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে (মামলার) আবেদন করা হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দেয়া আওয়ামী লীগের অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে না জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি কোনোভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘এটা কোনো মামলা না। এটা আইসিসির প্রসিকিউশন অফিসকে একটা পিটিশন লিখে জানানো। এটা পৃথিবীর যেকোনো মানুষ করতে পারে। এটা এতই অবিশ্বাস্য ও বস্তুনিষ্ঠতাহীন একটা মামলা যে, কোনোভাবেই এই রিট হওয়ার কোনো কারণ নাই।
‘এটা ফ্যাসিস্ট চক্র বিশ্ব জনমতকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ও আত্মরক্ষার জন্য মিথ্যা প্রচারণার চালানোর উপায় হিসেবে করেছে।’
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা পেলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
আজ সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কারকাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিভিন্ন মিস্ত্রি তাদের কর্মীরা। এ ছাড়া ট্র্যাইব্যুনাল সংলগ্ন বাগান নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এ সংস্কারকাজের সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। সেখানে কয়েক শ কর্মী এখন নিয়মিত কাজ করছেন।
গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টারসহ সমাবেশের অডিও ক্লিপ ভাইরাল করার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে যেকোনো প্রান্তে যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
উসকানিদাতা, অর্থদাতা এবং এসব অপকর্মের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হওয়া সাম্প্রতিক একটি অডিও ক্লিপে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার দলের নেতা-কর্মীদের অবৈধ সমাবেশে ঢাল হিসেবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ও প্ল্যাকার্ড এবং মার্কিন পতাকা বহন করার নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেগুলো ভাঙচুর ও অবমাননার ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশনাও দেন তিনি।
‘বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এই অপকর্মের পরিকল্পনা করেছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
‘এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুলসংখ্যক উসকানিমূলক পোস্টার, ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য