বিএনপি-জামায়াতকে অপশক্তি আখ্যা দিয়ে এখনই এদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে গৌরব-৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় গৌরব-৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে ‘হরতাল-অবরোধ আর আগুন সন্ত্রাস: বন্ধ হোক এই অপরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রতিক আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, বিএনপি-জামায়াত হরতাল ও অবরোধ দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তারা ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুন পুড়িয়েছে। রাজনীতির সাথে আগুনের সম্পর্ক কি? এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা গণতন্ত্রের রাজনীতি করে না। দেশের মানুষকে ভালোবাসে না, সংবিধানের প্রতিও আনুগত্য নেই। যার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা তারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়। নির্বাচন বানচাল করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত নামক এই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, ‘বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশের রাষ্ট্রীয় কাজ থামানো যাবে না। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মর্সূচি নয়; এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা ভেবেছে বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সম্পত্তি ধ্বংস করে বোধহয় নির্বাচন বানচাল করা যাবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। এসব কর্মকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচার করা হবে। তার কি রাজনৈতিক সিল আছে সেটা দেখা হবে না। যারা আগুন দেয় তারা সন্ত্রাসী। এদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচিত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুন পুড়িয়েছে। কেন? রাজনীতির সাথে আগুনের সম্পর্ক কি? এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। জঙ্গী বা সন্ত্রাসীদের কাজ, এটা কিভাবে গণতন্ত্র হয়। আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবতার কথা বলেন, অন্যদিকে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেন, এটা কোন গণতন্ত্র, কোন মানবতা?’
গণমাধ্যমে প্রতি আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনরা খবরে বলেন, বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কোন দুর্বৃত্ত? দুর্বৃত্ত শব্দটা কেন আসে? বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। হাতেনাতে ধরা পড়েছে তারা। সিসিটিভিতে দেখা গেছে কারা আগুন দিয়েছে। গণরমাধ্যমেই তো আমরা দেখেছি। এরপরও কেন বলেন দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়েছে এভাবে বলতে কেন আপনাদের শংকা হয়? কেন আপনারা বলেন না? তারা আগুন দিচ্ছে বলতে অসুবিধা কোথায়?
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সমমনা কিছু দল আছে, নাম সর্বস্ব দল। তাদের নেতারা টকশোতে এসে ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করেন এটা বিএনপি নেতা-কর্মী করেনি। সরকারের ওপরই দোষ চাপাতে চায়। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকে। আমি অবাক হয়ে যাই, এরা রাজনীতি করে জনগণের জন্য? যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে আবার এদের পক্ষে সাফাইও এরা। লজ্জিত হওয়া উচিত।
আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো যারা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করে এদের পক্ষে যারা সাফাই গায় তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করার।’
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি-জাময়াত গণতন্ত্রের রাজনীতি করে না। এই দল সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নিয়ে। তারা মানুষকে ভালোবাসে না, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য নেই। এই স্বাধীনতা তারা চায়নি। যার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত হরতাল, অবরোধ দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে যে আগুন সন্ত্রাস করেছিল ২৮ তারিখে আবার তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। চোরাগোপ্তা আক্রমণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায় কিন্তু আন্দোলনে জয়ী হওয়ার ইতিহাস নেই। আগামী জাতীয় সংসদ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নিলে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, ‘২৩ দিনে অবরোধের নামে ১৮৬টি গাড়ি পুড়ানো হয়েছে। কারা এই গাড়ি পুড়িয়েছে? যারা নির্বাচনে আসতে চায় না। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। দেশকে অশান্ত করতে চায়। তাদের অবৈধভাবে জন্ম হয়েছে আর এজন্য তারা অবৈধভাবেই ক্ষমতায় আসতে চায়।
জনগণের প্রতি ক্ষোভ থেকে বিএনপি-জামায়াত গাড়ি পোড়াচ্ছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের উদ্দেশ্য। তারা তাদের জিঘাংসামূলক চেহারা, পুড়িয়ে মারার যে চেহারা ২৮ তারিখে আবার সেই চেহারা দেখানো শুরু করেছে। কিভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে এই গোষ্ঠী। আমরা যারা রাজনৈতিক কর্মী তারা মাঠে থেকে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করবো।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করছি। সবাই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করবে এটা স্বাভাবিক। হরতাল, অবরোধ ডাকার অধিকার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আছে কিন্তু মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা ক্ষমতা কাউকে দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বাসে আগুন দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না, এগুলো সন্ত্রাসী কর্মসূচি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা এই অপরাজনীতি করছেন, তাদেরকে এ ধরণের কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহবান জানাই।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ বলেন, ‘২০১৪ সালে আমরা তাদের অগ্নি সন্ত্রাস দেখেছি। তারা অগ্নি সংযোগ কেন করে? কারা করে? জনগণের বিরুদ্ধে কারা অবস্থান নেয়? যারা কোনদিনই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়।’
তিনি বলেন, ‘যখনই নির্বাচন আসে তখনি তারা এটা করে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ এগিয়ে যেতে চায় তখনই সেই অগ্রযাত্রাকে দাবিয়ে দেয়ার জন্য তাদের অপচেষ্টা শুরু হয়। যারা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে সাধারণ মানুষর ক্ষতি করতে চায়, আসুন সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করি।’
আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গৌরব-৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাসে চড়ে অফিসে কিংবা বাসায় নিরাপদে পৌঁছাতে চাই। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের বাস আগুন দেয়ার ঘটনায় আজ মানুষ শঙ্কা নিয়ে গাড়িতে ওঠে। আমরা তাদের অবরোধের আগুনে ঝলসে যেতে চাই না। আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি বিদেশি শক্তির ইশারায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে। তারা ২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। ৩০ জনের বেশি সাংবাদিক আহত করা হয়েছে। আমরা এ রাষ্ট্র চাইনি। এই বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।’
সভা সঞ্চালনা করেন স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম নেতা ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম।
এর আগে আলোচনা সভার শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে দেয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত দশজন বাস মালিক ও শ্রমিক নিজেদের অবস্থার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বোরাক পরিবহনের চালক মিরাজ হোসেন বলেন, ‘রাত ১০ টার দিকে আমরা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। গাড়ি পুরা কঙ্কাল হয়ে গেছে। একেবারে শেষ হয়ে গেছি। এমনভাবে পুড়েছে ঠিক করাও যাচ্ছে না। আমি খুব নিঃস্ব, অসহায়।’
শিকড় পরিবহনের মালিক লিটন মিয়া বলেন, ‘মিরপুর ১১ পার হওয়ার পর আমার গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তারা যাত্রীবেশে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। গাড়ির সবকিছুই পুড়ে গেছে। আমার ইনকাম সোর্স বন্ধ হয়ে গেছে।’
অছিম পরিবহনের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, ‘২৯ তারিখ রাত তিনটায় খবর পাই গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমার দুইটা স্টাফ গাড়ির ভেতর ছিল। দুই মিনিটে গাড়িটা পুড়ে গেছে। একজন মরে কয়লা হয়ে গেছে। আরেকজন ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের পরিবারের অবস্থাও খারাপ। আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনো পায়নি।’
আরও পড়ুন:আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
মন্তব্য