রাজধানীর নয়াপল্টনে ২৮ অক্টোবর আয়োজিত বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছিল তা ধামাচাপা দিতে সরকার প্রধান সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সূত্র: ইউএনবি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (২৮ অক্টোবরের সহিংসতা নিয়ে) যা বলেছেন তা ছিল মিথ্যার অপ্রতিরোধ্য স্রোত। আমি বলতে চাই, ২৮ অক্টোবর যা ঘটেছে তার সব ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
‘প্রযুক্তির এই যুগে কোনো ঘটনাই এখন রেকর্ডের বাইরে নেই। অনথিভুক্ত বা মানুষের দৃষ্টির বাইরেও থাকে না। আপনি পুলিশি সুরক্ষায় বিভিন্ন মিথ্যা বলতে পারেন। কিন্তু সত্য ঢাকতে পারবেন না।’
মিথ্যাচার, নাটক ও ভিডিও তৈরি করে সরকার সত্যকে ধামাচাপা দিতে পারবে না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি সরকারকেও বলতে চাই, সব তথ্য এখন পাওয়া যাচ্ছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত বিশাল সমাবেশটি পূর্ব দিকে নটরডেম কলেজের কাছে এবং পশ্চিম পাশে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত শাহবাগের কাছে পৌঁছে যায়।
‘এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বহনকারী বাস ও ট্রাকগুলো সেখানে (কাকরাইল) গেল কীভাবে? সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং বিএনপির মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য এটা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কিছু লোক পুলিশি পাহারায় প্রধান বিচারপতির বাসভবনের প্রধান ফটক ও অন্যান্য স্থাপনা ভাংচুর করছে।
‘আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন কীভাবে বাসচালককে ব্যবহার করে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় তার একটি ভিডিও পাওয়া গেছে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেলজিয়াম সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি-জামায়াত চক্র সন্ত্রাসী। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। ২৮ অক্টোবর সহিংসতার মাধ্যমে বিএনপি আবারও তা প্রমাণ করেছে।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে গণঅধিকার পরিষদ থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আবুল বসার ও কাজী রনি।
আবুল বসার গণঅধিকার পরিষদের কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার আহবায়ক ও কাজী রনি ঢাকা মহানগর উত্তরের দপ্তর সম্পাদক।
আবুল বসার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কর্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। আবুল বসার কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ি গ্রামের মৃত ধলা দাড়িয়ার ছেলে ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
এর আগে কাজী রনি সংগ্রহ করেন মনোনয়ন ফরম। কাজী রনি কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামের মৃত. কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে। পেশায় একজন ব্যাংকার। ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত।
আবুল বসার বলেন, গণঅধিকার পরিষদ গণমানুষের দল। জনসাধারণের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গণঅধিকার পরিষদে কোন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই। গোপালগঞ্জ-৩ একটি ভিআইপি আসন। এ আসনের মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্তমান কর্মকান্ড অনুযায়ী গণঅধিকার পরিষদকেই বেছে নিবে বলে আমি আশাবাদী। আমি মনোনয়ন চেয়েছি, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি আশাকরি দলের সম্মান বজায় রাখতে পারব।
বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এবং প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি বন্ধ করতে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে কোটালীপাড়া উপজেলায় লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকান্ড নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে আমাকে যদি গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গীপাড়া) আসনে গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে এলাকাছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেকে রয়েছেন জেলে। এদিকে অন্তর্ন্তীকালীন সরকার আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সম্ভাব্য প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। গণতন্ত্র উত্তরণের এই প্রক্রিয়ায় গোটা পৃথিবীর সমর্থন রয়েছে, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বিশ্বের পূর্ণ সমর্থন আমাদের সঙ্গে আছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা যে, সরকার প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য প্রদর্শনের জন্যই সবাইকে নিয়ে এ সফর। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।
তিনি বলেন, বিদেশ সফরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যারা গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গেই আলাপ হয়েছে, এটা তো স্বাভাবিক। আমাদের প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, প্রধান উপদেষ্টা কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে জাতীয় ঐক্যের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।’
তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এসব আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফর চলাকালে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা বড় করে দেখার কিছু নেই।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে সেখানে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও এনসিপির সদস্য সচিবসহ ৩টি রাজনৈতিক দলের ৬ নেতা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় তারা দেশে ফেরেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী একটি দল নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’
গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী খিলগাঁও বাগিচা এবং শাহজাহানপুর এলাকায় গণসংযোগ এবং নিজ বাসভবনে উঠোন বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পিআরসহ কিছু অযৌক্তিক দাবিতে নির্বাচন বানচালের হুমকি দিয়ে একটি ধর্ম ব্যবসায়ী দল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। একদিকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। এ দলটি সবসময়ই জাতিকে অন্ধকারে রাখতে পছন্দ করে। তারা মুখে এক কথা বলে আর বাস্তবে ভিন্নরূপ।’
তিনি বলেন, ‘কোনো রকম ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ। বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একটি দল দেশের প্রশাসন দখল করে নিয়েছে। স্কুল-কলেজ, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ সকল জায়গা দখল নিয়েছে ধর্ম ব্যবসায়ী এদলটি, যা দৃশ্যমান।’
তিনি বলেন, ‘এই দলটি মুখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেও তলে তলে তারা পতিত দোসরদের সাথে আঁতাত করছে। কয়েকদিন আগেও জামায়াত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল। আর এখন বলছে সব আওয়ামী লীগার খারাপ না।’
দিনব্যাপী গণসংযোগকালে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মির্জা খোকন, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি ইউসুফ বিন জলিল কালু, সাবেক কমিশনার সাজ্জাদ জহির, আরিফুর রহমান আরিফ, ফজলে রূবায়েত পাপ্পুসহ স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী সমমনা দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যের সমঝোতা হলে জামায়াত ১০০ আসন ছেড়ে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। গতকাল শুক্রবার খুলনার আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখা আয়োজিত সদস্য পুনর্মিলনী (১৯৭৭-২০২৫) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘যদিও আমরা ৩০০ আসন চূড়ান্ত করেছি, প্রাথমিক বাছাই হয়ে গেছে, তবে যাদের সঙ্গে আমরা সমঝোতা করব, যাদের সঙ্গে ঐক্য হবে, যে কয়টি দলের সঙ্গেই হোক, কিছু সিট তো আমাদের ছাড়া লাগবে, তা নাহলে তো ঐক্য হবে না। আমিরে জামায়াত আমাকে একটা আইডিয়া দিয়েছেন, এমনও হতে পারে, সমঝোতা করতে করতে শেষ পর্যন্ত একশ আসনও আমাদের ছেড়ে দিতে হতে পারে। আমাদের বলেছেন মাইন্ড সেট রাখবেন, কমপক্ষে ২০০ আসনে আমরা ইনশাআল্লাহ নির্বাচন করব।’
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দ্বীনকে সংসদে পাঠানোর জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। যারা একসময় ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে এখন আবার সক্রিয় হয়ে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে। আমিরে জামায়াত বলেছেন, ‘মুসলমানদের সামনে ৫৪ বছরের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের শক্তিকে পার্লামেন্টে নেওয়ার এমন অবারিত সুযোগ অতীতে আর কোনো দিন আসেনি।’ ভবিষ্যতেও আসবে কি না আমরা জানি না। ফ্যাসিস্ট আমাদের গর্তে ঢোকাতে চেয়েছিল, আল্লাহ তাআলা তাদের গর্তে দিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে।’
জামায়াত নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এই সেক্রেটারি বলেন, এখন থেকে আপনারা পরিকল্পনা করেন যার যার নির্বাচনী এলাকায় কবে বাড়ি যাবেন, যতক্ষণ যেতে দেরি হবে নিজের উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার কথাও বলেন তিনি।
পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চেয়েছি, তবে একটি বড় দলের বাধায় জুলাই সনদ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা মৌলিক সংস্কার চায় না। তারা মনে করছে তারা ক্ষমতায় চলে গেছে, এটা ভেবেছে বলেই ডাকসু, জাকসু নির্বাচনে ফল পেয়েছে।’ একইসঙ্গে নির্বাচন ও আন্দোলন দুই প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জামায়াত বলেও জানান তিনি।
খুলনা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাকিব হোসাইনের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও নড়াইল জেলা জামায়াতের আমীমির অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বাচ্চু।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নতুন করে রাজনীতিতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয় আইন-আদালত বা সরকারি সিদ্ধান্ত নয়, এই সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। গণহত্যাকারী, গুম-খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আজহার-শফিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য বিএনপি সোচ্চার। গণহত্যাকারী যারা আদেশ দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী হোক আর অতি উৎসাহী যেই হোক– বিএনপি বারবার বলেছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। আইন-আদালত করবে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত, বিএনপির বক্তব্য পরিষ্কার। সব সময়ই তা বলে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত কথা বলে, কিন্তু তাদের ২৪-এর গণহত্যা নিয়ে কোনও অনুশোচনা নেই। আয়নাঘর, লুটপাট যারা করেছে, প্রতিহিংসা যারা করেছে, দিনের ভোট রাতে যারা করেছে, তাদের কোনো অনুশোচনা আছে? তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিঃশর্তভাবে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তাদের ক্ষমা করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে।
ডা. জাহিদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটি সম্ভাবনা রয়েছে, আমরা চাই সেটা হোক। জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের সেই সুযোগটা আসুক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ভাবতে হবে এই সমাজটা আমাদের সবার। এই ভাবনাটা যদি না আসে তাহলে কিন্তু ইনক্লুসিভনেস তৈরি হবে না। আর তা তৈরি না হলে সমাজে সাস্টেনেবিলিটি আসবে না। সমাজের প্রবীণ মানুষদের জন্য আলাদা উইন্ডো তৈরি করার জন্য একটা চিন্তা দরকার। তাদের জন্য সামান্য বাজেট রাখা দরকার।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় ১২ দিনের যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নতুন কর্মসূচি হিসেবে ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে গণসংযোগ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করা হবে। ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সকল বিভাগীয় শহরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে এবং ১২ অক্টোবর সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি হলো:
১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
২. নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোমাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলামের অসুস্থ এক নেতার খোঁজখবর নিয়েছে বিএনপির নেতারা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এবং জামিয়া কাসিমিয়া আশরাফুল উলুম ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল খতিবে বাংলার আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীবের শারীরিক খোঁজখবর নিতে রোববার হাসপাতালে যান বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেইজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্তব্য