দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের দুটি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। এ দুই আসনে লাঙ্গলের প্রার্থীদের ‘চ্যালেঞ্জ’ জানাতে ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম–৫ আসনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ গত তিনবারের এমপি। এদিকে চট্টগ্রাম–৮ আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সোলায়মান আলম শেঠ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে যাচ্ছেন বলে ধারণা ভোটারদের। কারণ এ আসনে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, এ দুই আসনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা একাধিক প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বলছেন, এ দুই আসনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে দলের নেতা-কর্মীরা প্রচারে অংশ নেবেন, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা তারা কেন্দ্র বা স্থানীয় পর্যায় থেকে পাননি। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে এবার সারা দেশেই দলের নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হওয়ায় এ দুই আসনেও স্বতন্ত্রদের পক্ষে মাঠে নামতে কোনো বাধা দেখছেন না তারা।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির টিকিটে বিজয়ী হন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। পরবর্তী সময় ক্ষমতার পালাবদলে সরকারে আসে জাতীয় পার্টি। এর পর ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে তিনি বিএনপি ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
জাতীয় পার্টি থেকে একই আসনে ১৯৮৬ সালের ৭ মে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এই নির্বাচনের তিন বছরের মধ্যে ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনেও তিনি জাতীয় পার্টির টিকিটে জয়ী হন। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির টিকিটে বিজয়ী হন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনেও বিজয়ী হন তিনি।
২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি জাতীয় পার্টির টিকিটে নির্বাচন করলেও সমর্থন পান আওয়ামী লীগের। তাই ওই তিনটি নির্বাচনে তিনি সহজে জয়ী হন। কিন্তু ভোটাররা মনে করছেন, এবার তিনি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী
হাটহাজারী উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ও ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম–৫ আসন। ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১০ হাজার। এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলে ১৭ ডিসেম্বর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার সংসদে এ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
তিনবারই নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন এম এ সালাম, পরে দলের সিদ্ধান্তে সরে দাঁড়ান। এবার চতুর্থবারের মত সরে দাঁড়ালেন এম এ সালাম।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী (কেটলি প্রতীক) এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির হায়দার করিম বাবুল (ঈগল প্রতীক)। এছাড়া বিএনএফ এর আবু মো. শামসুদ্দিন (টেলিভিশন), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কাজী মহসীন চৌধুরী (একতারা), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ হাফেজ আহমদ (চেয়ার), তৃণমূল বিএনপির মো. নাজিম উদ্দিন (সোনালী আঁশ) ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ মোখতার আহমেদ (মোমবাতি) ভোটে লড়ছেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। আবার দলের সিদ্ধান্তে আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাতে আমার বলার বা করার কিছু নেই। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কারণে কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। তাই দলের নেতা-কর্মীরা কিছু এদিকে কিছু ওদিকে।’
দলের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাহান চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে সালাম বলেন, ‘শাহজাহান ছাত্রলীগ করে এসেছেন। এখন আওয়ামী লীগ নেতা। দলের নেতা-কর্মীরা উনার জন্য খাটবেন এটাই তো স্বাভাবিক।’
অক্টোবরে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরাম নামের নতুন দল গঠন করে এর আহ্বায়ক হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন। নিবন্ধন না থাকায় পরে তিনি তৃণমূল বিএনপি থেকে এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন।
মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘অন্য অনেক সংসদীয় আসনের তুলনায় আমাদের এলাকায় শান্তিপূর্ণ। মনে হয় ভালো নির্বাচন হবে। আমরা চাই ভোট নিয়ে মানুষের মাঝে যে অনীহা আছে সেটা কেটে যাক। ভোটার নিজের ইচ্ছে মতো ভোট দিক, কিন্তু ভোটকেন্দ্রে আসুক।’
জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অবশ্য তার সামনে বড় কোনো বাধা দেখছেন না।
তিনি বলেন, ‘শেষ তিনবারসহ মোট ছয়বার আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকতেই পারে। তাতে অসুবিধা নেই। প্রার্থী বেশি থাকলে ভোটারও বেশি আসবে কেন্দ্রে।’
চট্টগ্রাম-৮ আসন
অপরদিকে নগরীর পাঁচলাইশ–চান্দগাঁও এলাকায় সিটি করপোরেশনের পাঁচটি ওয়ার্ড এবং বোয়ালখালী উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম–৮ সংসদীয় আসনে ভোটার মোট ৫ লাখ ৪৩ হাজার। গত এপ্রিলে উপ–নির্বাচনে জয়ী হয়ে এখানে সংসদ সদস্য হন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।
এবারও তিনি দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সোলায়মান আলম শেঠকে ওই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে নোমান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
এ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে আছেন নগর আওয়ামী লীগের কোশাধ্যক্ষ ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম (কেটলি) এবং নগর কমিটির সদস্য সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি)। এছাড়া বিএনএফ এর এস এম আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা (সোনালী আঁশ), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (চেয়ার), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ (হাতছড়ি), এনপিপির মো. কামাল পাশা (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মহিবুর রহমান বুলবুল (ডাব) এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আব্দুন নবী (মোমবাতি) প্রতীক নিয়ে এই আসনে নির্বাচন করছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালামকে শক্ত প্রার্থী হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা।
আবদুচ ছালাম বলেন, ‘অতীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসাবে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে নগরীকে সুরক্ষা দিতে অনেক মেগা প্রকল্প আমি প্রিয় নেত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে সক্ষম হয়েছি। বিজয়ী হলে আমি এলাকার জনগণকে উন্নয়ন উপহার দেব।’
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী বলেন, ‘নগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে আছে। আমি ছাত্রলীগ করেছি। নগরীর জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। বোয়ালখালীর সন্তান হিসেবে আমি এলাকার মানুষের সমর্থন পাব।’
সোলায়মান আলম শেঠ জানান, এর আগে কখনও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি তিনি। গতবার তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন বলে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আমার জন্য কাজ করছেন। আশা করি আমি ভালো ফল পাব। কালুরঘাট সেতু হবে বলে আমি আশাবাদী। বিজয়ী হলে সবার জন্য সমান উন্নয়ন হবে বোয়ালখালীতে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, ছালাম কেটলি প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় অনেকটা এগিয়ে গেছেন, গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন সমানে। নির্বাচনে নতুন মুখ হলেও চট্টগ্রাম-৮ আসনে তার নাম এখন মুখে মুখে। জাতীয় পাটির সোলায়মান আলম শেঠ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরীও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে।
স্থানীয়রা জানায়, বোয়ালখালীর প্রধান সমস্যা কালুরঘাট সেতু। মূলত ‘কালুরঘাট সেতু’ নির্মাণ এ আসনের ভোটারদের প্রধান দাবি।
সবশেষ উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদও এটি নির্মাণের আশ্বাস দেন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে তারা প্রত্যেকে জাতীয় সংসদে গিয়ে দফায় দফায় সেতু নির্মাণের দাবি তুলে ধরে বক্তব্য দেন। ধরনা দেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে কালুরঘাট সেতুও আর নির্মাণ হয় না। তাতে দুঃখ ঘোচে না বোয়ালখালীবাসীর।
এবারের নির্বাচনেও দাবিটি সামনে নিয়ে আসেন ভোটাররা। গণসংযোগে গিয়ে প্রার্থীরাও আশ্বাস দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে সেতু নির্মাণের। এটি নির্মাণে যে প্রার্থীর উপর ভোটাররা ভরসা রাখতে পারবেন, নির্বাচনে তারই জয়ের মালা পরার সম্ভাবনা বেশি বলে মন্তব্য করেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এর আগে গত ১৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন ও কী ধরনের সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবস্থার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার আজকের মূল নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা, পুলিশের জন্য নতুন ৩৬৪টি পিকআপ ও ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়া, পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পের ৭০ শতাংশের নিচে সম্পাদিত হওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড় করা, ভাড়াকৃত ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় করা এবং পুলিশের এসআই ও এএসআই পদবির কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেল কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের বিষয়টি বিবেচনা করা।
কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে জেলা পুলিশকে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও তিনি নিম্ন কর্মদক্ষতার ইউনিটগুলোর কর্মক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ভর করবে সরকার গৃহীত প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যদি সংস্কার কার্যক্রম আমাদের প্রত্যাশিত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যখন তাকে দায়িত্ব নিতে বলা হয়, তখন তিনি ‘হতচকিত’ বোধ করেন।
বিবিসিকে ড. ইউনূস বলেন,‘আমি কখনও ভাবিনি যে আমি সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেব। আমি আগে কখনও প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলাম না। তাই সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমাকে উপায়গুলো খুঁজে নিতে হয়েছে।
‘যখন বিষয়টি ঠিক হলো, তখন আমরা সংগঠিতভাবে কাজ শুরু করলাম।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমার কাছে দেশের জন্য আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতি পুনর্গঠন মূল অগ্রাধিকার ছিল।’
বিবিসির আজকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়, যা অধ্যাপক ইউনূস এ বছরের শেষের দিকে আয়োজনের আশা করছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
ঢাকার সরকারি বাসভবনে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় কি না। আমি তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন,‘নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি অর্থনীতি। এটি একটি বিচূর্ণ অর্থনীতি, একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি।
‘এমন মনে হচ্ছে যেন গত ১৬ বছর ধরে কোনো ভয়ংকর টর্নেডো চলছে আর আমরা এখন সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন:জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মত তুলে ধরেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের দাবি উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারাও এ মতের পক্ষে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন।
‘সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো অ্যাড্রেস করেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যেকেই মূল দায়িত্বের বাইরে কিছু না কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অতিরিক্ত সময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সমস্যাটা হলো একজন অফিসার যখন নিজ দায়িত্বের বাইরে আরও দুই-তিনটা দায়িত্ব পালন করেন, তার পক্ষে কোনোটাই যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, যে কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে নিয়ে আসা উচিত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়েও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা এখনও চলমান আছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও সরকার নেয়নি।
‘আশা করছি খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় আমরা দ্রুতই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করব, অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ অভিমত দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কী ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।
আরও পড়ুন:নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নয়, নির্বাচন ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে।
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যাবে বলে প্রকাশ করেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দেওয়া প্রস্তাব ও তা বাস্তবায়নে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের করণীয় নিয়ে এ বিটের সাংবাদিকদের সংগঠনের (আরএফইডি) সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি; বরং এ সংস্থার ক্ষমতায়নে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।’
ফেরারি আসামি, বিচারিক আদালতে দোষী হলেই অযোগ্য, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত বা অর্থ পাচারকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
বিষয়টি বিতর্কিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, ‘হত্যাকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। এটা জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহিতায় আনতে গিয়ে তাদের ক্ষমতা খর্ব হবে না বলেও মত দেন তিনি।
এদিকে আরেক অনুষ্ঠানে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেড় সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র। চোখ এবং আঙুলে ক্ষতিগ্রস্তদের ইসির নির্দেশনায় দেওয়া হবে এনআইডি। নতুন ভোটার ছাড়াও স্মার্ট কার্ড এবং ভুল সংশোধনের সুযোগও পাবেন আহতরা।
‘এ ছাড়াও সারা দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা পাবেন এ সেবা।’
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাছির উদ্দিন।
রাজধানীর আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে রবিবার এক অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা জানান।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে কম সংস্কার হলে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে।
নির্বাচন ভবনের অনুষ্ঠানে সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছি।’
ওই সময় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে সব সন্দেহ দূর করতে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘সংশয় দূর করার জন্য আমরা এটা (ভোটার তালিকা হালনাগাদ) করছি। আমরা মাঠে অনেক মানুষকে সম্পৃক্ত করছি।’
সারা দেশে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কিছু উপকরণ সহায়তা দেয় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০টি স্ক্যানার ও ৪ হাজার ৩০০ ব্যাগ সিইসির কাছে হস্তান্তর করেন।
নাছির উদ্দিন জানান, তারা ছয় মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ বিশাল এ কর্মসূচিতে কাজ করবেন।
তিনি বলেন, ‘এই ছয় মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য আমাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে হবে।’
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, তারা রাজনৈতিক বক্তব্য (বিতর্ক) করেন না এবং আইন ও বিধিবিধানের মধ্যে থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
ইউএনডিপির সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, তারা আমাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য