× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
5 people were hanged in the case of killing a housewife in Habiganj
google_news print-icon

হবিগঞ্জে গৃহবধূ হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি

হবিগঞ্জে-গৃহবধূ-হত্যায়-৫-জনের-ফাঁসি
ফাইল ছবি
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায় দেন হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাহিদুল হক।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে যৌতুকের জন্য অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায় দেন হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জাহিদুল হক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আবুল মনসুর চৌধুরী।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের প্রয়াত হরমুজ আলীর ছেলে (নিহতের স্বামী) রাসেল মিয়া, রাসেল মিয়ার মা তাহেরা বেগম, রাসেল মিয়ার ভাই কাউছার মিয়া, বোন রুজি আক্তার ও হুসনা আক্তার।

মামলার বিবরণে জানা যায়, যৌতুকের জন্য প্রায়ই রাসেল মিয়া তার স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে নির্যাতন করতেন। এমনকি রাসেল মিয়ার মা ও ভাই-বোনেরা আয়েশার ওপর অমানষিক নির্যাতন চালান।

২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাসেল মিয়া ও তার মা-ভাই-বোনের নির্যাতনে মারা যান আয়েশা। এ সময় তিনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় আয়েশার বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ১২ জন সাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেয়।

রায় ঘোষণার সময় কাউছার মিয়া ছাড়া অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
সিলেটে জোড়া খুনের রায়: ৩ ফাঁসি, ২ যাবজ্জীবন
ফাঁসির আসামি শরীফুলের মুক্তির আদেশ স্থগিত
প্রবাসী হত্যা: স্ত্রীসহ চারজনের ফাঁসি, কন্যার যাবজ্জীবন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Anwar cement sheet worker killed in micro collision

মাইক্রোর ধাক্কায় আনোয়ার সিমেন্ট শিটের কর্মী নিহত

মাইক্রোর ধাক্কায় আনোয়ার সিমেন্ট শিটের কর্মী নিহত গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রুবিনার মরদেহ। ছবি: নিউজবাংলা
রুবিনা সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার রাধানগর গ্রামের ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী। তিনি সপরিবারে বাউশিয়ার শান্তিনগর এলাকায় ভাড়া থেকে আনোয়ার সিমেন্ট শিট ইন্ডাস্ট্রিতে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া এলাকায় রোববার মাইক্রোবাসের ধাক্কায় রুবিনা বেগম নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।

রুবিনা সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার রাধানগর গ্রামের ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী।

তিনি সপরিবারে বাউশিয়ার শান্তিনগর এলাকায় ভাড়া থেকে আনোয়ার সিমেন্ট শিট ইন্ডাস্ট্রিতে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল সাতটার দিকে বাউশিয়ার আনোয়ার সিমেন্ট শিট ইন্ডাস্ট্রির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন রুবিনা বেগম। ওই সময় ঢাকামুখী লেনে দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাস তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

গজারিয়ার ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) এস. এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের লাশ এবং মাইক্রোবাসটি বর্তমানে পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে।

‘মাইক্রোবাসটির চালক ওমর ফারুককে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

আরও পড়ুন:
ইজিবাইকে ট্রেনের ধাক্কায় দুজন নিহত
চট্টগ্রামে বাসের ধাক্কায় বিএনপি নেতাসহ তিনজন নিহত
আলু ক্ষেতে পুঁতে রাখা নারীর কঙ্কাল উদ্ধার
গজারিয়ায় ট্রলার-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪
রাস্তা পারাপারের সময় ইমামসহ দুজন নিহত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
DGFI was detained in Chittagong attempted robbery

ডিজিএফআই পরিচয়ে ডাকাতির চেষ্টা, চট্টগ্রামে আটক ১১

ডিজিএফআই পরিচয়ে ডাকাতির চেষ্টা, চট্টগ্রামে আটক ১১ চট্টগ্রামে আটক ভুয়া ডিজিএফআই সদস্যদের কয়েকজন। ছবি: ইউএনবি
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ১৩ জনের দল একটি মাইক্রোবাসে করে খুলশীর ৩ নম্বর রোডের একটি বহুতল ভবনে আসে। ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বলে পরিচয় দেয় তারা।

চট্টগ্রাম মহানগরের খুলশী থানা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই সদস্য পরিচয় দিয়ে ডাকাতির চেষ্টাকালে ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তাদের আটক করা হয়।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।

আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. ওয়াজেদ (৩৬), মো. হোসাইন (৪২), রুবেল হোসেন (২৫), মহি উদ্দিন (৪৫), আবদুস সবুর (৩৭), মো. ইয়াকুব (৩৫), মোজাহের আলম (৫৫), মো. রোমেল (৪১), ওসমান (২৪), আবদুল মান্নান (৩৫) ও শওকত আকবর (২৮)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ১৩ জনের দল একটি মাইক্রোবাসে করে খুলশীর ৩ নম্বর রোডের একটি বহুতল ভবনে আসে। ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বলে পরিচয় দেয় তারা।

এরপর ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে আটকে রেখে তারা ভবনের অষ্টম তলায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনসারীর ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে।

ওই সময় গিয়াস উদ্দিন বাসায় না থাকায় দলটি দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে এবং জিনিসপত্র তছনছ করে। ভবনের অন্য বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।

খুলশী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ১১ জনকে আটক করে। অভিযানের সময় আরও দুজন পালিয়ে যায়।

আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, খেলনা পিস্তল ও ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।

গিয়াস উদ্দিনের ভাই জালাল উদ্দিন আনসারী জানান, ঘটনার সময় তার ভাইয়ের পরিবারের কেউ বাসায় ছিলেন না। তারা বাইরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ সুযোগে দলটি দরজা ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে সবকিছু তছনছ করে।

সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‌‘১১ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।

‘পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং পলাতক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে বাসের ধাক্কায় বিএনপি নেতাসহ তিনজন নিহত
কেএফসির আরও দুই আউটলেট চট্টগ্রাম শহরে
জামালপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে নিহত ১, আটক ২
ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে বৃহস্পতিবার
মৃত ব্যক্তির গোসলে সাহায্য চেয়ে শিক্ষকের বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The trial is going on in the court of Jhalkathi

ঝুঁকি নিয়ে বিচারকাজ চলছে ঝালকাঠির আদালতে

ঝুঁকি নিয়ে বিচারকাজ চলছে ঝালকাঠির আদালতে ঝালকাঠির আদালত ভবনের বাইরের এবং ভেতরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। কোলাজ: নিউজবাংলা
আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।’

দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে নব্বইয়ের দশকে নির্মিত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি।

এমন পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালতে কর্মরতদের।

সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থদের অবহিত করে গণপূর্ত বিভাগের ঝালকাঠি অফিস ২০১৯ সালে চিঠি চালাচালি করলেও বিষয়টি এখনও ফাইলবন্দি।

ভবনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের দাবি আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।

ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর জরাজীর্ণ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৫ নভেম্বর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠান।

ভবন পরিদর্শনকালে তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী, গণপূর্তের ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উপস্থিত ছিলেন। ওই প্রতিবেদনের একটি কপি সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।

কী ছিল পরিদর্শন কপিতে

ঝালকাঠি গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী অনিরুদ্ধ মন্ডল, মো. বদরুজ্জামান, মো. ইমরান বিন কালাম এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল-মাসুম স্বাক্ষরিত ওই পরিদর্শন কপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ভবনটির দুই তলায় করিডোরের বেশ কিছু স্থানে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়ছে। এ ছাড়াও নলছিটি কোর্ট রুমের পরিদর্শনকারীদের বসার ওপরের ছাদের অংশ খসে পড়েছে। এ সমস্ত স্থানে মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে আছে। দ্বিতীয় তলা এবং নিচ তলার করিডোরের বেশ কিছু বিম ও কলামে ফাটল লক্ষ করা গেছে।

‘ভবনটির নিচ তলায় হাজতখানার ছাদের বেশ কিছু অংশসহ করিডোরের বিভিন্ন অংশে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়েছে। এসব স্থানেও মরিচা পড়ে রড বের হয়ে আছে। নিচ তলার বিভিন্ন কলাম এবং বিমের ফাটল লক্ষ করা গেছে। কিছু স্থানে কলাম ফেটে রড বের হয়ে গেছে।’

পরিদর্শন প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘ভবনটির দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ১৯৮৯-৯০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২০০৪-০৫ সালে তৃতীয় তলার উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে বিম কলামে ফাটল থাকায় এবং ছাদের কনক্রিট খসে পড়ায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
‘এমতাবস্থায়, উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত ডিজাইন বিভাগের মতামতসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রয়োজন।’

প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ

সম্প্রতি জজ আদালত ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, ভবনের ছাদের ওপর থেকে খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফাটল ধরেছে অনেক পিলারেও। ভারি বৃষ্টি এলেই ছাদ ও দেয়াল চুষে পানি পড়ে মেঝেতে। নষ্ট হয়ে যায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র।

দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় তিন তলা ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিচারকের এজলাস, খাসকামরা, পেশকার, সেরেস্তাদারের কক্ষ, নকল কক্ষ, হাজতখানাসহ প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে আদালতের কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

যা বলছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা

আদালতের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কথা হয় আবদুর রহমান, তৈয়ব আলী, কামরুল ইসলাম, মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে।

তাদের একজন বলেন, ‘আদালত ভবনের ভিতরে প্রবেশের পর কার্যসম্পাদন করে বের হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকি আতঙ্কে। প্রায় সময়ই ছাদের পলেস্তারা খসে নিচে পড়ে।

‘বর্ষায় তো বারান্দায় পানি জমে যায়। দেয়ালে পানি চুষে অনেক ফাইল নষ্ট হয়ে যায়।’

আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, ‘ভবনটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। বিচারকরা যদি ভালো পরিবেশে বিচারকার্য পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে বিচারকার্যে মনোনিবেশও করতে পারেন না।

‘ঝালকাঠির বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সকলেই আমরা এ ভোগান্তিতে রয়েছি। বিভিন্ন সময়ে উচ্চপদস্থদের বিষয়টি অবগত করলেও এখনও কোনো ভূমিকা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’

আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।

‘আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা এবং নতুন ভবন নির্মাণ অথবা টেকসই সংস্কারের জন্য গণপূর্তের চিঠি চালাচালি হলেও দীর্ঘদিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাইনি। জনস্বার্থে দ্রুত নতুন আদালত ভবন নির্মাণ জরুরি।’

আইনজীবী আক্কাস সিকদার বলেন, ‘বর্তমানে এ আদালতে ১৬ হাজার দেওয়ানি মামলা এবং দেড় হাজার ফৌজদারি মামলা চলমান। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।

‘আদালত ভবনের নিচ তলায় হাজতখানার পশ্চিম দিকে মসজিদের সামনে একাধিকবার ধসে পড়েছে ছাদের অংশ। এখন এই ভবন অস্থায়ী সংস্কার না করে এটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন করা উচিত।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নব্বই দশকে দোতলা জজ আদালত ভবনটি নির্মাণের পর ২০০৬ সালে এর ওপর আরও এক তলা বর্ধিত করে তৃতীয় তলায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে নিচ তলার অনেক পিলারে ফাটল ধরেছে। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আদালতের স্টাফ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে।

‘হাজতখানা সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে নেওয়া হয়েছে। ভবনে আগতদের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। দ্রুত এটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’

জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ ঝালকাঠির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আমানুল্লাহ সরকার একই ধরনের বক্তব্য দেন।

তাদের একজন বলেন, ‘ভবন পরিদর্শনের রিপোর্ট ২০১৯ সালে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে আছে।

‘সেখান থেকে অর্ডার হলেই গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য কার্যসম্পাদন করবে।’

ক্যাপশন: ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন। ছবি: নিউজবাংলা

ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ভেতরের জরাজীর্ণ অংশ। ছবি: নিউজবাংলা

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন
ঝালকাঠিতে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ককে ‌‘হত্যাচেষ্টা’: অ্যাম্বুলেন্সের চালক গ্রেপ্তার
ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ী হত্যা: জড়িতরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ
ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ধারণা পুলিশের
স্কুলের পাশে ইটভাটা, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পরিবেশ কর্মকর্তার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bangladeshi youth injured in BSF firing in Chapainawabganj

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তর কাঁটাতারের বেড়া। ফাইল ছবি
৫৯ বিজিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত হওয়ার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাবিল নামের বাংলাদেশি এক যুবক আহত হয়েছেন।

সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত হাবিল শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি লম্বাপাড়া গ্রামের প্রয়াত বেলাল উদ্দিনের ছেলে।

এ ঘটনায় বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সীমান্তের একাধিক সূত্র ও বিজিবি জানায়, হাবিলসহ বেশ কয়েকজন সীমান্ত পেরিযে ভারতের অভ্যন্তরে মাদক আনতে গিয়েছিলেন। বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালালে হাবিল আহত হয়ে সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে পালিয়ে আসেন। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে শনিবার সকাল সাতটার দিকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী পাঠানো হয়।

৫৯ বিজিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত হওয়ার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্ষেতের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ 
পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিশেষ ট্রেন স্থগিত
ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Fascists will return if national unity is destroyed Amir of Jamaat

জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফিরে আসবে ফ্যাসিস্টরা: জামায়াতের আমির

জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফিরে আসবে ফ্যাসিস্টরা: জামায়াতের আমির কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে শুক্রবার সকালে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: ইউএনবি
জামায়াতের আমির বলেন, ‌‘এমন কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন না যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয় এবং ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসার সুযোগ পায়।’

জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফ্যাসিবাদীরা ফিরে আসবে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে সকালে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‌‘এমন কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন না যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয় এবং ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসার সুযোগ পায়।’

তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পাবে ফ্যাসিস্টরা। জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে।’

উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ সরকার ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে অভিযোগ করে শফিকুর বলেন, সেই ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় আর বাংলার মাটিতে হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সংঘটিত সকল হত্যার বিচার চাই। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই যুদ্ধ চলবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৩ বছরের প্রত্যেকটি খুন, গুম ও অপকর্মের বিচার বাংলার মাটিতে হবে। যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর জুলুম-অত্যাচার করেছে, জমি দখল করেছে, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে,তাদের ইজ্জতে হাত দিয়েছে, সেসব দুষ্কৃতিকারীদের তালিকা তৈরি করে জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।’

আরও পড়ুন:
কারা জাতির সর্বনাশ করে আমরা দেখতে চাই: শফিকুর রহমান
ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর ঐক্যের আহ্বান জামায়াত আমিরের
সব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে পাবলিক ডায়ালগ চাই: গোলাম পরওয়ার
আ.লীগ সাড়ে ১৫ বছর দেশের পরিবর্তে নিজেদের সাজিয়েছে: জামায়াত আমির
মানবিক জাতি গঠনে চিকিৎসকদের নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জামায়াত আমিরের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sailab Jessore in illegal brick kilns

অবৈধ ইটভাটায় সয়লাব যশোর

অবৈধ ইটভাটায় সয়লাব যশোর প্রতীকী ছবি
জেলায় ১৪৪টি ইটভাটা থাকলেও সেগুলোর ১১৪টিই অবৈধ বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

অবৈধ ইটভাটায় সয়লাব হয়ে গেছে যশোর।

জেলায় ১৪৪টি ইটভাটা থাকলেও সেগুলোর ১১৪টিই অবৈধ বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ও ডিসির লাইসেন্স না থাকায় ওই ভাটাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নেই। এমনকি জেলার কোনো ভাটাই সব শর্ত পূরণ করেনি।

জিগজ্যাগ পদ্ধতির মাত্র ৩০টি ইটভাটা এখন পর্যন্ত মোটামুটি আইনসিদ্ধভাবে চলছে বলে দাবি পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের।

যশোরের বেশির ভাগ ভাটার বৈধতা না থাকার বিষয়টি এর আগে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও উঠে আসে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নামার ঘোষণা দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক এমদাদুল হক জানান, গত এক মাসে ১৮টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। শিগগিরই অবৈধ ভাটাগুলো উচ্ছেদে কাজ শুরু হবে।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে সংশোধনী এনে ইটভাটার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়।

নির্দিষ্ট এলাকায় ইটভাটার জায়গা, ভাটার দূরত্ব ও সংখ্যা নির্ধারণের নির্দেশনাও সে সময় দেওয়া হয়। এমনকি লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা চালালে দুই বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান সংযোজন করে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন আইন, ২০১৯’ বিল সংসদে পাস হয়।

ধারা-৪ এ সংশোধনী এনে বলা হয়, চলমান যেকোনো আইনে যা কিছুই থাক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত, সেই জেলার জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ না করলে কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবেন না। কিন্তু যশোরের প্রেক্ষাপটে এ সবের ব্যত্যয় ঘটে আসছে ২০১৯ সালের সংশোধনীর পরও।

পবিবেশ আইন অনুযায়ী, এক কিলোমিটারের মধ্যে আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, বাগান, জলাভূমি, কৃষি জমি, বিশেষ কোনো স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার বা ১ হাজার মিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপন করতে হবে। একই সঙ্গে ভাটাগুলো এখন জিগজ্যাগ পদ্ধতির হতে হবে।

১২০ ফুট চিমনির সনাতনী ভাটা এখন আর আইনসিদ্ধ নয়, কিন্তু যশোর জেলার অধিকাংশ ভাটার ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটে চলেছে।

আইনের ব্যত্যয় ঘটলেও অনেকে এর আগে ছাড়পত্র সংগ্রহ করেছেন। যদিও বিধি অনুযায়ী, পরিবেশ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার ভেতরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স দিতে পারবে না। অথচ এর আগে অনেকেই নানা বাঁকা পথে হাসিল করেছেন ছাড়পত্র।

জেলায় এমন ভাটাও রয়েছে, যেখানে এক কিলোমিটার তো দূরের কথা, ২০ গজের মধ্যেই রয়েছে বসতবাড়ি। ১০০ গজের মধ্যে ঘনবসতি গ্রাম রয়েছে। ভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো শর্তই মানা হয়নি।

আবার সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবেও চলছে কয়েকটি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, আবাসিক এলাকায় ধানী ও কৃষি জমি নষ্ট করে নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও মসজিদ, শতাধিক পরিবারের বসতি গ্রামসহ রয়েছে স্পর্শকাতর অনেক প্রতিষ্ঠান। বিগত সময়ে পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এক কিলোমিটারের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে—জেলায় এমন ভাটার সংখ্যা রয়েছে ১১০টি। এর অনেকগুলো জিগজ্যাগ হলেও পরিবেশ আইন মানা হয়নি। শর্ত পূরণ না করেই চলছে এসব ভাটার কার্যক্রম। যে কারণে অবৈধ ভাটার তালিকায় পড়েছে সেগুলো।

ওই তালিকা থেকে বছর কয়েক আগে ৩৩টি ভাটার ব্যাপারে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট শাখায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল। আইনগত বৈধতা না থাকায় ওই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল প্রতিবেদনে। তারপরও ভাটাগুলোর অধিকাংশই এখন চলছে বহাল তবিয়তে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ডিসির লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ভাটাগুলো চলায় সেগুলোর বেশির ভাগের পাশেই রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। ভাটার কারণে নষ্ট হয়েছে কৃষিজমি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আবাসিক এলাকার ওপর।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, জেলার অবৈধ ১১৪টি ভাটার ওপর সম্প্রতি নজরদারি শুরু হয়। এরই মধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর ও ৮ জানুয়ারি জেলার ১৮টি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালায় অধিদপ্তর। আইনগতভাবে না হলেও পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলে একে একে সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

অধিদপ্তর আরও জানায়, জেলায় খাতা-কলমে এখন যে ৩০টি বৈধ ভাটা আছে, তাদের ব্যাপারেও নতুন করে খোঁজখবর নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক এমদাদুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘ভাটা-সংক্রান্ত সব অসঙ্গতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মাঠে নামা হচ্ছে। সব ধরনের দেন-দরবার উপেক্ষা করে জনস্বার্থে এবং এলাকার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে অবৈধ সব ভাটা উচ্ছেদে কাজ শুরু হয়েছে।

‘অনেক ভাটার আংশিক ভেঙে দেওয়াও হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।’

তার ভাষ্য, ‘যশোরে (পরিবেশ নিয়ে) কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। আগে কী হয়েছে, সেটি বিবেচ্য নয়। এখন সব ভাটাই বিধি অনুযায়ী চালাতে হবে। পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান শুরু বুধবার
চাঁদপুরে সন্ধ্যা ৬টা, যশোরে রাত ৮টা পর্যন্ত শিথিল কারফিউ
দুর্ঘটনায় পা হারানো জান্নাত পেয়েছে জিপিএ ফাইভ, হতে চায় চিকিৎসক 
অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে ইতালির ‘নিরাপদ’ তালিকায় বাংলাদেশ
ইটভাটার তাপে পুড়েছে ৪ শ’ বিঘা জমির ধান

মন্তব্য

হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ

হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ ভৈরবের স্বদেশ হাসপাতাল। ছবি: ফেসবুক
অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক মিশুতি রানী ঘোষ বলেন, ‘অপারেশন শেষে জরায়ুর মুখ সেলাই করার সময় বারবার ফুলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে রোগীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে তাকে বাঁচাতেই জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। এটা ভুল চিকিৎসা নয়।’

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বেসরকারি স্বদেশ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই প্রসূতির নাম শাবনুর আক্তার (২২), যিনি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী।

ভৈরব শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালটিতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।

খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী ওই হাসপাতালে পরিদর্শন ও রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ওই সময় রোগীর অবস্থা গুরুতর দেখে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে থানা পুলিশ হাসপাতালে যায়।

বর্তমানে প্রসূতি ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার বড় ভাই সোহেল মাহমুদ বৃহস্পতিবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‌‌‘আমার ছোট বোন শাবনুর আক্তার প্রসূতি হিসেবে প্রসব বেদনা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় স্বদেশ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ সময় তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সন্ধ্যায় তাকে সিজার করলে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম নেয়। তারপর হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট থেকে জানতে পারি, আমার বোনের জরায়ু কেটে ফেলা হয়।

‘আমার বোনের সিজার অপারেশন করেছে ডাক্তার মিশুতি রানী ঘোষ। এরপর ঘটনাটি আমি পুলিশকে অবহিত করি। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে আমার বোনকে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। সেখানে এখন চিকিৎসা চলছে।’

এ বিষয়ে স্বদেশ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রসূতির সিজার করার পর জরায়ু সেলাই করার সময় বারবার ফুলে গেলে সেলাই করা যাচ্ছিল না। এতে তার রক্তক্ষরণ চলছিল। কিন্তু বন্ধ করা যাচ্ছিল না।’

অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক মিশুতি রানী ঘোষ বলেন, ‘অপারেশন শেষে জরায়ুর মুখ সেলাই করার সময় বারবার ফুলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে রোগীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে তাকে বাঁচাতেই জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। এটা ভুল চিকিৎসা নয়।’

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি আমার হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার মেহেদিকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। ঘটনাস্থলে এই ডাক্তার রোগী দেখে তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার পরামর্শ দেন।

‘ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে তিনি আজ শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিন মিয়া বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল হাসপাতালে যাই (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৯টায়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার এসে রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ করেন।

‘রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’

আরও পড়ুন:
অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা বাবদ ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সরকারের
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল: চিকিৎসক
ভৈরবে দুই শিশু সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
দাঙ্গাবাজ মৌটুপী গ্রামে ৫৪ বছরে ১৭ খুন, হোতা দুই চেয়ারম্যান
র‍্যাব সদস্যদের দেখে মদ রেখে পালালেন দুই কারবারি  

মন্তব্য

p
উপরে