× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The fishermen of Gaibandha do not get government benefits despite being included in the zone
google_news print-icon
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প

জোনভুক্ত হয়েও সরকারি সুবিধা পান না গাইবান্ধার জেলেরা

জোনভুক্ত-হয়েও-সরকারি-সুবিধা-পান-না-গাইবান্ধার-জেলেরা
ইলিশ আহরণে নিয়োজিত জেলেরা। ছবি: নিউজবাংলা
বছরের ৮ মাস ২২ দিন ইলিশ ধরায় সরকারের নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও জেলেরা তাদের মাছ ধরার এই পেশাটিকে টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দেশের অন্যান্য প্রান্তের জেলেরা সরকারি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা ভোগ করলেও দীর্ঘদিন এ ধরনের সুবিধা থেকে দূরে রাখা হয়েছে গাইবান্ধার জেলেদের। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই তাদের।

সারা দেশে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন এবং টেকসই ইলিশ আহরণ নিশ্চিতকল্পে ইলিশ জোন এলাকায় চলমান রয়েছে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’। গাইবান্ধাও এই জোনের অর্ন্তভুক্ত। তবে দেশের উত্তরের এ সীমান্তের জেলাকে করা হয়নি প্রকল্পের আওতাভুক্ত। ফলে সরকারের এ প্রকল্পের সব ধরনের সুবিধা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত রয়েছে গাইবান্ধার জেলেরা।

বছরের ৮ মাস ২২ দিন ইলিশ ধরায় সরকারের নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও জেলেরা তাদের মাছ ধরার এই পেশাটিকে টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দেশের অন্যান্য প্রান্তের জেলেরা সরকারি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা ভোগ করলেও দীর্ঘদিন এ ধরনের সুবিধা থেকে দূরে রাখা হয়েছে গাইবান্ধার জেলেদের। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই তাদের।

ইলিশ আহরণে নিয়োজিত জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার ওই প্রকল্পে গাইবান্ধাকে চলতি বছরেই অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছেন জেলার সচেতনমহলসহ মৎস্য-সংশ্লিষ্টরা।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন এবং ইলিশ শিকারি জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য মাছ ধরা থেকে শুরু করে জাতীয় এ মাছ বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সম্পৃক্ত সকলকেই প্রকল্পের সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ হাতে নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে চালু হওয়া প্রকল্পটি ইলিশ জোন এলাকার দেশের ২৯টি জেলার ১৩৪টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করে চলেছে মৎস্য অধিদপ্তর।

প্রকল্পটি যেসব উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ওই সব এলাকার ইলিশ আহরণ-সংশ্লিষ্ট জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য গরু-ছাগল, ভ্যানগাড়ি, বৈধ জাল বিতরণ এবং নগদ অর্থসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধার সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি- এ চার উপজেলা ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। ইলিশ জোনের এইসব এলাকায় জেলে রয়েছে অন্তত ৫ হাজার ৫০০ জন। এ ছাড়া সেখানে মাছঘাট রয়েছে ১২১টি, আড়ত ১৬৫টি এবং বাজার রয়েছে ২৫৫টি।

সূত্র জানায়, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ১২ অক্টোবর হতে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ, যা প্রতি বছরই বাস্তবায়ন করা হয়।

ইলিশের প্রধান প্রজননের এ মৌসুমে গাইবান্ধার ইলিশ জোনের চার উপজেলায় যৌথ এবং একক অভিযান পরিচালিত হয়েছে মোট ৬৬টি। অভিযানে চার জেলেকে ৯ দিন এবং দুইজন জেলেকে চারদিন করে জেল দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে একজন নৌকার মাঝিও রয়েছেন।

এ ছাড়া একই সময়ে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের দায়ে সাত লাখ টাকার বেশি মূল্যের প্রায় ৫৮ হাজার মিটার ইলিশ ধরার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে; উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দুই মণ কেজি মা ইলিশ।

অভিযান সংশ্লিষ্টদের দাবি, যদি এইসব অভিযানে দপ্তরের পর্যাপ্ত জনবল, নিজস্ব আইন বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ এবং নিজস্ব নৌযান থাকত, তবে জাল আটক এবং জেল-জরিমানার পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেত।

বর্তমানে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের নিচে (জাটকা) ইলিশ মাছ ধরার নিষিদ্ধ কাল চলমান। এর মধ্যে ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধ এ সময়ে (১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) জেলেদের মানিবক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় গাইবান্ধায় চার উপজেলার নদী-সংলগ্ন ইলিশ এলাকাভুক্ত ৫ হাজার ৫০০ জেলে পরিবারের প্রত্যেকের মধ্যে ২৫ কেজি করে মোট ১৩৭ দশমিক ৫০ টন চাল (ভিজিএফ) বিতরণ করা হয়েছে যা প্রকল্প সুবিধার তুলনায় একেবারেই যৎসামান্যই।

অবশ্য গাইবান্ধা সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ উপজেলাকে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানায় সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়।

গত ৪ অক্টোবর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারজান সরকার স্বাক্ষরিত ওই পত্রের প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি অংশে বলা হয়েছে, সারা দেশে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন এবং টেকসই ইলিশ আহরণ নিশ্চিতকল্পে ইলিশ জোন এলাকায় ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ চলমান। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত জেলেদের আয়বর্ধক বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয় (গরু-ছাগল বিতরণ, ভ্যান বিতরণ ইত্যাদি), বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও গাইবান্ধা সদর উপজেলা এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এখানকার জেলেরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই অতিসত্বর এ উপজেলাকে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

এ ছাড়া পত্রের উত্তোরণ এবং বাস্তবায়নের সুপারিশ অংশে বলা হয়েছে, ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত গাইবান্ধা জেলা টাস্কফোর্স কমিটি’-র মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মৎস্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা গেলে অত্র উপজেলা ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।

এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলার রসুলপুর নয়াগ্রাম মৎসজীবী (জেলে) সমবায় সমিতির সভাপতি দবির আহম্মেদ বলেন, ‘বছরের বিভিন্ন সময়ে ইলিশ ধরায় সরকারের বাধা-নিষেধ থাকে। অক্টবরের ২২ দিন মা ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। আর এখন ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস জাটকা ধরা নিষেধ। তার পরও গরীব জেলেরা পেটের দায়ে যখন মাছ ধরতে যায় তখন তাদের জাল পোড়ানো হয়, জেল দেয়া হয়। কিন্তু ইলিশ জোন হওয়া সত্ত্বেও এখানে সরকারি প্রকল্প না থাকাটা চরম বৈষম্যের। প্রকল্পটি চালু হলে এখানকার জেলেদের অনেক উপকার হবে।’

চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্পটিতে গাইবান্ধাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘গাইবান্ধা দারিদ্র্যপ্রবণ একটি জেলা। এখানকার জেলেরা প্রতিবছরই খরায় পোড়ে, বন্যায় ভাসে। প্রতিনিয়তই তাদেরকে নানা দূর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচতে হয়। তাই ইলিশ জোনের জেলার চার উপজেলাকে প্রকল্পটিতে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।’

সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. মারজান সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ উপজেলাকে ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি চালু হলে জেলেরা সরকারি অনুদান (গরু-ছাগল, ভ্যান, বৈধ জাল, প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ ইত্যাদি) পাবে। এতে তাদের আয়বর্ধক বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’

এ সময় ‘এত দিনেও কেন ইলিশ জোনের এসব উপজেলাকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি?’ প্রশ্নের উত্তরে এ কর্মকর্তা ‘বিষয়টি আমার জানা নেই’ বলে এড়িয়ে যান।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল আউয়াল মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে জেলে পরিবারের মাঝে ২৫ কেজি করে ভিজিএফ-এর চাল দেয়া হয়েছে। ইলিশ জোনের এই চার উপজেলাকে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে বিধি মোতাবেক দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
There is no water in the toilets of Kishoreganj General Hospital

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের শৌচাগারেও নেই পানি

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের শৌচাগারেও নেই পানি কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের গেট। ছবি: নিউজবাংলা
পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পানির জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও করা হয়নি। শৌচাগারে ব্যবহারের জন্য পানিও লোকজনকে কিনে আনতে হচ্ছে।

টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল।

পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।

এদিকে দুই দিন ধরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করছেন। প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন।

হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে সোমবার গিয়ে দেখা যায়, রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে থেকে পানি এনে জরুরি কাজ সারছেন।

এদিকে পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পানির জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও করা হয়নি।

শৌচাগারে ব্যবহারের জন্য পানিও লোকজনকে কিনে আনতে হচ্ছে। রোগীর স্বজনরা আশপাশের দোকান থেকে কিনে কিংবা অনেক দূর থেকে হেঁটে ফিল্টার ও বাসাবাড়ি থেকে বোতল, বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন।

বিশুদ্ধ পানি না থাকায় রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জেলার তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুল ইসলাম জানান, গত তিন দিন যাবত তার চাচাত বোনকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তিনি বলেন, ‘আসার পর থেকে দেখলাম বাথরুমে পানি নেই। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে বলার পর তিনি জানিয়েছিলেন আজকের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে। কিন্তু আজকে তিন দিন হয়ে গেলেও সমস্যাটি সমাধান হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিন কোনো রকম আশপাশে গিয়ে জরুরি প্রয়োজন সেরে এসেছি। দ্বিতীয় দিন রোগীসহ বিপদে পড়েছি। পরে নিচে নেমে অটোরিকশা করে শহরের খরমপট্টি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে এসেছি।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির বলেন, ‘একটা সরকারি হাসপাতালের টয়লেটে পানি নেই, এটা হতে পারে? ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এই হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী জানান, রবিবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে দুটি গাড়িতে করে ৮ হাজার ৬০০ লিটার পানি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাত ১১ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, রবিবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যে পরিমাণ পানি আনা হয়েছিল, সে পানি দিয়ে গতকাল রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চলছে। এখন আবার জনস্বাস্থ্য থেকে খাবার পানি আনা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
তাড়াইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত: পুলিশ
গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব
বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও জমিতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার
প্যারোলে মেলেনি মুক্তি, বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান
সিলেট জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ, দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Patients and relatives have not been in the government hospital for two days due to lack of water

সরকারি হাসপাতালে দুই দিন ধরে নেই পানি, ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজন

সরকারি হাসপাতালে দুই দিন ধরে নেই পানি, ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজন কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে দুই দিন ধরে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন রোগী ও স্বজনরা। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা সদর উপজেলার কাটাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সমস্যার দিক একটুও চিন্তা করেন না।’

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে টানা দুই দিন ধরে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী ও তাদের স্বজনরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববারের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

রোগী নিয়ে গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে আছেন নিকলী উপজেলার সিংপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘বাথরুমে পানি নেই। ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না। রোগী বা সাথের কারও বাথরুমে যেতে হলে নিচ তলায় যেতে হচ্ছে।’

তিনি জানান, এ অবস্থায় রোগীর চিকিৎসায় সময় দেবেন নাকি পানি আনতে দৌড়াবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না।

হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন সদর উপজেলার নীলগঞ্জের বাসিন্দা জুবেদা খাতুন।

তিনি রোববার সকালে বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এ হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’

৫৫ বছর বয়সী এ নারী জানান, লিফট থাকলেও সেটার ব্যবহার না জানায় বারবার সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে হচ্ছে তার।

জেলা সদর উপজেলার কাটাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সমস্যার দিক একটুও চিন্তা করেন না।’

চিকিৎসার ক্ষেত্রে রীতিমতো অবহেলার শিকার হচ্ছেন দাবি করে এ যুবক বলেন, ‘এখানে নামমাত্র সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে সময়মতো ডেকেও ডাক্তার পাওয়া যায় না।’

সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদির বলেন, ‌‌‘দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন পড়ে পানির। কিন্তু এখানে সেই ব্যবস্থাটাই নেই। একটা মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বাথরুমে গিয়ে যখন দেখেন পানিটাই নাই, তখন কোন ধরনের সমস্যায় পড়েন, সেটা তো বুঝতেই পারছেন।

‘এ সমস্যাটা কিছুক্ষণের জন্য হলে হতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু টানা দুই দিন যাবত এই হাসপাতালে পানি নেই। অথচ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই।’

জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আজকের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ককে ‌‘হত্যাচেষ্টা’: অ্যাম্বুলেন্সের চালক গ্রেপ্তার
তাড়াইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত: পুলিশ
গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব
বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও জমিতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার
প্যারোলে মেলেনি মুক্তি, বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Migrants bathe in the clear water of Kunjban

কুঞ্জবনের স্বচ্ছ জলে পরিযায়ীর কূজন

কুঞ্জবনের স্বচ্ছ জলে পরিযায়ীর কূজন বহতা নদীর স্বচ্ছ জলে পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে চারপাশ। ছবি: নিউজবাংলা
মহাদেবপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন, ‘আত্রাই নদীতে যেসব স্থানে পাখিদের অবাধ বিচরণ আছে, সেই সব স্থানে যাতে কেউ নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করার কারণে পাখিদের অবাধ বিচরণে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে, সে বিষয়ে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে।’

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে কুঞ্জবন গ্রাম। এ গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী।

এ নদীর দুই পারের সড়কের পাশে অসংখ্য গাছ। বহতা সে নদীর স্বচ্ছ জলে পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে চারপাশ।

শীতের শুরু থেকেই অসংখ্য পরিযায়ী পাখি এসে আবাস গড়েছে আত্রাই নদীতীরের পুরো কুঞ্জবন এলাকাজুড়ে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে এখন ঘুম ভাঙে নদীর দুই পারের বসবাসকারী মানুষদের। নিরাপদে পাখিগুলোর বসবাসের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর ধরে নওগাঁর মহাদেবপুরের আত্রাই নদীর কুঞ্জবন এলাকাজুড়ে অতিথি পাখি আসছে শীত মৌসুমে। শীতপ্রধান দেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পরিযায়ী পাখিরা এসে কুঞ্জবনের নদীতে আশ্রয় নেয়।

শীতের শুরুতে আসতে থাকে পাখি। নদীতে বছরের চার থেকে পাঁচ মাস পাখিগুলো থাকে। সারা দিন নদীতে থাকলেও রাতে তারা ফিরে যায় পাশের রামচন্দ্রপুর, মধুবনসহ কয়েকটি স্থানের গাছে। ভোরে আবারও ফিরে আসে আত্রাই নদীতে।

কুঞ্জবনের স্বচ্ছ জলে পরিযায়ীর কূজন

প্রতিদিনই পরিযায়ী এসব পাখি দেখতে দূরদুরান্ত থেকে আসেন নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।

পাখি দেখতে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় থেকে এসেছেন সারোয়ার হোসেন দম্পতি।

কথা হলে সারোয়ার বলেন, ‘আত্রাই নদীতে পাখির কলরবে পুরো কুঞ্জবন এলাকা যেন মুখরিত হয়ে গেছে। এখানে এসে আমাদের খুব ভালো লাগছে। পাখিগুলোকে কেউ যেন বিরক্ত না করে, সেই দিকে প্রশাসনের খেয়াল রাখতে হবে।’

নওগাঁ শহরের চকদেবপাড়া থেকে আসা সজিব হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছর এখানে অনেক পরিযায়ী পাখির সমাগম ঘটে বলে জানতে পেরে এসেছি। এতগুলো পাখি একসাথে কখনো দেখিনি। খুব ভালো লাগছে এখানে এসে।

‘নদীতে ড্রেজার মেশিন নামিয়ে বা কেউ যাতে পাখিগুলোকে শিকার না করে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে কর্তৃপক্ষের।’

মহাদেবপুর উপজেলা সদরের সুমন হোসেন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবী মিলে পাখিগুলো দেখতে এসেছি। শীত মৌসুম ছাড়া এখানে এত পাখির বিচরণ হয় না।

‘স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি যদি সরকারিভাবে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে আগামীতে এই এলাকায় পাখিদের আরও বেশি আগমন ঘটবে এবং সেই সাথে এটাকে ঘিরে বিনোদনের কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে বলে মনে করছি।’

কথা হয় স্থানীয় বিচিত্র পাখি উৎপাদন গবেষণা পরিষদ নামের সামাজিক সংগঠনের পরিচালক মুনসুর সরকারের সঙ্গে।

এ পাখিপ্রেমী বলেন, ‘পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ অবস্থানের জন্য নদীর পানিতে বেশ কিছু বাঁশ দিয়ে ঘের তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে এসে পানিতে পড়ছে।

‘কেউ গা ভাসিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ গা পরিষ্কার করছে। আবার কেউ বাঁশের ওপর বসে আরাম করছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি শীত মৌসুমে বালিহাঁস, সরালি হাঁস, পানকৌড়ি, রাতচোরাসহ প্রায় ১৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির বিচরণ ঘটেছে আত্রাই নদীতে। এ ছাড়া পিয়াং হাঁস, পাতি সরালি, লেঙজাহাঁস, বালিহাঁস, পাতিকুট, শামুকখোল, পানকৌড়ি, ছন্নি হাঁসসহ প্রায় ১২ জাতের দেশি পাখির সমাগম ঘটেছে।’

মুনসুর সরকার আরও বলেন, ‘কেউ যেন পাখি শিকার বা মাছ শিকার করতে গিয়ে পাখিদের বিরক্ত না করে, সে জন্য আমরা কাজ করছি। মাঝে মাঝেই আমরা মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করছি।

‘সরকারি উদ্যোগ নিয়ে এখানে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল হতে পারে।’

এ বিষয়ে মহাদেবপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন, ‘আত্রাই নদীতে যেসব স্থানে পাখিদের অবাধ বিচরণ আছে, সেই সব স্থানে যাতে কেউ নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করার কারণে পাখিদের অবাধ বিচরণে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে, সে বিষয়ে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে।

‘এ ছাড়া কেউ যদি পাখি শিকার করে, আমরা জানতে পারলে বন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোও পাখির অবাধ বিচরণে কাজ করে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন:
শৈত্যপ্রবাহ: নওগাঁয় তাপমাত্রা নামল ৯.৯ ডিগ্রিতে
সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ 
নওগাঁয় সড়কে প্রাণ গেল তিনজনের
নওগাঁয় ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৭৬ জন
১০ লাখ টাকার চেক হাতে সংবাদ সম্মেলনে সেই বিএনপি নেতা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Clay biscuits eaten in Sylhet are exported to UK

সিলেটে খাওয়া হয় ‘মাটির বিস্কুট’, রপ্তানি হয় যুক্তরাজ্যে

সিলেটে খাওয়া হয় ‘মাটির বিস্কুট’, রপ্তানি হয় যুক্তরাজ্যে সিলেটে বিক্রি হওয়া মাটি দিয়ে তৈরি খাবার ছিকর। কোলাজ: নিউজবাংলা
চাঁদনীঘাট এলাকার ছিকর বিক্রেতা শহিদ আহমদ জানান, প্রতি কেজি ছিকর ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি ছিকর বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা থেকে বিশেষ একটা খাবারের খোঁজে নগরের চাঁদনীঘাট এলাকায় এসেছেন বদরুল আলম। তার চাচি যুক্তরাজ্যে থাকেন।

চাচিকে যুক্তরাজ্যে বিশেষ খাবারটি পাঠাবেন বদরুল। এটি আবার চাঁদনীঘাট এলাকা ছাড়া তেমন কোথাও পাওয়া যায় না। তাই বিয়ানীবাজার থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে এসেছেন তিনি।

শুনে আশ্চর্য লাগবে, বিশেষ খাবারটি মাটি দিয়ে তৈরি। বিস্কুটের আদলে তৈরি বলে একে ‘মাটির বিস্কুট’ বলে থাকেন অনেকে, তবে সিলেটে খাবারটি ‘ছিকর’ নামে পারিচিত।

বিস্কুটের মতো কামড়ে কামড়ে খাওয়া হয় ছিকর। সিলেট অঞ্চলে ছিকর খাওয়ার প্রচলন অনেক দিনের।

চাঁদনী ঘাট এলাকায় বুধবার বিকেলে কথা হয় বদরুল আলমের সঙ্গে, যিনি বলেন, ‘আমার চাচি লন্ডন থাকেন। সেখান থেকে চাচি অনেকদিন থেকে ছিকর পাঠাতে বলছেন। তাই এটি এখানে কিনতে এলাম।

‘এক কেজি কিনেছি। আগামী সপ্তাহে এক আত্মীয় লন্ডন যাবেন। তার সাথে এগুলো পাঠিয়ে দেব।’

সুরমা নদীর তীরঘেঁষা চাঁদনীঘাট এলাকায় পাশপাশি সিলেটের কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। কিন ব্রিজ, আলী আমজদের ঘড়ি, সারদা হলের অবস্থান এখানেই।

সারদা হলের সামনের ফুটপাতে মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেন চার থেকে পাঁচজন বিক্রেতা। তাদের সবার কাছেই পাওয়া যায় এ মাটির বিস্কুট।

বিক্রেতারা জানান, তাদের মূল ক্রেতা নারীরা। বিশেষত গর্ভবতী নারীরা ছিকর খেয়ে থাকেন, তবে দেশের চেয়ে বিদেশে বসবাসরত সিলেটের লোকজনই এটির প্রধান ক্রেতা। সিলেট থেকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে যায় এ বিস্কুট।

ছিকর কী

ছিকর হচ্ছে পাহাড়ের এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরি এক প্রকার পোড়ামাটির বিস্কুট।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ছিকর তৈরি প্রথম শুরু হয় হবিগঞ্জে। এরপর এটি সিলেটসহ আশপাশের জেলার ছড়িয়ে পড়ে।

ছিকর শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ ‘ছিয়া’ তথা কালো এবং ‘কর’ (মাটি) থেকে। ছিয়াকর শব্দটিই পরে ছিকর হিসেবে পরিচিতি পায়।

ছিকর কেন খাওয়া হয়

চিকর কেন খাওয়া হয় এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে একেকজন একেক তথ্য দিয়েছেন।

সিলেটের প্রবীণ ও মধ্যবয়সী কয়েকজন নারী ও পুরুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আগে দরিদ্র লোকজন খাবারের বিকল্প হিসেবে পাহাড়ের মাটি পুড়িয়ে তৈরি এ বিস্কুট খেতেন। ছিকরে অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে এটি কার্যকর ও শক্তিবর্ধক বলেও জানিয়েছেন তাদের কয়েকজন। তাই খনিজ উপাদানের ঘাটতি কাটাতে গ্রামীণ নারীরা গর্ভাবস্থায় ছিকর খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া পান-তামাকের মতো দীর্ঘদিনের অভ্যাসবশতও অনেক প্রবীণ নারী ও পুরুষ ছিকর খেয়ে থাকেন।

নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার গৃহিনী লাইলী বেগম পাঁচ বছর আগে সন্তানের জন্ম দেন। গর্ভবতী অবস্থায় তিনি এই ‘মাটির বিস্কুট’ খেয়েছেন।

কেন খেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গর্ভবতী অবস্থায় এটি খাওয়ার ইচ্ছা হয়। তা ছাড়া মুরব্বিরাও খেতে বলেন। তাই খেয়েছি। তবে এতে কোনো উপকার হয়েছে কি না জানি না।’

স্ত্রী লাইলী বেগমের সঙ্গে তখন তার স্বামী মুরাদ আহমদও ছিকর খেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘এটি খেতে মজাই লাগে। মিষ্টি মিষ্টি স্বাদ। তাই একবার খেলে আবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে।’

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার রাখালগঞ্জ এলাকার প্রায় ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা রেখা রানী দাস বলেন, ‘ছিকর শক্তি বাড়ায় ও রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে বলে শুনেছি। আগে তো মানুষজন তেমন ওষুধপত্র খেত না। ডাক্তারের কাছে যাওয়া বা ওষুধ খাওয়ার সামর্থ্যও তখন ছিল না।

‘সে সময় মানুষজন ছিকর খেত। বিশেষ করে প্রায় সব গর্ভবতী নারী এটি খেতেন, তবে এখন ছিকর খাওয়া অনেক কমে গেছে।’

এ জিনিস কেন খাওয়া হয়, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি চাঁদনীঘাট এলাকার কোন বিক্রেতাই। প্রায় ২০ বছর ধরে এ এলাকায় মাটির জিনিসপত্র ও ছিকর বিক্রি করেন শহিদ আহমদ।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই এটি কিনে নেয়, তবে কেন খায় জানি না। শুনেছি এটি খেলে শক্তি বাড়ে ও খাওয়ার রুচি বাড়ে।

‘এ ছাড়া আয়রন ট্যাবলেটের বিকল্প হিসেবেও ছিকর খাওয়া হয়। তাই গর্ভবতী নারীরা এটি বেশি খায়।’

তিনি বলেন, ‘যারা রক্ত বিক্রি করে তাদের অনেকেও ছিকর কিনে খায়।’

এ ব্যাপারে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘ছিকরের কোনো উপকারিতা আছে বলে আমার জানা নেই। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিতও নয়।’

তিনি বলেন, ‘গর্ভবতী অবস্থায় নারীদের ক্যালসিয়াম ও আয়রনের সাপ্লিমেন্টারি দেয়া হয়, কিন্তু মাটির মধ্যে এই দুই উপাদান নেই। বরং এর মাঝে অনেক ক্ষতিকারক ব্যকটেরিয়া থাকতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর বা ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া কোনো কিছু খাওয়াই ঠিক নয়।’

কোথায় ও কীভাবে তৈরি হয় ‘মাটির বিস্কুট’

সিলেটের লালাবাজারের সনাতন পাড়ার সজিব মালাকার প্রায় ৪৫ বছর ধরে ছিকর তৈরি করেন। তার বাবা এবং দাদাও এই কাজ করতেন।

ছিকরের প্রস্তুতপ্রণালী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাহাড়-টিলার তলদেশের এঁটেল মাটি দিয়ে ছিকর তৈরি করা হয়। প্রথমে গর্ত খুঁড়ে পাহাড়ের তলা থেকে লম্বা বাঁশ দিয়ে মিহি মাটি সংগ্রহ করা হয়। এগুলো সারা রাত ভিজিয়ে রেখে নরম করা হয়। তারপর তা মাখিয়ে খাই বানিয়ে মন্ড তৈরি করা হয়।

‘পরে এগুলো কাঠের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে চ্যাপ্টা করা হয়। এরপর চাকু দিয়ে বিস্কুটের মতো ছোট ছোট করে টুকরা করা হয়। এরপর কাঁচা ছিকরগুলো রোদে দুই-এক দিন শুকানোর পর মাটির চুলায় এগুলো পোড়ানো হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর ছিকর কালচে বর্ণ ধারণ করে সুঘ্রাণ ছড়াতে থাকে। এতে গোলাপজলসহ বিভিন্ন সুগন্ধি মেশানো হয়।’

তিনি বলেন, দেশের চেয়ে বিদেশে এটি বেশি বিক্রি হয়। লন্ডনের ক্রেতারা এটি সবচেয়ে বেশি কিনে নেন।

ছিকর এক ধরনের নেশাজাতীয় খাবার উল্লেখ করে সজিব বলেন, ‘সিগারেটের মতো এটিও এক ধরনের নেশাজাতীয় খাবার। দীর্ঘদিনের অভ্যাস থেকে অনেকে এটি খান। সবচেয়ে বেশি খান নারীরা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের লালাবাজার ও গোয়ালাবাজার, সুনামগঞ্জের ছাতক, হবিগঞ্জের বানিয়াচং, বাহুবল ও মাধবপুর এবং মৌলভীবাজারের কয়েকটি এলাকায় ছিকর তৈরি করা হয়। এসব এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক বংশ পরম্পরায় ছিকর তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত, তবে এখন বিক্রি কমে যাওয়ায় বেশির ভাগই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

মৌলভীবাজারের জগৎসী এলাকার ব্যবসায়ী বিষ্ণপদ দে বলেন, ‘আগে শহরের পাশের শব্দকর ও কুমার সম্পদায়ের লোকজন ছিকর তৈরি করতেন। আমাদের ছোটবেলায় ওই সম্প্রদায়ের নারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছিকর বিক্রি করতেন, তবে এখন আর কেউ বাড়িতে গিয়ে ফেরি করে ছিকর বিক্রি করে না।’

কেমন ব্যবসা

চাঁদনীঘাট এলাকার ছিকর বিক্রেতা শহিদ আহমদ জানান, প্রতি কেজি ছিকর ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি।

প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি ছিকর বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

শহিদ আহমদ বলেন, ‘প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজনই বেশির ভাগ ক্রেতা। তারা এগুলো কিনে প্রবাসে তাদের আত্মীয়দের কাছে পাঠান। আবার অনেকে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানিও করেন।

‘রপ্তানির জন্য আমরা বিশেষভাবে তৈরি ছিকর দিয়ে থাকি। এগুলোর দাম একটু বেশি হয়।’

শহিদ আমাদের পাশেরই আরেক বিক্রেতা আল কাইয়ুম রনি বলেন, ‘এখন ছিকরের বিক্রি একেবারে কমে গেছে। বয়স্ক মানুষরা এটি কিছু কিনে নেন, তবে কম বয়সীরা এসব প্রায় কিনেনই না। এখন প্রতিদিন ৪/৫ কেজি ছিকর বিক্রি করি।’

লালাবাজারের ছিকরের কারিগর সজিব মালাকার বলেন, ‘আমরা পাইকারি দরে প্রতি কেজি ছিকর ৪০/৫০ টাকা করে বিক্রি করি।

‘আবার বিদেশে পাঠানোর জন্য তৈরি ছিকর প্রতি কেজি ৮০/৯০ টাকায় বিক্রি করি।’

আরও পড়ুন:
সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ বাস চলাচল, দুর্ভোগ
সিলেটে কর্মবিরতির ডাক পরিবহন শ্রমিকদের
সিলেট সীমান্ত: দুই দিনে ভারতীয় খা‌সিয়াদের গু‌লিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
সিলেট জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ, দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ
বৈদ্যুতিক খুঁটিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কা, তিনজন নিহত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bricks for road construction are breaking down under pressure 

চাপ দিলেই ভেঙে গুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে সড়ক নির্মাণের ইট 

চাপ দিলেই ভেঙে গুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে সড়ক নির্মাণের ইট  সড়ক নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা নিম্নমানের ইট। ছবি: নিউজবাংলা
জায়েদ শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘খোয়া এত পচা যে, চাপ দিলেই ভেঙে যায়। রাবিশ খোয়া দিয়ে রাস্তা করা যাবে না এটা বললে খোয়া সরবরাহকারী মাহবুবুল হক বাবুল ওরফে বাবুল মেম্বর আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে মারধর করে। আমরা তার বিচার চাই।’

হাতে নিয়ে চাপ দিলেই ভেঙে গুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলভদ্রপুর, কালিখোলা-বালিয়াডাঙ্গা সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত ইটের খোয়া।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিজি বাংলার হয়ে স্থানীয় সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নিম্নমানের এ খোয়া সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবাদ করলে ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের মারধরের শিকার হতে হয়েছে। এমন অবস্থায় তাদের (স্থানীয়) তীব্র প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাবুল শেখ এ খোয়া সরবরাহ করেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সড়কের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মো. মোরশেদ বলেন, ‘সরবরাহকারী বাবুল শেখ ভালো খোয়া দেখিয়ে আমাদের নিম্নমানের খোয়া দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা খোয়া অপসারণ শুরু করেছি।

‘ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী দিয়েই কাজ করা হবে।’

জায়েদ শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘খোয়া এত পচা যে, চাপ দিলেই ভেঙে যায়। রাবিশ খোয়া দিয়ে রাস্তা করা যাবে না এটা বললে খোয়া সরবরাহকারী মাহবুবুল হক বাবুল ওরফে বাবুল মেম্বর আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে মারধর করে। আমরা তার বিচার চাই।’

স্থানীয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হেমায়েত শেখ বলেন, ‘সড়কটি নির্মাণের শুরু থেকেই মাহবুবুল হক বাবুল শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি নানা জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। এখন নিম্নমানের খোয়া দিয়ে রাস্তা করার চেষ্টা করছে।

‘লোকজন বাধা দিলে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে তাদের মারধর করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝি না। আমাদের দাবি একটাই–রাস্তা নির্মাণ হবে ভাল খোয়া দিয়ে।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য খোয়া সরবরাহকারী মাহবুবুল হক বাবুল ওরফে বাবুলকে মোবাইল ফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ঠিকাদারকে সড়কে ব্যবহার করা নিম্নমানের খোয়া অপসারণ করতে বলা হয়েছে। ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া অপসারণ শুরু করেছেন।

‘ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী দিয়েই কাজ করতে হবে। সড়কের কাজে কোনোভাবে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করতে পারবে না।’

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কালিখোলা বলভদ্রপুর কালিমন্দির-বালিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পিচের সড়ক ও একটি কালভার্ট নির্মাণ করছে। দুই কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিজি বাংলা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। চলতি বছরের ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বৃদ্ধি করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:
থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি না করার আহ্বান সরকারের
সিআরপি নার্সিং কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
স্কুলের পাশে ইটভাটা, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পরিবেশ কর্মকর্তার
ভৈরবে কাভার্ড ভ্যান-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৫
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বেহাল

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Environment officer assured to arrange brick kiln next to the school

স্কুলের পাশে ইটভাটা, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পরিবেশ কর্মকর্তার

স্কুলের পাশে ইটভাটা, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পরিবেশ কর্মকর্তার ঝালকাঠির নলছিটির একটি স্কুল ও সংলগ্ন ইটভাটা। কোলাজ: নিউজবাংলা
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিরিন আক্তার বলেন, ‘স্কুলের পাশে ইটভাটা বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের চলাচলে ব্যবহৃত সড়কটিতে বেপরোয়া গতিতে ট্রলি চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে। ইটভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কিছুই করতে পারছি না, তবুও লিখিত পত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিয়েছি।’

ঝালকাঠির নলছিটিতে দুটি স্কুলের পাশে ফসলি জমিতে রয়েছে ‘রিয়াজ ব্রিকস’ নামের একটি ইটভাটা।

এ ভাটা থেকে শব্দ ও পরিবেশ দূষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

শুধু ইটভাটার চুল্লিই নয়, ভাটায় মাটি ও বিক্রিত ইট সরবারহ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে অবৈধ ট্রলি গাড়ি। এসব ট্রলির বেপোরোয়া গতি, উচ্চ শব্দ এবং কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ দুই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৯ অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার মিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এমন আইন থাকলেও সেটা না মেনে নলছিটি উপজেলার সরই গ্রামে দুটি স্কুল ঘেঁষে স্থাপন করা হয় ‘রিয়াজ ব্রিকস’ নামের ইটভাটাটি।

এ ভাটার ৩০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে ১৯ নম্বর সরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর ৫০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে মাটিভাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

ইট পোড়ানোর চুল্লির (ক্লিন) ধোঁয়া, ইট কাটার মাঠের (ফরাস) ধুলা এবং মালামাল আনা-নেয়ার কাজে ব্যবহৃত বাংলা ট্রলি গাড়ির শব্দে অতিষ্ঠ স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ও কর্মীরা। স্কুলঘেঁষা সড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচলরত ইটভাটার ট্রলি (টমটম) গাড়ির শব্দে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, ইটভাটার দূষণ থেকে পরিবেশ রক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির দিক বিবেচনা করে ভাটার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে, তবে সেখান থেকে এখনও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই গ্রামে দুটি বিদ্যালয়ের মাঝখানে ফসলি জমির মধ্যেই ‘রিয়াজ ব্রিকস’ নামের এ ইটভাটার অবস্থান। সেখানকার স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ওই বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবক, আশপাশের ফসলি জমির কৃষকসহ অনেকে সাংবাদিক দেখে নানা অভিযোগ জানালেন।

কীভাবে এখানে অনুমোদনহীন ইটভাটা নির্মাণ করল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সবাই। একই সঙ্গে স্কুলঘেঁষা অনুমোদনহীন ভাটা চালু করার পর প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এমন বাস্তবতায় প্রশাসনকে উৎকোচ দিয়ে এ ইটভাটাটি চালানো হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন অনেকের মুখে।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষের দিকে গড়ে তোলা হয় ‘রিয়াজ ব্রিকস’ নামের এ ইটের ভাটাটি। নানা জটিলতায় গত তিন মৌসুম এটি বন্ধ থাকলেও মালিক রিয়াজ হোসেন ব্যবসা পরিচালনার জন্য চলতি বছর এটি সুমন ফকির নামের অপর একজনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।

সুমনের দাবি, ভাড়া নয়, তিনি রিয়াজের সঙ্গে ব্যবসায় অংশীদার হয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় সরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তাদের একজন বলে, ‘ইটের ভাটার জন্য আমরা গ্রামের সুন্দর পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। আর স্কুলের সামনে অনেক জোরে টমটম ট্রলি চলাচল করে।

‘স্কুলে আসা এবং ছুটির সময় বের হওয়ার সময় রাস্তা পাহারা দিতে হয়।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিরিন আক্তার বলেন, ‘স্কুলের পাশে ইটভাটা বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের চলাচলে ব্যবহৃত সড়কটিতে বেপরোয়া গতিতে ট্রলি চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে।

‘ইটভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কিছুই করতে পারছি না, তবুও লিখিত পত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিয়েছি।’

রিয়াজ ব্রিকসের সত্বাধিকারী মো. রিয়াজ জানান, তিনি বর্তমানে ভাটাটি সুমন ফকির নামের অন্য একজনের কাছে ভাড়া দিয়েছে।

মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে সুমন ফকির বলেন, ‘ভাড়া নয়, আমি রিয়াজের সাথে ব্যবসার পার্টনার হয়েছি।’

অনুমোদন না থাকার কথা স্বীকার করে সুমন বলেন, ‘অনুমোদন চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছি।’

পরিবেশ অধিদপ্তর ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনজুমান নেছা বলেন, “নলছিটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ‘রিয়াজ ব্রিকস’ নামের একটি ইটভাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন স্থানে ইটভাটা স্থাপনের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

“এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই।”

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা পারিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

‘নলছিটিতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে শিগগিরই পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযান চালানো হবে।’

আরও পড়ুন:
১৮ ঘণ্টাতেও ইলিশ রক্ষা অভিযানের তথ্য দিতে পারেননি মৎস্য কর্মকর্তা
ঝালকাঠিতে বাইক দুর্ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্র নিহত, দুজন আহত
হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় আসামি করার অভিযোগ সাবেক নারী কাউন্সিলরের
ঝালকাঠিতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কুপিয়ে হত্যা
ঝালকাঠির ৯ ইউপিতে দায়িত্ব পেলেন যারা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
We revolted for freedom on March 25 night Ziaur Rahman

আমরা ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ করেছি: জিয়াউর রহমান

আমরা ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ করেছি: জিয়াউর রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ফাইল ছবি
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাত-পরবর্তী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক বাংলায় ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধ লিখেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭৪ সালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাপ্তাহিক বিচিত্রা নিবন্ধটি পুনঃপ্রকাশ করে।

‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী যখন নিরীহ বাঙালিদের ওপর সামরিক অভিযান চালানো শুরু করে, তখন আমি তৎকালীন অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নেতৃত্ব দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলাম। এটি ছিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমি বলেছিলাম- আমরা বিদ্রোহ করছি।’

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধে এসব কথা বলেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।

১৯৭৪ সালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাপ্তাহিক বিচিত্রা নিবন্ধটি পুনঃপ্রকাশ করে। সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজ উল্লাহ রচিত ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: এ পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি’ বইয়ে এই নিবন্ধের উল্লেখ রয়েছে।

সাবেক সেনাপ্রধান এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নেতা মেজর জিয়াউর রহমান তার নিবন্ধে নিজের স্কুলজীবন, পাকিস্তান আমলে সামরিক একাডেমির ক্যাডেট জীবন, পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) অস্থির পরিস্থিতি এবং মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

জিয়াউর রহমান লিখেছেন, ‘স্কুলজীবন থেকেই পাকিস্তানিদের মনোভাব আমাকে ব্যথিত করত। আমি জানতাম, তারা আমাদের গভীরভাবে ঘৃণা করে। আমার অনেক বন্ধুর কাছ থেকে আমি এরকম অনেক গল্প শুনেছি। তাদের পরিবারে যা আলোচনা হতো, তারা স্কুলে এসে আমাদের বলত।

‘তখন থেকেই আমি মনে মনে একটি স্বপ্ন লালন করতাম- যদি সুযোগ পাই, একদিন পাকিস্তানিদের অস্তিত্বের ভিত্তিমূলে আঘাত হানব। গভীর যত্ন ও ভালোবাসার সঙ্গে আমি এই চিন্তাটি লালন করতাম।’

পাকিস্তানি মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী, সরকারি কর্মচারী, সেনাবাহিনী এবং সাধারণ জনগণ কীভাবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে তাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রচার করেছিল তিনি সে কথাও লিখেছেন।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের সময়ের উল্লেখ করে জিয়া লিখেছেন, ‘তখন আমি দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্যাডেট ছিলাম। কিছু পাকিস্তানি ক্যাডেট আমাদের জাতীয় নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করে। আমরা এর প্রতিবাদ করি এবং এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় যে তর্কই যথেষ্ট নয়; এটি বক্সিং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’

‘আমি বাঙালিদের জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বক্সিং গ্লাভস পরি। পাকিস্তানিদের পক্ষ থেকে ক্যাডেট লতিফ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সে শপথ করেছিল আমাকে শিক্ষা দেবে। কিন্তু বক্সিং প্রতিযোগিতা ৩০ সেকেন্ডও স্থায়ী হয়নি। আমার প্রতিপক্ষ মাটিতে পড়ে যায় এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানায়।’

পাকিস্তানি শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ও অস্থির ঘটনাগুলো তুলে ধরে জিয়াউর রহমান লিখেন, ‘এরপর এলো সেই কালরাত্রি- ২৫ মার্চ ও ২৬ মার্চের মধ্যবর্তী রাত। রাত ১টায় আমার কমান্ডিং অফিসার আমাকে একটি নৌবাহিনীর ট্রাকে করে চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ে জেনারেল আনসারির কাছে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেন।

‘আমাকে জানানো হয়েছিল, নৌবাহিনীর একটি প্রহরী দল (পাকিস্তানি) আমাকে সঙ্গ দেবে এবং আমি চাইলে তিনজন লোক সঙ্গে নিতে পারব। তবে আমার ব্যাটালিয়নের একজন পাকিস্তানি অফিসার আমার প্রহরী হিসেবে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বন্দরের দিকে রওনা হলাম। কিন্তু আগ্রাবাদে একটি ব্যারিকেডের কারণে থামতে হলো। হঠাৎ মেজর খালেকুজ্জামান ক্যাপ্টেন অলি আহমদের একটি বার্তা নিয়ে এলেন। তিনি আমাকে একটু দূরে নিয়ে মৃদু স্বরে বললেন, ‘ওরা (পাকিস্তানি সেনারা) ক্যান্টনমেন্ট এবং শহরে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। অনেক বাঙালিকে হত্যা করেছে।’

এরপর জিয়াউর রহমান দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘আমরা বিদ্রোহ করছি’ এবং সহযোদ্ধাদের পাকিস্তানি অফিসারদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এরপর তিনি নিজেই তার কমান্ডিং অফিসারের বাড়িতে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

জিয়াউর রহমান লিখেছেন, ‘যখন ব্যাটালিয়নে ফিরে আসি, দেখি সব পাকিস্তানি অফিসারকে গ্রেপ্তার করে একটি ঘরে রাখা হয়েছে। আমি অফিসে যাই এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমআর চৌধুরী ও মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনোভাবেই পারলাম না।

‘পরে আমি বেসামরিক বিভাগের টেলিফোন অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাকে অনুরোধ করি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কমিশনার, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের জানাতে যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করেছে এবং তারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবে।’

মন্তব্য

p
উপরে