চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসনের পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। এখানে প্রতিনিয়তই হামলা, সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণসহ নানা অঘটন ঘটছে। আসনগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) এবং চট্টগ্রাম-১৪ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া)। এ দুই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষ-ভাঙচুরের ঘটনায় নির্বাচনি পরিবেশ সহিংস হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রাম-১৫
বুধবার রাতে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মোতালেবের সমর্থক এক চেয়ারম্যানের বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিদোয়ানুল ইসলাম সুমনের বাড়ি ইছামতি আলীনগরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় দুর্বৃত্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের প্রচারকাজে নিয়োজিত একটি ভক্সি মাইক্রোবাস, একটি ড্যাম্পার পিকআপ, পুলিশ পরিবহনে নিয়োজিত একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ২টি অটোরিকশা ও নির্বাচনি কার্যালয় ভাঙচুর করে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর সমর্থকদের নেতৃত্ব গুলিবর্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সে সময় ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টহল দল উপস্থিত ছিল। তাদের অটোরিকশাটিকেও ছাড় দেয়নি দুর্বৃত্তরা।
ওই ঘটনার পরের দিন (বৃহস্পতিবার) নৌকার প্রার্থী নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে নির্বাচনি প্রচার চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নদভীর শ্যালক চরতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রুহুল্লাহ চৌধুরীসহ তার অন্তত ১৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন।
বৃহস্পতিবার রাতে চরতি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাখালী ব্রিজ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার পর নদভীর অভিযোগ, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের নির্দেশে এবং সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’
ঘটনার পর সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান ও থানার ওসি প্রিটন সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে নিউজবাংলাকে নদভী বলেন, ‘তিনি একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আমার ওপরও তিনি একাধিকবার হামলার চেষ্টা করেছেন। বুধবারের গুলি ও ভাঙচুরের ঘটনাটি রিদুয়ানের সাজানো নাটক।’
অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের দাবি, ‘ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আবু রেজা নদভীর এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব, নদভী ও তার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয় কিছু মানুষের মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। যদিও এখনও কেউ কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি।’
তবে ঘটনার সময় পুলিশের টহল দলের উপস্থিতি এবং তাদের নীরব ভূমিকা পালনের অভিযোগের ব্যাপারটি কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
চট্টগ্রাম-১২
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে পটিয়া অঞ্চলের পরিস্থিতিও উত্তপ্ত রয়েছে। প্রতিনিয়তই হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটছে।
বুধবার কাশিয়াইসে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছনহরা ইউনিয়নে ফের হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুই প্রার্থী।
ছনহরা ইউনিয়নের আলমদর পাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নির্বাচনি ক্যাম্প ও প্রচারের মাইক ভাঙচুর এবং চালককে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
উপজেলার কোলাগাঁওয়ের নলন্দায় স্বতন্ত্র ‘ঈগল’ প্রতীকের প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী গণসংযোগকালে নৌকার সমর্থকরা প্রচারণায় বিঘ্ন ঘটিয়ে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয় বলে সাংবাদিকদের জানান স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হকের নির্বাচন সমন্বয়কারী নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, পটিয়ার বিভিন্ন জায়গায় নৌকার কর্মী-সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্যাম্প ও গাড়ি ভাঙচুর অব্যাহত রেখেছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ঘোষণাকে পটিয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ করছেন নৌকার প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা।’
তিনি বলেন, ‘সড়কের পাশে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে টাঙানো আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ সময় ক্যাম্পের পাশে ঈগল সমর্থক আবছার উদ্দিনের বাড়িতে বাইরে থেকে টিনের বেড়া ও দরজায় রামদা ও লাঠি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।’
তবে এ বিষয়টিকে বরাবরের মতই অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এগুলো আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। নৌকার কেউ এ ধরনের কাজে জড়িত নয়।’
অথচ, নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর পক্ষের লোকজনই ওই ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ করেন ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও ঈগলের সমর্থক ওসমান আলমদার।
এ বিষয়ে এলাকার লোকজনের দাবি, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর গাড়িবহর যাওয়ার আগে আগে ৭০-৮০ নৌকার সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
ঈগলের সমর্থক ২৬ বছর বয়সী রিয়াদ বলেন, ‘ক্যাম্পের পাশের দোকানে আমি বাজার করতে আসলে কয়েকজন লোক আমাকে মারধর করে।’
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সোলাইমান বলেন, ‘কোলাগাঁওয়ে নৌকা পক্ষে মিছিল করেছে শুনেছি। ওখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হকেরও গণসংযোগ চলছিল। তাই আমরা কালারপোল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের এলাকার আশপাশে থাকতে বলেছি। তবে ছনহরায় ক্যাম্প ভাঙচুর ও হামলার বিষয়ে এখনও মৌখিক বা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।’
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ আজাদীকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিটি সংসদীয় আসনভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া আছে। তবে পটিয়া, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এবং বাঁশখালীর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি রাখছি। এর মধ্যে এই তিনটি আসনে কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ব্যাপারে মামলা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
‘পটিয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সাতকানিয়ার ঘটনায়ও মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার করেছি। বাঁশখালীর ঘটনায়ও মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ কাউকে নষ্ট করতে দেয়া হবে না। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্টকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।’
‘প্রার্থীরা নির্বাচনি সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় না রাখলে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ ভোটারের এত বিশাল নির্বাচনি এলাকায় শুধু আমরা পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভাব নয়’ উল্লেখ করে এসপি এস এম শফিউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের একটি থানায় ৩০ থেকে ৪০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাদেরকে থানার নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হয়, নিয়মিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে হয়, আবার নির্বাচনি এলাকার পরিবেশও ঠিক রাখার জন্যও কাজ করতে হচ্ছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্র্রার্থীদের বড় একটি ভূমিকা রয়েছে। তাদেরকে অবশ্যই আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।’
এদিকে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। পরদিন ২৬ ডিসেম্বর সকালে এলজিইডি মিলনায়তনে চট্টগ্রামের-১৬ আসনের ১২২ প্রার্থীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন সিইসি। এরপর দুপুর ১২টায় পিটিআই মিলনায়তনে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা আঞ্চলের সকল জেলার প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করার কথা রয়েছে তার।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয় জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামি পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামি হাজির রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত প্রথম কোন শুনানি শুরু হওয়ায়, সে দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এর আগে, এই মামলার পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেয়া হয়।
তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায়, তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিগণ কর্তৃক নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো ইয়াকুব, শহীদ মো রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো ইসমামুল হক ও শহীদ মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্বল্যমান এ সব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।
এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।
এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য