যত অপচেষ্টাই করা হোক, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হতে না দেয়ার অনেক চক্রান্ত চলছে। কিন্তু সরকার সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী যথাসময়ে একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নির্বাচন হবে এবং এদেশের জনগণ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করবে।’
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শনিবার সকালে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করার যদি কেউ চেষ্টা করে আর যদি অগ্নিসন্ত্রাস অব্যাহত রাখে তাদের পরিণতি ভালো হবে না। যারা এসব করবে আমাদের দেশের মানুষেই তাদের শাস্তি দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশবাসীর দোয়া চাই। যেন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা হয়। আর নির্বাচন যারা বানচাল করতে চায়, অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়ে মারে, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, থার্ড টার্মিনাল আমরা করে দিয়েছি, এগুলো যারা ধ্বংস করতে যাবে, আমি জনগণকে আহবান করব তাদেরকে প্রতিরোধ করতে।’
নির্বাচন বয়কট করা রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম অন্যান্য দলগুলো এভাবে নির্বাচনে আসবে। তবে যেসব দল নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই। আর যাদের মানুষের ওপর আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই বা দল হিসেবে যারা সুসংগঠিত না তারাই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে যাচ্ছে। অথচ নির্বাচন বানচাল করলে একটা দেশের যে ক্ষতি হয়, তা খুবই দুঃখজনক।’
নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩-১৪ সালের মতো এবার অগ্নি সন্ত্রাসের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা কোন ধরনের রাজনীতি? অগ্নিসন্ত্রাস করে জাতীয় সম্পদ নষ্ট করা, ব্যক্তিগত সম্পদ নষ্ট করা কোন ধরণের রাজনীতি? দেশের মানুষের কাছে আমার আহ্বান থাকবে, যারা এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করছে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করছে, আগুন দিয়ে সব পোড়াচ্ছে, সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা মারছে, তাদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে।
‘কারণ জনগণের ভোটের অধিকার অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা চাই জনগণের এই ভোটের অধিকারটা যেন অব্যাহত থাকে এবং ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয়।’
আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রাম করে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত একটা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই কিন্তু বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে এবং দেশ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়ে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসী ভোট দিয়ে তাদের প্রিয় রাষ্ট্রপ্রধানকে নির্বাচিত করবেন। যার অধীনে সংসদ বসবে, আইন পাস হবে, রাষ্ট্র পরিচালনা হবে। কাজেই এটা জনগণের অধিকার। জনগণের অধিকার যারা নষ্ট করতে চেষ্টা করবে, জনগণের অধিকার যারা কেড়ে নিতে অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে।’
এ সময় সরকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন, যে সংগঠনের জন্ম হয়েছিল দুঃখী মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে। শোষিত-বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য ১৯৪৯ সালে এই সংগঠনের জন্ম। জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ তার গঠনতন্ত্র মেনে চলে, দেশের সংবিধান মেনে চলে, প্রতিটি কাজ অত্যন্ত সুচারুভাবে করে।
‘আজ যারা পার্টি থেকে প্রার্থী হবেন তারা এখান থেকে ফরম সংগ্রহ করবেন। তাদের জন্য আমরা আট বিভাগের দশটি বুথ তৈরি করে দিয়েছি। জাতীয় সংসদ সদস্যদের যে নম্বর থাকে বা সিরিয়াল থাকে, সেই সিরিয়াল অনুযায়ী ফরমগুলো সাজানো হবে। এভাবে প্রসেস করে মনোনয়ন বোর্ডে সেগুলো উপস্থাপন করা হবে। সংসদীয় বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে, তাদের জনপ্রিয়তা দেখে, তাদের কার্যক্রম বিবেচনা করে আমরা মনোনয়ন দিয়ে থাকি। আওয়ামী লীগ সব সময় সুসংগঠিতভাবে কাজ করে থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করার পর আমরা দেখেছি রাতের অন্ধকারে বন্দুক নিয়ে ক্ষমতা দখলের পালা চলছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, বৈধতা দেয়ার জন্য জনগণের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি, আমাদের বহু নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত একটা গণতন্ত্রের অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই অসংখ্য স্বপ্ন ঝরে পড়ে শুধু সময়মতো বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে। তবে বর্তমানে ঘরে বসেই কোনো প্রকার ভ্রমণ ও বাড়তি খরচ ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা নিতে পারবেন এই বহির্গমন ছাড়পত্র।
২০২৩ সাল থেকে এমন সেবাই দিয়ে আসছে বিশ্বের একমাত্র ওয়ান স্টপ অভিবাসন সেবা প্রদানকারী অ্যাপ ‘আমি প্রবাসী’। চলুন জেনে নিই, কীভাবে বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্রের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন ঘরে বসেই।
ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করার জন্য প্রথমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ও প্রাক বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্স সম্পন্ন করতে হবে আগ্রহী প্রার্থীকে। এরপর তিনি ‘আমি প্রবাসী অ্যাপ থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর রিক্রুটিং এজেন্সির (RA) মাধ্যমে আবেদন করলে তারা নিজস্ব পোর্টাল থেকে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে।
বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রাক বহির্গমন সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ভিসা, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে করা চুক্তিপত্র, নারীদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট দেশে গমনের ক্ষেত্রে স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতিপত্র (স্ট্যাম্প পেপারে), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র, ওয়ান স্টপ ফরম (শুধু ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী প্রার্থীদের জন্য), মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট, নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কিছু নথিপত্র এবং চাকরির চুক্তিপত্র (শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য প্রযোজ্য) জমা দিতে হবে।
ঘরে বসে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলে প্রথমেই প্রার্থীদের আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা দিতে হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে ইন্টারভিউর জন্য বিএমইটি অফিসে উপস্থিত হতে হয়। আবেদন জমা দেওয়ার পর এটি বিএমইটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পর্যায়ক্রমে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করা প্রার্থীদের আবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সরকারি ফি ও আবেদন চার্জ পরিশোধ করতে হয় তাদের। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যক্তি কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়েই বিএমইটি স্মার্ট বহির্গমন ছাড়পত্র কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
আরও পড়ুন:এখন থেকে ঢাকায় অবস্থিত হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপে টনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ‘এখন থেকে অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় অবস্থিত তাদের হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রসেস করবে। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তথ্য জানান।
‘এ সময় তিনি উপদেষ্টা পরিষদকে জানান যে, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্কের বাংলাদেশ সফরের সময় তার কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নয়াদিল্লি থেকে প্রসেস করত।’
এবারের ঈদুল ফিতরে টানা ৯ দিন ছুটি পাবেন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আগেই টানা পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিল এক দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বৃহস্পতিবার এক দিন ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।
আগামী ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এ তারিখ ধরে আগেই পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সে হিসাবে কাগজপত্রে ২৯ মার্চ শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। কিন্তু নির্ধারিত ছুটি শুরুর আগের দিন ২৮ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। একই সঙ্গে একই দিন পবিত্র শবে কদরেরও ছুটি। ফলে বাস্তবে ছুটি শুরু হচ্ছে ২৮ মার্চ থেকে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ছিল ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। এর পরের দুই দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার। এখন ৩ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি হওয়ায় ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি পাবেন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এ ছুটি শুরুর দুই দিন আগে আছে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি। পরের দিন বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ এক দিন অফিস খোলা থাকবে। ফলে ছুটির সুযোগ আরও বেশি থাকছে।
এদিকে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, এবারের ঈদে সংবাদমাধ্যমগুলোতে তিন দিন ছুটি থাকবে। তবে রোজা যদি ৩০টি হয়, তাহলে এক দিন বেশি চার দিন ছুটি হবে।
আরও পড়ুন:বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন তারেক রহমানের তৎকালীন এপিএস মিয়া নুর উদ্দিন অপু, কাজী সালিমুল হক কামাল, আহমেদ আকবর সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সাদাত সোবহান ও আবু সুফিয়ান।
ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার মো. আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন ও আমিনুল গনি টিটু বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়।
মামলাটিতে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদক। পরে ওই বছর ১৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাব্বির হত্যা মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও শাহ আলমের মধ্যে বাবরের বেইলি রোডের সরকারি বাসায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহ আলমের কাছে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবর। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে এ হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারেক ও বাবরের সঙ্গে শাহ আলমের চুক্তি হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চুক্তি অনুসারে শাহ আলমের কাছ থেকে বাবর ২১ কোটি টাকা নেন। এ টাকার মধ্যে বাবরের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আবু সুফিয়ান ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট হাওয়া ভবনে ১ কোটি টাকা তারেকের ব্যক্তিগত সহকারী অপুকে বুঝিয়ে দেন। বাবর ৫ কোটি টাকা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করে কাজী সালিমুল হক কামালের কাছে জমা রাখেন। বাকি ১৫ কোটি টাকা বাবরের নির্দেশে আবু সুফিয়ান প্রাইম ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় সালিমুল হক কামালকে ২০টি চেকের মাধ্যমে দেন।
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ছয় দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাকে অপসারণ করেছেন।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা ছয় মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে বিচারক পদ থেকে ১৮ মার্চ তারিখে অপসারণ করেছেন।
১৯৬৭ সালের ২৪ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া খিজির হায়াত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট ঢাকা জেলা জজ কোর্টে এবং ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
২০১৮ সালের ৩১ মে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান খিজির হায়াত খান। এর দুই বছর পর স্থায়ী হন তিনি।
দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে প্রাথমিকভাবে হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে ২০ অক্টোবর থেকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়।
ওই ১২ বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি খিজির হায়াতও ছিলেন। বিচারপতি খিজির হায়াত ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এর আগে গত ১৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন ও কী ধরনের সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবস্থার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার আজকের মূল নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা, পুলিশের জন্য নতুন ৩৬৪টি পিকআপ ও ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়া, পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পের ৭০ শতাংশের নিচে সম্পাদিত হওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড় করা, ভাড়াকৃত ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় করা এবং পুলিশের এসআই ও এএসআই পদবির কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেল কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের বিষয়টি বিবেচনা করা।
কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে জেলা পুলিশকে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও তিনি নিম্ন কর্মদক্ষতার ইউনিটগুলোর কর্মক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য