বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ তাগিদ দেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্নকারী সাংবাদিক ম্যাথু মিলারের উদ্দেশে বলেন, বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন আয়োজন অনুমোদন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক মতৈক্যের আহ্বান জানিয়েছে। বিরোধী সব রাজনৈতিক দল স্পষ্টত নির্বাচনের তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। (সরকারের) কঠোর ব্যবস্থাও অব্যাহত আছে।
এমন বাস্তবতায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী, তা স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্রের কাছে জানতে চান ওই সাংবাদিক।
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে বার্তার বিষয়ে আমরা ধারাবাহিক এবং ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরও সে বার্তা একই রয়েছে। বাংলাদেশি জনগণ যা চায়, আমরাও তা চাই: শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
‘আমরা বাংলাদেশে নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নই; আমরা এক দলের চেয়ে অন্য দলকে বেশি সুবিধা দিচ্ছি না। আমরা সব পক্ষকে সংযত থেকে সহিংসতা পরিহারের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দিচ্ছি।’
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, প্রয়োজনীয় সব সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
সোমবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অফিস কক্ষে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকোন অ্যারাল্ড গুলব্রান্ডসেনের সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। ফ্যাসিস্ট সরকার গত ১৬ বছর দেশে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে, যাতে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে।’
দেশ পুনর্গঠনে নরওয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন উপদেষ্টা।
রাষ্ট্রদূত হাকোন অ্যারাল্ড গুলব্রান্ডসেন বলেন, ‘নরওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থেকে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নরওয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ ও গণমাধ্যমের উন্নয়নে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে।
রাষ্ট্রদূত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে আইনটি বাতিল হবে এবং এই আইনের অধীনে যত মামলা হয়েছে সব মামলাও বাতিল হবে।
‘শুধু এই আইন নয়, মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করে এমন সব আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সংস্কারের ক্ষেত্রে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
রাষ্ট্রদূত সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদে রয়েছেন। সবশেষ দুর্গাপূজায় তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছুটি বাড়ানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছিল। তারা সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অথচ তাদের আমলেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের বড় বড় ঘটনা ঘটলেও তারা বিচার করেনি।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বহির্বিশ্বে নানারকম নেতিবাচক প্রচারণা করা হচ্ছে জানিয়ে এ বিষয়ে সত্য ঘটনা প্রচার করতে নরওয়ের সহযোগিতা কামনা করেন নাহিদ ইসলাম।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, নরওয়ের ডেপুটি হেড অফ মিশন মারিয়ান রাবে ন্যাভেলসউরড প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে হিযবুত তাহরীরের সদস্য বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যে পোস্ট দেয়া হয়েছে তা সত্য নয়। দৈনিক আজকের পত্রিকার ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিট এক প্রতিবেদনে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সোমবারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি এই তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পোস্টটিতে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের স্ক্রিনশট ছিল। এতে আবদুল্লাহ আল মাহফুজ নামে এক ব্যক্তিকে হিযবুত তাহরীরের কথিত সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল মাহফুজ ও বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম দু’জন ভিন্ন ব্যক্তি।
মাহফুজ আলম ছাত্র আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছেন।
মাহফুজ আলম এক পোস্টে বলেছেন, তিনি কখনোই হিযবুত তাহরীর বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ বা ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন না।
মালয়েশিয়ায় প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশটির সরকার প্ল্যান্টেশন সেক্টরের জন্য নির্বাচিত বাংলাদেশি কর্মীদের সে দেশে প্রবেশের সবশেষ সময়সীমা আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ারের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভায় নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিদ্ধান্তে জানানো হয়, কর্মী পাঠানোর জন্য মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে চাহিদাপত্র সত্যায়নের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর। আর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র নেয়ার শেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫।
নির্দেশনা তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্টরা কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ নেবেন না। সব লেনদেন উপযুক্ত লিখিত দলিল, রসিদ বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করবেন এবং অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মীদের লেনদেন না করার বিষয় নিশ্চিত করবেন।
এছাড়াও সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্ট নির্ধারিত তারিখের আগে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভিসা, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) বহির্গমন ছাড়পত্র এবং বিমান টিকিট, প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশনসহ সব প্রস্তুতি নিশ্চিত করবেন।
রিক্রুটিং এজেন্টরা যথাসময়ে চাকরির শর্ত, বেতন-ভাতা, অন্যান্য সুবিধা, চাকরির পরিবেশসহ সব বিষয়ে কর্মীকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করবেন।
আরও পড়ুন:নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার রাত থেকে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে মাছ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। দীর্ঘ ২২ দিন পর রোববার মধ্যরাত থেকে নদীতে জাল ফেলছেন তারা। কিন্তু তারা হতাশ। কারণ আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না।
এদিকে নদীতে জেলের জালে ইলিশ ধরা না পড়লেও নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৭/৮ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ঝালকাঠির বাজারগুলোতে বিক্রেতারা ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
কোথা থেকে সরবরাহ হচ্ছে এই ইলিশ- এমন তথ্য খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে নদীতে জাল ফেলা থেমে থাকেনি। অব্যাহত ছিলো মৌসুমি জেলেদের ইলিশ শিকার। ওই সময়টাতে ধরা পড়া ইলিশ অজ্ঞাত স্থানে বরফ দিয়ে মজুত করা ছিল। আর নিষেধাজ্ঞা ওঠার পরপরই সেসব ইলিশ তোলা হচ্ছে বাজারে।
মৌসুমি জেলেদের জমানো ইলিশে সোমবার সকালে বাজার সয়লাব হয়ে যায়। এর জন্য নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মৎস্য দপ্তরের ঢিলেঢালা অভিযানকে দায়ী করছেন পেশাদার জেলেরা।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির পর জেলা প্রশাসনের কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ছাড়া বাকি সময়গুলো সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে শতাধিক নৌকা নিয়ে মৌসুমি জেলেদের মা ইলিশ নিধন উৎসব অব্যাহত ছিলো।
নদী-তীরবর্তী বাসিন্দা নান্টু খলিফা, আমজেদ ডাকুয়া, অলি আহম্মেদ, নাইমসহ অনেকের সঙ্গে কথা এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
পেশাদার জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভিযান মাত্র শেষ হয়েছে। নদীতে এখনও তেমন একটা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তারা ইলিশ পাবেন বলে আশাবাদী।
জেলে হালিম হাওলাদার বলেন, ‘মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পরই আমরা নদীতে নৌকায় জাল নিয়ে ইলিশ শিকারে নামি। যেভাবে মাছ পাওয়ার আশা করেছিলাম সেভাবে পাইনি। কিছু কিছু জায়গায় জালে এখনও ডিমওয়ালা ইলিশ উঠছে। সামনে মাছের পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করছি।’
আড়তদাররা বলছেন, ‘নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে আমাদের কোনো ব্যবসা ছিল না। এ সময়টাতে জেলেদের অনেককে দাদন দিতে হয়েছে। এছাড়া কিছু করার ছিল না। জেলেরা খেয়ে বেঁচে থাকলে আমাদের ব্যবসা হবে। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। আশা করা যায় আবার মাছের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত ছিল। জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, মৎস্য বিভাগ মিলে অভিযান সফল করেছি। এরপরও কিছু অসাধু জেলে আমাদের অগোচরে নদীতে জাল ফেলে ইলিশ শিকার করেছে।’
জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত না এমন কিছু লোক মৌসুমি জেলে হয়ে মাছ শিকার করেছে। যতটা সম্ভব আমরা তাদের আইনের আওতায় এনেছি।’
আরও পড়ুন:পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবি অমূলক নয়। তবে জনগণ আগে সংস্কার চায়।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ওয়ার্ল্ড ওয়ান হেলথ ডে উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজনৈতিক দল বা যে কেউ নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে পারে। তবে নির্বাচন এবং সংস্কার দুটি নিয়েই কাজ করছে সরকার। এখনও কিছু কিছু জায়গায় ফ্যাসিবাদের ভিত্তিমূল থেকে গেছে, যারা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।
শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চ নাটক বন্ধ থাকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বাধা সমর্থন করে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার সেন্টমার্টিন এবং পর্যটন শিল্প একসঙ্গে রক্ষা করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন লিজ দিচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সেন্টমার্টিন রক্ষা ও পর্যটন একইসঙ্গে সমন্বয় করছে সরকার। সেন্টমার্টিনে নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরতে হবে। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দৈনিক সর্বোচ্চ দু’হাজার পর্যটক প্রবাল দ্বীপটিতে রাতযাপন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, শুধু মানবাধিকার নিয়ে কথা নয়; বন্যপ্রাণীর অধিকার নিয়েও সচেতন হতে হবে। পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সম্পর্কে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে হাতি চলাচলের পথ যে অবস্থায় আছে তা খুবই অ্যালার্মিং।
আরও পড়ুন:সংস্কারের অগ্রগতি জানতে কমিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কমিশন প্রধানরা তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
বৈঠকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী।
তিনি জানান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবার মতামত সংগ্রহ শুরু হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সফর করে জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
জনপ্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাডার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় চলমান বলে জানান তিনি।
বৈঠকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেন।
তিনি নিম্নোক্ত অগ্রগতিগুলো তুলে ধরেন-
১. পুলিশ সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে ১০টি সভা করেছে। পাশাপাশি অংশীদারদের সঙ্গে আরও চারটি বৈঠক করেছে।
২. জনসাধারণের মতামত চেয়ে একটি প্রশ্নমালা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে।
৩. কিছু আইন ও বিধি সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে, যেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি প্রক্রিয়া সহজ করে তোলার জন্য যথাযথ প্রস্তাব করা হচ্ছে।
৪. মব নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাব নিয়ে কাজ চলছে।
৫. ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯- এর কতিপয় ধারা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তা পরিবর্তন করা হবে কি না সেটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান সংশ্লিষ্ট কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বৈঠকে জানানো হয়-
১. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
২. অনুপস্থিত ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালট নিয়ে কাজ চলছে।
৩. জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোটার তালিকা সমন্বয় করা হচ্ছে।
৪. নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে জোর দিচ্ছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
৫. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সারদা পুলিশ একাডেমির আরও ৫৮ জন ক্যাডেট উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজশাহীর সারদায় প্রশিক্ষণ চালকালীন শৃঙ্খলাবিধি লঙ্ঘনের দায়ে এর আগে ২৫০ জন ক্যাডেট উপ-পরিদর্শককে একাডেমি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চলতি বছরের শুরুতে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। আজ ৪ নভেম্বর প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের ক্রমবর্ধমান দাবির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে গত ২৫ অক্টোবর রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে প্রশিক্ষণরত ৫৯ জন উপ-পরিদর্শককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো-কজ) দেয় কর্তৃপক্ষ।
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত সারদা পুলিশ একাডেমি বাংলাদেশ পুলিশে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান।
এই একাডেমি আইন সমুন্নত রাখা এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কর্মকর্তা তৈরির জন্য দায়বদ্ধ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য