অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে শুক্রবার থেকে চালু হচ্ছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস। ঢাকা ও কক্সবাজার দুই জায়গা থেকেই কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ চলাচলের উদ্বোধন করা হবে। কক্সবাজারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
একই দিনে রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকেও উদ্বোধন হবে ট্রেনটির। ওই সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান উপস্থিত থেকে কক্সবাজারগামী যাত্রিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা গেছে, কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে। চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাবে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে। ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে রাত ৪টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে ট্রেনটি। কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ রাজধানী থেকে পর্যটন শহরে যেতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
অপরদিকে, কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। এই ট্রেন চট্টগ্রামে আসবে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে। আর ঢাকায় পৌঁছবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে।
জানা যায়, ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাতকানিয়ায় নির্মিত চারটি সেতু ট্রেন ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনে পদায়ন করা হয়েছে একজন ইনচার্জসহ মোট ৪জন স্টেশন মাস্টারকে। এছাড়া বাড়ানো হয়েছে প্রয়োজনীয় লোকবল।
ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ১০ জন রেলওয়ে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানা পুলিশ ইনচার্জ এসএম শহিদুল ইসলাম।
রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পয়লা ডিসেম্বর কক্সবাজার থেকে ঢাকা বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। দফায় দফায় সভা করে সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কক্সবাজার থেকে ঢাকায় প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলে আমরা প্রস্তুত। নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন কক্সবাজার ছেড়ে যাবে। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা থাকবে।’
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া ২ হাজার ৩৮০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ৬৯৬ টাকা।
গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেল পথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রেল নেটওয়ার্কে ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হয় কক্সবাজার।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজার অথবা রাজশাহী থেকে কক্সবাজার, দক্ষিণাঞ্চল সুন্দরবন থেকে কক্সবাজার, এমনকি গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর, অর্থাৎ সমগ্র বাংলাদেশ থেকেই যাতে সহজে কক্সবাজার আসা যায় সেই পদক্ষেপও আমরা নেব। এই যোগাযোগগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের পর্যটনের ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘ছয়তলার এই স্টেশনে রয়েছে চলন্ত সিঁড়ি, মালামাল রাখার লকার, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিংমলসহ আধুনিক সব সুবিধা। ৪৬ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা সম্বলিত স্টেশনটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে আছে কনভেনশন হল, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথ, এটিএম বুথ, এমনকি প্রার্থনার স্থানও। স্টেশনে ফুড কোর্ট, হোটেল ও শপিং কমপ্লেক্সের বিষয়টি বাইরের এজেন্সি দ্বারা টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে।’
দোহাজারী-কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১০ শুরু হয়ে ২০১৩ সালে শেষ হবার কথা ছিল। তবে, ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল একনেকে অনুমোদিত হয় এবং এ লাইনে ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায়। এই বাজেটে এডিবি ঋণ দেয় ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা আর বাকি চার হাজার ৯১৯ কোটি সাত লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
একনেক অনুমোদনের পর, প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১০ সালের ১ জুলাই-২০২২ সালের ৩০ জুন ধরা হয়। এ রেলপথ নির্মাণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় এক হাজার ৩৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়। প্রকল্পের ১৬৫ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল ডি-রিজার্ভকরণসহ প্রকল্পে ব্যবহারে অনুমতি পেতে কালক্ষেপণ হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সবকাজ শেষ হতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কক্সবাজারের সঙ্গে শুধু ঢাকা নয়, পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গেও এ রেলপথ যুক্ত হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির।
দৈনিক ভোরের কাগজ প্রকাশনা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পত্রিকাটির মালিকপক্ষ সোমবার একটি নোটিশের মাধ্যমে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
নোটিশে বলা হয়, শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরেই ভোরের কাগজে কিছু সংবাদকর্মী অষ্টম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন দাবি এবং তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য আন্দোলন করছিলেন। সংবাদকর্মীদের একটি অংশ রোববার সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এবং বহিরাগতদের নিয়ে ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভোরের কাগজের মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ জারি করে।
সংবাদপত্রটির বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোড়ার অনুমোদন পেয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দ্রুত কিনতে পারবে বিজিবি।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সোমবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের সীমান্তে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিজিবির সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই বিজিবিকে অত্যাধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করা হচ্ছে।’
বৈঠকে জানানো হয়, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, অনুপ্রবেশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা মোকাবিলায় বিজিবির কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। এ জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ব্যবহার করার মতো সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। বিজিবির ব্যবহারের জন্য এসব সরঞ্জাম কেনার অনুমোদন দ্রুত কার্যকর করা হবে।
পুলিশ, র্যাব ও আনসারের জন্য নতুন পোশাক নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুনভাবে পুলিশের জন্য আয়রন রঙের পোশাক, র্যাবের জন্য গ্রিন অলিভ এবং আনসারদের জন্য গোল্ডেন হোয়াইট রঙের পোশাক নির্বাচন করা হয়েছে।
সচিবালয়ে সোমবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ, র্যাব ও আনসারদের জন্য তিনটি পোশাক নির্ধারণ করেছি। এসব পোশাক পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করা হবে। যেসব পোশাক রয়েছে, সেসব আস্তে আস্তে বদলে ফেলা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পোশাক পরিবর্তনে বড় ধরনের অর্থ সংকুলানের সমস্যা হবে না।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী তিন বাহিনী পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় সোমবার তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ, র্যাব, আনসার; তিন বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতারও পরিবর্তন হবে বলে আশা করি।’
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তারা যে সুপারিশ করেছে, তা ভালো। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। এর আগে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’
সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজিবির কাছে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল না থাকায় তা ব্যবহার করা হয়নি। তাদের কাছে আছে মারণাস্ত্র। এখন সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে তা আছে।’
অবৈধ বিদেশিদের সংখ্যা দেশে কমে আসছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দেশে অনেকে অবৈধভাবে বসবাস করছে। সংখ্যাটা আগে ছিল ৪৯ হাজার ২২৬ জন। তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৪৮ জনে।
‘৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দেশত্যাগ করতে হবে। না গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, তাদের বিষয়েও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না।
‘খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বাজার নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দুষেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের মিথ্যা তথ্যের কারণেই বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বর্তমান সরকার।
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, আলুর উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। যদিও বিগত সরকার আলুর বাম্পার ফলন দেখিয়েছে।
কৃষি সাংবাদিকতাবিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন শেষে রবিবার সকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এতদিন দেশবাসীকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে; বলেছে, উৎপাদন বেড়েছে।কিন্তু ঘটনা উল্টো, যার ফলে অন্তর্বর্তী সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের জুট চুক্তি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। এর ফলাফল ১৯৭৪ সালে ১০ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।’
নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে প্রেস সচিব বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হবে। সেই সঙ্গে কী পরিমাণ সংস্কার চায়, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হবে।’
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যাদের হাতে রক্ত আছে, তাদের সবার বিচার হবে। দলটির নেতাদের মধ্যে এখনও কোনো অনুশোচনা নাই।
‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা এই সরকারের নেই। তাদের নিষিদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাজনৈতিক দলগুলো।’
২০২৫ সালের বাজেট জনবান্ধব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যৌক্তিকতা বিবেচনা করেই সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন:সীমান্ত সবসময় সুরক্ষিত বলে রবিবার জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা বেঁচে থাকতে আমাদের সীমান্তে কেউ আসতে পারবে না।’
বিসিএস ক্যাডারভুক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ১৩৭তম সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্স-২০২৪-২৫-এর সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আগের সরকার কিছুটা ছাড় দিত। এখন অধিকার আদায়ে ছাড় দিচ্ছি না। তাই কিছু বিষয়ে ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে ডিজি লেভেলের বৈঠক হবে। সেখানে সমাধান হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ধান ও গাছ কাটা নিয়ে যে বিরোধ চলছে, সেটা দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে।’
সিভিল সার্ভিসের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘চাকরি হারানোর ভয় না থাকায় সিভিল সার্ভিস কর্মীদের ক্ষেত্রে সেবায় অনীহা কাজ করে এবং শৃঙ্খলা থাকলে ক্যাডারদের মধ্যে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থাকত না।’
দুর্নীতিকে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুর্নীতি না কমলে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হওয়ার পর আমার আত্মীয়স্বজন বেড়ে গেছে। আমাদের পরিচয় দিয়ে কেউ সুবিধা নিতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি করলে সেটারও সঠিক তথ্য প্রকাশ করুন।’
ওই সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন:তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানির দিন আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।
বিষয়টি রবিবার কার্যতালিকার ১৩ নম্বর ক্রমিকে ছিল।
বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করেন। এরপর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রিভিউটি ১৯ জানুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য করেন।
আদালতে সেদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ অক্টোবর রিভিউর (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে এ বিষয়ে রিভিউ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এ ছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও রিভিউ আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে উত্থাপিত পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য