হত্যার রাজনীতি করতে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরে ঈদগাহ ময়দানে সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিবরণ জনগণের মাঝে পৌছে দেয়া এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের তৃণমূল প্রতিনিধি ও নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি হিট অ্যান্ড রান করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপি জামাত যদি বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের একজন মানুষের ওপর আঘাত হানে বা হত্যা করে, তাহলে আমরা ক্লিলিং এজেন্টদেরকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করব।’
তিনি বলেন, ‘স্যাংশন দিয়ে কোনো লাভ নেই, সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনব। বিএনপিকে মোকাবেলা করেই বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বিঘ্নে ও স্বাধীন-সার্বভৌম নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করব। যাতে সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ও স্বস্তিতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।’
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও ভয়ে ভীত হয়ে নয়, জামাত-শিবির ও বিএনপি, এমনকি অশুভ শক্তি ও অশুভ রাজনীতির বিপক্ষে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে আপনারা লড়াই করতে অভ্যস্ত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতা-কর্মীদের আঘাত করে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা যায় না।
‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রক্তচক্ষু ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারেনি । খুনি জিয়া ও মোস্তাকরা উৎখাত হয়ে গেছে। জাতীর পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরও জাতীর পিতার আদর্শের সুযোগ্য সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে ২১ বছর লড়াই সংগ্রাম করে টিকে আছেন।’
রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেকান্দার আলী শেকের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, পৌর মেয়র নাজমা রশীদসহ আরও অনেকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ উন্নয়নের আলোয় আলোকিত, তাই এখন কোনো অভাব নেই বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাদের আয়োজনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে আয়োজিত যুবসমাবেশ ও আনন্দর্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, নিরাপদ পানির জন্য টিউবওয়েল, ল্যাট্রিন ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে কোনো কিছুর সংকট নেই। আগামী দিনেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। তাই নিজেদের স্বার্থে এই সরকারের সঙ্গেই থাকতে হবে।
এম এ মান্নান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ এখন উন্নয়নের আলোয় আলোকিত। দেশে এখন কোনো কিছুর অভাব নেই। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সারা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের এই অভাবনীয় উন্নয়ন দেখে মানুষ খুশি। আগে সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না, এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, বিদ্যুতের আলোয় সারা বাংলাদেশ হাসছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমি আপনাদের সন্তান। আমার কোনো চাহিদা নেই। আপনাদের সেবা করাই আমার কাজ। আমি শেখ হাসিনার সাথে কাজ করে বলছি, তিনি হাওরাঞ্চলের মানুষকে ভালোবাসেন। তিনি চান হাওরাঞ্চলের উন্নয়ন হোক৷ তাই হাওরাঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে আবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
যুব সমাবেশে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর সিতুর সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম শিপনের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রীর পুত্র সাদাত মান্নান অভি, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন প্রমুখ৷
এরআগে যুব সমাবেশ উপলক্ষে একটি আনন্দ র্যালি শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে শুরু হয়ে স্লোগানে স্লোগানে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলোচনা সভায় এসে মিলিত হয়৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী রোববার ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা সদরে দলটির গুম-খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবন্ধন করবে বিএনপি।
শুক্রবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে।’
রিজভী বলেন, ‘ঢাকায় মানববন্ধন হবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, ওইদিন সকাল ১১টায়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সেইসঙ্গে ঢাকার বাইরে অন্যান্য জেলাসমূহে মানববন্ধনে সফল করার জন্যও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সেদিন গুম ও খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সমন্বয়ে এ মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। দশম দফায় তারা অবরোধ ডাকার পর আগামী সপ্তাহে প্রথম ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। রোববার হরতাল-অবরোধ না দিয়ে শুধু মানববন্ধন করবে তারা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমন করে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে।’
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিবৃতিদাতাদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কোনো সন্ত্রাসীর মানবাধিকার নিয়েও কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নাই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। যে সমস্ত বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ দশ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এটি নিয়ে বড় বড় সংগঠনগুলোর কোনো কথা ও বিবৃতি নেই। অথচ তারা বরিশালে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল এবং কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল- সেজন্য বিবৃতি দিল। আমি কথাগুলো বলছি কারণ আগামী পরশু দিন ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ইন্ডেমিনিটি অধ্যাদেশ এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা হয়। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে। সে বার নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা। একজনের নামের সঙ্গে আরেকজনের মিল আছে, সেজন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। এমনকি ফাঁসি কার্যকর হবার পর রায় হয়েছে- এমন ঘটনাও আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা; ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে চলেছে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, বিবৃতি দেয়াই তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, ইদানিং অবশ্য তাদের দেখা যাচ্ছে না। দেশে যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ এখন তাদের বিবৃতি দেখতে পাচ্ছি না। এই বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও তাদের খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলো কি না- তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ শ’ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতালকে অকেজো করে দেয়ার পর সেখানে আইসিইউ’তে থাকা সবগুলো মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এই ধরনের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালো মতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সেজন্য সহায়তাও করছে।
‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এ মানবাধিকার লঙ্ঘন, এতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি এবং থাকব। আমাদের সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীও আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সমস্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, সেটি তো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।’
শ্রমিক অধিকারের নামে বছরে ১২ বার বিদেশ সফরকারী দুয়েকজন শ্রমিক নেতা কারও এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কি না- প্রশ্ন রেখে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘দেখা গেল, আলপনা আক্তার, কল্পনা আক্তার, জল্পনা আক্তাররা বছরে ১২ বার বিদেশ গেছেন, ১৮-২০ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়েছেন। এদের কারও কারও আবার গাড়ি আছে, ঢাকা শহরে বড় বড় ফ্ল্যাট আছে। শ্রমিক সমাবেশে যাবার সময় কিছু দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে কিংবা রিকশায় যান, যদি শ্রমিকরা গাড়ি দেখে ফেলে। এরা কীভাবে এবং কারও এজেন্ট হিসেবে কাজ করে সেটি আজকে স্পষ্ট। এ সমস্ত এজেন্টের ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি সাংবাদিক সমাজের কাছে অনুরোধ জানাবো তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য।’
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল খান, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।
আরও পড়ুন:কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সংবিধান মেনেই আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে নিষেধাজ্ঞা আসবে কেন? কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগের উদ্বেগ নেই।
ওবায়দুল কাদের শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় তাহলে বিএনপি ও তার দোসররাই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নিষেধাজ্ঞা আসলে বিএনপির বিরুদ্ধে আসবে। বিএনপিই নির্বাচনের পথে প্রধান অন্তরায়। তাদের বিরুদ্ধে এখনও কেন নিষেধাজ্ঞা আসছে না?
ওবায়দুল কাদের বলেন, পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের পাঁয়তারা আছে। দেশেও আছে, বিদেশেও আছে। পোশাক খাতের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছেন। এ খাতের শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বর্তমান সরকার আন্তরিক। পরবর্তীতেও এ সরকার ক্ষমতায় আসলে সংসদে নতুন শ্রম আইন প্রণয়নে ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে পানি ঘোলা করার দরকার নেই। যারা করছেন নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে করছেন।
জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তিনি বলেন, যা হবার ১৭ তারিখের আগে হবে। এরপর আর এ সমস্যা থাকবে না।
নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি ভালো হবে এমন আশা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো বাধা বিপত্তি, হুমকি, নাশকতা, অগ্নি সন্ত্রাস এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা হতে পারবে না। নির্বাচনমুখী ভোটাররাই যারা নির্বাচনে বাধা দিতে আসবে তাদের প্রতিহত করবে। আজকে বিএনপি ও তার সহযোগীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এরপরও নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা, জাগরণের কমতি নেই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী এবং দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনের গোপালগঞ্জ সফরের শেষ দিনে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হন।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে শুক্রবারে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রায় ঘন্টাব্যাপী বক্তব্য রাখেন তিনি।
বক্তব্যে তিনি পুরোনা স্মৃতি রোমন্থনের পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচন, বিএনপির আন্দোলন, নিজের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাই তো স্লোগান তুলেছিলাম আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো। আমরা ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করেছি। আর সেই আন্দোলন সফল করতে সরকারে এসে একটানা সরকারে থেকে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে থেকে উন্নত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘বারবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখিছি। এই কোটালীপাড়াতেও বিশাল বিশাল বোম মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিলো। মিটিং এ আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা এগুলোতো প্রতিনিয়ত হয়েছে। সরাসরি গুলি করা অবস্থার মধ্য দিয়েও আল্লাহ বারবার আমাকে বাঁচিয়ে রাখলেন।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আবার তারা আউটসোসিং আন্দোলন করে। সমাজের কিছু অবাধ্য লোকজনের হাতে টাকা দিয়ে আগুন দেয়ায়। যুবদলের নেতা নিজে সরাসরি আগুন দিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। জনগন কিন্তু সচেতন। তাদের ধরে ধরে পুলিশে দিয়ে দিচ্ছে।’
কোটালীপাড়ার ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে সারা দেশ নিয়ে চিন্তা করতে হয়, ভাবতে হয়। আমার নির্বাচনী কাজ আপনারাই করে দেন। যে কারণে আমি সারা দেশের মানুষের কথা ভাবতে পারি, কাজ করতে পারি। যার সুফল সারা দেশের মানষ পায়।’
কোটালীপাড়ায় মতবিনিময় শেষে তিনি সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়া যান। বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন এবং বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শহীদ উল্লাহ খন্দোকার, আয়নাল হোসেন শেখসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার বাতিল করা মনোনয়ন ফিরে পেতে তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার ইসিতে আপিল করেছেন ১৫৫ জন প্রার্থী। এ নিয়ে গত তিন দিনে মোট আপিলের সংখ্যা ৩৩৮ হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব ও মুখপাত্র মো. জাহাংগীর আলম।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাতিল হওয়া ৭৩১ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রথম দিন আপিল করেছিলেন ৪২ জন, দ্বিতীয় দিন করেন ১৪১ জন আর তৃতীয় দিনে করেছেন ১৫৫ জন। সব মিলিয়ে আজ পর্যন্ত আপিল করেছেন ৩৩৮ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ৩৩৮ জন থানার ওসি বদলিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। একইসঙ্গে ইউওনদের বদলির ক্ষেত্রে তিন ধাপে প্রস্তাব এসেছিল; প্রথম ধাপে ৪৭ জন, দ্বিতীয় ধাপে ১১০ জন এবং তৃতীয় ধাপে ৪৮ জন। মোট ২০৫ জনের বদলির প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন সম্মতি দিয়েছে।’
এছাড়া ৪০তম বিসিএস থেকে উপজেলা থানা নির্বাচন অফিসার হিসেবে নন ক্যাডার ৮৩ জনকে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ প্রদান করেছে। তারা ১২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে যোগদান করবেন বলে জানান তিনি।
দেশের সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি। কারণ জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে সরকার গঠন করেছিলেন। তারপর তিনি সরকারের ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিলেন।’
হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাজনীতিতে নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাগরিক সমাজ সময়ে সময়ে যেসব কথাবার্তা বলে সেগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখি। কিন্তু দেশজুড়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে যে অগ্নিসন্ত্রাস পরিচালনা করা হচ্ছে, অনেক মানুষ এই অগ্নিসন্ত্রাসের বলি হয়েছে, সেই আওয়াজটা সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক সমাজ এবং নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আসা প্রয়োজন। কিন্তু নাগরিক সমাজের কোনো বক্তব্য-বিবৃতি নেই। এটি খুবই দুঃখজনক।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি, নাগরিক সমাজ বা বুদ্ধিজীবী বলে যারা পরিচিত তারা সময়ে সময়ে বিবৃতি দেন আর এখন নিশ্চুপ, তাদেরকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এরা সুবিধাবাদী এবং এদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে।’
‘আওয়ামী লীগ দল ভাগানোর রাজনীতি করছে’- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আসলে বিএনপি থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নেতারা বিএনপি থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন- এই দলটা কেন করেন, যে দল আপনাদেরকে সংসদ নির্বাচন, উপজেলা বা জেলা পরিষদ নির্বাচন তো দূরের কথা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও করতে দেয় না?’
তিনি বলেন, ‘এক সময় রিজভী সাহেবরা দেখবেন যে ওনারা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ নেই, ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। কারণ বিএনপির এই অপরাজনীতির সঙ্গে দলটির নেতারাই একমত নন। রিজভী সাহেবের মতো কিছু মানুষ আছেন- ইয়েস স্যার, হ্যাঁ স্যার, জি স্যার। তারাই তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে এই অগ্নিসন্ত্রাসের আহ্বান জানাচ্ছেন। এই অপরাজনীতি থেকে তাদের বের হয়ে আসা প্রয়োজন।’
বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না- এ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একটি দল নির্বাচনে না এলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না এমন তো সংবিধানে লেখা নেই। পৃথিবীর কোনো আইনেও লেখা নেই। বাংলাদেশে বহু নির্বাচন হয়েছে যেখানে বহু দল অংশ নেয়নি। যেমন ১৯৭০ এর নির্বাচনেও অনেক বড় নেতার নেতৃত্বাধীন দল অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিলো এবং সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
‘এবার অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পরও প্রতি আসনে প্রায় ৭ জন করে প্রার্থী আছেন। গ্রামে-গঞ্জে নির্বাচনের উৎসব শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং দেখতে পাবেন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য