২০১৫ সালের ৭ মে সকাল সাড়ে ১০টা। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া দুই ভাই হৃদয় ও রিয়াদ তখন ক্লাসে। হঠাৎ খবর আসে- বাসায় একটা সমস্যা হয়েছে, দ্রুত যেতে হবে। শিশু দুটি তখনও কিছু আঁচ করতে পারেনি। দ্রুত এক কিলোমিটার দূরে সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসার উদ্দেশে ছোটে দুই ভাই।
বাসার নিচে পৌঁছেই ওরা দেখতে পায় মানুষের ভিড়। স্থানীয় লোকজন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জটলা। বাসায় প্রবেশ করে দেখে স্বজনরা আহাজারি করছেন। আর ড্রয়িংরুমের মেঝেতে পড়ে আছে মায়ের গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ।
বাথরুমে পড়ে আছে ফাল্গুনীর নিথর দেহ। আদরের একমাত্র ছোট বোনটিরও গলাকাটা। দু’জনের রক্তে ভেসে গেছে ড্রয়িংরুম ও বাথরুমের মেঝে।
ঘণ্টা দুয়েক আগেও হৃদয় ও রিয়াদকে ঘুম থেকে ডেকে হালুয়া-পরোটা খাইয়ে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন মা। ছোট বোন ফাল্গুনী ছিল ঘুমে।
ঘটনার আকষ্মিকতায় সেদিন মুষড়ে পড়েছিল দুই শিশু। মা ও বোনকে হারানোর শোকে কাঁদতেও ভুলে যায় ওরা। ধপ করে বসে পড়ে পাশের খাটে। সে সময় ওদের সঙ্গে ছিলেন দূর সম্পর্কীয় চাচা মো. বেলাল হোসেন। এই বেলাল সেদিন চারতলার ওই ফ্ল্যাটে পাশে বসে স্বজনহারা শিশু দুটিকে সান্ত্বনার বাণী শোনান।
বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দীর্ঘ ৯ বছর পর ওই মা-মেয়ে হত্যার মামলার রায় হয়েছে বৃহস্পতিবার। রায়ে ঘটনার দিন হৃদয়-রিয়াদের সঙ্গে খাটে বসে থাকা বেলালের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আদালতের রায়ের খবরটিও সেদিনের মতোই ক্লাসে বসে জানতে পারেন রিয়াদ হোসেন। তবে সেদিনের মতো স্কুলের বেঞ্চিতে বসে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে।
সময় পরিক্রমায় রিয়াদ এখন বড় হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগে লেখাপড়া করেন তিনি। আর তার বড় ভাই হৃদয় হোসেন এলাকায় ব্যবসা করেন।
রিয়াদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রায় শুনে খুব খুশি হয়েছি। এখন আমাদের চাওয়া- রায়টা দ্রুত কার্যকর করা হোক।’
তিনি বলেন, ‘এখন একটু বড় হয়েছি। অনেক কিছুই আজ বুঝতে পারি। তখন (ঘটনার সময়) ছোট ছিলাম, কিছুই বুঝতাম না। আম্মু থাকলে জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো। তবে আলহামদুলিল্লাহ, আব্বু সবকিছু পূরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু মা তো মা-ই; মায়ের অভাব কখনোই অন্য কিছুতে পূরণ হয় না।’
আসামি বেলালের উল্লেখ করে রিয়াদ বলেন, ‘আমার মা-বোনকে খুন করে লোকটা স্বাভাবিক মানুষের মতো আমাদের সঙ্গেই বসে ছিল। কত বড় অমানুষ হলে কেউ এমন আচরণ করতে পারে! তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, এটাই চাওয়ার ছিল।’
যা ঘটেছিল সেদিন
সদরঘাটে দক্ষিণ নালাপাড়ায় মোবাশ্বের মিয়ার বাড়ির চতুর্থ তলার ওই বাসা থেকে ছাগলের মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলমের স্ত্রী নাছিমা বেগম ও তার ১০ বছর বয়সী কন্যা রিয়া আক্তার ফাল্গুনীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় সদরঘাট থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন নাছিমার স্বামী শাহ আলম। মামলায় হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি নগদ ১ লাখ ১১ হাজার টাকা ও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার লুটের কথা উল্লেখ করা হয়। সেই মামলার তদন্তে নেমে হিমশিম খান সদরঘাট থানার তৎকালীন পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে কোনো তথ্যই পাওয়া যাচ্ছিলো না।
পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক সৈয়দ আব্দুর রউফ৷ তদন্তে নেমে প্রতিবেশী ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি শাহ আলমের সঙ্গেও নতুন করে কথা বলেন তিনি।
এই পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে নগদ টাকা আর স্বর্ণালংকার ছাড়াও সেদিন দুটি মোবাইল ফোন ওই বাসা থেকে লুট হয়। সেই মোবাইলের সূত্র ধরে মূল আসামিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের পর একই বছরের নভেম্বরে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মো. বেলাল হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার বেলাল নিহত নাছিমা ও ফাল্গুনীকে হত্যা করে লুট করা স্বর্ণালঙ্কার নগরীর কালামিয়া বাজারে মৌমিতা জুয়েলার্সে বিক্রির কথা জানান।
পরবর্তীতে বেলালের দেখানো মতে মৌমিতা জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কেনার পর ওই স্বর্ণালংকার গলিয়ে নতুন স্বর্ণালংকার তৈরির কথা জানান। তাছাড়া লুট করা দুটি মোবাইল সেটের একটি নিজের কাছে রেখেছিলেন বেলাল। অন্যটি উপহার দিয়েছিলেন বান্ধবীকে।
মো. বেলাল হোসেন সম্পর্কে শাহ আলমের খালাতো ভাই৷ ঘটনার তিনদিন আগে নিজের মাংসের দোকানের টিউবওয়েল মেরামতের জন্য বেলালকে ডেকে বাসায় নেন শাহ আলম। পরদিন টিউবওয়েল মেরামতের সময় দুপুরের খাবারের জন্য শাহ আলমের সঙ্গে বাসায় যান বেলাল। সেখানে আলমারি থেকে টাকা নিয়ে নাছিমা তার স্বামী শাহ আলমকে দেয়ার সময় বিষয়টি খেয়াল করেন বেলাল। পরবর্তীতে ওই টাকা লুটের পরিকল্পনা করে তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজের ফাঁকে শাহ আলমের মাংসের দোকান থেকে একটি ধারালো ছুরি নিয়ে পাশ্ববর্তী ডাস্টবিনে রাখেন বেলাল।
৭ মে সকালে শাহ আলমকে দোকানে দেখে ডাস্টবিন থেকে ছুরিটি শরীরের পেছনে লুকিয়ে বাসার সামনে যান বেলাল। সেখানে দাঁড়িয়ে শাহ আলমের ১৪ ও ১২ বছর বয়সী দুই ছেলে হৃদয় হোসেন ও রিয়াদ হোসেন স্কুলের উদ্দেশে বের হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি।
হৃদয় ও রিয়াদ বেরিয়ে যাওয়ার পর বাসায় প্রবেশ করে নাছিমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেন বেলাল। এসময় ফাল্গুনী এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেন তিনি। পরে ওই বাসায় হাত-মুখ ধুয়ে আলমারি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান।
হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর স্বজনদের সঙ্গে শাহ আলমের বাসায় এসে নিহতদের মরদেহ ভবন থেকে নিচে নামানোসহ বিভিন্ন কাজে অংশ নেন বেলাল।
বেলালের মৃত্যুদণ্ড ও টিটুর ৩ বছরের জেল
নাছিমা ও তার মেয়ে ফাল্গুনীকে গলাকেটে হত্যার ওই মামলায় বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সীরাজম মুনিরা। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ সাগর রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, ‘মর্মান্তিক ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে মো. বেলাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাছাড়া লুট করা মালামাল কেনায় স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী টিটু সাহাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। দণ্ডের অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল দেয়া হয়েছে।’
রায়ের আদেশ নিয়ে স্ত্রী-কন্যার কবরের পাশে যাবেন শাহ আলম
নিহত নাছিমার স্বামী শাহ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী-কন্যা বলে বলছি না, ঘটনার মর্মান্তিকতা সেদিন উপস্থিত সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। পুরো এলাকার মানুষ কেঁদেছে। আবার আজ (বৃহস্পতিবার) রায় শুনে এলাকার গাছপাতা পর্যন্ত খুশি।’
তিনি জানান, নিহত স্ত্রী-কন্যাকে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে সমাহিত করা হয়। আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার রায়ের কপি ও অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে দুই ছেলেসহ মুরাদনগরের পূর্ব ধইর এলাকায় নিজেদের পারিবারিক কবরস্থানে স্ত্রী ও কন্যার কবর জিয়ারতে যাবেন তিনি।
আরও পড়ুন:আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।
এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।
এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আজ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ (২৫)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন ছাত্র-জনতা। এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
মন্তব্য