পাঁচ দফা অবরোধের পর বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন পুরান ঢাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
সিদ্দিকবাজারের কাজী আলাউদ্দিন রোডে ওয়ানস্টার হোটেলের সামনে রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ককটেল ছোড়া হয়। পরে এ থেকে আগুনও লেগে যায় অটোরিকশাটিতে।
ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়েছে।
বিএনপির এই অবরোধ-হরতালের কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। একই সময়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করছিল আওয়ামী লীগ। আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মতিঝিলের দিকে মাঠে ছিল জামায়াতে ইসলামী।
ওইদিন বিএনপির সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। আগুন, ভাঙচুর ও ককটেল ছোড়া হয়। পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক কনস্টেবলকে। এ ছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন আরও একজন।
এ অবস্থায় সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেন। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। অজ্ঞাত স্থান থেকে রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি দেন। বিএনপির অবরোধে একাত্মতা জানায় জামায়াতে ইসলামীও।
এর পর এ পর্যন্ত পাঁচ দফায় অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এতদিন সরকারের পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে অবরোধের ডাক দেয়া বিএনপি সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়। এই হরতালের প্রথম দিন রোববার।
বিএনপির ডাকা অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপসহ নানা সহিংসতা হচ্ছে। কঠোর অবস্থানে থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে আতঙ্ক সঙ্গে করেই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশ থেকে তাদের ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ’ বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
নূর হোসেন চত্বর নামে পরিচিত জিরো পয়েন্টে রোববার ভোর থেকেই নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যার জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানান তারা।
আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার শহীদ নূর হোসেন দিবস পালনের ঘোষণা দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের জিরো পয়েন্টে আসার আহ্বান জানায়।
এরপর তাদের প্রতিহত করতে পাল্টা সমাবেশ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
এদিকে শহীদ নূর হোসেন দিবসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের সারাদেশে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীতে সচিবালয়ের আশপাশ এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিসের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কিছু ব্যক্তিকে মারধর করতে দেখা যায় পুলিশকে। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেখানে কর্তব্যরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে, তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব নয়।’
ইউএনবির প্রতিবেদক রোববার ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন।
‘আমার সোনার বাংলায়, ফ্যাসিবাদের স্থান নেই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’—এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
নাইমুর নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই দেশে যেই দল ও সরকার ফ্যাসিবাদকে চরমে নিয়ে গেছে, যারা আমার ভাই-বোনদের হত্যা করেছে, তাদের জন্য কোনো দয়া নেই। আমরা কোনো লীগ চাই না, আর এ কারণেই আমরা আজ এখানে এসেছি।’
বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে ন্যায়বিচারের দাবি জানান।
এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিলে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে নিহত হন নূর হোসেন।
তার বুক ও পিঠে লেখা ছিল, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান।
আরও পড়ুন:দেশে বিদ্যমান সংবিধানের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে সেগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের বক্তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে শনিবার বিকেলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংবিধান ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এ মত দেন।
জনস্তরে সংবিধান চিন্তার প্রসারে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন (বিআইআরই) এ আলোচনা সিরিজের আয়োজন করে, যার প্রথম পর্ব হয় গতকাল।
আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মনযুর রাব্বি বলেন, রিপাবলিকের বাংলা অনুবাদ প্রজাতন্ত্র ঠিক নয়। সংবিধানে প্রজা কথাটি থাকায় তা ‘রাজা’র জন্ম দিয়েছে।
তিনি এ ধরনের শব্দ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে জনগণের বিভিন্ন অংশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য দরকার।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সংবিধানের ১৮টি মৌলিক অধিকারের মধ্যে ১৫টিই শর্তসাপেক্ষ (কনডিশনাল)। ফলত এক হাতে অধিকার দিয়ে অন্য হাতে কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি এ ধরনের শর্তারোপের বিরোধিতা করে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এটি সঞ্চালনা করেন মেহেরবা সাবরিন।
স্বাগত বক্তব্যে মো. জহির উদদীন সোহাগ কেন জনস্তরে সংবিধান চিন্তা প্রয়োজন, কীভাবে তা সম্ভব, সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
পরে সংবিধান নিয়ে জনমত জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপের ফল প্রকাশ করে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সাঈদ সারওয়ার জানান, অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী চান নতুন সংবিধান। প্রায় সবাই চান এ সংবিধানের সংস্কার।
ব্যতিক্রমী এ আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা সংবিধান নিয়ে তাদের মতামত দেন। তাদের অনেকে সংবিধান পুনর্লিখনের কথা বলেন। কেউ কেউ সংস্কারের পরামর্শ দেন।
অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য শেষে তিন বক্তা সংবিধান সংস্কার নাকি পুনর্লিখন দরকার, সে বিষয়ে তাদের মত দেন।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টারসহ সমাবেশের অডিও ক্লিপ ভাইরাল করার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে যেকোনো প্রান্তে যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
উসকানিদাতা, অর্থদাতা এবং এসব অপকর্মের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হওয়া সাম্প্রতিক একটি অডিও ক্লিপে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার দলের নেতা-কর্মীদের অবৈধ সমাবেশে ঢাল হিসেবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ও প্ল্যাকার্ড এবং মার্কিন পতাকা বহন করার নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেগুলো ভাঙচুর ও অবমাননার ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশনাও দেন তিনি।
‘বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এই অপকর্মের পরিকল্পনা করেছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
‘এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুলসংখ্যক উসকানিমূলক পোস্টার, ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সাক্ষাৎ করেছেন।
ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে রোববার এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন শহীদ নূরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
দলগুলোর মধ্যে ছিল জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
দলগুলোর নেতা-কর্মীরা রোববার রাজধানীর গুলিস্তানের নূর হোসেন চত্বরে (জিরো পয়েন্ট) জড়ো হয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
রাজনৈতিক কর্মী নূর হোসেন ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার এইচএম এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অ্যাক্টিভিস্ট দীপক সেন বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চাই। আগের সরকারের অধীনে কোনো গণতন্ত্র ছিল না, আর আজও কোনো গণতন্ত্র নেই।
‘আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যে নতুন সরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দেবে, কিন্তু তা হয়নি।’
মাহিন শাহরিয়ার নামের আরেকজন বলেন, ‘আমরা এই দিন প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করি এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখব।’
পূর্ববর্তী সরকারের পতন এবং তাদের ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মাহিন বলেন, ‘স্বাধীনতার জন্য জনগণের গণঅভ্যুত্থানে যে রক্ত ঝরেছে, তা এখনও তাদের হাতে লেগে আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য কোনো স্থান নেই। যদি তারা আবার রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করে, তবে জনগণ নিশ্চয়ই তাদের বাধা দেবে।
‘আমরাও তাদের প্রতিরোধে কর্মসূচি নেব। যদি কেউ স্বৈরাচারী শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে, তবে আমরা আগের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’
দিনটি উপলক্ষে রোববার দুপুর ১২টায় জিরো পয়েন্টে জনসভার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এদিকে নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ শনিবার তাদের ফেসবুক পেজে এক পোস্ট দিয়ে দলের সদস্যদের বেলা ৩টায় জিরো পয়েন্টে নূর হোসেনকে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানায়। এর পর থেকে গুলিস্তান এলাকায় উত্তেজনা বাড়ে।
জিরো পয়েন্ট ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি রোববার এক খুদেবার্তায় এ তথ্য জানায়।
শহীদ নূর হোসেন দিবসকে ঘিরে ঢাকার জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের জমায়েতের আহ্বান এবং বিরোধীদের প্রতিহতের ঘোষণার মধ্যে বিজিবি সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা এলো।
খুদেবার্তায় বলা হয, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে: বিজিবি সদরদপ্তর।’
পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে গুলিস্তানে গণজমায়েত করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে গুলিস্তানের জিরোপয়েন্ট মোড়ে এই গণজমায়েত শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে শনিবার শহিদ নূর হোসেনের স্মরণে ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার জিরো পয়েন্টে জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। এদিন বিকেল ৩টায় নুর হোসেন চত্বর থেকে তাদের এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই ঘোষণার পর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ঢাবি ছাত্রদলের কর্মসূচি
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে বিদেশে হেনস্থার প্রতিবাদ এবং ১৫ বছরে বিভিন্ন হামলায় জড়িতদের বিচারসহ তিন দফা দাবিতে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ছাত্রদলের দাবিগুলো হলো-
ড. আসিফ নজরুলের ওপর বিদেশের মাটিতে হামলা ও হেনস্থার অপচেষ্টাকারী বিদেশে পলাতক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিগত ১৫ বছর ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনকারী ও ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।
আওয়ামী সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য