বিএনপি-জামায়াতকে অপশক্তি আখ্যা দিয়ে এখনই এদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে গৌরব-৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় গৌরব-৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে ‘হরতাল-অবরোধ আর আগুন সন্ত্রাস: বন্ধ হোক এই অপরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রতিক আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, বিএনপি-জামায়াত হরতাল ও অবরোধ দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তারা ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুন পুড়িয়েছে। রাজনীতির সাথে আগুনের সম্পর্ক কি? এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা গণতন্ত্রের রাজনীতি করে না। দেশের মানুষকে ভালোবাসে না, সংবিধানের প্রতিও আনুগত্য নেই। যার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা তারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়। নির্বাচন বানচাল করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত নামক এই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, ‘বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশের রাষ্ট্রীয় কাজ থামানো যাবে না। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মর্সূচি নয়; এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা ভেবেছে বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সম্পত্তি ধ্বংস করে বোধহয় নির্বাচন বানচাল করা যাবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। এসব কর্মকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচার করা হবে। তার কি রাজনৈতিক সিল আছে সেটা দেখা হবে না। যারা আগুন দেয় তারা সন্ত্রাসী। এদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচিত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুন পুড়িয়েছে। কেন? রাজনীতির সাথে আগুনের সম্পর্ক কি? এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। জঙ্গী বা সন্ত্রাসীদের কাজ, এটা কিভাবে গণতন্ত্র হয়। আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবতার কথা বলেন, অন্যদিকে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেন, এটা কোন গণতন্ত্র, কোন মানবতা?’
গণমাধ্যমে প্রতি আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনরা খবরে বলেন, বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কোন দুর্বৃত্ত? দুর্বৃত্ত শব্দটা কেন আসে? বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। হাতেনাতে ধরা পড়েছে তারা। সিসিটিভিতে দেখা গেছে কারা আগুন দিয়েছে। গণরমাধ্যমেই তো আমরা দেখেছি। এরপরও কেন বলেন দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়েছে এভাবে বলতে কেন আপনাদের শংকা হয়? কেন আপনারা বলেন না? তারা আগুন দিচ্ছে বলতে অসুবিধা কোথায়?
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সমমনা কিছু দল আছে, নাম সর্বস্ব দল। তাদের নেতারা টকশোতে এসে ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করেন এটা বিএনপি নেতা-কর্মী করেনি। সরকারের ওপরই দোষ চাপাতে চায়। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকে। আমি অবাক হয়ে যাই, এরা রাজনীতি করে জনগণের জন্য? যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে আবার এদের পক্ষে সাফাইও এরা। লজ্জিত হওয়া উচিত।
আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো যারা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করে এদের পক্ষে যারা সাফাই গায় তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করার।’
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি-জাময়াত গণতন্ত্রের রাজনীতি করে না। এই দল সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নিয়ে। তারা মানুষকে ভালোবাসে না, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য নেই। এই স্বাধীনতা তারা চায়নি। যার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত হরতাল, অবরোধ দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে যে আগুন সন্ত্রাস করেছিল ২৮ তারিখে আবার তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। চোরাগোপ্তা আক্রমণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায় কিন্তু আন্দোলনে জয়ী হওয়ার ইতিহাস নেই। আগামী জাতীয় সংসদ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নিলে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, ‘২৩ দিনে অবরোধের নামে ১৮৬টি গাড়ি পুড়ানো হয়েছে। কারা এই গাড়ি পুড়িয়েছে? যারা নির্বাচনে আসতে চায় না। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। দেশকে অশান্ত করতে চায়। তাদের অবৈধভাবে জন্ম হয়েছে আর এজন্য তারা অবৈধভাবেই ক্ষমতায় আসতে চায়।
জনগণের প্রতি ক্ষোভ থেকে বিএনপি-জামায়াত গাড়ি পোড়াচ্ছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের উদ্দেশ্য। তারা তাদের জিঘাংসামূলক চেহারা, পুড়িয়ে মারার যে চেহারা ২৮ তারিখে আবার সেই চেহারা দেখানো শুরু করেছে। কিভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে এই গোষ্ঠী। আমরা যারা রাজনৈতিক কর্মী তারা মাঠে থেকে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করবো।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করছি। সবাই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করবে এটা স্বাভাবিক। হরতাল, অবরোধ ডাকার অধিকার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আছে কিন্তু মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা ক্ষমতা কাউকে দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বাসে আগুন দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না, এগুলো সন্ত্রাসী কর্মসূচি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা এই অপরাজনীতি করছেন, তাদেরকে এ ধরণের কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহবান জানাই।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ বলেন, ‘২০১৪ সালে আমরা তাদের অগ্নি সন্ত্রাস দেখেছি। তারা অগ্নি সংযোগ কেন করে? কারা করে? জনগণের বিরুদ্ধে কারা অবস্থান নেয়? যারা কোনদিনই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়।’
তিনি বলেন, ‘যখনই নির্বাচন আসে তখনি তারা এটা করে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ এগিয়ে যেতে চায় তখনই সেই অগ্রযাত্রাকে দাবিয়ে দেয়ার জন্য তাদের অপচেষ্টা শুরু হয়। যারা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে সাধারণ মানুষর ক্ষতি করতে চায়, আসুন সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করি।’
আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গৌরব-৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাসে চড়ে অফিসে কিংবা বাসায় নিরাপদে পৌঁছাতে চাই। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের বাস আগুন দেয়ার ঘটনায় আজ মানুষ শঙ্কা নিয়ে গাড়িতে ওঠে। আমরা তাদের অবরোধের আগুনে ঝলসে যেতে চাই না। আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি বিদেশি শক্তির ইশারায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে। তারা ২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। ৩০ জনের বেশি সাংবাদিক আহত করা হয়েছে। আমরা এ রাষ্ট্র চাইনি। এই বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।’
সভা সঞ্চালনা করেন স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম নেতা ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম।
এর আগে আলোচনা সভার শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে দেয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত দশজন বাস মালিক ও শ্রমিক নিজেদের অবস্থার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বোরাক পরিবহনের চালক মিরাজ হোসেন বলেন, ‘রাত ১০ টার দিকে আমরা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। গাড়ি পুরা কঙ্কাল হয়ে গেছে। একেবারে শেষ হয়ে গেছি। এমনভাবে পুড়েছে ঠিক করাও যাচ্ছে না। আমি খুব নিঃস্ব, অসহায়।’
শিকড় পরিবহনের মালিক লিটন মিয়া বলেন, ‘মিরপুর ১১ পার হওয়ার পর আমার গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তারা যাত্রীবেশে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। গাড়ির সবকিছুই পুড়ে গেছে। আমার ইনকাম সোর্স বন্ধ হয়ে গেছে।’
অছিম পরিবহনের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, ‘২৯ তারিখ রাত তিনটায় খবর পাই গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমার দুইটা স্টাফ গাড়ির ভেতর ছিল। দুই মিনিটে গাড়িটা পুড়ে গেছে। একজন মরে কয়লা হয়ে গেছে। আরেকজন ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের পরিবারের অবস্থাও খারাপ। আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনো পায়নি।’
আরও পড়ুন:২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।
এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।
উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”
ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।
ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য