দেশের সব আদালত, বিচারকদের গাড়ি ও বাসভবনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।
মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমানের স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা ও জেলা জজ আদালত, খুলনায় বোমা হামলা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় বিচারপ্রার্থীকে হত্যার ঘটনা ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোতে সারা দেশের বিচারকরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দেশের বিচার ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশের সব আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, বিচারকদের বহনকারী গাড়ি এবং বাসভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অতীব জরুরি।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয় সারা দেশের সব আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ এবং বিচারকদেরর বহনকারী গাড়ি ও বাসভবনের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছেন। এমতাবস্থায় সারা দেশের সব আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, বিচারকদের বহনকারী গাড়ি এবং বাসভবনে সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা ও পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স প্রদানসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
পঞ্চগড় সদর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৩৬) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর ৮/৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় শুক্রবার ভোরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
প্রাণ হারানো আনোয়ারের বাড়ি তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের দেবনগর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নীলফামারী ৫৬ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারসহ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে যান। ভোরের দিকে ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। পরে গুলি চালায় বিএসএফ। ওই সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আনোয়ার। তার মরদেহও নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
বিজিবি আরও জানায়, সীমান্তে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারিদের প্রতিহত করার জন্য আটটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্প সদস্যরা।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের মরদেহ ফেরত আনা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে।
‘ঘটনার পর বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি গরু জব্দ করে বিজিবি।’
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানকে চাঁদাবাজির মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল মঞ্জুর করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী নাজমুল হুদা। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তারেক ভূঁইয়া।
২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পূর্ব আগানগরের রফিকুল আলম নামের এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে এই মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৬ জুনের এক ঘটনায় ২০০৫ সালে দুই পর্বে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
বিচার শেষে ২০০৮ সালের ৮ মে আমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন আমান। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে রায় দেয় হাইকোর্ট।
পুলিশ প্রশাসন সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভবনে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেনের কাছে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব জমা দেয়া হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সচিব এস এম জহিরুল ইসলাম দলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব জমা দেন।
প্রসঙ্গত, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেছিল বিএনপি।
ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলোচিত ও সমালোচিত নেতা ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরকে ঝালকাঠি আদালতে হাজির করা হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানার একটি মামলায় জেলা কারাগার থেকে তাকে আদালতে আনা হয়।
গত ২১ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর শাহজাহান ওমরকে আদালতে হাজির করার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা এবং বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করে। সে ঘটনা মাথায় রেখে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশ, র্যাব এবং সেনাবাহিনী তিন স্তরে ঘিরে রাখে ঝালকাঠির আদালত চত্বর ও আশপাশের এলাকা।
এদিন বিকেল ৪টার দিকে আদালতে আনা হয় ওমরকে। প্রিজন ভ্যান থেকে নেমেই তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ করে বললেন, ‘সেদিন যারা ডিম ও জুতা নিয়ে আসছিলো, আজ সেই দুষ্টু লোকেরা কোথায়?’
এরপর শাহজাহান ওমরকে আদালতে তোলা হলে তার জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী নাসির উদ্দিন করির ও বনি আমিন বাকলাই। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাসেল আহম্মেদ জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে তাকে পুররায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই দদিন ওমরকে জিআর ১২১/২৪ রাজাপুর থানার আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পরিবর্তে ভারতে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বৃহস্পতিবার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতি সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উল্লিখিত বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ইস্যুতে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে মমতা ওই বক্তব্য দেন।
এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে নয়, ভারতে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। আমি বিশ্বাস করি এই সাড়া ষড়যন্ত্রগুলোকে মোকাবিলা এবং দেশে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।’
সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ নাকচ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘সীমান্তে কোনো উত্তেজনা নেই, তবে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারত যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা সবাই সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করবে।’
আরও পড়ুন:পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময় পুলিশের কিছু সদস্য ভালো কাজ করেননি। তারা যে আইন ভঙ্গ করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পুলিশ অনেক বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।’
পুলিশ সদরদপ্তরে বৃহস্পতিবার তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘যে সমস্ত পুলিশ জুলাই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন, তারা পলিটিক্যালি ইনভলভ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ হত্যা হয়েছে, কিন্তু পুলিশ এখনও নিষ্ক্রিয় আছে। সাংবাদিকদের কাছ থেকে তথ্য লুকানোর নজির আছে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই সরকার তো স্বচ্ছ (ট্রান্সপারেন্ট)। এখন তো খুন, গুম এগুলো নেই যে, আমরা লুকিয়ে রাখব, আগের সরকারের সময়ে যেটা হতো। এখন আমাদের লুকানোর কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘আইনি ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যতটুকু আছে, ততটা দিয়ে আমরা চেষ্টা করছি।
‘এত মানুষ মারা গেছে। এটা বাংলাদেশ কেন, উপমহাদেশের কোথাও ঘটেনি।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে জামিন পেয়েছে ভুক্তভোগী কিশোর।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য জানান।
‘স্কুলছাত্রকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ’ শিরোনামে গত ১ ডিসেম্বর নিউজবাংলায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এটিসহ ওই ছাত্রকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বুধবার সকালে আদালতে তুলে ধরেন।
প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বলে দুপুরে শুনানির জন্য রাখে। এর মধ্যে আইন ও সালিশ কেন্দ্র গতকাল ওই রিট করে, যা বিকেলে সম্পূরক কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর কিশোরটির জামিনের তথ্য আজ সকালে আদালতকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
রিটটি আগামী রোববার কার্যতালিকায় আসবে।
এদিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি।
চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য