পাবনা সদর উপজেলার চরাঞ্চলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে ধরা পড়েছে দেশের বিলুপ্তপ্রায় সবচেয়ে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার। খবর পেয়ে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা সাপটিকে উদ্ধার করে।
শনিবার দুপুরে উপজেলার হেমায়েতপুরের চর ভবানীপুর গ্রামের এক জেলের চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়ে এটি। সাপটিকে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
টিমের জ্যেষ্ঠ রেস্কিউয়ার এবং সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের হটলাইনে ফোন আসে। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিমের সাধারণ সম্পাদক প্রীতম সুর রায়কে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল যাই এবং সাপটিকে উদ্ধার করি।
‘উদ্ধারের পর সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং সাপে কামড়ালে করণীয় সম্পর্কে সকলকে দিকনির্দেশনা দিই।’
প্রীতম সুর রায় জানান, রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া হচ্ছে একটি মারাত্মক বিষধর সাপ। যে চারটি সাপের কামড়ে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হন, সেগুলোর মধ্যে রাসেল ভাইপার অন্যতম। এদের বিষ মূলত হেমোটক্সিক। তবে এলাকাভেদে এদের বিষের মাত্রা এবং বিষের উপাদানের পরিমাণে কম-বেশি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা বলেন, ‘মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে একটি সহাবস্থান তৈরি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মূলত সাপ নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২০ সালে সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি টিমটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেক কম সময়ের মধ্যে সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্ধার কাজ শুরু করেন তিনি।’
বর্তমানে টিমটিতে ২৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রেস্কিউয়ার আছেন বলে জানান তারা।
যারা বিপদগ্রস্ত অথবা মানুষের বাসস্থানে ঢুকে পড়া কোন সাপ এবং অন্য বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করে আবার সেগুলোকে প্রকৃতিতে তাদের অবস্থানে ফিরিয়ে দেয় রেসকিউয়ার টিম। এছাড়া অসুস্থ সাপ এবং অন্যান্য বণ্যপ্রাণীর চিকিৎসার মাধ্যম্যে সেগুলো সুস্থ করে বনে অবমুক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার সাপ উদ্ধার করেছে স্নেক রেস্কিউ টিম বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পাবনা অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। রাসেল ভাইপার আমাদের দেশীয় সাপ নয়। এগুলো ভারত থেকে আসে। ভারত থেকে পদ্মা নদী দিয়ে রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও পাবনার কিছু অঞ্চলে এগুলো পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত এপ্রিলে হাসিনাসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ‘লক’ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। যার কারণে তারা প্রবাসে বসে ভোট দিতে পারবেন না।
ইসি সচিব বলেন, ‘যাদের এনআইডি লক আছে তারা কেউই প্রবাসে বসে ভোট দিতে পারবেন না।’
এনআইডি লক হওয়া শেখ পরিবারের সদস্যরা হলেন- শেখ হাসিনা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, রেহানা সিদ্দিক (শেখ রেহানা), টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, শাহিন সিদ্দিক, বুশরা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
ইসি সচিব বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে ইন কান্ট্রি ও আউট অব কান্ট্রি ভোট হবে। যারা প্রবাসে আছেন, তারা অনলাইনে নিবন্ধন করবেন।
এ জন্য সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা ভোট দিতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার তো এনআইডি লক আছে। যাদের এনআইডি লক আছে তারা কেউই ভোট দিতে পারবেন না।’
মামলার কারণে বা অন্য কোনো কারণে পালিয়ে বা অন্যভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের ভোট দিতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে তাদের এনআইডি আনলক অবস্থায় থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসে বসে ভোট দিতে হলে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে এনআইডি নম্বর দিয়ে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নয়, এনআইডি বাধ্যতামূলক হবে। তাই যার এনআইডি লক থাকবে তিনি কী করে অনলাইনে নিবন্ধন করবেন? তিনি তো পারবেন না। যারা এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করবেন তারাই কেবল এই সুযোগ পাবেন।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা।
এছাড়া তার দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অনেকে বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন।
ভুটান ও মিয়ানমার ছাড়া বাংলাদেশ, চীনসহ বাকি পাঁচ প্রতিবেশী দেশকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় চলমান ‘কম্বাইন্ড কমান্ডারস কনফারেন্সে’ ভারতের নিরাপত্তা মহল জানিয়েছে, বাংলাদেশের তথাকথিত ‘উগ্রপন্থি তৎপরতার উত্থান’, পাকিস্তানের ‘জঙ্গি অর্থায়ন’, চীনের সঙ্গে ‘সীমান্ত অচলাবস্থা’ এবং নেপালের ‘রাজনৈতিক অস্থিরতাকে’ ভারতের বড় সংকট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতায় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩ দিনব্যাপী এ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এ বছর এর মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ইয়ার অব রিফর্মস-ট্রান্সফরমিং ফর দ্য ফিউচার’। ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ ফোরামে শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একসঙ্গে বসে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির রূপরেখা তৈরি করে। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারতের প্রতিবেশী বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দেশের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি আরও বলেন, এসব ইস্যু ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলোয় ভারতবিরোধী মনোভাব, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেগুলোও সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামে গভীরভাবে আলোচনা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব বিস্তারিত পর্যালোচনা করছে। চীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও দক্ষিণ চীন সাগরে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছে। লাদাখ, অরুণাচল ও সিকিম সীমান্তে চীনা সেনাদের সঙ্গে চলমান অচলাবস্থা ভারতের জন্য পরোক্ষ হুমকি তৈরি করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং দুদিক থেকে (পাকিস্তান ও চীন-পাকিস্তান) সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া। পাশাপাশি নেপাল, বাংলাদেশ ও চীন সীমান্তসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা চলছে।’
দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে নিরাপত্তা মহলের সূত্রগুলো ভারতের পূর্ব সীমান্তে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো গভীরভাবে ‘উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছে। ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরোর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর উগ্রপন্থি তৎপরতার উত্থান এবং সেখানে বেড়ে চলা ভারতবিরোধী বক্তব্য আমাদের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বছরের পর বছর বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের সীমান্তবর্তী জেলার জনসংখ্যার বিন্যাস বদলেছে এবং তা ভারতের জন্য নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ বাড়িয়েছে।’
ভারতের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব পূর্ব লাদাখ ও পূর্ব সীমান্তে চীন সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতিরও বিস্তৃত পর্যালোচনা করেছে। সেখানে ভারত ও চীন দীর্ঘদিন অচলাবস্থায় আটকে আছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্মেলনে মূল গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ভবিষ্যৎ সক্ষমতা গড়ে তোলা, যৌথ ও সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার জন্য সংগঠন কাঠামো তৈরি করা এবং শান্তি ও যুদ্ধ উভয় সময়েই কার্যক্রমে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর।’
সৌর ব্যতিচারের কারণে বাংলাদেশে স্যাটেলাইটনির্ভর সম্প্রচার কার্যক্রমে সাময়িক বিঘ্ন ঘটতে পারে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত টানা আট দিন এ প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)।
গতকাল বুধবার সংস্থাটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইটের জন্য সৌর ব্যতিচার একটি স্বাভাবিক মহাকাশীয় ঘটনা, যা প্রতি বছর দুবার ঘটে। এ সময় সূর্য, পৃথিবী ও স্যাটেলাইট একই সরলরেখায় অবস্থান করে, ফলে স্যাটেলাইট সংকেত ব্যাহত হয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের আশপাশে এ ব্যতিচার ঘটতে পারে।
সংস্থাটির মুখপাত্র ওমর হায়দার জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে ৯টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত ৩ মিনিট সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটতে পারে। ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ৩২ মিনিট থেকে ৯টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত ৯ মিনিট, ১ অক্টোবর সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত ১২ মিনিট, ২ ও ৩ অক্টোবর সকাল ৯টা ২৯ মিনিট থেকে ৯টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত ১৩ মিনিট করে, ৪ অক্টোবর সকাল ৯টা ২৯ মিনিট থেকে ৯টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত ১২ মিনিট, ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা ২৯ মিনিট থেকে ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ১১ মিনিট এবং ৬ অক্টোবর সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত ৮ মিনিট সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এ অবস্থায় ব্যতিচার সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানানো হয়েছে।
গাজীপুরে টানা দুই ঘণ্টা ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। বুধবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দুপুর ১২টার দিকে জয়দেবপুর শিমুলতলী সড়কের ডুয়েট গেটের পাশে এমআইএসটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। পরে মিছিল সহকারে ভুরুলিয়া রেলগেট, শিববাড়ি হয়ে চন্দনা চৌরাস্তায় এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। গাজীপুর ডিপ্লোমা প্রকৌশলী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সড়কপথ অবরোধের ফলে ঢাকা-জয়দেবপুর, শিমুলতলীগামী সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানান, যারা কারিগরি শিক্ষা এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে অব্যাহত ষড়যন্ত্র ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্মসূচিতে গাজীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা অংশ নেন। এছাড়া এমআইএসটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রয়েল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ভাওয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানান, দেশের ৪০ লক্ষাধিক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও প্রায় চার লাখ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিএসসি প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা যে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক। তাদের প্রতিটি দাবি দেশের চালিকাশক্তি ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ক্যারিয়ারে আঘাত হানে। এই দাবি জাতীয় কর্মক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়াবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দাবি মানা না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, মীমাংসিত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই।
এদিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম দুটি মহাসড়ক অবরোধের ফলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দুই মহাসড়কের উভয়দিকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে গন্তব্যগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অনেকে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা দেন।
বাসন থানার ওসি শাহীন খান জানান, দুপুর ১টা থেকে থেকে শিক্ষার্থীরা চন্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে রাখেন। বিকেল ৩টার দিকে তারা চলে যান।
উত্তরা ইপিজেডে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিক সাইফুল ও তার বাবা শফিকুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নীলফামারীতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে ‘এভারগ্রীন প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেডের’ বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েক শত শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিস-সার্কিট হাউজ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন ইপিজেডের এভারগ্রীন প্রোডাক্ট বিডি লিমিটেডের শ্রমিক ছাইদুল ইসলাম সাইফুল। ওই দিনই তার বাবা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে সৈয়দপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে কর্দমাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে মালিকপক্ষের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে আত্মগোপনে ছিলেন। পরে ডিবি পুলিশ সাইফুল ও তার বাবা শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মামলা দায়েরসহ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ওই খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল থেকেই এভারগ্রীণ কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেডের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে কারাগারাবন্দী শ্রমিক ছাইদুল ইসলাম সাইফুল ও তার বাবাকে আদালত জামিনে মুক্তি দিলে দুই ঘন্টা পর দুপুর দেড়টায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলণ কক্ষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠকে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকরা কাজে ফিরতে সম্মত হন।
বৈঠক শেষে জেলা পুলিশ সুপার এ.এফ. এম তারিক হোসেন খান বলেন, ‘সাইফুল সবার সামনেই স্বীকার করেছে যে সে নিজেই আত্মগোপনের মাধ্যমে আজকের এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমরা শ্রমিকদের প্রতি সহনশীল হয়ে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সাইফুল ও তার বাবার জামিনের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। আশা করি আগামীকাল থেকে উত্তরা ইপিজেডে আর কোনো বিশৃঙ্খলা থাকবে না। সুন্দরভাবে ইপিজেড পরিচালনা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকদের প্রধান যে দাবি ছিল সাইফুল ও তার বাবার নামে যে মামলা হয়েছে সেটি থেকে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া ও শ্রমিকদের আরও কিছু দাবি ছিল। বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা ছিল তাদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইপিজেডে শ্রমিকদের স্বার্থ ও দাবি রক্ষায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারখানা শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পিসি কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’
আনারস, কলা, চালা বাইদ, শাল গজারির অবারিত বন, মধুপুরের লাল মাটির গর্বের ধন। দেশের বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলের মধ্যে লাল মাটির মধুপুর গড় অন্যতম। গড় এলাকার মাটি ভূ-প্রকৃতিক বৈশিষ্ট্য বৈচিত্র্যে রয়েছে অন্যসব কৃষি এলাকা থেকে ভিন্নতর। এক দিকে উর্বর মৃত্তিকা, অম্লত্ব, উঁচু বন্যা মুক্ত। রস-কষ শক্তি সামর্থ্যে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও বাইদ, কোথাও চালা। মধুপুরের মাটি পরিবেশ প্রতিবেশ প্রকৃতি সব মিলে যেন এক কৃষির নৈসর্গিক লীলা ভূমি। বলছিলাম মধুপুর গড়ের কৃষি রাজ্য কথা।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় মধুপুরে আনারস আর দেশি জাতের কিছু কলা আদা হলুদ কচু পেঁপেসহ নানা কৃষি ফসল চাষ হতো। বাণিজ্যিক চাষাবাদ ছিল না। বেশির ভাগ স্থলে ছিল শাল গজারির বন। দিন দিন বন উজাড়ের ফলে সংকুচিত হয় ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত সমতল এলাকার পাতা ঝরা শাল গজারি, সেগুণ, আজুলি, বহেড়া, হরিতকি, নিম, নিশিগন্ধা, সর্পগন্ধা, শিমুল, জারুল, খাড়াঝরা, অর্জুন, সিদা, মেহগুনি, বানর নড়ি, আনাইগোটা, তিতিজাম, ঢাকি জাম,আমলকীর রাজ্য ক্ষীন হতে থাকে। বাড়তে শুরু করে বাণিজ্যিক কৃষি চাষাবাদ।
এখন লাল মাটির চারদিকেই দিগন্ত জোড়া কৃষি ফসলের বৈচিত্র্যেভরা। মাঠে মাঠে শোভা আনারস কলা হলুদ পেপে কচু কফি কাজু বাদাম কাসাভা ড্রাগনসহ নানা ফসল। হাট বাজারে এ সময় কলা আনারসের মৌ মৌ গন্ধ বিরাজ করছে। সারা বছরই বাজারে নানা ধরনের শাকসবজি ফলমূল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাগম ঘটে।
গারো বাজার মহিষমারা গেলে ছানোয়ার হোসেন নামের এক কৃষক তার কফি বাগান ঘুরে ঘুরে দেখান। চমৎকার বাগান। তিনি এ চাষে সাড়া জাগিয়েছে। শুধু জানোয়ার হোসেনই নয় তার মতো ছোট বড় কৃষক কফি করেছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। গোবুদিয়া ও ইদিলপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান নামের কৃষক কাজু বাদাম কফি চাষ করেছে। তার মতো অনেক কৃষক কাজু বাদামের গাছ লাগিয়েছে কৃষি বিভাগ জানায়।
সরজমিনে গারো বাজারের ছানোয়ার হোসেন তার বাগান ঘুরে দেখালেন একখণ্ড কৃষির রাজ্য। মাল্টা, ড্রাগন, পেয়ারা, আনারস, কফি, বাতাবি লেবু (জাম্বুরা), লেবুসহ নানা ফল ফসলে গড়ে তোলেছেন তার কৃষি একখণ্ড রাজ্য। সব মিলে গারো বাজারের এ কৃষক ছানোয়ার পেয়েছে অনেক পদক ও সম্মাননা।
কৃষকরা জানান, এভাবে দিন দিন মধুপুরের লাল মাটিতে আবাদ হচ্ছে নতুন নতুন ফল ফসল। কৃষি ফসলের বহরে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ফসল। সুদুর ফিলিপাইনের উন্নত জাতের আনারস চাষের নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে । এ আনারসের জাতের নাম এমডি-২। কৃষি ও কৃষকের আশা এ জাতের আনারসের ফলন ভালো হলে লাল মাটির মধুপুর কৃষি অঞ্চলে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
মধুপুরে এখন উচ্চ ফলনশীল জাতের নানা ফসলের বাণিজ্যিক বাগান গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চল জামাল পুর জেলার কিছু অংশ জুড়ে গাজীপুর পর্যন্ত লাল মাটি। বন আলু, বনের নানা ভেষজ বৃক্ষ গারোদের প্রিয় খাবারের অংশ ও ভেষজ চিকিৎসার উপকরণ। শুধু ৩৭০.৮৪ বর্গমাইল আয়তনের মধ্যে ১১ টি ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় মাঝারি প্রান্তিক চাষি। কৃষক পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার ৯৫০ এর মতো।
এ কৃষি রাজ্যের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে যেমন কৃষকরা লাভবান তেমনি দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হবে মধুপুর এমনটাই মনে করছে স্থানীয়রা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, মধুপুর মাটি আবহাওয়া ভূপ্রকৃতি কৃষি ফসলের জন্য উপযোগী। এ মাটিতে প্রায় সব ধরনের ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ এলাকার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি। তারা কৃষকদের সহযোগিতা পরামর্শ দিয়ে থাকে বলে জানান।
তরুণদের উদ্দেশ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ বাংলাদেশ থেকে সড়াতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারব না কেন?” তিনি আরো বলেন, তরুণদের উদ্দেশ্য করেই তামাক কোম্পানিগুলো কূটকৌশল সাজায়। কারণ, ২০-২৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের যদি তামাকে আসক্ত করা যায়, তবে তারা অন্তত ৫০ বছর ধরে সিগারেটের বাজার নিশ্চিত করতে পারবে।
উপদেষ্টা আজ বিকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে নারী মৈত্রী আয়োজিত "নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব" -শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো ক্যাবিনেটে তোলার জন্য। তবে রাজস্ব কমে যাবে-এ অজুহাতে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি হাই লেভেল কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দুই দফা বৈঠকও করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানির লবিং এতই শক্তিশালী যে অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সবসময় জুজুর ভয় দেখায় যে, তামাক থেকে রাজস্ব আহরণ ছাড়া সরকার চলতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রদেয় আয়করের মধ্যে বহু ফাঁকি রয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তরুণ সমাজকে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।" তরুণ প্রজন্ম সচেতন হলে কোনো তামাক কোম্পানি আর তাদের টার্গেট করতে পারবে না।
সভায় জানানো হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব করে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনাগুলো হলো— পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সকল ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে শতকরা ৯০ ভাগ করা ।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, ইয়ূথ ফোরাম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।
মন্তব্য