মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকে দরকার আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি, তলে তলে আপস হয়ে গেছে।’
রাজধানীর সাভারের আমিন বাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঙ্গলবার কাদের আরও বলেন, ‘দিল্লি আছে, যুক্তরাষ্ট্রেরও দিল্লিকে দরকার। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। শত্রুতা কারও সঙ্গে নেই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। শেখ হাসিনা এমন ভারসাম্য সবার সঙ্গে করে ফেলেছেন। আর কোনো চিন্তা নেই। ইলেকশন হবে, যথাসময়ে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অক্টোবরে সোজা হয়ে দাঁড়ান, কৌশল ভালো করে শিখে নেন। করতে হবে যুদ্ধ। বিএনপির লোকেরা এখন পথ হারিয়ে দিশেহারা। দুই সেলফিতেই বাজিমাত। এক সেলফি দিল্লিতে আরেক সেলফি নিউইয়র্কে। প্রথমে দিল্লিতে গিয়ে, পরে নিউইয়র্কে বাজিমাত।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে, খেলা হবে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে চোরদের বিরুদ্ধে। সব চোর একত্র হয়েছে ক্ষমতার জন্য। ক্ষমতায় বসে দেশ ধ্বংস করবে। ওই দিন শেষ। ডিসেম্বরে বলেছিল না খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, মনে আছে? নয় মাস চলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করেছে। ৪টা ৫টা বছর আদালতে হাজিরা পর্যন্ত দেয়নি। এত দিন খালেদা জিয়ার মামলার ফয়সালা হয়ে যেত। কিন্তু এ মামলা ফয়সালা হয়নি বিএনপির জন্য। বিএনপির মামলা রয়ে গেছে। আদালতে ঝুলে আছে। খালেদা জিয়াকে দেখিয়ে যদি কিছু করা যায়। অক্টোবরে নাকি পতন, কোন অক্টোবর, এই অক্টোবর নাকি আগামী অক্টোবর। নাকি তার পরের বছরের অক্টোবর। অক্টোবরে নভেম্বরে ডিসেম্বরে কিছুই হবে না।’
কাদের বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু, মার্চ থেকে শুরু, খেলা হবে আগামী মাসে সেমিফাইনাল। জানুয়ারিতে ফাইনাল। বিএনপি এখন ফাউল করছে। ফাউল করলে হলুদ কার্ড। ফাউল হলে লাল কার্ড। খেলা নিয়ে ফাউল করা চলবে না। খালেদা জিয়া ছাড়া বিএনপি ইলেকশন করবে না। এত দিন কই ছিল? খালেদা জিয়া বছরের পর বছর জেলে। তার জন্য একটা আন্দোলন হোক, করতে পারল না ফখরুল। আর এখন খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন করবে না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নাকি নিষ্ঠুরতা দেখাচ্ছে, কেমন নিষ্ঠুরতা, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারকে তারা হত্যা করেছে। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা সেদিন বিদেশে ছিলেন বলে বেঁচে গিয়েছিলেন। সেদিন নিষ্ঠুরতা কোথায় ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের নায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান। নিষ্ঠুর কারা? জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, জেলখানায় চার নেতাকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। কে করেছে এগুলো, হাওয়া ভবন কে করেছে, তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বেগম জিয়াকে একবারও কি কেউ হত্যা করতে গিয়েছিল। তারেক রহমানের জীবনের ওপর একবারও কি হামলা হয়েছে? আওয়ামী লীগ করবে না, আওয়ামী লীগ হত্যা-সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের শিকার। এখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অক্টোবর মাস তো চলে যাচ্ছে। আর কত হুমকি, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বুড়িগঙ্গায় ভেসে গেছে। গত ডিসেম্বরের আন্দোলন গরুর হাটের খাদে পড়েছে। আর আন্দোলন আছে? কোথায় যাবেন? এখন এই জায়গায়, ওই জেলায়, ওই নগরীতে, আজকে দিশেহারা পথিকেরা আন্দোলনের নামে ঘুরে বেড়ায়। এতে কোনো কাজ হবে না। নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ আর কিছুই চায় না।’ আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট এক সমীক্ষায় মন্তব্য করেছে, এই মুহূর্তে ভোট হলে বাংলাদেশের শতকরা ৭০ জন লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগাঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শরিক দলের নেতারা।
রোববার রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে তারা বলেন, মূল দল আওয়ামী লীগের কাছে শরিকদের চাহিদা জানানো হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই বিয়ষটি চূড়ান্ত হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের সংসদ ভবনের বাসায় এ বৈঠক হয়।
এতে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম উপস্থিত ছিলেন।
জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, জাতীয় পার্টি- জেপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার।
বৈঠক শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৪ দলীয় জোট এক সঙ্গে নির্বাচন করবে। জোটের যারা প্রার্থী হবেন তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনো তারা বিবেচনা করছেন। আজকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসন বণ্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। তারা আরও দুই-একদিন সময় চেয়েছেন। দুই-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করলে জোটের প্রার্থীদের তালিকা আমরা দেশবাসীকে জানাতে পারব। রাজনৈতিকভাবে ১৪ দল এক সঙ্গে আছে, এক সঙ্গে নির্বাচন করবে।
তিনি আরও বলেন, জোটের প্রার্থীদের তালিকা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। কোন দলের কে প্রার্থী হবেন, কোন আসন থেকে হবেন, সেই তালিকাটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত আসনগুলো ছাড়া বাকি আসন উন্মুক্ত থাকবে। উন্মক্ত আসনগুলোতে প্রতিটি দল নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন করবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকে একটি বিষয় আলোচনা হয়েছে, সেটা হচ্ছে সিট সমঝোতা। তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছে আলোচনা করবে। আমার কাছে মনে হয়েছে তারা এখনো তালিকা প্রস্তুত করতে পারেনি।
তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বসর মাইজভান্ডারী বলেন, ১৪ দলীয় শরিকদের বিষয়ে এক ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে জোটে যারা যুক্ত হয়েছেন তাদের বিষয়ে আরও আলোচনা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই বেশি বেশি মানবাধিকারের কথা বলে, নানা প্রেসক্রিপশন দেয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবে রোববার চিটাগাং জার্নালিস্ট ফোরাম ঢাকা (সিজেএফডি) আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও সিজেএফডি’র সাবেক দুই প্রয়াত সভাপতি এম ওয়াহিদ উল্লাহ এবং শীলব্রত বড়ুয়ার স্মরণসভায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস প্রসঙ্গে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আগুন-সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং অবরোধ ডেকে দিনের পর দিন মানুষকে যারা অবরুদ্ধ করে রাখতে চায়, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করে, তারাই আবার প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের কথা বলে।
‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও চরম মানবাধিকার হরণকারীদের পক্ষে যারা অবস্থান নেয়, তারা এখন মানবাধিকারের প্রেসক্রিপশন দেয়, এটিই হচ্ছে পৃথিবী ও মানব সভ্যতার জন্য দুর্ভাগ্য।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। পাখি শিকারের মতো করে তারা মানুষ শিকার করছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, ১৮ হাজার নিহতের মধ্যে ১৩ হাজারই নারী ও শিশু। সেখানে হত্যা বন্ধের বিপক্ষে যারা কথা বলে, হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য যারা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে তারা আবার বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের প্রেসক্রিপশন দেয়, এটিই বিশ্ববাসীর জন্য দুর্ভাগ্য।’
প্রয়াত সাংবাদিক এম ওয়াহিদ উল্লাহ ও শীলব্রত বড়ুয়া সাংবাদিক সমাজের উজ্জ্বল মুখ ছিলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা গণমাধ্যমের জন্য আজীবন কাজ করে গেছেন। সাংবাদিক হিসেবে লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে পেশাগতভাবে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন।’
একটি রাষ্ট্রের বিকাশের জন্য ভালো সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় রাষ্ট্র পথ হারিয়ে ফেলে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারাও অনেক সময় পথ হারিয়ে ফেলেন। সে ক্ষেত্রে একজন সাংবাদিক কিন্তু রাষ্ট্র যাতে সঠিক খাতে প্রবাহিত হয় এবং যারা দায়িত্বে থাকেন তারা যাতে খেই হারিয়ে না ফেলেন সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আজকে যারা সাংবাদিক সমাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা ভালো সাংবাদিক তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।’
সিজেএফডির সভাপতি মামুন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় দুই প্রয়াত সাংবাদিকের জীবনের ওপর আলোকপাত করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সিজেএফডির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এনামুল হক চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শাহিন উল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন জঙ্গী, মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিটি এডিটর (বাংলা) কানাই চক্রবর্তী, বিশেষ প্রতিনিধি অনুপ খাস্তগীর, একুশে টিভির ডেপুটি হেড অফ নিউজ সাইফ ইসলাম দিলাল, সিজেএফডির সহ-সভাপতি শিবুকান্তি দাশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
এম ওয়াহিদ উল্লাহর স্ত্রী বেগম ওয়াহিদ, ছেলে আসিব ওয়াহিদ এবং শীলব্রত বড়ুয়ার পরিবারের পক্ষে বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদক (ইংরেজি) সমীর বড়ুয়া বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে শো-কজ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করে জনসভায় অংশগ্রহণ ও সরকারি গাড়ি ব্যবহার করায় নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থীকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
রোববার মেহেরপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির জেলা শাখার চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন এ শো-কজ করেন।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় জেলা নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে প্রার্থী সশরীরে অথবা মনোনীত প্রতিনিধিকে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৯ ডিসেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের শোলমারীস্থ বাসভবনের সামনে নির্বাচনী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন এবং সরকারি গাড়িযোগে পুলিশ প্রটোকল নিয়ে তিনি জনসভায় উপস্থিত হন।
এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ১২ ও ১৪ (২) এর লঙ্ঘন হয়েছে।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বরিশাল ও সিলেট বিভাগের পুলিশ কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক এবং পাঁচ জেলার পুলিশ সুপারদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আসাদুল হকের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে অভিজ্ঞ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের পদ পূরণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
হবিগঞ্জ, পিরোজপুর, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরের পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া মানিকগঞ্জ সদর ও সিংগাইর থানা এবং গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলির প্রস্তাব ইসিতে পাঠানোর জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় নির্বাচনি তফসিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
‘ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে রোববার এই রিট দায়ের করা হয়।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আছেন ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিটে আইন সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ সচিব, মান্ত্রপরিষদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিবাদী করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী।
তবে রিট দায়েরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, আজকে আমি কোনো রিট দায়ের করিনি। এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
রিটের একটি কপি নিউজবাংলার হাতে এসেছে, যেখানে আইনজীবী হিসেবে ইউনুছ আলীর নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে।
রিটের বিষয়ে ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমরা দেখেছি ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ আসনে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসন, পুলিশ ও নিজেদের সশস্ত্র লোকদের ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখল ও অন্যদের ভোট প্রদানে বাধার সৃষ্টি করেছেন।
‘সংসদ বহাল রেখে জালিয়াতিমুক্ত নির্বাচন অসম্ভব। প্রহসনমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছি।’
চলতি বছরের ৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসির নিবন্ধন পেয়েছে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের নিবন্ধন নম্বর ৪৬। দলটির নির্বাচনী প্রতীক হচ্ছে আপেল।
আরও পড়ুন:আগামী ২০ ডিসেম্বর সিলিটে হযরত শাহজালালের (র.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিফ্রিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারতের পর সিলেটে জনসভার আয়োজন করবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ সভার মধ্য দিয়ে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে।
মানবাধিকার ইসুতে বিএনপির তীব্র সমালোচনা করেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, জিয়ার পর খলেদা জিয়াও গুম খুনের রাজনীতি করেছে। বিএনপি জিয়া ও খালেদা জিয়ার আমলে যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তাদের লজ্জা নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘৃণ্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দলটির মুখে মানবাধিকারের বুলি শোভা পায় না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ মানবাধিকার লুণ্ঠিত হচ্ছে যাদের হাতে তারাই মানবাধিকার নিয়ে বেশি সোচ্চার । তবে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা দেখলাম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডায় ১৩টি দেশের ৯০ জনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ নেই।
তিনি বলেন, গতানুগতিক কর্মসূচি অবরোধ হরতাল এটা বিএনপির ব্যর্থ আন্দোলনের ফলশ্রুতি। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা মানবাধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। তাদের কথা শুনলে মনে হয় বিশ্ব মোড়লের সোল এজেন্ট।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানবাধিকারের কথা বলতে হলে ফিলিস্তিনের কথা বলতে হবে। ১৮ হাজার মানুষ মেরেছে, এখনও চলছে। অথচ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের পক্ষে একমাত্র সমর্থন দিল যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকে আবারও প্রমাণ হলো, ইসরায়েল নামক দুষ্ট ছেলে আমেরিকার সন্তান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে স্বাধীনতার পর ১৫ আগস্টের ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। এই নৃশংসতা সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। এই হত্যার বিচার পর্যন্ত হয়নি। জেলের ভেতরে চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি শেষ করে দিতে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের পর খালেদা জিয়াও গুম খুনের রাজনীতি করেন। দেশে বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘৃণ্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।
গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও সাধারণ জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করার প্রতিবাদে রবিবার সকাল ১১ টার দিকে মুন্সীগঞ্জের উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে জানান, মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দিতে শুরু করলে পুলিশ এসে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয় এবং মানববন্ধনে বাধা দিলে তা পণ্ড হয়ে যায়।
মুন্সীগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি সেলিনা আক্তার বিনা বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাকারিয়া মোল্লা, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মো. তোতা মিয়া, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম স্বপন, জেলা মহিলা দলের সদস্য অ্যাডভোকেট রোজিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
মন্তব্য