শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য পুলিশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সোমবার এসব পরামর্শ দেয়া হয়।
এগুলো হলো পূজামণ্ডপে আসা নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের জন্য পৃথক প্রবেশপথ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখা। মণ্ডপে কোনো ব্যাগ, থলে বা পোটলা নিয়ে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা।
মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করা। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা। মণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা। সম্ভব হলে স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর, চার্জার লাইট, হ্যাজাক লাইট ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা।
মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্যে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা। স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও স্বেচ্ছাসেবক লেখা আর্মড ব্যান্ড দেয়। পূজা চলাকালে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার অথবা ব্লগ ইত্যাদি এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন অমূলক ঘটনা বা গুজব সৃষ্টি করে কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে পুলিশকে অবহিত করা।
পূজা উদযাপনের সময় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। আজান ও নামাজের সময় মাইক ও বাদ্য বাজানো বন্ধ রাখা।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রার নির্ধারিত রুট ব্যবহার করা। মণ্ডপে শোভাযাত্রা এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা। রাতের বেলায় মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুম: ০১৩২০০০১২৯৯, ০১৩২০০০১৩০০, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কন্ট্রোল রুম: ০২-৫৫১০২৬৬৬, ০২-২২৩৩৮১১৮৮, ০২-৪৭১১৯৯৮৮, ০১৩২০০৩৭৮৪৫-৪৬, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কন্ট্রোল রুম: ০২-৪৮৯৬৩১১৭, ০১৭৭৭৭২০০২৯ এবং ফায়ার সার্ভিস সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম: ০২-২২৩৩৫৫৫৫৫, ০১৭১৩০৩১৮১-৮২ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ অনুরোধ করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সেবা পেতে টোল ফ্রি জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে।
বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষিরা।
তিনটি দিবসকে সামনে রেখে নিজেদের খেতের ফুলগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
চাষিদের আশা, সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে এবং তারা লাভবান হতে পারবেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, নাভারণ ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে নানা জাতের ফুল। এ অঞ্চলের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ অন্তত ১৩ ধরনের ফুল।
গদখালীতে বৃহস্পতিবার সকালে ফুলের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরেই চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে তাদের উৎপাদিত বাহারি সব ফুল নিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বিক্রির জন্য দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়া বাজারে ফুলের জোগানও বেশি। গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম।
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে গোলাপ আগে বিক্রি হয়েছে পাঁচ টাকা দরে, গত বৃহস্পতিবার সে গোলাপ বিক্রি হয় আট থেকে ১০ টাকা দরে।
ফুল চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সামনের তিন দিবসে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।
গত বৃহস্পতিবার বাজারে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ টাকা। এ ছাড়া জারবেরা প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, জিপসি আঁটির প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাধা প্রতি হাজার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রংভেদে ৮ থেকে ১২ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎসব যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দাম ততই বাড়ছে।
ফুলচাষি পলাশ হোসেন বলেন, ‘১০ কাঠা জমিতে গোলাপ চাষ করেছি। গত দুই দিন আগে গোলাপের দাম ছিল পাঁচ টাকা। আজ আট থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।
‘আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে এবং আমরা লাভবান হতে পারব।’
ফুলচাষি সোহান হোসেন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে জারবেরা চাষ করেছি। এ বছর ফুলের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। এখন ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
‘আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনের দিবসগুলোতে দাম আরও বাড়বে এবং লাভবান হতে পারব।’
কুষ্টিয়া থেকে ফুল কিনতে আসা ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন বলেন, ‘প্রায় ১৫ হাজার টাকার ফুল কিনেছি। গোলাপ ফুলটা বেশি কিনেছি। অন্যান্যবারের তুলনায় এ বছর বেশি লাভ হবে বলে আশা করছি।’
গদখালী ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর জানান, সারা বছর ফুল বিক্রি হলেও মূলত বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে ফুল বেচাকেনা বেশি হয়। তিন দিবসকে ঘিরে গদখালী বাজারে ফুলের বেচাকেনা জমে উঠেছে।
তিনি জানান, উৎসবের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দামও ততই বাড়ছে। বাজারদর ভালো পেয়ে ফুলচাষি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা খুশি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বসন্তবরণ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গদখালী অঞ্চলে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ করেন চাষিরা। প্রায় ছয় হাজার চাষি এ ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন:আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫।
ভাষাশহীদ, ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ, আহত ও অংশগ্রহণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’।
বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মেলা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম ও সচিব ড. মো. সেলিম রেজা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘পহেলা ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল তিন ঘটিকায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বই এবং বইমেলা সহায়ক। আমরা আশা করি সকল সম্ভাবনায় আলোকিত হবে এবারের মেলা; আমাদের প্রাণের বইমেলা।’
তিনি বলেন, ‘এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে, তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বাহির পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির-গেটের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হয়েছে।
‘এ ছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট ৪টি প্রবেশ ও বাহির-পথ থাকবে।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা-ঘেঁষে বিন্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য খাবারের স্টলগুলোকে এবার বিশেষভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে। নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, “শিশুচত্বর মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে, যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
“বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশু-কিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে। ৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্যতীত প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাংকন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।”
এবারের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৪ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২৪ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।
২০২৪ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে।
এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ৪৩টি ও পুনর্মুদ্রিত ৪১টি বই।
বইমেলার সময়সূচি
পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না।
ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্যতীত)। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
পলিথিনমুক্ত হবে এবারের বইমেলা
এবারের অমর একুশে বইমেলার আয়োজনকে জিরো ওয়েস্ট বইমেলায় পরিণত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে আয়োজনস্থল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্থাপিতব্য সব স্টল, দোকান, মঞ্চ, ব্যানার, লিফলেট, প্রচারপত্র, ফাস্ট ফুড, কফি শপ, খাবার দোকান ইত্যাদি প্রস্তুতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার শতভাগ পরিহার করে পুনঃব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ, যেমন পাট, কাপড়, কাগজ ইত্যাদির ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
স্টল সংক্রান্ত তথ্য
এবারের বইমেলায় মোট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ৭০৮টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১ হাজার ৯১৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি। মোট ইউনিট ১ হাজার ৮৪টি (গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬টি)।
এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি (গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৭টি)।
লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শিশুচত্বরে মোট প্রতিষ্ঠান ৭৪টি এবং ইউনিট ১২০টি (গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৮টি এবং ইউনিট ১০৯টি)।
আরও পড়ুন:শীতের সকালে শত শিশুর কোলাহলে মুখর শক্তি+হেলদি কিডস জোন। এমন সময় সামনে এলো ‘শক্তি মাসকট লায়ন’; গাইল ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’। চমকে উঠল অপেক্ষায় থাকা কৌতূহলী শিশু ও তাদের মা-বাবারা।
শক্তি মাসকট লায়ন তাদের বলল, ‘তোমরা কি আমার গল্প শুনতে চাও?’
উচ্ছ্বসিত শিশুরা সমস্বরে বলল, ‘চাই! চাই!’ এরপর চমৎকার একটি গল্প বলে কিডস টাইম ফেয়ারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠল চরিত্রটি।
একটি শিশুর গল্প বলে শক্তি মাসকট লায়ন; যার পছন্দের রং নীল, সবুজ আর হলুদ। প্রিয় খেলা ফুটবল ও দাবা। কিন্তু একটু খেললেই হাঁপিয়ে ওঠে সে। ব্যথা হতো পায়ে। আবার বুদ্ধি খাটিয়ে দিতে পারত না দাবার চাল।
একটু থেমে শক্তি মাসকট লায়ন বলে, ‘তোমরা কি জানতে চাও এরপর বাচ্চাটির সাথে কী হয়েছিল?’
গল্পে বুঁদ হওয়া শিশুদের চোখে-মুখে তখন আনন্দের ঝলকানি। তারা আবারও বলল, ‘চাই! চাই!’
শক্তি মাসকট লায়ন বলল, ‘বাচ্চাটি শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। বাবা-মা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বলেন, আয়রন, আয়োডিন, ভিটামিন এ ও জিংকের অভাব শিশুটির সুস্থতা ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত করছে। সে অল্পতেই ক্লান্ত হয়, মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। আর এ জন্য পুষ্টিকর সব খাবারের সঙ্গে খেতে বলা হয় শক্তি দই।’
গল্প শেষ হতেই চারিদিকে তুমুল হাততালি।
গত ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ জমকালো উৎসবে এভাবেই শিশুদের মন জিতে নেয় শক্তি মাসকট লায়ন। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপেশ নাগ, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিরেক্টর সুরাইয়া সিদ্দিকা, মার্কেটিং ম্যানেজার পূর্বা চৌধুরী, লাইট অফ হোপের সিইও ওয়ালিউল্লাহ ভূইয়াঁ, কিডস টাইমের ফাউন্ডার তাহমিনা রহমান এবং অন্য কর্মকর্তারা।
এবারের উৎসবে গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেডের হেলদি কিডস জোনে আসা প্রতিটি শিশুই পেয়েছে আকর্ষণীয় হেলদি কিড ব্যাজ। ৪ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ছিল ভিন্নধর্মী মজার মজার অগমেন্টেড রিয়েলিটি গেম। যেমন: ট্যাব গেম, বিগ স্ক্রিন গেম।
এ ছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ছিল ভার্চুয়াল গ্যালাক্সি ট্যুর। ফিজিক্যাল গেমের মধ্যে ছিল রিং টস, বল টস আর বেলুন পপ। ছিল জিনিয়াস কিড গেম।
অনবদ্য এ আয়োজনে প্রতিটি গেমেই ছিল দারুণ সব গিফট জেতার সুযোগ। হেলদি খাবারের জন্য ছিল হেলদি ফুড জোন। ছিল নিউট্রিশন কর্নার থেকে ফ্রি কনসালটেশন নেওয়ার সুযোগ।
খেলা, বিনোদন আর শিক্ষণীয় কার্যক্রমের এক অপূর্ব মিশেল এই কিডস টাইম ফেয়ার। প্রতিবারের মতো এবারও শিশু, অভিভাবক, শিক্ষক ও বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে এটি হয়ে ওঠে দুর্দান্ত উপলক্ষ।
নিজের সন্তানের সঙ্গে স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত কাটাবার সুযোগ হাতছাড়া করেননি অভিভাবকরা।
শিশুদের বিকাশে ২০১৮ সাল থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে কিডস টাইম ফেয়ার। শিশুদের জন্য কারুকাজ, অংকন, পুতুল প্রদর্শনী, মঞ্চ পরিবেশনা এবং অভিভাবকদের জন্য প্যারেন্টিং সেশনের মতো কার্যক্রম আয়োজন করা হয় এ ইভেন্টে।
শিশুদের সৃজনশীলতা ও নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখে আসছে এ ধরনের কার্যক্রম।
দেশে অপুষ্টি প্রতিরোধে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেড। বিশেষ করে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর শক্তি+পণ্য আরও সহজলভ্য করার মাধ্যমে দেশে অপুষ্টির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে গ্রামীণ ডানোন, যা সামাজিক পর্যায়ে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রবিবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী দশম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন।
দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশসহ আন্তসীমানায় পানি ও নদী নিয়ে চলমান ভূ-রাজনীতি এবং সমুদ্রের বিদ্যমান সংকট, সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোকপাত হবে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে।
বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা এতে বক্তব্য দিচ্ছেন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘পানির ভূ-রাজনীতি এবং সমুদ্রের ভবিষ্যৎ’।
এ সম্মেলন চলবে সোমবার পর্যন্ত। এর আয়োজক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ।
এবারের সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো দেশ-বিদেশের যুব, নারী, অ্যাকাডেমিক, গবেষক, নীতিনির্ধারক, এনজিও, দাতা সংস্থা এবং বাস্তবায়নকারীদের সম্পৃক্ত করে পানিশাসন, নদী ব্যবস্থাপনা এবং পানি ও সমুদ্রের ভবিষ্যতের স্থায়িত্ব নিয়ে বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে সক্রিয় আলোচনা করা। একই সঙ্গে আলোচনাকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ ও সচেতনতা তৈরি।
পাশাপাশি পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, ন্যায়সঙ্গত বণ্টন এবং পানি ও সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করা এবং সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাও এর উদ্দেশ্য।
এ ছাড়াও পানি, নদী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ভাবনীমূলক সমাধান চিহ্নিত করা ও প্রচার করা, টেকসই এবং সহনশীলনতার দিকে অগ্রসর হওয়া এবং পানি ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ন্যায়সঙ্গত ও ন্যায্যতার দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করা সম্মেলনের উদ্দেশ্য।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিনে তিস্তা ও সীমান্তবর্তী নদীগুলোর ভবিষ্যৎ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্থানীয় উদ্ভাবন, জলবায়ু ভবিষ্যৎ, পানি অর্থায়ন এবং হাইড্রো-কূটনীতির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে।
দ্বিতীয় দিনে পানি ব্যবস্থাপনায় নারীবাদী দৃষ্টিতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্ষমতার সম্পর্ক মূল্যায়ন, পানিবিষয়ক শিক্ষাকে মূলধারায় সম্পৃক্তকরণ এবং সহযোগিতার ভূ-রাজনীতি এবং সমুদ্র ও পানিসম্পদ রক্ষা নিয়ে আলোচনা হবে।
পানিসম্পদের গুরুত্ব, পানির ন্যায্যতা ও নদীর অধিকার নিশ্চিত করবার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে একশনএইড বাংলাদেশ।
পানিসম্পদ ও তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে মানুষের চিন্তার প্রসার, পানি নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশ ঘটানো, বিভিন্ন ধরনের সংলাপকে উৎসাহিত করা, পানি নিয়ে একত্রে কাজ করতে জোট গঠন, আন্তসীমান্ত কার্যক্রমের উৎসাহ প্রদানের মতো উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই ২০১৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন আয়োজন করে আসছে দেশের অন্যতম শীর্ষ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর পানির ভূ-রাজনীতি ও মহাসাগরীয় ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্মেলনটির আয়োজন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
পরিবেশ রক্ষার প্রত্যয় নিয়ে দেশে যাত্রা শুরু করল অ্যাপ্লায়েড ক্লাইমেট থিয়েটার-বাংলাদেশ তথা অ্যাক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সংস্থার।
রাজধানীর উত্তরায় রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় এর যাত্রা শুরু হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে থিয়েটারকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে সংস্থাটি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পারফর্মিং আর্টস একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এটি জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর আয়োজন করা হয় জলবায়ু সচেতনতাবিষয়ক সেমিনার। এতে বক্তব্য দেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপিং সাস্টেইনেবিলিটি তথা ল্যান্ডসের চেয়ার এসথার ফেরি-কেনিংটন, এরগন থিয়েটার কোম্পানির কো-আর্টিস্টিক ডিরেক্টর রবিন লায়ন্স, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান ড. সাইদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান।
সেমিনার শেষে মঞ্চস্থ হয় ‘ড্রট ইন দ্য ফেইট অফ ফারমার’ নাটক।
নজরুল সৈয়দের রচনা ও আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় নাটকটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের জীবনে আসা প্রতিকূলতা এবং তা মোকাবিলার সংগ্রাম তুলে ধরে।
নাটকের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন বন্ধন সাহা। পরিবেশনায় ছিলেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘থিয়েটারের শক্তি মানুষের আবেগকে আলোড়িত করার, উপলব্ধিকে চ্যালেঞ্জ করার এবং কর্মে উদ্বুদ্ধ করার মধ্যেই নিহিত।
‘অ্যাক্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাই, যা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা তুলে ধরবে না; বরং মানুষকে একটি টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তার জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’
বৈশ্বিক ও স্থানীয় অংশীদারত্ব
অ্যাক্ট বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ও এরগন থিয়েটারের সহযোগিতায় কাজ করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ, হেলথ সিকিউরিটি ফাউন্ডেশন ও কারিগরি সহযোগী বাইটকুইলের সঙ্গে কাজ করবে।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে জনগণকে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
আরও পড়ুন:ঢাকা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুন নাহারের দশম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার।
তিনি ঢাকা বারের সাবেক সহসভাপতি এ কে এম খলিলুর রহমানের একমাত্র কন্যা ও টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের বোন।
এ উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল, দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
আত্মীয়-পরিজন, শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কোটি বাঙালি পেয়েছিল বিজয়ের আনন্দ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর বিজয় ছিনিয়ে আনে বীর সেনারা।
প্রতি বছর মহান বিজয় দিবসে সেই বীর সন্তানদের আত্মত্যাগ ও বিজয়গাঁথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে পুরো জাতি। আর ৫৪তম মহান বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য প্রস্তুত ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
ধোয়ামোছা থেকে শুরু করে সৌন্দর্যবর্ধনের সব কাজ এরই মধ্যেই সম্পন্ন করেছে গণপূর্ত বিভাগ।
স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, শহীদবেদি থেকে সৌধের ফটক পর্যন্ত পুরো এলাকা ধুয়েমুছে চকচকে করে তোলা হয়েছে। পায়ে হাঁটার লাল ইটের পথগুলোতে সাদা রঙের আঁচরে শুভ্র করে তুলেছেন চিত্রশিল্পীরা। বাগানগুলোতে লাগানো হয়েছে গাদাসহ বাহারি ফুলের চারা।
শোভা বর্ধনকারী গাছ ও ঘাসগুলো ছেঁটে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে। পরিষ্কার লেকগুলোর স্বচ্ছ পানিতে শোভা পাচ্ছে রক্তিম লাল শাপলা।
সৌধ প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে লাল-সাদা ফুল গাছের টবগুলো শোভা বাড়িয়েছে কয়েক গুণ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার আগমন ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারে পুরো সৌধ এলাকায় সিসিটিভি স্থাপনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের এক কর্মচারী বলেন, ‘প্রতি বছর বিজয় ও স্বাধীনতা দিবস এলেই আমরা যারা এখানে কাজ করি, তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যায়। অর্ধশতাধিক শ্রমিক মিলে পুরো সৌধ এলাকা ধুয়েমুছে পরিষ্কার করি। এবার বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রায় এক মাস ধরে আমরা স্মৃতিসৌধে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি।
‘মালিরা বাগানগুলোতে নতুন ফুলগাছের চারা লাগিয়ে সুন্দর করে তুলছেন। একদল শ্রমিক মেশিনের মাধ্যমে পুরো সৌধ চত্বর ধোয়ার কাজ করছেন। লেকগুলোর ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে পানি স্বচ্ছ করা হচ্ছে। কেউ বা আবার রং-তুলির কাজ করে যাচ্ছেন এখনও।’
স্মৃতিসৌধের প্রাচীরসহ ভেতরে বাহারি আলোকবাতি বসিয়ে সজ্জার কাজ প্রায় শেষ। ইলেকট্রিশিয়ানরা বৈদ্যুতিক লাইন সংস্কারের পাশাপাশি আলোকবাতি লাগাচ্ছেন। সব মিলিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ।
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবধনের জন্য গত ৮ ডিসেম্বর থেকে স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবে প্রায় এক মাস ধরেই সৌধের কর্মচারীরা দিন-রাত সৌধ এলাকাকে প্রস্তুত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সৌধ প্রাঙ্গণ।’
এদিকে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শনিবার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে আসেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন।
ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে ১০ দিন পূর্বে থেকেই নিরাপত্তায় কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকাসহ রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলেও নিরাপত্তা বলয় জোরদার করা হয়েছে।
‘একই সাথে ১৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকেই ডিএমপিসহ অত্র এলাকায় ট্রাফিক কার্যক্রম চালু থাকবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য